2025-03-03@09:40:39 GMT
إجمالي نتائج البحث: 45

«হইয় ছ»:

    বিগত কয়েক মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সহিত পাল্লা দিয়া সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা যে ভয়ংকররূপে বৃদ্ধি পাইয়াছে– উহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ সদরদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করিয়া দেখা গিয়াছে, গত জানুয়ারিতে সমগ্র দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়াছে ৭১টি। পূর্বের বৎসর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ডাকাতির সংখ্যা ছিল ২৯। অর্থাৎ পুলিশের হিসাবেই ডাকাতি হইয়াছে দ্বিগুণের অধিক। এই কথাও বলা প্রয়োজন, পুলিশের পরিসংখ্যান দিয়া অপরাধ বা ডাকাতির সঠিক সংখ্যা জানা কঠিন। কারণ, অনেক ঘটনায় ভুক্তভোগী বহুবিধ কারণে মামলা করিতে উৎসাহ পান না। অনেক ঘটনায় পুলিশও সহজে মামলা গ্রহণ করে না। এদিকে, শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশেই গত দুই মাসে চারটি ডাকাতি হইয়াছে, যে সকল ঘটনায় ভুক্তভোগীর অর্থকড়ি ও স্বর্ণালংকার, এমনকি চাউলের বস্তাভর্তি ট্রাকও লুণ্ঠিত হইয়াছে। ইহার পূর্বে ঢাকা...
    আরবি মাসগুলির মধ্যে অন্যতম বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হইল রমজান, যাহা ইতোমধ্যে শুরু হইয়া গিয়াছে। এই মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলমানেরাও সিয়াম সাধনা করিয়া থাকেন। তবে এই সাধনা এইবার কতটুকু নির্বিঘ্ন হইবে উহা লইয়া জনপরিসরে কিছুটা হইলেও উদ্বেগ সৃষ্টি হইয়াছে। বিশেষত নিত্যপণ্যের বাজার রমজান মাসে অস্থিতিশীল হইয়া উঠিবার প্রবণতা বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। প্রায় প্রতিবৎসর রোজার পূর্বমুহূর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সরবরাহ কমিয়া যাইবার অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াইয়া দিয়া থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, অন্তত কতিপয় ক্ষেত্রে এইবারও উহার ব্যতিক্রম ঘটে নাই। রোজা শুরুর পূর্বেই বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি ও দাম বাড়িয়া যাইবার বিষয়টা আঁচ করা গিয়াছে। বিশেষত বৃহস্পতিবারের সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোজার পূর্বেই ভোজ্যতৈলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। অভিযোগ রহিয়াছে, বড় আকারে শুল্ককর ছাড় দিবার পরও ব্যবসায়ীদের দর বাড়াইবার আবদারে সরকারি সাড়া...
    নিরাপদ পানিকে মৌলিক অধিকার হিসাবে ঘোষণা দান-সংক্রান্ত আদালতের রায়টি যুগান্তকারী বলিয়া আমরা মনে করি। কারণ যেই পানি জীবন রক্ষার উপকরণ, উহাই বিশুদ্ধ না হইলে জীবন হরণেরও কারণ হইতে পারে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই বিষয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করিয়াছিলেন হাইকোর্ট। উক্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি হিসাবে বৃহস্পতিবার যেই রায় প্রদান করা হইয়াছে, উহার মাধ্যমে পানির অধিকার নিশ্চিত হইবে বলিয়া আমাদের প্রত্যাশা। রায়ের পর্যবেক্ষণে যথার্থই বলা হইয়াছে, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তি মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র এই অধিকার নিশ্চিত করিবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে জনপরিসরে বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহ বিষয়েও ব্যবস্থা লইবার তাগিদ আসিয়াছে এই রায়ের মাধ্যমে। আমরা মনে করি, রায়ের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হইল, দেশে যত পানির উৎস বিদ্যমান, সেগুলিকে দূষণের হস্ত হইতে রক্ষা...
    সাম্প্রতিক সংঘাতের জের ধরিয়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েট যেইভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হইয়াছে, উহা দুঃখজনক। কুয়েটের অঘটনের পর এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই আমরা উদ্বেগ জানাইয়াছিলাম, সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাঙ্গন বন্ধের পুরাতন সংস্কৃতি হইতে বাহির হইতে হইবে। তৎসত্ত্বেও কুয়েট প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনিতে ব্যর্থ। ফলস্বরূপ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হইতে সকল আবাসিক হলসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়েট বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত লওয়া হইল। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করিলেও অবশেষে নিরাপত্তার কারণে বুধবারের মধ্যে তাহারা প্রায় সকল আবাসিক হল শূন্য করিয়া দিয়াছেন। আমরা মনে করি, কুয়েট প্রশাসনের এই ব্যর্থতা মন্দ নজির হইয়া থাকিবে। চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার– সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন। অর্থাৎ পুরাতন ধারার সন্ত্রাসবাদের পরিবর্তে শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি চলিবে এবং শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত...
    বিশ্বের অন্যতম এবং দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, বাংলাদেশের সর্বাধিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারের পরিবেশ-প্রতিবেশ লইয়া উদ্বেগ দীর্ঘদিন যাবৎ জনমনে বিরাজমান। একদিকে এই জেলার নদী-খাল-জলাশয়, তৎসহিত পর্বত ও বন দখল-দূষণে বিপর্যস্ত। এমনকি সমুদ্রও রক্ষা পাইতেছে না; অন্যদিকে আইনের তোয়াক্কা না করিয়া বিশেষত সমুদ্রের তীর ঘেঁষিয়া যথেচ্ছভাবে হোটেল-মোটেলসহ ক্ষুদ্র-বৃহৎ স্থাপনা গড়িয়া উঠিয়াছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে মারমেইড বিচ রিসোর্ট এমনই এক স্থাপনা। ইহাকে ‘ইকো রিসোর্ট’ বা ‘পরিবেশবান্ধব’ দাবি করা হইলেও খাল ও সরকারি জমি দখল এবং বৃক্ষ কর্তন করিয়া ইহা নির্মিত হইতেছে। বাঁকখালী নদীতে পরিবেশ অধিদপ্তর সৃজিত বন ধ্বংস করিয়াও স্থাপনা নির্মাণ করা হইয়াছে। প্রশাসনের নাসিকার অগ্রভাগে এই প্রকার পরিবেশ-বিধ্বংসী তৎপরতা দুর্ভাগ্যজনক।  প্রতিবেদনের সহিত প্রকাশিত আলোকচিত্রেও স্পষ্ট দৃশ্যমান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকায় নদী ও...
    যেই সময়ে দেশব্যাপী সেনাসদস্যসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলমান, সেই সময়েই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রমবর্ধমান অপরাধ সংঘটিত হইবার উদ্বেগজনক তথ্য আসিতেছে। রবিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধীদের বহুমাত্রিক তৎপরতার খবর মিলিতেছে এবং সংশ্লিষ্টরা এতটাই বেপরোয়া, ভুক্তভোগীকে প্রকাশ্যে অস্ত্রাঘাতে জখম করিতেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বাসে আরোহণ করিয়া যাত্রীদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, টাকা লুণ্ঠন করিতেছে। এমনকি চলমান বাসে অস্ত্রের মুখে নারীর শ্লীলতাহানিও ঘটাইতেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জানুয়ারিতে সমগ্র দেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২৯৪ জন। এই সময়ে ১৭১টি চুরি, ৭১টি ডাকাতি, ১০৫টি অপহরণ এবং ১ সহস্র ৪৪০ জন নারী- শিশু নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। গত বৎসর একই সময়ে হত্যার শিকার হন ২৩১ জন, ডাকাতি ২৯, চুরি ১৪১, অপহরণ ৪৩ এবং...
    মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র তথা আইসিইউ লইয়া দেশে যাহা চলিতেছে তাহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সরকারি হাসপাতালে শক্ত তদবির ব্যতীত আইসিইউ বরাদ্দ মিলিতেছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাগিতেছে ঘুষও। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে এই সেবার নামে কাটা হইতেছে রোগী ও স্বজনের পকেট। উপরন্তু, সমন্বয়হীনতার কারণে সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসিতেছে না। এক কথায় আইসিইউ লইয়া দেশের চিকিৎসা খাতে এক নৈরাজ্য চলিতেছে। শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, দেশে আইসিইউর শয্যা আছে সর্বমোট প্রায় বারো শত, যাহার ৭৫ শতাংশই রাজধানী ঢাকায়। উপরন্তু, ৩৪ জেলায় কোনো আইসিইউ নাই। তৈলাক্ত মস্তকে তৈল মর্দন সম্ভবত ইহাকেই বলে। ঢাকায় যেহেতু সরকারের শীর্ষ ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ থাকেন, পাশাপাশি আছেন দেশের সর্বাধিক অর্থবিত্তসম্পন্ন মানুষেরা, ওই কথাটি নিশ্চয় সচেতন কাহারও নিকট অপ্রাসঙ্গিক ঠেকিবে না। অন্যদিকে ঢাকাকেন্দ্রিক অতি...
    বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা নহে; জাতিসত্তা রক্ষার আন্দোলনেও অমর দিবসরূপে দেদীপ্যমান। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বুকের তাজা রক্ত ঢালিয়া দিয়া ভাষাশহীদগণ কেবল দেশপ্রেমের অনন্য উদাহরণই সৃষ্টি করেন নাই; দিবসটি বাংলা ছাপাইয়া সকল ভাষার মর্যাদার স্মারক হইয়া উঠিয়াছে। একুশের চেতনা দেশ-কাল-পাত্রভেদে অধিকার আদায়ে প্রেরণার উৎসরূপে ক্রিয়াশীল। আমরা দেখিয়াছি, অধিকার আদায়ে বাঙালি ভাষা আন্দোলনের যেই সংগ্রাম রচনা করিয়াছিল, সেই পথপরিক্রমায়ই সূচিত হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। অকুতোভয় বাঙালি জনগোষ্ঠী এই ভূখণ্ডের অপরাপর জাতিগোষ্ঠীকে লইয়া দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অর্জন করে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পরও যুগ যুগ ধরিয়া আন্দোলনের প্রেরণা হইয়া রহিয়াছে ভাষা আন্দোলন। এমনকি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানও উহার বাহিরে নহে। বায়ান্নতে ছাত্র-জনতা মুখের ভাষা রক্ষায় সোচ্চার হইয়া আন্দোলনে ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও তাহারা প্রেরণা হইয়া উঠিয়াছিল। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে দেয়ালে দেয়ালে মায়ের ভাষায়...
    খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটে মঙ্গলবার ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে যেই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। পূর্বের ন্যায় শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের মহড়া কেবল নিন্দনীয়ই নহে, একই সঙ্গে শিক্ষার পরিবেশের জন্যও মন্দ বার্তাবহ। ইতোপূর্বে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যেইরূপ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করিয়াছিল, সেই কারণে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনরূপে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। গণঅভ্যুত্থানের ‘স্পিরিট’ হইল শিক্ষাঙ্গনে সকল ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সহাবস্থান বজায় থাকিবে এবং প্রত্যেকে স্বীয় কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনা করিতে পারিবে। কিন্তু বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করিয়া কুয়েটে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটিয়াছে। আমরা মনে করি, শিক্ষাঙ্গনকে এই ধরনের সংঘাতমুক্ত করিতেই হইবে। ইতোমধ্যে কুয়েটের ঘটনার প্রভাব দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়িয়াছে, যেইখানে মঙ্গলবারই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ...
    খাদ্য অধিদপ্তরে চাউল, আটা ও ময়দাকলের মালিকদের তালিকাভুক্তি লইয়া ব্যাপক অনিয়ম চলিতেছে বলিয়া মঙ্গলবার সমকাল এক উদ্বেগজনক সংবাদ দিয়াছে। সেই সংবাদে বলা হয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মিলিয়া উৎকোচ চক্র গড়িয়া তুলিয়াছেন, যাহাদের ‘খুশি’ করিতে না পারিলে যোগ্য কলমালিকগণ তালিকাভুক্ত হইতে পারেন না। এমনকি তালিকাভুক্ত কলমালিকের অনুমোদনপত্রও বাতিল হইয়া যায়। ফলে একদিকে সরকারি তালিকার বাহিরে থাকিয়া যাইতেছেন অনেক প্রকৃত কলমালিক, অপরদিকে অস্তিত্বহীন বা নামকাওয়াস্তে কার্যক্রম পরিচালনাকারীরা সরকারি খাতায় নাম লিখাইতে পারিতেছেন। বিষয়টা উদ্বেগজনক। কারণ ইহার ফলে দেশে খাদ্য মজুতের সঠিক চিত্র দুরূহ হইয়া যায়, যাহার নেতিবাচক প্রভাব বহুবিধ। প্রথমত, সময়মতো চাউল বা গমের ন্যায় প্রধান খাদ্যপণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হইয়া পড়ে। দ্বিতীয়ত, এই সকল পণ্যের বাজার চক্রের নিয়ন্ত্রণে চলিয়া যায়। আন্তরিক হইলেও সরকারের পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ...
    রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হইতে নিষ্কৃতি চাহিয়া বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণ প্রধান উপদেষ্টার নিকট যেই আবেদন জানাইয়াছেন, উহাকে স্বাগত জানানোই সংগত ছিল। রবিবার হইতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিন দিনের সম্মেলনের প্রথম দিনেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহিত মুক্ত আলোচনায় জেলা প্রশাসকগণের উক্ত আবেদন সমর্থন না করিবার কী কারণ থাকিতে পারে? এই জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার তাহারা চাহিয়াছেন। কিন্তু প্রশ্ন হইতেছে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কি যাচিয়া আসিয়াছিল? নাকি জেলা প্রশাসকগণই ক্রমান্বয়ে এইরূপ হস্তক্ষেপ অনিবার্য করিয়া তুলিয়াছিলেন? বাংলা প্রবাদ মানিয়া এক্ষণে কম্বল ছাড়িতে চাহিলেই কি কম্বল সহজে ছাড়িয়া যাইতে পারে?  বস্তুত জনপ্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নূতন নহে। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বৎসরে যেই দলই ক্ষমতাসীন হইয়াছে, সেই দলই প্রশাসনের সর্বস্তরে পদায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দিয়াছে। বিষয়টি বিপরীত দিক...
    গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এবং গ্যাস লাইনের লিকেজ হইতে সৃষ্ট আগুনে মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই থামানো যাইতেছে না। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার ঢাকার নিকটবর্তী সাভারের আশুলিয়ায় একটি আবাসিক ভবনে গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ১১ জন দগ্ধ হন, তন্মধ্যে দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারাইয়াছেন। তদুপরি, অন্যদেরও অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নহে, যাহাদের অদিকাংশের শ্বাসনালি দগ্ধ হইয়াছে। সমকালের অপর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবারই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এক সিএনজি স্টেশনে গ্যাস পূর্ণকরণকালে অকস্মাৎ গাড়িতে আগুন লাগিয়া অভ্যন্তরে থাকা শিশু দগ্ধ হইয়া প্রাণ হারাইয়াছে। উপরন্তু, ৯ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হন একই পরিবারের তিনজন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, গত পাঁচ বৎসর গ্যাসলাইন ও সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ হইতে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ৪৪ জন মৃত্যুবরণ করিয়াছেন; আহত হইয়াছেন শতাধিক। স্মরণ করা যাইতে পারে, অতীতের এহেন ঘটনায়...
    রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাধার খবর আমাদের উদ্বিগ্ন না করিয়া পারে না। সমকাল অনলাইনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত ৩১ বৎসর যাবৎ বসন্ত উৎসবের আয়োজন করিয়া আসিতেছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ। এই বৎসর তাহাদের উদ্যোগে উক্ত অনুষ্ঠান চারুকলা অনুষদের বকুলতলা, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে হইবার কথা ছিল। তবে বকুলতলা ও বাহাদুর শাহ পার্কে এই উৎসব হইলেও উত্তরায় হয় নাই। বকুলতলায় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানাইয়াছেন, পুলিশের অনুমোদন গ্রহণ, সিটি করপোরেশনের ফি পরিশোধসহ নিয়ম অনুযায়ী সকল কিছু সম্পন্ন করিবার পরও উত্তরার কতিপয় ব্যক্তির ‘বাধার মুখে’ অনুষ্ঠানটি তাহারা আয়োজন করিতে পারেন নাই।  কেবল বসন্ত উৎসব নহে; আমরা দেখিয়াছি সম্প্রতি দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবল খেলায়ও বাধা প্রদান করা হইয়াছিল। গত...
    সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা) জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ইয়াহইয়া চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক মো. জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার তাকে আদালতে হাজির করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ইয়াহইয়া চৌধুরীকে আটক করে পুলিশে দেয় ছাত্র-জনতা।  ইয়াহইয়া চৌধুরী ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে‌ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসন‌টিতে নিজেদের প্রার্থী দেয়‌নি। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে‌ছিলেন ইয়াহইয়া চৌধুরী। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী...
    সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসাইন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াহইয়া চৌধুরীকে উত্তরা পশ্চিম থানায় আটক রাখা হয়েছে। তাঁর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়ে হত্যার অভিযোগে গত ১২ নভেম্বর ইয়াহইয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। প্রায় এক মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।ইয়াহইয়া চৌধুরী ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে‌ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসন‌টিতে নিজেদের প্রার্থী দেয়‌নি। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয়...
    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার, ভুক্তভোগী ও সংবাদমাধ্যমের একটি দলের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের মাধ্যমে জনপরিসরে ঘূর্ণয়মান অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলিয়াছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাস অতিক্রান্ত হইলেও এই গোপন বন্দিশালা অন্তরালে থাকিয়া যাইবার বিষয়ে জনমনে ক্ষোভও জমিয়া উঠিতেছিল। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ও বর্তমানে অকার্যকর এই সকল আয়নাঘর বুধবার পরিদর্শনের মাধ্যমে উহার বর্বর কাঠামো উন্মুক্ত হইবার মাধ্যমে এইরূপ বন্দিশালায় সংঘটিত নৃশংসতা কেবল জনসমক্ষে উন্মোচিতই হয় নাই; আয়নাঘরের অস্তিত্ব অস্বীকারকারীদের চাঁদবদনেও চুনকালি পড়িয়াছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত নিদর্শন এহেন আয়নাঘর যাহারা তৈরি করিয়াছিল, তাহাদের বিচারের আওতায় আনা এখন জনদাবি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিরোধীদের উপর কতটা দমন-নিপীড়ন এবং বেআইনিভাবে নাগরিকদের ধরিয়া আনিয়া যেই বীভৎস নির্যাতন চালাইয়াছিল, আয়নাঘরের খণ্ডচিত্রই উহার প্রমাণ। নির্যাতনের...
    সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ তাঁর চার সহযোগীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্র–জনতা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়।  আটক হওয়া অন্য চারজন হলেন- আনোয়ার হোসেন, মিলন, জনি মিয়া। বাকি একজনের নাম জানা যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসাইন। তিনি বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহিয়াসহ পাঁচজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে ছাত্র–জনতা। এর আগে ১২ নভেম্বর ছাত্র–জনতার ওপর গুলি ছুড়ে হত্যার অভিযোগে দুটি মামলায় ইয়াহইয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই সময় মাসখানেক কারাগার ছিলেন তিনি। আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট কুমারপাড়া এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার অভিযোগে গত ২ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ইয়াহইয়া...
    জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমাইতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেইভাবে সরাসরি বল প্রয়োগের নির্দেশ দিয়াছিলেন, উহা ছিল নজিরবিহীন। তাঁহার ক্ষমতা টিকাইবার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই নির্দেশ প্রতিপালনের পরিণতিতেই ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনা ঘটে; যেইগুলি ইতোমধ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে প্রকাশিত। মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও উহার স্বীকৃতি মিলিবার বিষয়টি অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ বলিয়া আমরা মনে করি। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে স্পষ্ট– বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে মারণাস্ত্র দিয়া গুলি চালানো, গ্রেপ্তার, আটক, নির্যাতন, চিকিৎসাপ্রাপ্তির অধিকার কাড়িয়া লইবার ন্যায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করিয়াছে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জাতিসংঘ সংগত কারণেই ইহাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলিয়াছে। বস্তুত গত বৎসরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার শুরু হইতেই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুসন্ধানের দাবি উঠিয়াছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর...
    সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ‘সব্যসাচী’ নামক এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী বিপণিকেন্দ্রে যেই ঘটনা ঘটিয়াছে, উহা কেবল নিন্দনীয়ই নহে; যথেষ্ট উদ্বেগজনক বটে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক দল ব্যক্তি নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রয়ের অভিযোগ তুলিয়া হট্টগোলের সূচনা করে। প্রকাশক শতাব্দী ভব প্রতিবাদ করিলে হট্টগোলকারী জনতা তাঁহার উপর হামলা করিতে উদ্যত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসিয়া প্রকাশককে স্বীয় জিম্মায় লইয়া বিপণিকেন্দ্রটি বন্ধ করিয়া দেয়। সামাজিক মাধ্যমে বিস্তৃত ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, পুলিশের সুরক্ষা অবস্থাতেই কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি শতাব্দী ভবের উপর হামলা চালায়। গ্রন্থ বিপণনের ফলস্বরূপ এহেন দলবদ্ধ হট্টগোল ও হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন না হইয়া পারি না। আমরা মনে করি, যেই কোনো গ্রন্থ লইয়া যে কাহারও ভিন্নমত বা আপত্তি থাকিতে পারে। দেশে সেই ভিন্নমত বা আপত্তি প্রকাশের আইনসংগত...
    বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ বলিয়া পরিচিত তিস্তা নদী ঘিরিয়া বহুল আলোচিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যেইভাবে উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে, উহা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। তিস্তাতীরবর্তী জনসাধারণের উৎসাহ স্বাভাবিকভাবেই দ্বিগুণ হইতে বাধ্য। রবিবার রংপুরে তিস্তা রেলসেতু এলাকায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে জনসমাগমেই উহা স্পষ্ট। কেবল সশরীতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে নহে, গত কয়েক বৎসর ধরিয়া ঐ অঞ্চলের মানুষ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পক্ষে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে উহার পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করিয়া আসিতেছে। মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনও কম অনুষ্ঠিত হয় নাই। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারও উহার পক্ষে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ লইয়াছিল। প্রকল্পের প্রস্তাবনা ও বাস্তবায়নের সহিত চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পৃক্ত থাকিবার কারণে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারই শেষ মুহূর্তে কীভাবে পিছাইয়া আসিয়াছিল, আমরা জানি। এমনকি ঐ সরকারের পক্ষে যেইভাবে চীনের পরিবর্তে ভারতকে...
    আলু লইয়া কৃষক এইবারও দুর্দশায় নিপতিত হইল। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলিতেছে, এক কেজি আলুর উৎপাদন ব্যয় ১৪ হইতে ১৬ টাকা হইলেও কৃষককে উহা বিক্রয় করিতে হইতেছে মাত্র ১০-১২ টাকায়। ফলে প্রতি কেজি আলুতে কৃষককে লোকসান গুনিতে হইতেছে ৫ টাকা অবধি। শুধু উহাই নহে, লোকসান হইতে বাঁচিতে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার কৃষকের হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও নূতন সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। প্রথমত, দেশে চলতি বৎসর আলু উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন হইবে বলিয়া ধারণা করা হইতেছে। কিন্তু বিদ্যমান হিমাগারসমূহের মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৫ লক্ষ টন। সেই হিসাবে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারের বাহিরে থাকিবে। দ্বিতীয়ত, গত বৎসর অপেক্ষা এইবার কেজিতে ১ টাকা বৃদ্ধি করিয়া হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হইয়াছে, যাহা বহন করা বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের পক্ষে কঠিন। উপরন্তু, পূর্বে...
    বুধবার রাত্রি হইতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী যেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলিতেছে, উহা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কেহই সমর্থন করিতে পারে না। ইহারই প্রতিফলন ঘটাইয়া বিএনপিসহ দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে এহেন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের নিন্দা জানাইবার পাশাপাশি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করিয়াছে। আমরা দেখিয়াছি, বিলম্বে হইলেও অন্তর্বর্তী সরকারও বিগত সরকারসংশ্লিষ্ট যেই কাহারও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হইতে বিরত থাকিবার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছে। দুর্ভাগ্যবশত, সরকারের সেই আহ্বান উপযুক্ত সাড়া পায় নাই। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, শুক্রবার রাত্রিতেও ধসাইয়া দেওয়া হইয়াছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং মনিরামপুর এলাকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। পাশাপাশি শক্তিপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার সড়কের নামফলকসহ উপজেলা সদরের কয়েকটি সড়কের নামফলকও ভাঙিয়া ফেলা হইয়াছে।...
    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করিয়া রাজধানীর ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর’ বলিয়া পরিচিত সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনসহ সমগ্র দেশের বিভিন্ন জনপদে যেই ভাঙচুরের অঘটন চলিতেছে, উহাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতিই স্পষ্ট হইয়াছে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হইতে বিক্ষোভকারীরা ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী ঐ ভবনের সম্মুখে একত্র হইয়া হস্তচালিত বিভিন্ন দেশীয় সরঞ্জাম দিয়া ভাঙচুর শুরু করে। পরে ‘বুলডোজার’ দিয়া বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ভবনটি ধসাইবার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ভবনটি ভাঙ্গিয়া ফেলিবার অযুত আলোকচিত্র ও ভিডিওচিত্র সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। অনেক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। তদুপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীগণকে নিবৃত্ত করিতে পারিল না কেন– এই প্রশ্ন রহিয়া...
    সোমবার একই দিবসে দেশের দুইটি জিলা– শরীয়তপুর ও লক্ষ্মীপুরে যেইভাবে আট সাংবাদিকের উপর হামলার অঘটন ঘটিয়াছে, উহা ন্যক্কারজনক। ইহাদের মধ্যে শরীয়তপুরে সমকালের জিলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনকে ছুরিকাঘাত করিবার কারণে গুরুতর অবস্থায় জিলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হইয়াছে। লক্ষ্মীপুরেও হামলার শিকার সাংবাদিকগণ হাসপাতালে ভর্তি হইয়াছেন। আমরা মনে করি, কেবল স্বাধীন সাংবাদিকতার স্বার্থেই হামলাকারীরা কোনো প্রকারেই ছাড় পাইতে পারে না। উপরন্তু আহতদের ন্যায়বিচার পাইবার প্রশ্নও গুরুত্বপূর্ণ।  সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীয়তপুরে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের কারণে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ ও তাহার ভ্রাতার নেতৃত্বে সমকালের প্রতিনিধির উপর ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়া হামলা চালানো হয়। তাঁহাকে উদ্ধারে আগত অন্যান্য সাংবাদিকও হামলার শিকার হইয়াছেন। অন্যদিকে লক্ষ্মীপুরে সংবাদ সংগ্রহ করিতে যাইবার পথে সাংবাদিকদের বাধাদানের উদ্দেশ্যে চার সাংবাদিকের উপর হামলা চালায় মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। উভয়...
    বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত-সংক্রান্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়িতে শুরু করিয়াছে। ইতোমধ্যে এই দেশে মার্কিন অর্থায়নে চলমান বহু প্রকল্পের কাজ বন্ধ বা স্থগিত হইয়া গিয়াছে। সোমবার প্রকাশিত সমকালের এক সংবাদ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) রোহিঙ্গা সহায়তা ব্যতীত বাংলাদেশের অবশিষ্ট সকল কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটাইয়া লইয়াছে। কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও বিপুল কর্মীসংখ্যার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থারূপে পরিচিত ব্র্যাক বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করিয়াছে। সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি সহস্রাধিক কর্মী ছাঁটাই করিয়াছে, যেই সংস্থাটি স্বাস্থ্য খাতে বৃহৎ গবেষণা চালাইতেছে; সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত বহু হাসপাতাল পরিচালনা করিতেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগের জীবন রক্ষাকারী ঔষধের সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দিয়াছে। বন্ধ হইয়া গিয়াছে পুষ্টি-সংক্রান্ত দুইটি প্রকল্প। ফলে এইচআইভি-এইডস,...
    রাজধানীর কদমতলীর শনিরআখড়া জাপানি বাজার এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া সাউন্ড গ্রেনেডে একটি শিশুর হাত উড়ে গেছে। আহত শিশুর নাম নূর ইসলাম (৮)। রোববার দুপুরের পর ঢাকার শনির আখড়ার জাপানি বাজারের ৪ নম্বর গলিতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে শিশুটি রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে সোমবার ঢাকার কদমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাফায়েত হোসেন বলেন, বিস্ফোরিত বস্তুটি সাউন্ড গ্রেনেড। ৫ আগস্ট বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র, গুলিসহ নানা সরঞ্জাম লুট হয়। এই সাউন্ড গ্রেনেড তখন লুট হয়ে থাকতে পারে অথবা আন্দোলনের সময় পুলিশের ব্যবহৃত সাউন্ড গ্রেনেড অবিস্ফোরিত অবস্থায় থাকতে পারে। শিশুটি এটি ময়লার স্তূপে খুঁজে পায়। নূর ইসলাম এখন পঙ্গু হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। শিশুটির মা বিউটি আক্তার বলেন, রোববার দুপুরে খাওয়ার পর বাসা...
    বৈষম্যহীন টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বিশেষত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যেই চিত্র উঠিয়া আসিয়াছে উহা অনাকাঙ্ক্ষিত হইলেও অপ্রত্যাশিত নহে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ হস্তান্তরিত প্রতিবেদনটিতে বলা হইয়াছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা এবং স্বজন-তোষণ নীতির কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয় নামিয়া আসিয়াছে। সেই আমলে চাহিদা না থাকিলেও ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অতিরিক্ত স্থাপিত হইয়াছে, যাহার ফলে অলস বসিয়া থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকেও কেবল ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ হিসাবে এক লক্ষ কোটি টাকা দিতে হইয়াছে। অনুরূপভাবে নিছক সরকারঘনিষ্ঠ কোম্পানির মুনাফার লক্ষ্যে আমদানিনির্ভর নীতিমালা বানাইয়া দেশের জ্বালানি খাতকে ঝুঁকির সম্মুখে ঠেলিয়া দেওয়া হইয়াছে। এই দুইয়ের ফলস্বরূপ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধির খেসারত দিতে হইতেছে সাধারণ ভোক্তাদের...
    দেশে গত কয়েক দিন যাবৎ বাধা ও হুমকির মুখে একের পর এক নারীকেন্দ্রিক আয়োজন বন্ধ হইবার ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শুক্রবার সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, মঙ্গল ও বুধবার কথিত তৌহিদি জনতা নামক গোষ্ঠীর হুমকির মুখে জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারীর ফুটবল খেলা বন্ধ করিয়া দিতে হইয়াছে। দিনাজপুরে উক্ত ‘তৌহিদি জনতা’ মাঠে হামলা-ভাঙচুরও চালাইয়াছে। শুধু উহাই নহে; অতি সম্প্রতি অনুরূপ গোষ্ঠীর হুমকির মুখে প্রথমে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এক অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমণি এবং পরবর্তী সময়ে খোদ রাজধানীতে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানে আরেক চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস উপস্থিত হইতে পারেন নাই। এমনকি ঢাকায় ‘কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক নারী সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশে বাধা প্রদান করা হইয়াছে, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এই সকল ঘটনা স্পষ্ট করিয়া দেয়–...
    বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বাজারে বিক্রয় হইবার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সমস্যা এতই ব্যাপক যে, বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান সত্ত্বেও বাজারে পুস্তক মিলিতেছে। বস্তুত প্রায় প্রতি বৎসরই কালোবাজারে বিনামূল্যের পুস্তক বিক্রয় হইয়া থাকে। কিন্তু চলতি বৎসর অধিক হারে বিক্রয়ের কারণ হইল, শিক্ষার্থীদের বিপুলাংশের এখনও পাঠ্যপুস্তক হস্তগত হয় নাই। এই সুযোগে এক শ্রেণির কালোবাজারি স্বল্প বিনিযোগে অতি মুনাফার আশায় বেআইনিভাবে স্বীয় উদ্যোগে মুদ্রণ করিয়া পাঠ্যপুস্তক বিক্রয় করিতেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবির কার্যাদেশপ্রাপ্ত অনেক মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানও এহেন অপকর্মে লিপ্ত। উপরন্তু, অনেক অসাধু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও অতিরিক্ত চাহিদা প্রদর্শনপূর্বক সংগৃহীত পাঠ্যপুস্তক কালোবাজারিদের নিকট বিক্রয় করিয়া দিতেছেন বলিয়া অভিযোগ উত্থাপিত হইয়াছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা প্রতি বৎসর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরকারের তরফ হইতে পাইবার বিষয়টি একদিকে যদ্রূপ স্বস্তিদায়ক, তদ্রূপ শিক্ষার্থীদের জন্যও উদ্দীপকরূপে...
    বরিশাল তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদনদীর পানি লবণাক্ত হইবার যেই চিত্র মঙ্গলবার সমকালের এক প্রতিবেদনে তুলিয়া ধরা হইয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। প্রতিবেদনে উদ্ধৃত বরিশাল মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের তথ্য বলিতেছে, সেচের জন্য উপযুক্ত নদীর প্রতি মিটার পানিতে শূন্য দশমিক ৭ ডিএস এবং প্রতি মিটার মাটিতে ২ ডিএসের কম লবণাক্ততা থাকিতে হয়। কিন্তু ইনস্টিটিউটের সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণায় দক্ষিণাঞ্চলের নদীর পানিতে সর্বোচ্চ ১৫ হইতে ২০ ডিএস পার মিটার এবং মাটিতে সর্বোচ্চ ২৫ ডিএস পার মিটার লবণাক্ততা পাওয়া গিয়াছে। উপরন্তু, এক দশক পূর্বেও শুষ্ক মৌসুম তথা নভেম্বর হইতে এপ্রিল অবধি সমুদ্র-সংলগ্ন তিন-চারটি নদীতে লবণপানি পৌঁছাইত। বর্তমানে সেই নদীর সংখ্যা ২০। বিশেষ করিয়া বর্ষা মৌসুমে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত না হওয়া, তৎসহিত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঋতু স্বাভাবিক আচরণ হারাইবার কারণে সংকট তীব্র হইয়াছে। নদনদীর পানিতে লবণ বৃদ্ধি পাইলে...
    গত ৫ আগস্ট সরকারের পতন এবং শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগ করে ভারত যাওয়ার পর অনেক অব্যক্ত আকাঙ্ক্ষা আমাদের সামনে উত্থাপিত হয়েছে। শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক, রিকশাচালক, অটোচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে রাজপথে নেমে দাবি উত্থাপন করতে দেখা গেছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ছাত্রলীগের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রও চোখে পড়েছে। ছাত্র সংগঠনটি এখন নিষিদ্ধ। তবে ২৬ জানুয়ারির (রোববার) দিবাগত রাতটি এ ক্ষেত্রে ভিন্নই বলতে হবে। কারণ তা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ‘এলিটিজমের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ২৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে যান। সে সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যাপক মামুন আহমেদ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উত্তেজিত আচরণ করছেন; যা কোনোভাবেই শিক্ষকসুলভ...
    সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলন করিয়া জানাইয়া দিলেন– রাজধানীর সাতটি কলেজ আর তাহাদের অধীনে থাকিতেছে না। বস্তুত দীর্ঘদিন ধরিয়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি হইতে বাহির হইবার অভিপ্রায়ে কলেজগুলির শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করিতেছিল, ঢাবি উপাচার্যের উক্ত ঘোষণা উহারই ফল। তবে সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি উত্থাপন করিয়াছে, উপাচার্য সেই সম্পর্কে কিছু বলেন নাই। তিনি বলিয়াছেন, সাত কলেজের এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, তাহাদের ‘স্বতন্ত্র পরিচয়’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি দেখভাল করিবে। উহার পরও উক্ত বিষয়ে ধোঁয়াশা রহিয়া গেল বলা যায়। ঢাকার সাতটি কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত ছিল অপরিকল্পিত– উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না। আমরা দেখিয়াছি, কলেজগুলি ইতোপূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকিয়া সেশনজটসহ যেই সকল সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছিল, ঢাকা...
    দাগি অপরাধীদের অপতৎপরতার পাশাপাশি ধারাবাহিক ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির ঘটনায় জনমনে যেই আতঙ্ক ছড়াইতেছে উহা সকলের জন্যই উদ্বেগজনক। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকিবার পর সম্প্রতি যেই সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসী জামিনে বাহির হইয়া আসিয়াছে, তাহারা সাঙ্গোপাঙ্গ লইয়া ফের অপরাধজগৎ দাপাইয়া বেড়াইতেছে। ফলস্বরূপ খুন, জখম, দখল, ছিনতাই, চাঁদাবাজির ন্যায় অপরাধ বাড়িতেছে; এমনকি চাঁদা ও ভাগবাটোয়ারা লইয়া নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের পাশাপাশি খুনোখুনিও চলিতেছে। পুলিশের অপরাধ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাইতেছে, গত সেপ্টেম্বর হইতে ডিসেম্বর অবধি চার মাসে ঢাকাসহ সারাদেশে ৯৪৭ জন খুন হইয়াছেন। ডাকাতি ও ছিনতাই ঘটনায় ওই চার মাসে মামলা হইয়াছে ৭৯৬টি, অপহরণের ঘটনায় মামলা হয় ৩০২টি। এই সকল পরিসংখ্যানই বলিয়া দেয়, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা কতটা হুমকির সম্মুখীন। বলিয়া রাখা প্রয়োজন, মামলার সংখ্যা দিয়া দেশের প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনোই নিরূপণ...
    চাউলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপ সত্ত্বেও এই প্রধান খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যথেষ্ট উদ্বেগজনক সংবাদ। গত কয়েক মাসব্যাপী চাউলের বাজার তপ্ত। ভোক্তা অধিকার লইয়া কর্মরত বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং সচেতন মহলের অব্যাহত দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে শুল্ক হ্রাস, আমদানিসহ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু সকলই গরল ভেল। শুক্রবার সমকাল যদ্রূপ জানাইয়াছে, আমদানির খবরে মাঝে দুই-এক টাকা হ্রাস পাইলেও পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে সকল প্রকার চাউলের। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মানভেদে বিভিন্ন প্রকার চাউলের মূল্য কেজিতে ২ হইতে ১০ টাকা অবধি বৃদ্ধি পাইয়াছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সরেজমিন পরিদর্শনের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ভোক্তা পর্যায়ে মধ্যবিত্তের মধ্যে জনপ্রিয় প্রতি কেজি সরু বা মিনিকেট চাউল মানভেদে ৭৮ হইতে ৮২ টাকা, নাজিরশাইল মানভেদে ৮০ হইতে ৯০ টাকায় বিক্রয় হইতেছে। অথচ মাসখানেক পূর্বেও...
    বুধবার যেইভাবে গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা দফায় দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালাইয়াছে, উহা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের কয়েকটি কারখানা মাসখানেক পূর্বে বন্ধ হইবার কারণে শ্রমিকরা বর্তমানে কর্মহারা। একদিকে তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্য কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি, অন্যদিকে বকেয়া পারিশ্রমিক পরিশোধও কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। আমরা দেখিয়াছি, ইহার পূর্বেও শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামিয়াছেন; সপ্তাহখানেক পূর্বে কারখানা খুলিয়া দিবার জন্য মানববন্ধনও করিয়াছেন। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য এবং কেবল তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্যই নহে, বরং দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশক্তি চালু রাখিবার তাগিদ হইতেও কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি।  আমরা জানি, গত মধ্য ডিসেম্বরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর ১৬টি...
    মিয়ানমারের রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হস্তে বাংলাদেশমুখী চারিটি পণ্যবাহী জাহাজ আটক হইবার ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ইয়াংগুন হইতে পণ্য লইয়া টেকনাফে বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশের পূর্বেই আরাকান আর্মির সদস্যরা নাবিকগণকে জিম্মি করিয়া জাহাজগুলি বৃহস্পতি ও শুক্রবার মংডুতে লইয়া যায়। যদিও উভয় পক্ষের ‘সমঝোতায়’ জাহাজগুলি পরবর্তী সময়ে টেকনাফ বন্দরে ভিড়িয়াছে; ঘটনাকে সীমান্ত বাণিজ্যের প্রশ্নে সতর্ক সংকেত বলিয়া আমরা মনে করি।  আমরা জানি, ইতোমধ্যে রাখাইনের সিংহভাগ এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে আসায় রাজ্যটি কার্যত মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তচ্যুত হইয়াছে। বাংলাদেশের সহিত মিয়ানমারের প্রায় সম্পূর্ণ সীমান্তই সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরপরই তাহারা নাফ নদের মিয়ানমার অংশে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করিলে উহার প্রভাব টেকনাফকেন্দ্রিক সীমান্ত বাণিজ্যেও পড়িয়াছে। প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৮ ডিসেম্বর সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মংডু...
    চাহিদা অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অত্যধিক হইবার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র নামক এক প্রকার শ্বেতহস্তী পালন করিতে হইতেছে বলিলে ভুল হয় না। কারণ চুক্তি অনুযায়ী এই সকল কেন্দ্র হইতে বিদ্যুৎ ক্রয় না করিয়াও পিডিবিকে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে একদিকে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায় অনাকাঙ্ক্ষিতরূপে, অন্যদিকে জনগণের উপর ইহার চাপ হ্রাসকল্পে ফি বৎসর ভর্তুকির পরিমাণ বর্ধমান। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, বর্তমানে চাহিদা অপেক্ষা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫৪ শতাংশের অধিক; যদিও এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ২০ শতাংশ। ইহার ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বৎসরে ১ লক্ষ ৩৩ সহস্র কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটস্থ হইয়াছে। সমস্যার এইখানেই ইতি ঘটে নাই। এই ক্রমবর্ধমান ব্যয় সামলাইতে সরকারকে উক্ত সময়ে...
    গত ৯ জানুয়ারি সরকার শতাধিক পণ্য ও সেবায় কর-শুল্ক বৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়াছিল, কতিপয় ক্ষেত্রে উহা পুনর্বিবেচনা করা হইতেছে বলিয়া শুক্রবার সমকাল জানাইয়াছে। জনপ্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট না হইলেও, সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভাশেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানাইয়াছেন, রেস্তোরাঁর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পূর্বের ন্যায় ৫ শতাংশই থাকিবে, ৯ জানুয়ারি যাহা ১৫ শতাংশ করা হইয়াছিল। পাশাপাশি ই-বুকের আমদানি ও সরবরাহে আরোপিত যথাক্রমে ১৫ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটও প্রত্যাহার করা হইয়াছে। একইসঙ্গে হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের উপর কোনো আবগারি শুল্ক না রাখা, ঔষধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত বাড়তি ভ্যাট কার্যকর না করা এবং মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবার বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও আসিতেছে বলিয়া জানা গিয়াছে। তবে ই-বুকের ভ্যাট অব্যাহতির...
    পাঠ্যবইয়ের মলাটে ‘আদিবাসী’ শব্দ-সংবলিত গ্রাফিতি ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে দুইটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরিয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সম্মুখে সংঘর্ষের বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। পাঠ্যপুস্তকের আধেয় বিষয়ে মতপার্থক্য থাকিতেই পারে। উহা লইয়া পরস্পরবিরোধী কর্মসূচিতেও আপত্তি নাই। কিন্তু এক পক্ষ যখন অপর পক্ষের উপর শারীরিকভাবে হামলা করিয়া থাকে, তখন উহা সন্দেহাতীতভাবেই ফৌজদারি অপরাধ। বিশেষত বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে যেইভাবে এক পক্ষকে প্রহার ও রক্তাক্ত করা হইয়াছে, উহা সন্ত্রাসী তৎপরতা ব্যতীত কী হইতে পারে! আমরা দেখিতে চাহিব, অবিলম্বে দায়ীদিগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা লওয়া হইয়াছে। বৃহস্পতিবার যদিও অন্তত দুইজন হামলাকারী আটকের খবর পাওয়া গিয়াছে, দায়ী সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ব্যতীত এই প্রকার অঘটনের আরও শঙ্কা থাকিয়া যায়।    আলোচ্য সংঘর্ষের নেপথ্যে যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দুইটি সংগঠন যথাক্রমে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির নাম আসিয়াছে...
    প্রশাসনিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়েরই যেইখানে অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা বন্ধ তখন ‘হায়রে কপাল মন্দ’ ব্যতীত কী আর রহিয়াছে বলিবার! মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদনে উঠিয়া আসা চিত্র আমাদের স্মরণ করাইয়া দিতেছে গীতিকার আমজাদ হোসেনের বহুল জনপ্রিয় সংগীতের সেই চরণ- ‘হায়রে কপাল মন্দ/ চোখ থাকিতে অন্ধ’! নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা যেইখানে ‘চক্ষু’রূপে ব্যবহৃত হইতেছে, সেই ক্যামেরা বন্ধ থাকিবার বিষয়ে আলোচ্য সংগীতের ন্যায় আক্ষেপ প্রকাশ ব্যতীত আমরা আর কী করিতে পারি? আক্ষেপের অন্তরালে অবশ্য এই প্রশ্ন ঢাকা পড়িয়া যায় না– সচিবালয়ে গতিবিধি পর্যবেক্ষণে স্থাপিত সোয়া ছয়শত ক্যামেরার প্রায় ছয়শতই এত শীঘ্র বিনষ্ট হইল কী প্রকারে? খোদ সচিবালয়েই যখন নিরাপত্তার এই হাল তখন অপরাপর সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পরিস্থিতি সহজেই অনুমেয়।  বস্তুত বিদায়ী বৎসরের শেষ সপ্তাহে সচিবালয়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের অব্যবহিত পরই প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা লইয়া...
    পর্যটকের চাপে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের ত্রাহি অবস্থা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। আমরা জানি, অতিরিক্ত নৌযান ও পর্যটকের চাপজনিত ক্ষতি হইতে বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ২০১৪ সালে সুন্দরবন ভ্রমণ নীতিমালা প্রণীত হইয়াছিল, যথায় বনের অভয়ারণ্যের উপর চাপ হ্রাসকরত প্রান্তসীমায় নূতন পর্যটনকেন্দ্র গঠন, তৎসহিত প্রকৃতিবান্ধব পর্যটনের উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু সোমবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া ইদানীং প্রত্যহ গড়ে ৩০টি নৌযান অভয়ারণ্যে পূর্ণ দিবস অবস্থান করিতেছে। শুধু তাহাই নহে; নৌযানেই বসিতেছে ব্যাপক হই-হুল্লোড় সহযোগে ‘বনভোজন’। বলিয়া রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত বনটির সম্পূর্ণ অংশ সংরক্ষিত এবং ৫৩ শতাংশ এলাকা ঘোষিত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হইলেও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগ ১১টি পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করিয়াছে, যাহার মধ্যে চারটি পড়িয়াছে অভয়ারণ্য এলাকায়।  সুন্দরবনে পর্যটনের প্রভাব লইয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের...
    ‘আমার ছেলে কী দোষ করেছিল, কেন তাকে দুনিয়া থাইক্যা চলে যাইতে হইল? ছেলেরে তো আর ফিরে ফাইতাম না, খুনিগো ফাঁসি চাই। চারদিন পার হইয়া গেল পুলিশ কী করছে বুঝতে পারছি না। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করত, তারে কুপাইয়া মারল কারা? পুলিশের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায়, কী করব? আমার বলার কিছুই  নাই।’ গতকাল রোববার দুপুরে নিজ বাড়িতে এভাবেই আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হওয়া পুলিশ সদস্য শফিকুল ইসলামের মা ফাতেমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘শুনছি, পিবিআই নাকি দুইডারে ধরছে। আমি ভাবছিলাম ২৪ ঘণ্টার ভিতরে আমার ছেলের খুনিদের পুলিশ ধরব, কিন্তু কই তারা (পুলিশ) কী করছে বুঝতে পারছি না।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাতেমা খাতুন জানান, পুলিশ এসে তাদের বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাস করে কাউকে সন্দেহ করেন কিনা। অথচ সিসিটিভি ফুটেজে...
    ‘আমার ছেলে কী দোষ করেছিল, কেন তাকে দুনিয়া থাইক্যা চলে যাইতে হইল? ছেলেরে তো আর ফিরে পাইতাম না, খুনিদের ফাঁসি চাই। চারদিন পার হইয়া গেল পুলিশ কী করছে বুঝতে পারছি না। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করত, তারে কুপাইয়া মারল কারা? পুলিশের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পাই, কী করব? আমার বলার কিছুই নাই।’ রোববার দুপুরে নিজ বাড়িতে এভাবেই আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হওয়া পুলিশ সদস্য শফিকুল ইসলামের মা ফাতেমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘শুনছি, পিবিআই নাকি দুইডারে ধরছে। আমি ভাবছিলাম ২৪ ঘণ্টার ভিতরে আমার ছেলের খুনিদের পুলিশ ধরব, কিন্তু কই তারা (পুলিশ) কী করছে বুঝতে পারছি না।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাতেমা খাতুন জানান, পুলিশ এসে তাদের বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাস করে কাউকে সন্দেহ করেন কিনা। অথচ সিসিটিভি ফুটেজে...
    ‘২৪ ঘণ্টার ভিতরে আমি আমার স্বামীর খুনিরারে গ্রেপ্তার দেখতে চাইছিলাম, কিন্তু এখন পর্যন্ত হেরা (পুলিশ) খুনিরারে ধরতে পারতাছে না। আমার স্বামী পুলিশ প্রশাসনের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায়, কী হইব আমরার? কিছু বলার নাই।’ আজ শনিবার দুপুরে এভাবে আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার দুর্গাপুরে দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি কোপে খুন হওয়া পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন।চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও এলাকায় শফিকুলের গ্রামের বাড়িতে গেলে রাবিয়া খাতুন চোখের পানি মুছতে মুছতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার স্বামী এমন কোনো খারাপ কাজই করেন নাই, এমন কোনো অপরাধই করে নাই যে একজন দাঁড় করাইয়া কইব, “ভাই, আপনি এই অপরাধটা কের লাইগা করলাইন?” ক্যান এমন হইল? কারা আমার স্বামীরে নির্মমভাবে হত্যা করল? আমি কিছুই বুঝতে পারতাছি না।’রাবিয়া খাতুন বলেন, ‘দুই দিন গেছে গা, পুলিশ...
۱