Samakal:
2025-04-21@02:41:17 GMT

প্রয়োজন বহুপক্ষীয় সক্রিয়তা

Published: 20th, April 2025 GMT

প্রয়োজন বহুপক্ষীয় সক্রিয়তা

চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও খুনের রাজনীতির যেই ভয়ংকর চিত্র রবিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে তুলিয়া ধরা হইয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ আগস্ট হইতে ২১ মার্চ পর্যন্ত ৭ মাসে ৭ জন খুন হইয়াছেন। সমকাল অনলাইনের সংবাদ অনুযায়ী, শনিবারও তথায় একজন খুন হইয়াছেন। উক্ত এলাকায় একদিকে জুলাই আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক খুনের শিকার হইতেছেন, অন্যদিকে বিএনপির দ্বিধাবিভক্ত রাজনীতির কারণে পুনরায় দাম্ভিক অবস্থান ঘোষণা করিতেছে রাজনৈতিক সন্ত্রাসীরা। গোষ্ঠীদ্বন্ধ, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করিয়া ঘটিতেছে ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা। এহেন পরিস্থিতি যদ্রূপ রাজনীতি, তদ্রূপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য আত্মঘাতী হইতে বাধ্য। 

আমরা জানি, কয়েক দশক ধরিয়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই অঞ্চল ‘সন্ত্রাসের জনপদ’রূপে পরিচিতি পাইয়াছে। মূলত এলাকায় প্রাধান্য বিস্তারের অপপ্রয়াস ঘিরিয়া দেশের তৎকালীন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার সাংঘর্ষিক রাজনীতি এবং দল দুইটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এহেন কুখ্যাতির কারণ। প্রত্যাশা ছিল, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর এলাকায় শান্তি আসিবে। বিশেষত বিগত ১০ বৎসরের এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী নেতার পরিণতি দেখিয়া বিএনপি নেতারা জনবাসনা উপলব্ধি করিতে পারিবেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএনপির অন্তর্কোন্দলের কারণে সেই আশার গুড়ে বালি পড়িয়াছে। রাজনীতির বিভেদ ৫ আগস্টের পরও রাউজানকে রক্তাক্ত করিয়া চলিতেছে।

আলোচ্য প্রতিবেদনমতে, ৫ আগস্টের পর বিএনপির দুই গ্রুপে শতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়াছে। এই সকল ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীসহ অন্তত তিন শতাধিক মানুষ আহত হইয়াছেন। স্বাভাবিকভাবেই এলাকার নিরীহ বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাইতেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জীবন-জীবিকাও স্বাভাবিক থাকিবার কথা নহে।

প্রতিবেদনে শুধু রাউজানের কথা বলা হইলেও দেশের অনেক স্থানে অভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করিবার আশঙ্কা উড়াইয়া দেওয়া যায় না। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সদস্য এবং উহার সমর্থকদের মধ্যে যাহারা বিবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল, তাহাদের আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি প্রদান জনআকাঙ্ক্ষা, সত্য। কিন্তু ইহার অর্থ কোনো প্রকারেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থকরণে আইন স্বীয় হস্তে তুলিয়া লওয়া নহে। আমরা জানি, বিগত কয়েক মাসে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়া ঢাকাসহ সমগ্র দেশে অনেককে হেনস্তা, এমনকি হত্যাও করা হইয়াছে। বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও দখল করা হইয়াছে। আমরা মনে করি, আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনকারী এহেন হিংসা ও হানাহানি গণঅভ্যুত্থানে দলে দলে যে সাধারণ মানুষ যুক্ত হইয়াছিলেন, তাহাদেরই শুধু হতাশ করিতেছে না; রাষ্ট্র ও সমাজের সংহতিকেও দুর্বল করিয়া দিতেছে। উপরন্তু, আন্তর্জাতিক পরিসরেও দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়ার শঙ্কা উড়াইয়া দেওয়া যায় না।
স্বীকার্য, গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ অদ্যাবধি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসে নাই। উহাদের সহযোগিতার জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মাঠে থাকিলেও, বিশাল পুলিশ বাহিনীর ঘাটতি পূরণ তাহাদের পক্ষে এক প্রকার অসম্ভব। এই অবস্থায় স্বীয় নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখিবার দায় রাজনৈতিক দলগুলির উপরেই বর্তায়। আমরা জানি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ইতোমধ্যে বহু দলীয় নেতাকর্মীকে বিবিধ অপকর্মে সংশ্লিষ্ট হইবার দায়ে সংগঠন হইতে বহিষ্কারসহ নানা প্রকার শাস্তি দিয়াছে। কিন্তু এবম্বিধ পদক্ষেপ যে পরিস্থিতির উপর তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলিতে পারিতেছে না, রাউজান তাহার প্রমাণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ন ত কর ম ব এনপ র এল ক য় র জন ত হইয় ছ আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

গণপরিষদের বদলে সংস্কার বাস্তবায়নে সময়সীমা

সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে  এনেছে– সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আগে কি একটি সাংবিধানিক গণপরিষদ প্রয়োজন? অনেক গণপরিষদপন্থির মতে, নিয়মিত নির্বাচনী রাজনীতির আগে রাষ্ট্র ও সংবিধানের মৌলিক রূপান্তর অপরিহার্য। তবে সমালোচকেরা এতে একটি কূটাভাস খুঁজে পান– যদি বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে অসাধারণ গণতান্ত্রিক বৈধতা অর্জন করে থাকে, তাহলে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য আলাদা ম্যান্ডেটের প্রয়োজনীয়তা কি অপ্রাসঙ্গিক নয়? এই প্রশ্নটি ‘বৈধতা’ ধারণাকে ঘিরে একটি গভীরতর বিশ্লেষণের দ্বার উন্মোচন করে।

গণপরিষদপন্থিদের মতে, ইউনূস সরকারকে ‘অনির্বাচিত’ হিসেবে আখ্যায়িত করা অনুচিত। তাদের দাবি, এই সরকার একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটিয়ে একটি বিস্তৃত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। জনগণের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বৈধতা একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেটের প্রতিফলন, যা প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থায় অর্জিত যেকোনো ম্যান্ডেটের চেয়ে অধিক গ্রহণযোগ্য ও বলিষ্ঠ।
এই দৃষ্টিভঙ্গির একটি সুস্পষ্ট ঐতিহাসিক ভিত্তিও রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য-পরবর্তী সময়ে, তিউনিসিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের পরে এবং নেপালে রাজতন্ত্রের পতনের পর নির্বাচন ছাড়াই সরকার বৈধতা লাভ করেছে। এসব ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শৃঙ্খলা গঠিত হয়েছে কেবল নির্বাচনী চক্রের মাধ্যমে নয়, বরং একটি সামষ্টিক বিপর্যয় এবং নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণের সদিচ্ছা থেকে।

তবে এই বৈধতাকে স্বীকৃতি দিলেও, সাংবিধানিক গণপরিষদের দাবি কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে। যদি বর্তমান সরকারের গণভিত্তি সাম্প্রতিককালের যেকোনো নির্বাচিত সরকারের তুলনায় অধিক শক্তিশালী হয়, তাহলে নতুন করে কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া ছাড়া তাদের ওপর সংবিধান সংস্কারের দায়িত্ব অর্পণ করাটা কি যুক্তিসংগত নয়?
অনেকের কাছে এটি এক ধরনের বৈপরীত্য বলে প্রতিভাত হতে পারে– একদিকে শ্রেয়তর বৈধতার দাবি, অন্যদিকে সেই বৈধতা প্রমাণে একটি নতুন প্রক্রিয়াগত কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা। তবে গণতান্ত্রিক ও প্রক্রিয়াগত বৈধতার মধ্যে পার্থক্য বিবেচনায় আনলে এ আপাত বিরোধ সহজে প্রশমিত হতে পারে।

গণতান্ত্রিক বৈধতা একটি অন্তর্বর্তী সরকারকে শাসনের নৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রদান করে, বিশেষত গণঅভ্যুত্থানের মতো ব্যতিক্রমী প্রেক্ষাপটে। তবে সংবিধান পুনর্লিখনের মতো মৌলিক সংস্কার কেবল নৈতিক বৈধতার ভিত্তিতে সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক পরিসরের সর্বস্তরের সম্মতি। এখানে পদ্ধতিগত বৈধতার গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এটি নিশ্চিত করে যে গণপরিষদপন্থি সমর্থক থেকে শুরু করে সমালোচক পর্যন্ত সমাজের সকল অংশ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে, যার মাধ্যমে সকলের জন্য প্রযোজ্য শাসনব্যবস্থার ভিত্তি নির্ধারিত হয়।
এই প্রেক্ষাপটে, সাংবিধানিক গণপরিষদের দাবি বর্তমান সরকারের বৈধতাকে অস্বীকার নয়; বরং সেটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার একটি সচেতন ও গণতান্ত্রিক প্রয়াস। এটি সেই প্রবণতার প্রকাশ, যেখানে গণঅভ্যুত্থানের অসাধারণ শক্তিকে অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক কাঠামোয় রূপান্তর করার চেষ্টা করা হয়। সমালোচকেরা যাকে বৈপরীত্য হিসেবে দেখেন, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে এক সূক্ষ্ম ভারসাম্য হিসেবে প্রতিভাত হয়– একদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি, অন্যদিকে নিশ্চিত করা যে সাংবিধানিক পরিবর্তন একটি সম্মিলিত মালিকানার ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
তা সত্ত্বেও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন থেকে যায়– একটি নির্বাচিত সরকার কি একযোগে নিয়মিত শাসনকার্য পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ এবং সাংবিধানিক গণপরিষদের ভূমিকা পালন করতে পারে? বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর উত্তর হতে পারে স্পষ্টভাবে সদর্থক, যদি প্রক্রিয়াটি সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত, সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য এবং স্বচ্ছভাবে তদারকযোগ্য হয়।

এই উদ্দেশ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি জাতীয় রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো হতে পারে একটি বাস্তবসম্মত পথ। সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ অন্যান্য কমিশনের প্রস্তাবগুলো যদি বিএনপি ও অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিস্তৃত আলোচনার মাধ্যমে এবং ব্যাপক সম্মতির ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা যায়, তবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে নির্দিষ্ট একটি সময়সীমার মধ্যে–ধরা যাক ছয় থেকে বারো মাস–এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পষ্ট ম্যান্ডেট দেওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারের গণতান্ত্রিক বৈধতা কেবল নির্বাচনী বিজয়ের ওপর নয়, বরং এই সংস্কার রোডম্যাপ বাস্তবায়নের প্রতিও নির্ভর করবে। যদি সরকার এই লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার নৈতিক ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব যথার্থভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হবে, এবং সে পরিস্থিতিতে সরকারের পদত্যাগ অনিবার্য হয়ে উঠবে।

যদি এই জাতীয় রাজনৈতিক সমঝোতা প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয় এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের দ্বারা অনুমোদিত হয়, তবে তা একটি নৈতিকভাবে বাধ্যবাধকতামূলক চুক্তি হিসেবে কার্যকর হতে পারে। যদিও এটি কোনো সাংবিধানিক ধারার মতো আইনগতভাবে প্রয়োগযোগ্য নয়, তবুও এটি জনমত, গণমাধ্যমের স্বচ্ছতা এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থেকেও কার্যকর শক্তি অর্জন করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এই সমঝোতার ভিত্তিতে গৃহীত সংস্কার ও নির্ধারিত বাস্তবায়ন সময়সীমা নিয়ে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে পারে। একটি স্বাধীন তদারকি সংস্থা এই পুরো প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা যাবে এবং গণসার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ আরও সুদৃঢ় হবে।

এ প্রক্রিয়াকে বলা যেতে পারে শর্তসাপেক্ষ বৈধতার মডেল– যেখানে একটি নির্বাচিত সরকারের কর্তৃত্ব কেবল ব্যালট বাক্সে অর্জিত বিজয় থেকে নয়, বরং পূর্বঘোষিত সংস্কার এজেন্ডার কার্যকর বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতির ওপরও নির্ভরশীল। এই মডেল কল্পনাপ্রসূত বা অভিনব কোনোটি নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা, তিউনিসিয়া এবং নেপাল প্রত্যেকেই তাদের রাজনৈতিক রূপান্তরের সময় এ ধরনের কাঠামোর বিভিন্ন রূপ গ্রহণ করেছিল। এসব উদাহরণ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে বৈধতা কেবল কারা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত হয় না; বরং নির্বাচনের পর তারা কী করার ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছে, সেটিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, শর্তসাপেক্ষ বৈধতা একটি বাস্তবসম্মত পথ নির্দেশ করে, যা ভুল বিকল্পের ফাঁদ এড়িয়ে চলে। এটি যেমন সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে না, তেমনি সংস্কার ম্যান্ডেট ছাড়া তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের দিকেও ধাবিত হয় না। এটি একদিকে জনগণের পরিবর্তনের আহ্বানে সাড়া দেয়, অন্যদিকে গণতন্ত্রে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ বলতে সাধারণত যা বোঝানো হয়, তার প্রতিও পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।

এই প্রেক্ষাপটে, শর্তসাপেক্ষ বৈধতা কেবল একটি কৌশল নয়, বরং একটি বাস্তবভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাধান, যা একদিকে গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে সম্মান জানায়, অন্যদিকে সংস্কারকে সামষ্টিক সম্মতির ভিত্তিতে প্রোথিত করে। এর শক্তি নিহিত ‘নির্বাচন বনাম সংস্কার’ এই ক্লান্তিকর দ্বৈততার সুস্পষ্ট প্রত্যাখ্যানে। বাংলাদেশের প্রয়োজন উভয়ই– একটি নির্বাচন, যা জনগণের কণ্ঠকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে; এবং এমন একটি সংস্কার প্রক্রিয়া, যা নিশ্চিত করবে এই কণ্ঠ আর কখনও স্তব্ধ করা যাবে না। এই প্রেক্ষাপটে, একটি নির্বাচিত সরকারের শর্তসাপেক্ষ বৈধতা হতে পারে সেই কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য পথ, যা বহুল আলোচিত সাংবিধানিক গণপরিষদকে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলতে সক্ষম।

ড. কাজী এ এস এম নুরুল হুদা: সহযোগী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
 huda@du.ac.bd।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাইম এশিয়া শিক্ষার্থী হত্যা, ছাত্রদল মিডিয়া ট্রায়ালে লিপ্ত হয়েছে: উমামা ফাতেমা  
  • অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে রাজনীতিকদের কী লাভ?
  • যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ’লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান
  • গণপরিষদের বদলে সংস্কার বাস্তবায়নে সময়সীমা
  • যারা নির্বাচনের কথা বলে তারা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণি: ফরহাদ মজহার
  • রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ আবু সাঈদ ও জেন-জি নিয়ে প্রশ্ন
  • রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চাই
  • শুধু বিএনপির কথায় নির্বাচন হবে না: ইসলামী আন্দোলন