Samakal:
2025-04-23@05:59:04 GMT

আদালতের যুগান্তকারী রায়

Published: 28th, February 2025 GMT

আদালতের যুগান্তকারী রায়

নিরাপদ পানিকে মৌলিক অধিকার হিসাবে ঘোষণা দান-সংক্রান্ত আদালতের রায়টি যুগান্তকারী বলিয়া আমরা মনে করি। কারণ যেই পানি জীবন রক্ষার উপকরণ, উহাই বিশুদ্ধ না হইলে জীবন হরণেরও কারণ হইতে পারে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই বিষয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করিয়াছিলেন হাইকোর্ট। উক্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি হিসাবে বৃহস্পতিবার যেই রায় প্রদান করা হইয়াছে, উহার মাধ্যমে পানির অধিকার নিশ্চিত হইবে বলিয়া আমাদের প্রত্যাশা। রায়ের পর্যবেক্ষণে যথার্থই বলা হইয়াছে, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তি মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র এই অধিকার নিশ্চিত করিবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে জনপরিসরে বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহ বিষয়েও ব্যবস্থা লইবার তাগিদ আসিয়াছে এই রায়ের মাধ্যমে। আমরা মনে করি, রায়ের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হইল, দেশে যত পানির উৎস বিদ্যমান, সেগুলিকে দূষণের হস্ত হইতে রক্ষা করিবার নির্দেশনা প্রদান করা হইয়াছে। বস্তুত দেশের পানির অন্যতম উৎস নদীগুলির অবস্থা দূষণ-দখলে সঙ্গিন। খালবিল ও অন্যান্য জলাধারের পরিস্থিতিও তথৈবচ। আদালতের রায়ে বিশেষত তুরাগ নদ, সোনারগাঁও ও হাতিরঝিলের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করা হইলেও পানির উৎস হিসেবে নদী ও সকল জলাধার সংরক্ষণ করিতে হইবে।

আদালত ১০ বৎসরের মধ্যে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ এবং পানযোগ্য পানি সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে যেই নির্দেশ দিয়াছেন, উহাও জনগুরুত্বপূর্ণ। অযৌক্তিকভাবে বোতলজাত পানির মূল্য বৃদ্ধি করিবার বিষয়টি আমরা দেখিয়াছি। পানির অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাইয়া অনেকেই আন্দোলন করিয়াছেন; রাজপথে নামিয়া মানববন্ধনের ন্য়ায় কর্মসূচিও পালন করিয়াছেন। এমনকি ইতোপূর্বে পানি উৎপাদনে জড়িত একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেও বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্য প্রতিহত করা যাইতেছে না। আমরা বিশ্বাস করি, আদালতের নির্দেশ আমলে লইয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করিলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাইবে এবং প্রত্যেকের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পানি নিশ্চিত হইবে। 

ইহাতে সুফল আসিতে পারে, কারণ আদালতের এই রায়টি চলমান আদেশরূপে থাকিবে। দেশে পানির মূল্যে যেই বৈষম্য রহিয়াছে, উহাও রোধ করা জরুরি। বিশেষ করিয়া শহরের নাগরিকদের পানিবিষয়ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ-ওয়াসা এই বৈষম্য বহাল রাখিয়াছে; যথায় আবাসিক পর্যায়ে ঢাকা ওয়াসার এক সহস্র লিটার পানির মূল্য ১৫ টাকার অধিক, তথায় সমপরিমাণ পানির মূল্য চট্টগ্রাম ওয়াসায় ১৮ টাকা। খুলনা ওয়াসার একই পরিমাণ পানির মূল্য প্রায় ৯ টাকা। খুলনা শহর হইতে ২৫ কিলোমিটার দূরের চালনার বাসিন্দাদের কেবল এক লিটার পানির জন্যই গুনিতে হয় ৫০ পয়সা হইতে ১ টাকা। ওয়াসার পানি লইয়া আরও উদ্বেগের বিষয় হইল, এই পানি পান করিবার জন্য নিরাপদ–  নাগরিকরা এমনটা মনে করেন না। ইহাকে নিরাপদ করিতে পানি ফুটানো কিংবা অন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হয়। আবার দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের মানুষও সুপেয় পানির সংকটে রহিয়াছে। আদালতের রায় এই সকল ক্ষেত্রেও কার্যকর হওয়া উচিত বলিয়া আমরা মনে করি। সত্য, সংবিধানে মৌলিক অধিকাররূপে স্বীকৃত হইবার পরও সরকার সকলের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে নাই। তবে এই সকল বিষয়ে সচেতন মহল ধারাবাহিকভাবে সোচ্চার থাকিলে সংবিধান ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হইবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র পদ প ন ব যবস থ র জন য ন র পদ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পায়ে তেল মালিশে দূর হবে ঘুমের সমস্যা

ব্যস্ত জীবন এবং নানামুখী চাপের কারণে অনেকেরই রাতে ভালোভাবে ঘুম হয় না। এর ফলে সারাদিন ঝিমঝিম লাগে, কাজে মনোযোগের ঘাটতি হয়। কেউ কেউ ঘুম না আসায় গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। 

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য মানসিক চাপ কমানো এবং শান্তিপূর্ণ ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরামর্শ দেন। যারা ক্লান্তি, পায়ে ব্যথা, অনিদ্রা এবং মানসিক চাপের সমস্যায় ভুগছেন রাতে ঘুমানোর আগে তারা পায়ের তলায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন। এই পদ্ধতি ভালো ঘুমের সহায়ক হবে।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও, পায়ের তলায় তেল মালিশ করলে ভালো ঘুম হয়। পা মালিশ করলে শরীরে রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত হয়, যার ফলে শরীর আরাম বোধ করে। তবে কোন তেল পা মালিশের জন্য সবচেয়ে ভালো তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন আছে।

তিলের তেল

মানসিক চাপ এবং অনিদ্রা দূর করতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন এই তেল দিয়ে পায়ের তলায় ম্যাসাজ করুন। এতে থাকা টাইরোসিন অ্যামিনো অ্যাসিড সেরোটোনিন হরমোন বাড়ায়, যা এক ধরনের সুখ হরমোন। এই তেল দিয়ে পা মালিশ করলে মুড ভালো হয়। এর ফলে ঘুমও ভালো হয়। 

সরিষার তেল
আয়ুর্বেদে সরিষার তেল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলেও বলা হয়েছে। এই তেল দিয়ে পায়ে মালিশ করলে পেশি শিথিল হয় এবং রক্ত ​​সঞ্চালনের গতি উন্নত হয়। যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন পায়ে হালকা গরম সরিষার তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে আরাম বোধ করবেন। এই পদ্ধতি উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ দূর করতেও সহায়ক বলে বিবেচিত হয়।

ল্যাভেন্ডার তেল
এই তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি পায়ের ম্যাসাজের জন্য ব্যবহার করলে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। এই পদ্ধতি উদ্বেগ, মানসিক চাপ এবং ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে। অনিদ্রা দূর করার জন্য এটি অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক চিকিৎসা। এর পাশাপাশি, যারা অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি প্রতিকার হিসেবেও বিবেচিত। এই পদ্ধতি রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে।

নারকেল তেল
নারকেল তেল দিয়ে পায়ের ম্যাসাজ করলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং উদ্বেগ, বিষণ্ণতা এবং মাসনিক চাপের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পায়। এর পাশাপাশি, পেশি বা পায়ে ব্যথা থাকলে এই তেল লাগালে অনেক আরাম পাওয়া যাবে।

বাদাম তেল
বাদাম তেল দিয়ে পায়ের ম্যাসাজ করলে মানসিক চাপ দূর হয় এবং বিষণ্ণতা কাটিয়ে ওঠা যায়। মানসিক শান্তির জন্য, প্রতিদিন এই তেল দিয়ে আপনার পায়ের তলায় ম্যাসাজ করুন। এতে উপকার পাবেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ