Samakal:
2025-04-23@06:26:24 GMT

শ্বেতহস্তী পালন বন্ধ হউক

Published: 18th, January 2025 GMT

শ্বেতহস্তী পালন বন্ধ হউক

চাহিদা অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অত্যধিক হইবার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র নামক এক প্রকার শ্বেতহস্তী পালন করিতে হইতেছে বলিলে ভুল হয় না। কারণ চুক্তি অনুযায়ী এই সকল কেন্দ্র হইতে বিদ্যুৎ ক্রয় না করিয়াও পিডিবিকে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে একদিকে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায় অনাকাঙ্ক্ষিতরূপে, অন্যদিকে জনগণের উপর ইহার চাপ হ্রাসকল্পে ফি বৎসর ভর্তুকির পরিমাণ বর্ধমান। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, বর্তমানে চাহিদা অপেক্ষা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫৪ শতাংশের অধিক; যদিও এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ২০ শতাংশ। ইহার ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বৎসরে ১ লক্ষ ৩৩ সহস্র কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটস্থ হইয়াছে। সমস্যার এইখানেই ইতি ঘটে নাই। এই ক্রমবর্ধমান ব্যয় সামলাইতে সরকারকে উক্ত সময়ে অস্বাভাবিক হারে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করিতে হইয়াছে। দিন শেষে সরকারের ভ্রান্ত নীতির কাফফারা দিতে হইয়াছে সাধারণ জনগণকে। ২০০৯ সালে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ছিল প্রতি ইউনিট ৩ টাকা ৭৩ পয়সা, যাহা বর্তমানে ৮ টাকা ২৫ পয়সা। যাহা অধিকতর উদ্বেগজনক, বিশেষজ্ঞদের মতে, আরও দুই যুগের অধিক সময় দেশবাসীকে এই ঘানি টানিতে হইবে।

এহেন পরিস্থিতির পশ্চাতে বিগত সময়ে বিদ্যুৎ খাতে সম্পাদিত অসম চুক্তি, ভ্রান্ত নীতি ও অনিয়ম দায়ী হইলেও সকল কিছুর মূলে ছিল উক্ত সরকারের ভয়াবহ স্বজনতোষণ নীতি। বিষয়টি সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ইতোপূর্বে বহুবার প্রকাশিত হইয়াছে, বিগত সরকারের সময় স্থাপিত প্রায় সকল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্যোক্তাগণ ছিলেন হয় সরাসরি সরকারি দলের সহিত যুক্ত অথবা ঐ দলের আশীর্বাদপুষ্ট। উহাদের হীনস্বার্থেই একদিকে বিদ্যুতের চাহিদা না থাকিবার পরও নূতন নূতন বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন পাইয়াছে, অন্যদিকে চুক্তির শর্তে রাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল রাখিয়া এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে মানহীন যন্ত্রপাতিসম্পন্ন ও অস্বাভাবিক জ্বালানিখেকো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হইয়াছে। শুধু উহাই নহে, রীতিমতো আইন করিয়া উক্ত অনিয়মকে সুরক্ষা দিবার প্রয়াসও চালাইয়াছে তৎকালীন সরকার। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করিয়া সেই সকল অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি দফায় দফায় নবায়ন করা হইয়াছে। 

বিগত সময়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আয়োজিত বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি-সংক্রান্ত একাধিক গণশুনানিতে আমরা বিশেষজ্ঞদের তথ্য-উপাত্ত সহকারে বলিতে শুনিয়াছি, অলস থাকা বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকে ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান বন্ধের পাশাপাশি সিস্টেম লসরূপী চুরি প্রতিরোধ করিতে পারিলেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাসকরণ সম্ভব। এমনকি উক্ত উপায়ে ব্যয় সাশ্রয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে প্রতিবৎসর প্রদেয় ভর্তুকি হইতেও মুক্তি অসম্ভব নহে। কিন্তু সেই পথে হণ্টন না করিয়া উক্ত সরকার বরাবর লোকসান হ্রাসকরণের ‘সহজ’ পন্থাস্বরূপ মূল্য বৃদ্ধির অপ্রিয় সিদ্ধান্তই গ্রহণ করিত।

আমরা মনে করি, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের কল্যাণে বিদ্যুৎ খাতে জনবান্ধব নীতি-কৌশল অবলম্বনের সময় আসিয়াছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক বিগত সরকারের চুক্তি খতাইয়া দেখিবার জন্য জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি গঠনকে আমরা স্বাগত জানাইয়াছি। সমকালের সহিত আলাপচারিতায় কমিটির সদস্য এবং বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী যথার্থ বলিয়াছেন, কোনো পক্ষ ইচ্ছা করিলেই একটি চুক্তি বাতিল করা যায় না। তজ্জন্য যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ প্রয়োজন। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা হইতে মুক্তি যে সম্ভব– তাহা তিনি স্বীকার করিয়াছেন। বিশেষত পুরাতন ও অদক্ষ কেন্দ্র বাতিল, চুক্তি নবায়ন না করা, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নূতন কেন্দ্রের চুক্তি না করিয়া রিজার্ভ মার্জিন হ্রাসের ন্যায় যেই সকল পরামর্শ তিনি দিয়াছেন, সেইগুলির বাস্তবায়ন কঠিন নহে বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত সরক র সরক র র হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে ত্বকে টোনার ব্যবহার কেন জরুরি ?

গরমের দিনে ঘাম,ধুলা, দূষণে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় বাইরে বের হলে ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার খুবই জরুরি। এর পাশাপাশি এই মৌসুমে ত্বকের পরিচর্যায় স্কিন মিস্ট এবং স্কিন টোনার প্রয়োজন। ত্বকে আর্দ্র বজায় রাখতে সাহায্য করে এই দুই উপকরণ। এছাড়াও ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে এই দুই পদ্ধতি। বাড়িতেই খুব সহজে আপনি ফেস মিস্ট এবং স্কিন টোনার বানিয়ে নিতে পারবেন। তাহলে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে না। এই দুই পদ্ধতি র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফেকশন,ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, জ্বালাভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

যেভাবে বানাবেন ফেস মিস্ট ও টোনার 

গোলাপজল: বাজারে অনেক কোম্পানিরই গোলাপজল কিনতে পাওয়া যায়। বাড়িতে পানির মধ্যে গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে হালকা আঁচে বেশ খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে পানি ছেঁকে নিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন। মেকআপ করার আগে হোক, ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর, বাড়ির বাইরে থাকলেও তুলোর মধ্যে অল্প করে এই তরল স্প্রে করে নিয়ে ভালভাবে মুখ মুছে নিন। এতে ত্বক থাকবে আর্দ্র, মোলায়েম। ত্বকে আসবে সজীবতা। 

শসা, পুদিনা পাতা: ছোট ছোট টুকরো করে শসা কেটে নিন। পানির মধ্যে পুদিনা পাতা আর এই শসার টুকরো দিয়ে রেখে দিন স্প্রে বোতলে। ফেস মিস্ট হিসেবে দারুণভাবে কাজ করবে এই উপকরণ। অনেকে  ডিটক্স ড্রিঙ্ক হিসেবেও এই পানীয় খেয়ে থাকেন নিয়মিত। গরমের সময় এই পানীয় খেতে পারলে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং শরীরের ভিতরে জমে থাকা যাবতীয় টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। যার ফলে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হবে।

গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি : এই দু'ধরনের চায়ের টি-ব্যাগ পানিতে ফুটিয়ে নিন। চাইলে গরম পানিতে টি-ব্যাগ ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এরপর ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ছেঁকে স্প্রে বোতলে ভরে নিন। গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি থেকে থেকে দুই ধরনের তরল আপনি টোনার এবং ফেস মিস্ট দু'ভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন। এই উপকরণ ত্বকের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করবে । নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহারে ত্বক হবে আর্দ্র, মোলায়েম এবং উজ্জ্বল। ত্বকে সজীবতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই মিশ্রণ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ