Samakal:
2025-04-13@06:03:16 GMT

সতর্কতা ও নজরদারি জরুরি

Published: 20th, March 2025 GMT

সতর্কতা ও নজরদারি জরুরি

রা জধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জনপদ নারায়ণগঞ্জ হইতে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসাপ্রধান আতাউল্লাহসহ ১০ জনের গ্রেপ্তার যুগপৎ স্বস্তি ও উদ্বেগের বিষয়। আমরা জানি, মিয়ানমার হইতে বাংলাদেশে আশ্রিত জনগোষ্ঠীর একাংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়াইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীও এইভাবে দেশের কেন্দ্রীয় এলাকায় আসিয়া ঘাপটি মারিয়া থাকিবার বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ইহাও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত, আরসার একাংশ রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক অপহরণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সংশ্লিষ্ট। ২০২১ সালে রোহিঙ্গাদের জনপ্রিয় নেতা মহিবুল্লাহ হত্যায় আরসার নাম প্রচারিত হইবার পর রোহিঙ্গা শিবিরে তাহারা চাপে পড়ে। ফলে এই সময়ে সশস্ত্র সংগঠনটির শীর্ষ নেতার গ্রেপ্তার রোহিঙ্গাদের জন্যও খুশির বিষয়। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাংগঠনিকভাবে আরসা কোণঠাসা। কারণ উহারা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ হইয়া আরাকান আর্মির সহিত লড়াই করিয়া পরাস্ত। দলটির নেতারা যখন নূতন আশ্রয় খুঁজিতে বাংলাদেশে আসিয়াছে তখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাহাদের ধরিতে সক্ষম হইয়াছে। তবে উহাদের গ্রেপ্তার স্বস্তির বিষয় হইলেও শঙ্কা এখনও দূরীভূত হয় নাই।

অভিযোগ উঠিয়াছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ব্যবহারপূর্বক মিয়ানমার আর্মির চেকপোস্টে হামলা করাইয়াছিল আরসা। ইহার পর আরাকান আর্মির সহিত রাখাইনে সংঘাত আরম্ভ হইলে আরসাকে প্রলোভন দেখাইয়া ব্যবহার করে জান্তা সরকার। তাহাদের বলা হয়, আরাকান আর্মিকে পরাজিত করিতে পারিলে স্ব-ভূমিতে ফিরাইয়া আনা হইবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের। তবে জান্তা সরকার পরাজিত হইবার পর তথায় বেকায়দায় পড়ে আরসা ও সাধারণ রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক খুনোখুনি ও নানা অপরাধে আরসা নেতা আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে দুই ডজনের অধিক মামলা রহিয়াছে। ২০২২ সালে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রের নিকট মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হইয়াছিলেন সেনা গোয়েন্দা সংস্থার জনৈক কর্মকর্তা। ঐ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিও আতাউল্লাহ। 

এমন সময়ে আরসার শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হইয়াছে, যাহার কিছুদিন পূর্বেই প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করিয়া তাহাদের সহিত ইফতার করিয়াছিলেন। যথায় প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করিয়াছেন, রোহিঙ্গারা আগামী ঈদ তাহাদের জন্মভূমিতে করিতে পারিবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন লইয়া আশাবাদের সহিত তাহাদের খাবারের বরাদ্দ অর্ধেকে নামিয়া আসিবার দুঃসংবাদও রহিয়াছে। তবে রোহিঙ্গাদের অপরাধী কিংবা সন্ত্রাসী বানাইবার দায় আরসা উপেক্ষা করিতে পারে না। আমরা মনে করি, সাধারণ রোহিঙ্গারা শান্তিকামী। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক মাদক ও চোরাকারবারির যেই অপরাধের অভিযোগ, তাহার পশ্চাতে রহিয়াছে সশস্ত্র সংগঠন আরসা।
স্বাভাবিক কারণেই আরসা যদ্রূপ রোহিঙ্গাদের বন্ধু নহে, তদ্রূপ বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। তজ্জন্য সংগঠনটির প্রতি শূন্য সহিষ্ণুতা প্রদর্শন জরুরি। অস্বীকার করিবার উপায় নাই, রোহিঙ্গা শিবিরে আরসার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণেই রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয় ‘হোস্ট কমিউনিটি’ ও দেশব্যাপী এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈয়ার হইয়াছে। এমনকি রোহিঙ্গারা যখন নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হইয়াছে, তখন তাহাদের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অনুজ্জ্বল। এতদ্ব্যতীত আরসার কর্মকাণ্ডে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও হুমকির মুখে। সেই কারণেই সশস্ত্র সংগঠনটির প্রতি কোনো রকম দুর্বলতা প্রদর্শনের অবকাশ নাই।

এই আশঙ্কা অমূলক হইতে পারে না, বেকায়দায় থাকা আরসার অনেক নেতাকর্মী দেশব্যাপী ছড়াইয়া পড়িতে পারে। তজ্জন্য তাহাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখিতে হইবে। দেশ হইতে আরসার মূলোৎপাটন করিতে না পারিলে উহা নিরাপত্তা সংকট তৈয়ার করিবে। সীমান্তে আরসা শুধু নয়, তৎসহিত অপরাপর সশস্ত্র সংগঠনের দিকেও শ্যেনদৃষ্টি দিতে হইবে। কোণঠাসা আরসা নেতারা যখন নূতন আশ্রয় খুঁজিতেছে, তখন বাংলাদেশে যাহাতে তাহারা সেই সুযোগ না পায়, উহা নিশ্চিত করিতেই হইবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সশস ত র স গঠন ন আর ম র সহ ত আর ক ন অপর ধ আরস র হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানের দারফুরে আধা সামরিক বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত: জাতিসংঘ

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দারফুর অঞ্চলের দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থীশিবিরে টানা দুই দিন হামলা চালিয়েছে। এতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও ৯ জন ত্রাণকর্মী।

জাতিসংঘের সুদানে নিযুক্ত মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেনটাইন এনকুয়েটা-সালামি জানান, আরএসএফ এবং তাদের মিত্র মিলিশিয়ারা উত্তর দারফুরের প্রাদেশিক রাজধানী এল-ফাশের এবং তার আশপাশের জমজম ও আবু শোরুক শিবিরে হামলা চালায়।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শরণার্থীশিবির দুটিতে সাত লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের বসবাস। ওই অঞ্চলে অতীতের সংঘাতগুলোতে বাস্তুচ্যুত হয়ে তারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এনকুয়েতা-সালামি বলেন, গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার দুই দিন এই হামলা চলে। জমজম শিবিরে হাতে গোনা কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটিতে কাজ করার সময় ৯ জন ত্রাণকর্মী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার কর্মীরাও আছেন।

‘যাঁরা এ ধরনের কাজ করছেন, আমি তাঁদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাই—অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন’, বলেন এনকুয়েতা-সালামি।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা নিহত ত্রাণকর্মীদের নাম উল্লেখ করেননি। তবে সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানায়, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার ছয় চিকিৎসাকর্মী শুক্রবার জমজমে তাঁদের হাসপাতালে আরএসএফের হামলায় নিহত হন।

সংগঠনটি জানায়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক মাহমুদ বাবাকার ইদরিস এবং সংস্থাটির আঞ্চলিক প্রধান আদম বাবাকার আবদুল্লাহ। সংগঠনটি এই হামলাকে ‘অপরাধমূলক ও বর্বর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এর জন্য আরএসএফকে দায়ী করেছে।

রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল নিশ্চিত করেছে যে তাদের ৯ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। এই হামলা ছিল ‘সার্বিক স্বাস্থ্য অবকাঠামোর ওপর পরিকল্পিত হামলা’। সংস্থাটি জানায়, জমজম শিবিরের মূল বাজার ও শত শত অস্থায়ী ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।

বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি সুদানের যে পাঁচ এলাকায় দুর্ভিক্ষ শনাক্ত করেছে, তার মধ্যে অন্যতম জমজম ও আবু শোক। চলমান যুদ্ধ সুদানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট তৈরি করেছে। সেখানে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ-অর্থাৎ দেশের অর্ধেক জনগণ-চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে।

সেনাবাহিনী গত মাসে জাতীয় রাজধানী খার্তুম পুনর্দখল করার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরএসএফ এল-ফাশের শহরে হামলা জোরদার করেছে। এটি দারফুরে একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী, যা এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

এই মাসের শুরুতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আরএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে তারা নারী ও কিশোরীদের ওপর ‘ভয়াবহ’ যৌন সহিংসতা ও গণধর্ষণ চালিয়েছে, যা সুদানের গৃহযুদ্ধে তাদের কৌশলের অংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নববর্ষ উদযাপনে র‌্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, থাকবে মোবাইল কোর্ট
  • সুদানে আধা সামরিক বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত
  • সুদানের দারফুরে আধা সামরিক বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত: জাতিসংঘ
  • শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শ্রম আইন সংশোধনের দাবি আইবিসির