Samakal:
2025-04-28@16:12:38 GMT

শিল্প উৎপাদনে বিঘ্ন নহে

Published: 6th, March 2025 GMT

শিল্প উৎপাদনে বিঘ্ন নহে

গ্যাসস্বল্পতায় দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি শিল্প খাতে যেই সংকট দেখা দিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। বুধবার সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্যাসের জন্য শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হইতেছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় বিশেষ করিয়া পোশাকশিল্প কারখানায় উল্লেখযোগ্য যন্ত্রপাতি চলিতেছে না।

সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন করিতে না পারায় তাহারা আর্থিক লোকসানের শঙ্কায় রহিয়াছে। ইতোমধ্যে শতাধিক কারখানা বন্ধ হইয়াছে। কেহ কেহ বাধ্য হইয়া শ্রমিক ছাঁটাই করিতেছে। একদিকে বেকার হইয়া পড়া শ্রমিকরা বিবিধ দাবিতে প্রায় দিবসই সড়ক অবরোধ, ভাঙচুরসহ বিক্ষোভ করিতেছেন; অন্যদিকে উৎপাদন সমস্যায় পণ্য রপ্তানি হ্রাস পাইলেও বিদেশ হইতে কাঁচামাল আমদানি বর্ধমান। ইহার মধ্যে নূতন করিয়া কারখানার গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণকরণ প্রক্রিয়া শুরু হইয়াছে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাইলে নূতন বিনিয়োগ না আসিবার পরিস্থিতি তৈয়ার হইবে। আমরা মনে করি, গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ লইতে হইবে। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাইলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত পোশাকশিল্প মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছাইবে।

আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই গ্যাসের সমাধান জরুরি। গ্যাস সংকটের কারণে উদ্যোক্তাদিগের রপ্তানি আদেশ বাতিলের শঙ্কা উড়াইয়া দেওয়া যায় না। তেমনটি ঘটিলে কিংবা গ্যাস সমস্যার দ্রুত সমাধান না হইলে সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়িতে বাধ্য।

সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাক খাতে বর্তমানে শ্রমিক অসন্তোষ, তৎসহিত যুক্ত হইয়াছে গ্যাস সংকট। রাজনৈতিক পালাবদলের পর কিছু কারখানা মালিকের অনুপস্থিতিও শ্রমিক অসন্তোষ দানা বাঁধিতে ভূমিকা রাখিতেছে বলিয়া মনে করিতেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দাবিদাওয়া এবং অসন্তোষের আরেক কারণ ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ। জুলাই বিপ্লবের পর তৈরি পোশাক কারখানায় ধারাবাহিক অস্থিরতা, গ্যাস সংকটে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় উক্ত খাতে সংকট কাটিতেছে না। 

আমরা জানি, জ্বালানি হইল শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি। স্বাভাবিকভাবেই গ্যাস না থাকিলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। সাভার ও আশুলিয়ায় অধিকাংশ কারখানায় গ্যাস সংকটে উৎপাদন লাটে উঠিয়াছে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ প্রায় সর্বত্র শিল্পকারখানা গ্যাসস্বল্পতার ভুক্তভোগী। অনেক কারখানায় গ্যাসের পরিবর্তে ডিজেল ব্যবহার করিলেও উহাতে উৎপাদন ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পায়। রমজানের পূর্বে গ্যাসের চাপ কিছুটা থাকিলেও এখন সমস্যা আরও প্রকট। যাহা হতাশার, জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলিয়াছেন, শীঘ্রই গ্যাস সংকট দূর হইবে না। পূর্বে দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধান অপেক্ষা আমদানিতেই সরকারের আগ্রহ ছিল অধিক। সম্ভাবনা থাকিবার পরও দীর্ঘদিন ধরিয়া গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা করা হইয়াছে। ইহাতে গ্যাসের উৎপাদন হ্রাস পাইলেও চাহিদা প্রত্যহ ক্রমবর্ধমান এবং সংকট ঘনীভূত।

অত্র সম্পাদকীয় স্তম্ভেই আমরা বারংবার তাগাদা দিয়া বলিয়াছি, জরুরি ভিত্তিতে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করিতে হইবে, নতুবা অদূর ভবিষ্যতে দেশ গ্যাস সংকটে পড়িতে পারে। আমদানি করিয়াও সেই সংকটের সমাধান সম্ভব হইবে না। গ্যাস সমস্যার সমাধান না করিয়া উহার মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাশিত নহে।

আমরা দেখিয়াছি, নূতন করিয়া শিল্পের জন্য গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণের অধিক করিবার প্রস্তাবের উপর গণশুনানি হইয়াছে। পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলিয়াছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করিলে শিল্পের অস্তিত্বই কঠিন হইবে। গ্যাসের ক্ষেত্রে অনেক ‘সিস্টেম লস’ হইয়া থাকে। উহা হ্রাস করিতে পারিলে মূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজন হইবে না।

আমরা জানি, পোশাক রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে লইবার প্রচেষ্টা চলিতেছে। তজ্জন্য যথায় নূতন নূতন কারখানা স্থাপন ও পুরাতন কারখানার সম্প্রসারণ জরুরি, তথায় গ্যাস সংকটের কারণে এই শিল্পাঞ্চলে নৈরাজ্য গ্রহণযোগ্য নহে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হইবে শিল্পের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার  ঘা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হইয় ছ সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

চ‌ব্বিশ ঘণ্টার ম‌ধ্যে রইস হত্যাকারি‌দের গ্রেপ্তার দা‌বি

সংগঠ‌নের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সা‌বেক সভাপতি মোহাম্মদ রইস উদ্দিন হত‌্যার স‌ঙ্গে জ‌ড়িত‌দের চ‌ব্বিশ ঘন্টার ম‌ধ্যে গ্রেপ্তা‌রের দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ ইসলামী ছাত্রসেনা।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকে‌লে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাম‌নে অনু‌ষ্ঠিত বি‌ক্ষোভ এই কর্মসূচি থে‌কে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ দা‌বি ক‌রেন।

বক্তারা বলেন, আমা‌দের নেতা রইসের হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। মব জাস্টিসের কারণে এমন পরিস্থি‌তির শিকার হ‌য়ে‌ছেন তি‌নি। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে এক‌টি উগ্রবা‌দি অপশক্তি কাজ করছে। পুলিশের অবহেলাও র‌য়ে‌ছে।

তারা বলেন, ২০১৩ সালের নুরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় উগ্র গোষ্টি আবারও মাথাছাড়া দিয়ে উঠ‌ছে। তা‌রাই  নৃশংসভা‌বে রইস‌কে খুন ক‌রে‌ছে। তা‌কে যেভাবে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হ‌য়ে‌ছে তা মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। ২৬ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত ম্যাস গ্যাদারিং ফর প্যালেস্টাইন অনুষ্ঠান সফ‌লে ব্যাপক তৎপরতার কার‌ণে উগ্রবা‌দি গোষ্ঠী তা‌কে টা‌র্গেট ক‌রে।

ছাত্রসেনা ঢাকা নগর নেতা মোহাম্মদ আবুল হাসানের সভাপতিত্বে বি‌ক্ষোভ সমা‌বে‌শে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম, ক্যানসার গবেষক অধ্যক্ষ ডা. এস এম সরওয়ার, অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম, ইমাম হোসাইন রেজা, মাওলানা আলমগীর যুক্তিবাদী, কাজী মুহাম্মদ তৈয়ব আলী, কাজী জসিম উদ্দীন নুরী, রেহানে মুস্তফা, কবি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন জনি, তোফায়েল হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট নিয়াজ মোহাম্মদ লিংকন, বুলবুল আহমদ মোমেনশাহী প্রমুখ।

সমা‌বেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল বের ক‌রে। মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের গি‌য়ে শেষ হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ