Samakal:
2025-04-21@07:59:04 GMT

সর্বজনীন আনন্দের উৎসব

Published: 29th, March 2025 GMT

সর্বজনীন আনন্দের উৎসব

বৎসর ঘুরিয়া আবারও আসিল মুসলমানদিগের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। আজ শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল ঈদুল ফিতর; নতুবা উহা পালিত হইবে মঙ্গলবার। এই উপলক্ষে সমকাল পরিবারের পক্ষ হইতে গ্রাহক, পাঠক, সাংবাদিক, কর্মচারী, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সকল শুভানুধ্যায়ীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

বরাবরের ন্যায় ঈদুল ফিতর আসিয়াছে এক মাস সিয়াম সাধনার পর, যেইখানে ইবাদত বন্দেগির পাশাপাশি জীবন-যাপনে সংযম পালনই মূল কথা। আত্মশুদ্ধির এই সাধনাশেষে আসে বলিয়াই ঈদুল ফিতর মুসলমানদের নিকট নির্মল আনন্দের উপলক্ষ হইয়া দাঁড়ায়। রমজান মাসে শুধু আহারে-বিহারে সংযম পালন নহে, পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতার সৌকর্য দ্বারাও অভিষিক্ত হন একজন মুসলমান। ত্যাগ-তিতিক্ষা, উদারতা, বদান্য, মহানুভবতা ও মানবতারও বিশেষ প্রকার চর্চা হয় এই সময়ে। এই সকল গুণের প্রভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে গড়িয়া উঠে সকলের মাঝে নিজেকে বিলাইয়া দেওয়ার মানসিকতা, যাহার প্রতিফলন ঘটে ঈদের দিনে সকল শ্রেণিগত ও সামাজিক ব্যবধান ঘুচাইয়া সকলের এক কাতারে শামিল হইবার মধ্যে। ইহার ফলস্বরূপ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল প্রতিবেশীও এক অনন্য ভ্রাতৃত্ববোধে প্রাণে প্রাণ মিলায়। ঈদ উৎসব শুধু ধর্মীয় উৎসব থাকে না, হইয়া উঠে সর্বজনীন। সমাজে উগ্র চিন্তা এবং শুদ্ধ-অশুদ্ধের দ্বন্দ্ব আছে, সন্দেহ নাই। মূলত এই কারণে শুধু ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষদের উপর নহে, স্বীয় ধর্মের ভিন্ন জীবনাচরণ ও প্রার্থনারীতির অনুসারীদের উপরও বিগত সময়ে বহু দুর্ভাগ্যজনক হামলা আমরা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। তবে রমজানের প্রকৃত শিক্ষা অনুসরণ ও অনুশীলনের উপর গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে এই সংকটও নিরসন করা যায়; গড়িয়া তোলা যায় মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি। প্রকৃত প্রস্তাবে, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এই বিষয়টি জরুরি হইয়া পড়িয়াছে। উক্ত গণঅভ্যুত্থানে কেবল স্বৈরাচারী সরকারকেই বিদায় করা হয় নাই, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ, বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠারও অঙ্গীকার করা হইয়াছে।

প্রতি বৎসর রমজানকে সম্মুখে রাখিয়া একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর মধ্যে ভোক্তার পকেট কাটিবার প্রতিযোগিতা দুঃখজনক এক রীতি হইয়া দাঁড়াইয়াছিল। এইবারও বিশেষত রমজান মাস আরম্ভের পূর্বে এহেন দুঃখজনক প্রবণতা দেখা গিয়াছিল। তবে সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ অনেকাংশেই সেই প্রবণতা রুখিয়া দিয়াছে। চাউল, ভোজ্য তৈল এবং আরও দুই-একটা নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের বিষয়টি বাদ দিলে এইবার রোজাদারেরা মোটামুটি স্বস্তির সহিত মাসটি পার করিতে পারিয়াছেন। তবে নানাবিধ কারণে শিল্পক্ষেত্রে সংকট এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে উক্ত সময়ে বহু মানুষ যে চাকরি হারাইয়াছেন অথবা আয় হ্রাসের শিকার হইয়াছেন, উহাও স্বীকার করা প্রয়োজন। পরিবার-পরিজন লইয়া এই মানুষেরা যাহাতে আনন্দের সহিত ঈদ উদযাপন করিতে পারে, সেই ব্যাপারে সরকার ও সমাজের ধনাঢ্য অংশের সক্রিয় ভূমিকা আমরা প্রত্যাশা করি। উৎসবের আনন্দ প্রিয়জনের সহিত ভাগাভাগি করিতে রাজধানীসহ বড় বড় শহর হইতে এইবার যাহারা দূর-দূরান্তে ছুটিয়া যাইতেছেন তাহাদের ভোগান্তি নাই বলিলে চলে। আবার পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ইহাও সত্য, বিশেষত আর্থিক সংকট ও নিরাপত্তাহীনতাজনিত ভয়ের কারণে এইবার বহু মানুষ স্বগৃহে থাকিয়া যাইবার সিদ্ধান্ত লইয়াছেন। তবে আমাদের প্রত্যাশা, ঈদযাত্রার ন্যায় উৎসবশেষে কর্মস্থলমুখী মানুষদের যাতায়াতও যেন নির্বিঘ্ন থাকে।

আমাদের বিশ্বাস, ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ জরুরি সেবা কার্যক্রমসমূহ অতীতের ব্যত্য়য়ের অবসান ঘটাইয়া যথাযথভাবে চালু থাকিবে। বিশেষত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রয়োজনমতো চিকিৎসক, তাহাদের সহকারী এবং চিকিৎসাসামগ্রী থাকিবে। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষসমূহের ধারাবাহিক নজরদারির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীগণ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকিবেন– এই প্রত্যাশাও আমাদের।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র আনন দ রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি

বান্দরবানের রাজার মাঠে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান ও প্রাচীনতম উৎসব সাংগ্রাইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। 

গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে টানা সাত দিন। উৎসবজুড়ে ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন, নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বহুমাত্রিক বার্তা। মারমা সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি শুধু আনন্দ ও উদযাপনের নয়, বরং এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও সংস্কৃতির মিলনের এক অনন্য নিদর্শন।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। প্রধান অতিথি মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে পানি ছিটিয়ে উদ্বোধন করেন। 

এসময় বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 

মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, “মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব সাংগ্রাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন বছরের গ্লানি দূর করে নতুন বছরের আগমন উদযাপন করা হয়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আয়োজিত রাজার মাঠে মৈতা রিলং পোয়ে বা মৈত্রী পানি বর্ষণ যেখানে পানি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেন সবাই। সাংগ্রাই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, বরং সামাজিক বন্ধন, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্য রক্ষার প্রতীক। উৎসবের এই আয়োজনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে।”

সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্যরা বলেন, “সাংগ্রাই উৎসবের বিভিন্ন দিনে ছিল মারমা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, তরুণ-তরুণীদের পানি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের শেষ দিন ছিল সবচেয়ে রঙিন ও প্রাণবন্ত। রাজার মাঠে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকরাও।”

ঢাকা/চাইমং/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আরাকান আর্মির বাংলাদেশের আকাশীমা লংঘ‌নের প্রতিবাদ
  • অনুপ্রবেশ করে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে: জামায়াত
  • ‘বিপ্লবীরা মরে না তারা মৃত্যুঞ্জয়ী’
  • মরতেই যদি হয় বীরের মতো মরব, গাজায় নিহত আলোকচিত্রীর পোস্ট
  • মরতেই যদি হয়, তবে বীরের মতো মরব: মৃত্যুর আগে গাজার আলোকচিত্রীর পোস্ট
  • অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন, ভোট উৎসবে মাতলেন তারকারা
  • ‘মরতেই যদি হয়, তবে বীরের মতো মরব’
  • কান চলচ্চিত্র উৎসবে অ্যালিস
  • ‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বস্ত্রের প্রসার করতে হবে’
  • বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি