সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরীসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসাইন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াহইয়া চৌধুরীকে উত্তরা পশ্চিম থানায় আটক রাখা হয়েছে। তাঁর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়ে হত্যার অভিযোগে গত ১২ নভেম্বর ইয়াহইয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। প্রায় এক মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।

ইয়াহইয়া চৌধুরী ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে‌ছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসন‌টিতে নিজেদের প্রার্থী দেয়‌নি। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে‌ছিলেন। পরে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ওই আসন‌ জাতীয় পা‌র্টিকে ছেড়ে দিলেও নির্বাচিত হতে পারেননি ইয়াহইয়া। ওই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান।

আরও পড়ুনসিলেটের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার১২ নভেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অসুস্থ হওয়ার পরও খালেদা জিয়া স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করেননি: শামা ওবায়েদ

কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ সরকার বিষ প্রয়োগ করেছিল বলে শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) যখন হাসপাতালে ছিলেন, তখন ওনাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলেও আমরা শুনতে পেয়েছি। সেই অবস্থায় উনি আরও অসুস্থ হয়েছেন। সেই অসুস্থ হওয়ার পরেও উনি স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করেননি।’

ফরিদপুরে ইফতার পার্টি–পূর্ব এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন শামা ওবায়েদ। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আজ রোববার ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল হোসেন প্রমুখ।
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমাদের ১৫ বছর, ১৭ বছরের যে যুদ্ধ, যে কষ্ট, যে অত্যাচার, যে অনাচার, যে ত্যাগ, যে তিতিক্ষা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ যাঁরা করেছেন, আমি বলব গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। ওনাকে একটি মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ বিনা দোষে ছয় বছর জেল খাটতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ওনাকে (খালেদা জিয়া) ও ওনার পরিবারকে বারবার বলা হয়েছিল যে উনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, তাহলে ওনাকে জামিন দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।’

শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি বলে উল্লেখ করে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের মধ্যে ১৫ বছর যাঁরা ছিলেন না, যাঁদের আমরা দেখিনি, যাঁরা কখনো কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে ছিলেন না, তাঁদের ঘাড়ের ওপর সওয়ার হয়ে আওয়ামী লীগ ফিরে আসতে চাচ্ছে। আমাদের সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। সব রকম ষড়যন্ত্রের ঊর্ধ্বে থেকে আমাদের দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।’

বাংলাদেশ এখন ‘সবচেয়ে বড় বিপদ অতিক্রম করছে’ মন্তব্য করে বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সবচেয়ে ক্রান্তিকাল আমরা পার করছি। এখনো আমরা ভোটাধিকার পাইনি। আমরা এখনো একটা ভোট দিতে পারিনি। নির্বাচন ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই দাবি থাকুক, হাসিনামুক্ত, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আর কোনো নারী নির্যাতন চাই না। আর কোনো অত্যাচার ও অনাচার চাই না। আর কোনো ডাকাতি চাই না। আর কোনো খুন–গুম দেখতে চাই না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ