Samakal:
2025-03-17@22:00:45 GMT

সরকার অধোমুখে বসিয়া থাকিবে?

Published: 17th, March 2025 GMT

সরকার অধোমুখে বসিয়া থাকিবে?

বিগত সরকারের আমলে চাউলের বাজারে যেই চালবাজি শুরু হইয়াছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও তাহা অব্যাহত থাকিবার অভিযোগ হতাশাজনক। ঢাকার কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার পরিদর্শনের ভিত্তিতে সোমবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদন বলিতেছে, প্রকারভেদে প্রতিকেজি চাউলের দর ২ হইতে ৭ টাকা বৃদ্ধি পাইয়াছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যও বলিতেছে, বাজারে গত এক বৎসরে মিনিকেট চাউলের দর বৃদ্ধি পাইয়াছে প্রায় ১৩ শতাংশ, যাহা মাঝারি চাউলের ক্ষেত্রে প্রায় ১৪ এবং মোটা চাউলের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ। নূতন করিয়া চাউলের দর যখন বৃদ্ধি পাইয়াছে তখন সার্বিক জীবনযাত্রার ব্যয় সিংহভাগ মানুষের অন্যতম শিরঃপীড়ার কারণ হিসাবে রহিয়া গিয়াছে। তাহাদের প্রকৃত আয়ও হ্রাস পাইয়াছে। মনে রাখিতে হইবে, বিশেষত মধ্যবিত্ত পরিবারসমূহের খাদ্যাভ্যাসে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটিলেও, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলি প্রায় সম্পূর্ণ ভাতের উপর নির্ভরশীল। তাহাদের আয়ের বৃহৎ অংশটা খাদ্যের পশ্চাতেই ব্যয় হয়। ফলে চাউলের বাজারে এহেন অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে নানা কারণে অস্থির হইয়া উঠা সমাজে তো বটেই, রাজনীতিতেও পড়িতে পারে।

আমরা জানি, বন্যার কারণে আউশ উৎপাদনে বহুলাংশে ধস নামিলেও সাম্প্রতিক আমন ফসল ভালো হইয়াছে। পাশাপাশি চাউলের আমদানিও যথেষ্ট। প্রতিবেদনমতে, চলমান অর্থবৎসরের গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সাড়ে ৮ মাসে মোট প্রায় ছয় লক্ষ টন চাউল আমদানি হইয়াছে। অন্যদিকে, আগামী এপ্রিলের শেষ দিকে বাজারে আসিবে বোরো ধান, যখন দেশের বাৎসরিক চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই ধান মজুতকারীদের এই সময়েই গুদাম শূন্য করিবার কথা। কিন্তু বিস্ময়কর, বাস্তবে তাহা ঘটিতেছে না। উপরন্তু, আমদানীকৃত চাউল একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাজারে ছাড়িবার বিধান থাকিলেও তাহা লঙ্ঘিত হইতেছে বলিয়া অভিযোগ। ঊর্ধ্বমুখী চাউলের বাজার লইয়া পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, মিলার এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে পরস্পরকে দোষারোপ করিবার প্রবণতাও লক্ষণীয়। দুঃখজনক হইল, নানা কারণে বিগত সরকারের সময়ে সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত এই সকল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জোরালো ও ধারাবাহিক কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হইতেছে বলা যায় না, যদিও সকল প্রকার সিন্ডিকেট ভাঙার ঘোষণা দিয়াই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দাবি করিয়াছেন, রমজানে বাজার তদারকি কয়েক গুণ করা হইয়াছে। অথচ বাস্তবে বিশেষত পাইকারি পর্যায়ে কিছু বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত অভিযান দেখা গেলেও উহার কোনো প্রভাব বাজারে পড়িতেছে না। সরকার আইন করিয়া দিয়াছে, যে বস্তায় চাউল আমদানি হইবে সেই বস্তাভর্তি চাউলই বাজারে আনিতে হইবে, যাহাতে আমদানীকৃত চাউল মজুতদারির শিকার না হয়। কিন্তু ওই প্রকারের কোনো বস্তা বাজারে দেখা যাইতেছে না বলিয়া সমকালের প্রতিবেদনেই বলা হইয়াছে। তাহা হইলে অভিযানটা কোথায় চলিতেছে?

বেসরকারি পর্যায়ে চাউল আমদানিকে উৎসাহ দিবার জন্য ব্যাপক হারে শুল্ককর হ্রাস করা হইয়াছে। ইহার সুফল যদি ভোক্তার পরিবর্তে আমাদানিকারকদের উদরে যায়, তাহা হইলে এই রাজস্ব সংকটের কালে উক্ত শুল্ককর ছাড়ের হেতু কী? আমাদের প্রত্যাশা, বাজারে প্রধান খাদ্যপণ্যটির যথেষ্ট সরবরাহ নিশ্চিত করিবার জন্য সরকার অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি সিন্ডিকেটবাজি বন্ধের কার্যক্রমও চালাইবে। ঊর্ধ্বমুখী চাউলের বাজার মোকাবিলায় সরকার অধোমুখে বসিয়া থাকিবে না।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ উল র ব জ র আমদ ন সরক র হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

টম ক্রুজের চেয়ে বেশি আয়, কে এই কমেডিয়ান

কিছুদিন আগেই ২০২৪ সালে হলিউডের সবচেয়ে বেশি আয় করা তারকাদের তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস সাময়িকী। এতে অনুমিতভাবেই শীর্ষে আছেন ডোয়াইন জনসন। তবে চমকে দিয়েছেন এক কমেডিয়ান। তাঁর আয় টম ক্রুজ, হিউ জ্যাকম্যানদের মতো তারকাদের চেয়েও বেশি!

‘রেড ওয়ান’, ‘মোয়ানা ২’ দিয়ে গত বছরটা নিজের করে নিয়েছেন ডোয়াইন জনসন। ৮৮ মিলিয়ন ডলার আয় নিয়ে তিনি আছেন তালিকার শীর্ষে। ৮৫ মিলিয়ন ডলার আয় নিয়ে দুইয়ে আছেন রায়ান রেনল্ডলস।

তালিকার তিনে চমক। এখানে জায়গা হয়েছে মার্কিন কমেডিয়ান, অভিনেতা কেভিন হার্টের। তাঁর গত বছরের আয় ছিল ৮১ মিলিয়ন ডলার।

কেভিন হার্ট। রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ