2025-04-15@16:40:30 GMT
إجمالي نتائج البحث: 76

«য হইত»:

    আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ উনিশ-বিশ শতকের বাঙালি সারস্বত-সমাজের প্রথিতযশা পুরুষ। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ পূর্বসূরিদের মধ্যে তিনিই প্রথম বাঙালি মুসলমান, যিনি সর্বমহলে পণ্ডিতরূপে স্বীকৃতি ও সমাদর পেয়েছিলেন।  সাহিত্যবিশারদের জন্ম ১৮৭১ সালে, মতান্তরে ১৯৬৯ সালে কর্ণফুলীর দক্ষিণে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সুচক্রদণ্ডী গ্রামে। আবদুল করিমের শৈশব-কৈশোর কেটেছিল মূলত হিন্দু-মুসলমানের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরুর বহু আগে একটি অসাম্প্রদায়িক পরিবেশে। এ সম্পর্কে তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘সূচকদণ্ডী পটিয়া থানাসংলগ্ন একটি বর্ধিঞ্চু গ্রাম। ৩০–৩৫ ঘর মুসলমান ছাড়া এই গ্রামের সবাই হিন্দু। তন্মধ্যে ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থই প্রধান। তাঁহাদের মধ্যে উচ্চশিক্ষিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিধারী অনেক লোক আছেন। মুসলমানদের মধ্যে একঘর ভিন্ন আর শিক্ষিত লোক নাই।’ সাহিত্য-সাধক-চরিতমালার অন্তর্গত সাহিত্যবিশারদের জীবনীতে (খণ্ড ২২, ১৪১২ সং) পাওয়া যায়, ‘লেখাপড়া চর্চার পারিবারিক ঐতিহ্যের মধ্যে আবদুল করিম বেড়ে ওঠেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে আরবি-ফারসি চর্চার পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি...
    প্রতি বৎসরের ন্যায় এইবারও রাজধানীতে বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হইতে যাইতেছে। উপরন্তু, অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীতে এইবারের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করিয়া এক ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ আয়োজনের প্রস্তুতি লইতেছে। বিশেষত ইহাতে বাঙালির পাশাপাশি পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের বিশেষ উপস্থিতি ঘটাইবার চেষ্টা চলিতেছে। স্বাভাবিকভাবেই সর্বমহল উক্ত সরকারি প্রয়াসের প্রশংসা করিতেছে। তবে দুঃখজনকভাবে, এইবারের বাংলা বর্ষবরণও যেন বিতর্ক এড়াইতে পারিতেছে না। বিতর্কের সূত্রপাত ঘটিয়াছে পহেলা বৈশাখের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আয়োজিত শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন ঘিরিয়া। শনিবার প্রকাশিত সমকালের সংবাদ অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত অনুষদের ডিনের ঘোষণা অনুসারে মঙ্গল শোভাযাত্রার নূতন নাম হইতেছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হইতে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান– সর্বত্র ইহা লইয়া চলিতেছে আলোচনা-সমালোচনা। শুধু উহা নহে, প্রতিবেদন অনুসারে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি হিসাবে নানা আকারের মুখোশ, মাটির সরায় রঙের আঁচড়...
    দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ কিছুতেই বন্ধ হইতেছে না। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গল ও বুধবার দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়াছে। যাহার মধ্যে তিনটিই ঘটিয়াছে এক দিনে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর রায়পুরায় দুই স্কুলছাত্রী ঘুরিতে গিয়া আটজন দ্বারা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হইয়াছে। একই দিন মধ্যাহ্নে নরসিংদীরই শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের কুন্দারপাড়া গ্রামে এবং রাত্রিকালে নেত্রকোনার আটপাড়ায় ১২ বৎসর বয়সী দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়। বুধবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চকলেটের প্রলোভন দেখাইয়া ৫ বৎসরের এক শিশুকে ধর্ষণ করা হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ। একই দিনে পিরোজপুরের নাজিরপুরে পুত্রবধূকে ঘুমের ঔষধ খাওয়াইয়া ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা হইয়াছে। শুধু ধর্ষণ নহে; পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাতিলাখালী এলাকায় বুধবার ১১ বৎসরের শিশুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে...
    এক যুগেরও অধিক সময় পূর্বে হালদা নদীর ফটিকছড়িতে ‘রাবার ড্যাম’ স্থাপনের ক্ষেত্রে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কথা হইলেও উহাই এখন কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হইয়াছে। কেবল তাহাই নহে, বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উক্ত স্থাপনার কারণে খোদ নদীটিই শুষ্ক হইয়া মৃতবৎ। শুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকায় মিঠাপানির মৎস্যের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে। তদুপরি পানি সংকটে দীর্ঘ এলাকাব্যাপী সেচও ব্যাহত হইতেছে। অর্থাৎ রাবার ড্যামের নেতিবাচক প্রভাব উহার উজান ও ভাটি উভয় এলাকায় ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান।  আমরা জানি, পার্বত্য চট্টগ্রামের বদনাতলী পর্বত হইতে উৎপন্ন হইয়া হালদা নদী ফটিকছড়ির মধ্য দিয়া চট্টগ্রামে প্রবেশ করিয়াছে। এশিয়ার অন্যতম মিঠাপানির এই মৎস্য প্রজননক্ষেত্রের ফটিকছড়ি অংশ পানিশূন্য হইবার কারণে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়িয়াছে। উহার দুই তীরের বাসিন্দাদের চাষাবাদ ও পানি সংকটও চরমে উঠিয়াছে। ফটিকছড়িতে হালদা নদীর পানিশূন্যতার জন্য...
    শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যেই উদাহরণ তৈয়ার করিয়াছিল, উহা এখন ঝুঁকিতে পড়িয়াছে। সোমবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়াছে। ১০ মাস ধরিয়া অনেক কেন্দ্রে বিনামূল্যের ঔষধ মিলিতেছে না। এমনকি সন্তান প্রসব-পূর্বকালে জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ। মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসের লক্ষ্যেই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করা হইয়াছিল। নিম্ন আয়ের অধিকাংশ নাগরিক এই সকল কেন্দ্র হইতে সেবা গ্রহণ করিয়া আসিতেছিল। বর্তমানে যেইভাবে কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হইতেছে, উহাতে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধির স্পষ্ট ঝুঁকি তৈয়ার হইয়াছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে যেইখানে দেখা যাইতেছে দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুহার বৃদ্ধি পাইয়াছে, গত ১০ মাসের চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতায় পরিস্থিতির অবনতি হইবে বলিয়াই আমাদিগের আশঙ্কা। বস্তুত ইউনিয়ন পর্যায়ে...
    সাম্প্রতিক ঈদুল ফিতরের ছুটির সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুধু ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনার যেই চিত্র রবিবার সমকাল তুলিয়া ধরিয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। রাজধানীর দুইটি এবং ঢাকার বাহিরের আট বিভাগীয় শহরের বিশেষায়িত আটটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করিয়া সমকাল জানাইয়াছে, ঈদের ছুটির এই  চার দিবসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৩২ শতাংশের অধিক ছিলেন ব্যাটারিচালিত রিকশার যাত্রী, যাহা একই সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহতদের প্রায় সমান। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সংগৃহীত তথ্য বলিতেছে, গত ঈদুল আজহায় সড়কে সর্বাধিক দুর্ঘটনার কারণ ছিল মোটরসাইকেল; ৫১ শতাংশের অধিক। এইবারের ঈদুল ফিতরে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে মোটরসাইকেলের স্থান আশঙ্কাজনকভাবে দখল করিয়াছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্লেখ্য, প্রতিবেদন অনুযায়ী, উক্ত সময়ে হাসপাতালে আগত ২৫.৫ শতাংশ আহত রোগীর দুর্ঘটনার কারণ নিবন্ধন বহিতে উল্লেখ করা হয় নাই। অর্থাৎ উক্ত...
    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ব্যাংককে শুক্রবার অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটিকে আমরা ইতিবাচক বলিয়া মনে করি। বিশেষত দক্ষিণ এশীয় ভ্রাতৃত্ববোধ গড়িয়া তুলিবার ক্ষেত্রে ইহা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বিবেচিত হইতে পারে। প্রথমত, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী রাষ্ট্রসমূহের জোট বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হইল, যখন বিশেষ কিছু কারণে–যাহার জন্য কোনো দেশই এককভাবে দায়ী নহে–দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্ক প্রায় তলানিতে ঠেকিয়াছিল। অথচ দুই দেশেরই শীর্ষ নেতারা মনে করিয়া থাকেন, ভারত ও বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিকভাবে নহে, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনেও আবদ্ধ। অতএব, শুক্রবারের বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কে জমাটবদ্ধ বরফ গলাইতে সহযোগিতা করিতে পারে। দ্বিতীয়ত, বহু বৎসর যাবৎ ধরিয়া দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সংহতি ও সহযোগিতা চ্যালেঞ্জের মুখে রহিয়াছে। বিশেষ করিয়া ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের...
    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানির উপর নূতন শুল্ক আরোপের যেই ঘোষণা দিয়াছেন, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা জানি, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করিয়া থাকে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্যটির শীর্ষ গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ২ এপ্রিল ঘোষিত ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের এই পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখন শুল্কহার হইবে ৫২ শতাংশ, যা এতদিন ছিল ১৫ শতাংশ। ফলে আগামী দিনগুলিতে আমাদের তৈরি পোশাক খাতে অপ্রত্যাশিত চাপ সৃষ্টি হইবে। বিশেষত যেই সকল কারখানা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেই রপ্তানি করিয়া থাকে, তাহাদের বড় সংকটে পড়িবার শঙ্কা রহিয়াছে।  এই অতিরিক্ত শুল্ক এমন সময়ে আরোপিত হইল, যখন রাজনৈতিক পালবদলজনিত অস্থিরতার সহিত জ্বালানি সংকটের কারণে আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প বেশ চাপে রহিয়াছে। এই সংকট হইতে উত্তরণে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে...
    প্রতি বৎসর ঈদের ছুটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর যেই ‘রেকর্ড’ সৃষ্টি হয়, উহা উদ্বেগজনক। ঈদুল ফিতরের ছুটির কয়েক দিনে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানির খবর সংবাদমাধ্যমে আসিয়াছে। সর্বাপেক্ষা ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটিয়াছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে; লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় পরপর তিন দিন দুর্ঘটনায় ১৫ প্রাণ ঝরিয়া গিয়াছে। স্থানটি ছয় কারণে মৃত্যুকূপ হইয়া উঠিয়াছে বলিয়া সমকালের প্রতিবেদনে উঠিয়া আসিয়াছে। আমরা বিস্মিত, উক্ত এলাকায় বারংবার দুর্ঘটনা ঘটার পরও সতর্কতা কিংবা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই!  দেশে স্বাভাবিক সময়েই সড়কে অনেক প্রাণ ঝরিয়া থাকে। ঈদের সময় যাতায়াত বৃদ্ধির কারণে দুর্ঘটনাও সমগতিতে বৃদ্ধি পায়। তবে প্রতি বৎসর রাজধানী কিংবা অন্যান্য শহর হইতে ঈদযাত্রায় যেই ভোগান্তি আমরা দেখিয়া আসিয়াছি, সেইদিক হইতে এইবার ঈদযাত্রা ছিল বহুলাংশে স্বস্তিদায়ক। তজ্জন্য সড়ক দুর্ঘটনাও নিয়ন্ত্রণে আসিবে বলিয়া আমাদের প্রত্যাশা থাকিলেও পূর্বের ন্যায় দুর্ঘটনা ও...
    ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিরাজমান অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্য লইয়া শুক্রবার সমকাল যেই সংবাদ দিয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছয়টি জেলা সংযুক্তকারী আড়াই শত কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কের অন্তত ৩০টি পয়েন্টে পুলিশ অর্ধশতাধিক চক্রের সন্ধান পাইয়াছে, যাহারা যাত্রীবাহী বাসে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করিয়া চলিয়াছে নিরন্তর। প্রায়শ আমদানি-রপ্তানির পণ্যও গায়েব করিয়া দেয়। প্রসঙ্গত, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক পণ্যবোঝাই যানবাহনের প্রায় শতভাগ এই মহাসড়ক ব্যবহার করিয়া থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়া আমদানি হওয়া পণ্যেরও ৭০ শতাংশ পরিবহন হয় এই পথে। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‍্যাব প্রদত্ত তথ্য বলিতেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় অর্ধশত পণ্য চুরির ঘটনা ঘটিয়া থাকে। সেই হিসাবে বৎসরে পাঁচ শতাধিক চুরির ঘটনা ঘটে। এহেন পরিস্থিতি উক্ত মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের জানমালের নিরাপত্তাহীনতাই শুধু প্রতিফলিত করে না; বিশেষত ব্যবসায়ীদের মধ্যেও নানাবিধ শঙ্কার জন্ম দেয়। এহেন ডাকাতির...
    দেশে নূতন করিয়া পক্ষী জ্বর তথা ‘বার্ড ফ্লু’ শনাক্তের খবর যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, যশোরের সরকারি একটি মুরগির খামারে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হইয়া দুই সহস্রাধিক মুরগির মৃত্যু হইয়াছে। সাত বৎসর পর পুনরায় এই ভাইরাসের সংক্রমণে স্বাভাবিক কারণেই খামারিরা উদ্বিগ্ন। ২০০৭ সালে দেশে প্রথমবার যখন বার্ড ফ্লু দেখা গিয়াছিল, ঐ বৎসর ১০ লক্ষাধিক মুরগি মারিয়া ফেলা হইয়াছিল। আমরা জানি, এই জ্বর মানবদেহেও সংক্রমিত হইতে পারে। যদিও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর অভয় দিয়াছে– এইবারের ফ্লু প্রাথমিক অবস্থায় থাকিবার কারণে মানুষের আক্রান্ত হইবার আশঙ্কা কম। আমরা মনে করি, ইহাতে নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না; বরং ফ্লু প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। স্বস্তির বিষয় হইল, শনাক্তের অব্যবহিত পরই বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রস্তুতি গ্রহণ করিয়াছে সরকার। নাজুক পোলট্রি খামারিদের...
    ‘ছুটি! ছুটি!’ আনন্দে উদ্বাহু হয়ে সে কি দৌড় রাজার। শুন্ডির রাজা। ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির শুন্ডি। ছুটি কেমন নিশ্চয় তার শ্রেষ্ঠ একটা চিত্রকল্প এই সাদাকালো দৃশ্যটা। চিরকালীন। শুন্ডি রাজ্য সব মানুষের আছে। সব মানুষ শুন্ডির রাজা। ছুটি চায়। যদি পায় ওই।–আনন্দে উদ্বাহু হয়ে দে দৌড়! জীবন থেকে ছুটি পেয়ে দৌড় দেওয়ার কথা বলছি না। জগতে আছি, জাগতিক থাকি। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি/ আহা হা হা হা।– আহা, ওহো, ওরে, হায় হায়– রবীন্দ্রনাথের আগে পরে বাংলা গানে তেমনভাবে নাই। কিছু জিনিস মনে হয় শুধু রবীন্দ্রনাথে থাকলেই ভালো।–কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়। যায় চলে যায় বসন্তের দিন। এই সময় ঈদের ছুটি পড়েছে। নয় দিনের ছুটি। মুস্তফা সিলুক বানায়। সে একটা সিলুক দিয়েছে, : যে...
    ঔষধ শিল্পসংশ্লিষ্টরা যাহাতে অকস্মাৎ ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি করিতে না পারেন, তজ্জন্য চিকিৎসা সামগ্রীর মূল্য ধার্য করিয়া দেওয়ার দাবি অনেক দিনের। আমরা দেখিয়াছি, ইতোপূর্বে ঔষধের মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধির ফলে রোগীরা সংকটে পড়িয়াছেন। জীবন রক্ষাকারী শতাধিক ঔষধের মূল্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকিলেও অবশিষ্টগুলি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানই ধার্য করিয়া দেয়। সেই কারণেই স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করিতে সকল প্রকার ঔষধের মূল্য সরকার হইতে ধার্য করিয়া দেওয়ার দাবি জোরালো হইয়াছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের জনমত জরিপে। বুধবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই জরিপে ঔষধের মূল্যসহ স্বাস্থ্য খাতের মানোন্নয়নে ১১ প্রকার পদক্ষেপের কথা বলিয়াছেন অংশগ্রহণকারীরা। দেশের স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার যেই কমিশন গঠন করিয়াছে, সেই কমিশনের জন্যই বিবিএস এই জরিপ করিয়াছে, যথায় আরও দেখা যাইতেছে, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা লইয়া মানুষ সন্তুষ্ট নহে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যয়বহুল। তথায়...
    আজ আমাদের ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস। পাকিস্তানি প্রায়-ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণবিরোধী ২৩ বৎসরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়, বিশেষত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরীহ বাঙালির উপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরিচালিত বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে, একই বৎসরের এই দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। ইহার ধারাবাহিকতায় প্রায় ৯ মাসব্যাপী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ মানুষের শহীদি আত্মদান এবং দুই লক্ষাধিক নারীর অপরিসীম নির্যাতন ভোগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে বাংলাদেশ উচ্চ শিরে আপন অস্তিত্ব ঘোষণা করে বিশ্ব-মানচিত্রে। এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা মাতা-ভগিনি এবং স্বজন হারানো পরিবারসমূহকে। মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সকল সেক্টর কমান্ডারসহ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের। তাহাদের ঋণ আমরা কোনোদিন ভুলিতে পারিব না।  ইহা অনস্বীকার্য, বিশেষ কিছু মহল ব্যতীত জাতি-ধর্ম-বর্ণ...
    বাংলাদেশ যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করিলেও প্রাণঘাতী এই রোগ অদ্যাবধি নির্মূল করিতে পারে নাই। এহেন পরিস্থিতির মধ্যে যখন যক্ষ্মা নির্মূলে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থায়ন বন্ধ হইয়া যায় তখন নূতন উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। সোমবার সমকাল জানাইয়াছে, গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে নূতন সরকার ক্ষমতাসীন হইবার পর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বন্ধ হইয়া গিয়াছে ইউএসএআইডির অর্থায়ন। ইহার নেতিবাচক প্রভাব পড়িয়াছে যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়, প্রতিরোধ ও চিকিৎসায়। বন্ধ হইয়া গিয়াছে বেসরকারিভাবে পরিচালিত রোগ শনাক্তকরণ, গবেষণা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড। হাসপাতালে মিলিতেছে না ঔষধপ্রতিরোধী যক্ষ্মার সেবা। ইহাতে যক্ষ্মার নূতন ঝুঁকিতে পড়িতে যাইতেছে বাংলাদেশ। এহেন উদ্বেগের কারণ হইল, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এখনও শনাক্তের বাহিরে ১৭ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী। এই সকল রোগী নিজেদের অজান্তেই অতি সংক্রামক যক্ষ্মার জীবাণু প্রসারে ভূমিকা রাখিতে পারেন। অন্যদিকে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি...
    আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলির মধ্যে নাগরিকের সর্বাপেক্ষা নিকটে থাকে বলিয়া পুলিশের জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও সর্বাধিক। বর্তমানে এহেন কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়িয়াছে বলিয়াই প্রতীয়মান। রবিবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়িয়াছে। আমরা বিস্মিত, গত বৎসর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভাঙিয়া পড়া পুলিশি ব্যবস্থা স্বাভাবিক হইতে যথায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম বৃদ্ধি জরুরি ছিল, ততায় উহা বন্ধ রহিয়াছে! পুলিশের সহিত জনগণের দূরত্ব বৃদ্ধির কারণেই যে আইন প্রয়োগ করিতে গিয়া বাহিনীটিকে বারংবার বাধার মুখে পড়িতে হইতেছে– উহা অস্বীকার করা যাইবে না। আমরা জানি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহিত পুলিশের সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়া আস্থার সম্পর্ক গড়িয়া তুলিতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘কমিউনিটি পুলিশিং’ কিংবা ‘বিট পুলিশিং’ প্রবর্তিত হইয়াছিল। জনসাধারণের সহিত মতবিনিময়ে সূচিত হইয়াছিল ‘ওপেন হাউস ডে’। কিন্তু পূর্বের শাসনামলে স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী...
    শনিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে রাজধানীর পদচারী পথ তথা ফুটপাতে চাঁদাবাজির যেই চিত্র ফুটিয়া উঠিয়াছে, উহা শুধু উদ্বেগজনক নহে; বিস্ময়করও বটে। বিষয়টি উদ্বেগজনক, কারণ একদিকে এহেন চাঁদাবাজির কারণে সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় বলিয়া চূড়ান্ত মাশুল গুনিতে হয় পদচারী পথে বিক্রীত সামগ্রীর ক্রেতাসাধারণকে– যাহাদের প্রায় সকলেই নিম্নআয়ের মানুষ। অন্যদিকে এই অবৈধ টাকার মূল ভাগীদার দুর্বৃত্ত রাজনীতিকেরা– যাহাদের দৌরাত্ম্যই বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটের অন্যতম কারণ। আর বিষয়টি বিস্ময়কর, কারণ গণঅভ্যুত্থানের ধাক্কায় এহেন চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী বিগত সরকারের পতনের পর ক্ষমতাগ্রহণকারী অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও উক্ত অপকর্ম অব্যাহত রহিয়াছে। অন্তর্বর্তী সরকার কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করিবার পাশাপাশি চাঁদাবাজির ন্যায় বিশেষত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত অপরাধও নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়াছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫ আগস্ট-পরবর্তী কিছুদিন রাজধানীর পদচারী পথে চাঁদাবাজি বন্ধ থাকিলেও সেই সুসময় অধিক দিন টিকে নাই। শুধু উহাই নহে,...
    সমগ্র দেশে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নামে বরাদ্দকৃত বনের জমি পুনরুদ্ধারপূর্বক তথায় পুনর্বনায়নের যে সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণ করিয়াছে, উহাকে আমরা স্বাগত জানাই। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে একাধিক সরকারি সংস্থার নামে থাকা প্রাকৃতিক বনের ৮৭৫ একর জমির বরাদ্দ বাতিল করা হইয়াছে। শীঘ্রই আরও ১৩ সহস্র ৫৬৭ একরের বরাদ্দ বাতিল হইতেছে। আমরা জানি, একটা দেশের মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি না থাকিলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। অথচ বাংলাদেশ বন বিভাগের ২০১৯ সালের প্রতিবেদনমতে, দেশে বন আচ্ছাদিত অঞ্চল সমগ্র ভূমির ১৩ শতাংশেরও কম। এই বনভূমি হ্রাসের কারণে স্বাভাবিকভাবেই খাদ্য ও অস্তিত্ব সংকটে পড়িয়াছে বন্যপ্রাণী। ইতোমধ্যে সরীসৃপ, পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণীসহ ৩১টি প্রজাতি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। উপরন্তু, প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের হিসাবে, বাংলাদেশে ৩৯০ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর প্রায় সকলেই অস্তিত্বের ঝুঁকিতে...
    রা জধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জনপদ নারায়ণগঞ্জ হইতে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসাপ্রধান আতাউল্লাহসহ ১০ জনের গ্রেপ্তার যুগপৎ স্বস্তি ও উদ্বেগের বিষয়। আমরা জানি, মিয়ানমার হইতে বাংলাদেশে আশ্রিত জনগোষ্ঠীর একাংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়াইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীও এইভাবে দেশের কেন্দ্রীয় এলাকায় আসিয়া ঘাপটি মারিয়া থাকিবার বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ইহাও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত, আরসার একাংশ রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক অপহরণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সংশ্লিষ্ট। ২০২১ সালে রোহিঙ্গাদের জনপ্রিয় নেতা মহিবুল্লাহ হত্যায় আরসার নাম প্রচারিত হইবার পর রোহিঙ্গা শিবিরে তাহারা চাপে পড়ে। ফলে এই সময়ে সশস্ত্র সংগঠনটির শীর্ষ নেতার গ্রেপ্তার রোহিঙ্গাদের জন্যও খুশির বিষয়। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাংগঠনিকভাবে আরসা কোণঠাসা। কারণ উহারা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ হইয়া আরাকান আর্মির সহিত লড়াই করিয়া পরাস্ত। দলটির নেতারা যখন নূতন আশ্রয় খুঁজিতে...
    চার বৎসর পূর্বে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নিকট রাজধানীর খাল হস্তান্তর করা হইলেও ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় মালিকানা বুঝাইয়া না দিবার কারণে সংস্থা দুইটি, তৎসহিত স্থানীয় বাসিন্দারাও সমস্যায় নিপতিত। বুধবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, খালগুলির কাগজপত্র না পাইবার কারণে সেগুলির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও অবস্থান নির্ধারণ লইয়া বিড়ম্বনায় পড়িয়াছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তাহারা যদ্রূপ খালপাড় লইয়া পরিকল্পনা করিতে পারিতেছে না, তদ্রূপ সীমানার সুরাহা না হওয়ায় খালপাড়ের জমির মালিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও বিপদে পড়িয়াছে। খাল এলাকায় ঘরবাড়ি বানাইতে যেইখানে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন প্রয়োজন, সেইখানে আবেদন করিয়াও উহা মিলিতেছে না।  আমরা জানি, ঢাকার অধিকাংশ খালই দখল-দূষণে বিপর্যস্ত। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে রাজধানীর উল্লেখযোগ্য খালই হারাইয়া গিয়াছে। ইতোপূর্বে ঢাকা ওয়াসা দেখভাল করিবার কারণে অভিযোগ উঠিয়াছে, সংস্থাটির যোগসাজশে অনেক খাল দখল হইয়া গিয়াছে। এই...
    বিগত সরকারের আমলে চাউলের বাজারে যেই চালবাজি শুরু হইয়াছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ও তাহা অব্যাহত থাকিবার অভিযোগ হতাশাজনক। ঢাকার কারওয়ান বাজার, মগবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার পরিদর্শনের ভিত্তিতে সোমবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদন বলিতেছে, প্রকারভেদে প্রতিকেজি চাউলের দর ২ হইতে ৭ টাকা বৃদ্ধি পাইয়াছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যও বলিতেছে, বাজারে গত এক বৎসরে মিনিকেট চাউলের দর বৃদ্ধি পাইয়াছে প্রায় ১৩ শতাংশ, যাহা মাঝারি চাউলের ক্ষেত্রে প্রায় ১৪ এবং মোটা চাউলের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ। নূতন করিয়া চাউলের দর যখন বৃদ্ধি পাইয়াছে তখন সার্বিক জীবনযাত্রার ব্যয় সিংহভাগ মানুষের অন্যতম শিরঃপীড়ার কারণ হিসাবে রহিয়া গিয়াছে। তাহাদের প্রকৃত আয়ও হ্রাস পাইয়াছে। মনে রাখিতে হইবে, বিশেষত মধ্যবিত্ত পরিবারসমূহের খাদ্যাভ্যাসে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটিলেও, নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলি প্রায় সম্পূর্ণ ভাতের উপর নির্ভরশীল। তাহাদের আয়ের বৃহৎ অংশটা খাদ্যের...
    সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক প্রকল্পের ঘোষিত উদ্দেশ্য যাহাই হউক, বাস্তবে উহা ছিল সরকারি অর্থ নয়ছয়ের ন্যক্কারজনক আয়োজন। রবিবার প্রকাশিত সমকালের এতৎসংক্রান্ত প্রতিবেদনে এহেন চিত্রই পরিস্ফুট। প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ২০১০ সালের আগস্টে সূচিত কর্মসূচির অধীনে পরবর্তী ১৪ বৎসরে দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টিসহ ৫৮ জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ৮৭ কোটির অধিক টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দের প্রায় ২৮ কোটি টাকা ছিল উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায়। তন্মধ্যে কতিপয় জেলা ঘুরিয়া প্রতিবেদকের অভিজ্ঞতা হইল, প্রকল্পের সুবিধা লইয়াও অধিকাংশ ভিক্ষুক ভিন্ন কর্মক্ষেত্রে স্থায়ী হইতে পারেন নাই। অঞ্চলগুলিতে ভিক্ষাবৃত্তি হ্রাসের বিপরীতে বরং নূতন ভিক্ষুকের আবির্ভাব দেখা গিয়াছে। তদুপরি, সরকারি নথির তথ্য উদ্ধৃত করিয়া তিনি জানাইয়াছেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ক্ষুদ্র ব্যবসা, গরু-ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। তবে বরাদ্দের...
    বাংলাদেশের টেকসই ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করিবার জন্য চলমান সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে জাতিসংঘ সহযোগিতা করিবে বলিয়া সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যেই বক্তব্য দিয়াছেন আমরা উহাকে স্বাগত জানাই। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহিত বৈঠক শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে এই কথা লিখিয়াছেন তিনি। তিনি এমন সময়ে এই বক্তব্য দিলেন, যখন বাংলাদেশ রাজনীতি-অর্থনীতিসহ সকল ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক সময় পার করিতেছে। বিশেষত রাষ্ট্রব্যবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরিয়া গাড়িয়া বসা স্বৈরতন্ত্রের শিকড় উৎপাটনের মাধ্যমে টেকসই ও জনবান্ধব শাসনপদ্ধতি প্রতিষ্ঠার কার্যকর পথ সন্ধান করিতেছে। এই পরিস্থিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি হইয়া পড়িয়াছে। আমরা বিশ্বাস করি, শনিবার মধ্যাহ্নে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের পাশাপাশি যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সহিত তিনি যেই মতবিনিময় করিয়াছেন উহাও বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করিবে।...
    চিকিৎসার সকল আয়োজন ব্যর্থ করিয়া অনন্তলোকে গমন করিল ছোট্ট শিশু আছিয়া। গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াইতে গিয়া বোনের শ্বশুর কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হইয়াছিল ৮ বৎসরের আছিয়া। তাহাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হইলে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার কোনো উন্নতি না হইলে ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত্রিতে অচেতন অবস্থায় তাহাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শেষমেশ ৮ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয় আছিয়াকে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সেই হাসপাতালে মৃত্যুর সহিত তাহার অসম লড়াই সমাপ্ত হয়। স্বজনের হৃদয়ভাঙা আর্তনাদ এবং দেশ-বিদেশের কোটি মানুষের শোকের মধ্যে আছিয়া চিরনিদ্রায় শায়িত মাগুরার নিভৃত পল্লি শ্রীপুরের সোনাইকুন্ডিতে তাহার দাদার কবরের পার্শ্বে। পাশবিক ঐ ঘটনা...
    নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরে সুপেয় পানি লইয়া যেই হাহাকার দৃশ্যমান, উহা মনুষ্যসৃষ্ট। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধান চাষে ভূগর্ভের পানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারেই আলোচ্য সংকট তৈয়ার হইয়াছে। একই কারণে গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য গভীর নলকূপেও পানি মিলিতেছে না। পুকুর-জলাশয়েও পানির সংকটে অনেককে সুপেয় পানি ক্রয় করিতে হইতেছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে সুবর্ণচরের লক্ষ লক্ষ মানুষের এইরূপ দুর্ভোগ নেহাত দুর্ভাগ্য নহে। সুবর্ণচর রবিশস্যের উপযোগী হইলেও স্থানীয় কৃষকরা যেইভাবে ধান চাষে ঝুঁকিতেছে, উহা উদ্বেগজনক। ইহাতে পানি সমস্যা, তৎসহিত পরিবেশের অন্যান্য সংকট বৃদ্ধিরও আশঙ্কা রহিয়াছে। সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুবর্ণচরে দুই যুগ পূর্বেও যথায় মাত্র ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হইত, এই বৎসর উহা ১৮ হাজার হেক্টরে উপনীত। এই ধান চাষে ব্যবহার হইয়াছে অর্ধকোটি কিউসেক পানি। যাহা উদ্বেগের, তন্মধ্যে ৭০ শতাংশ পানিই ভূগর্ভ হইতে উত্তোলন করিতে হয়।...
    দেশের মেডিকেল কলেজসমূহে শিক্ষক সংকট অনাকাঙ্ক্ষিত হইলেও অপ্রত্যাশিত নহে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) তথ্য উদ্ধৃত করিয়া মঙ্গলবারের সমকাল জানাইয়াছে, সমগ্র দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজ রহিয়াছে ৩৭টি, যেগুলিতে শিক্ষকের পদসংখ্যা ৬ সহস্র ৪৪৬টি। অথচ বর্তমানে ৩ সহস্র ৭০০ শিক্ষক দিয়া চলিতেছে মেডিকেল শিক্ষা কার্যক্রম। অর্থাৎ সরকারি মেডিকেল কলেজসমূহে প্রায় ৪৩ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ চাহিদার প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিক্ষকশূন্যতার কারণে একদিকে মেডিকেল শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হইতেছে, অন্যদিকে দেশীয় এমবিবিএস ডিগ্রির বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা হারাইবার শঙ্কা দেখা দিয়াছে। বিগত সরকার মেডিকেল শিক্ষার প্রসারের নামে জেলায় জেলায় অপরিকল্পিতভাবে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণে এই সংকট প্রত্যাশিতই ছিল। মুখ্যত দলীয় নেতাদের অযৌক্তিক আব্দার পূরণকল্পে প্রতিষ্ঠিত এই সকল মেডিকেল কলেজে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিষয় বিবেচনায় লওয়া হয় নাই। এমনকি অনেক মেডিকেল কলেজে...
    অপরাধ দমনে স্বীয় বাহিনীর মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে মহাপুলিশ পরিদর্শক- আইজিপি যেই শক্ত বার্তা দিয়াছেন, উহা গুরুত্বপূর্ণ বলিয়া আমরা মনে করি। রবিবার ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারের সহিত ভার্চুয়াল বৈঠক করিয়া আইজিপি তাহাদিগকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতাসহ যেই কোনো প্রকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি শক্তভাবে মোকাবিলার নির্দেশ দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, কেহ অপরাধে সংশ্লিষ্ট হইলে দল-মত-গোষ্ঠী পরিচয় না দেখিয়া তাহার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ লইতে হইবে। সাম্প্রতিক সময়ে খোদ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নজিরবিহীন যেই মব ভায়োলেন্সের সম্প্রসারণ ঘটিয়াছে, কথিত নৈতিক পুলিশির নামে নারী হেনস্তা চলিতেছে, এমনকি একাদিক্রমে নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা জনসমক্ষে আসিতেছে, প্রধানত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীগুলির নিষ্ক্রিয়তা এহেন পরিস্থিতির জন্য দায়ী। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানির ন্যায় অপরাধের বাড়বাড়ন্তের পশ্চাতেও একই কারণকে দায়ী করা যায়। এই অবস্থায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান বাহিনীর...
    বন্দরে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান (৩২)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত মেহেদী হাসান বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের শুভকরদী এলাকার মৃত কামাল হোসেন মিয়ার ছেলে।  গ্রেপ্তারকৃতকে সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে বন্দর থানার দায়েরকৃত ৩(৯)২৪ নং মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার (৯ মার্চ) রাতে উল্লেখিত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার বিবিজোড়া মিনারবাড়ি এলাকার মোঃ হানিফ মিয়ার ছেলে মাওলানা মোঃ হাসান মাহমুদ লেখাপড়া করি। সে সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়নগঞ্জ জেলায় নেতৃত্বদানকারীদের একজন। বিবাদীগন আওয়ামীলীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী।  গত ১৮ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসাবে বন্দর বাসস্টান্ড হইতে বন্দর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের উদ্দেশ্যে মিছিল সহকারে আমরা ৫০/৬০ জন রওনা করিয়া একই...
    আজিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও জাতিসংঘ স্বীকৃত দিবসটি উদযাপিত হইতেছে। রমজানের কারণে অন্যান্য বৎসরের ন্যায় আড়ম্বর না থাকিলেও এই বৎসর দিবসটি উদযাপনের গুরুত্ব কিছুমাত্র কম নহে। বিশেষ করিয়া একদিকে যখন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই বার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করিয়াছে–‘অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন/ নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ এবং অন্যদিকে অনেকাংশে সরকারেরই জোরদার ভূমিকার অনুপস্থিতে শহরে-গ্রামে নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার সহিংসতা চলিতেছে, তখন নারী দিবস চিরাচরিত আনুষ্ঠানিকতার ঊর্ধ্বে উঠিয়া আমাদের নিকট বিশেষ তাৎপর্য লইয়া হাজির হয়। আমাদের জানাইয়া দেয় সংবিধানস্বীকৃত নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করিবার জন্য এখনও বহু পথ পাড়ি দিতে হইবে। সন্দেহ নাই, এই দেশে বিশেষত গত তিন দশকে রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি বিশ্বের সমপর্যায়ের তো বটেই, আর্থিক বা অন্যান্য...
    সাম্প্রতিক সময়ে ‘মব’ তথা সংঘবদ্ধ উচ্ছৃঙ্খলতা এমন উদ্বেগজনক পর্যায়ে উপনীত, অতীতের সকল মাত্রা অতিক্রম করিয়াছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এতটা অসহায় হইয়া পড়িয়াছে, অনেক সময় দেখিয়াও না দেখিবার ভান করিতেছে। আবার পুলিশের ঔদাসীন্য ও নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অনেকে দলবদ্ধ হইয়া আইন স্বহস্তে তুলিয়া লইতেছে। রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক স্বার্থে যদ্রূপ এহেন অরাজকতা চলিতেছে, তদ্রূপ এই অবকাশে ব্যক্তিগত বিরোধেও মব উন্মাদনার মাধ্যমে অনেকেরই প্রতিশোধ গ্রহণের ঘটনা উড়াইয়া দেওয়া যায় না। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরপরাধ ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী– এমনকি বিদেশি নাগরিকরাও ইহা হইতে রক্ষা পাইতেছে না। আমরা মনে করি, এই প্রকার পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলার জন্য অশনিসংকেত। মব সহিংসতা থামাইতে না পারিলে সাধারণ নাগরিক নিরাপত্তার হুমকির মুখে পড়িবে। সমকালের প্রতিবেদনে প্রকাশ, অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাসে দেশে গণপিটুনির শতাধিক অঘটনে প্রায় সোয়াশত মানুষ প্রাণ হারাইয়াছে,...
    গ্যাসস্বল্পতায় দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি শিল্প খাতে যেই সংকট দেখা দিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। বুধবার সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্যাসের জন্য শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হইতেছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় বিশেষ করিয়া পোশাকশিল্প কারখানায় উল্লেখযোগ্য যন্ত্রপাতি চলিতেছে না। সক্ষমতা অনুসারে উৎপাদন করিতে না পারায় তাহারা আর্থিক লোকসানের শঙ্কায় রহিয়াছে। ইতোমধ্যে শতাধিক কারখানা বন্ধ হইয়াছে। কেহ কেহ বাধ্য হইয়া শ্রমিক ছাঁটাই করিতেছে। একদিকে বেকার হইয়া পড়া শ্রমিকরা বিবিধ দাবিতে প্রায় দিবসই সড়ক অবরোধ, ভাঙচুরসহ বিক্ষোভ করিতেছেন; অন্যদিকে উৎপাদন সমস্যায় পণ্য রপ্তানি হ্রাস পাইলেও বিদেশ হইতে কাঁচামাল আমদানি বর্ধমান। ইহার মধ্যে নূতন করিয়া কারখানার গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণকরণ প্রক্রিয়া শুরু হইয়াছে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাইলে নূতন বিনিয়োগ না আসিবার পরিস্থিতি তৈয়ার হইবে। আমরা মনে করি, গ্যাস সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ লইতে হইবে। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস...
    ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশিদের গুলি করিয়া হত্যার ঘটনায় আমরা বরাবরই উদ্বেগ জানাইয়া আসিয়াছি। হতাশার বিষয়, সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ কিংবা হত্যা শূন্যের কোঠায় অবনমনের প্রতিশ্রুতি ভারতের তরফ হইতে বহুবার দেওয়া হইলেও উহা রক্ষিত হয় নাই। এমনকি সর্বশেষ ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকেও অভিন্ন অঙ্গীকার করা হইয়াছিল। উক্ত বৈঠকের সপ্তাহ অতিক্রান্ত না হইতেই গত শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আল-আমীন নিহত হইয়াছেন। বস্তুত গত দেড় দশকে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রায় প্রতিটি সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ হইতে এইরূপ হত্যাকাণ্ড লইয়া উদ্বেগ প্রকাশের পর ভারতের তরফ হইতে তাহা ‘শূন্য পর্যায়ে অবনমন-এর’ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হইয়াছে। কেবল বিএসএফপ্রধান নহে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ হইতেও একাধিকবার অনুরূপ প্রতিশ্রুতি আসিয়াছে। ইহার পরও সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড বন্ধ না...
    সরকারি হাসপাতালের বৈকালিক বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ হইবার বিষয়টি দুঃখজনক। কারণ প্রথমত, এই ব্যবস্থার অধীনে একজন রোগীকে বিশেষত চিকিৎসা পরামর্শ ও রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ যেই অর্থ ব্যয় করিতে হইত, উহা বেসরকারি খাতের সমমানের সেবা ব্যয় অপেক্ষা অনেক কম ছিল। ফলে বিশেষত সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য উহা ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। দ্বিতীয়ত, এই ব্যবস্থার কারণে চিকিৎসা সেবাপ্রাপ্তি প্রশ্নে দেশে ধনী-দরিদ্রের দৃষ্টিকটু বৈষম্য হ্রাসের যেই সম্ভাবনা সৃষ্টি হইয়াছিল, তাহা বন্ধ হইয়া গেল। সেই হিসাবে ইহাকে গরিবের হক মারিবার আয়োজনও বলা যাইতে পারে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে দুই দফায় রাজধানীসহ দেশের ১৮৩টি সরকারি হাসপাতালে এই স্বল্পমূল্যের সেবা চালু করে সরকার। এক পর্যায়ে উহাতে রোগ নির্ণয়ের সুবিধাও যুক্ত হয়। প্রতিদিন বেলা ৩টা হইতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পালাক্রমে রোগী দেখিবার বিধান চালু করা হয়।...
    বিগত কয়েক মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সহিত পাল্লা দিয়া সড়ক-মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা যে ভয়ংকররূপে বৃদ্ধি পাইয়াছে– উহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ সদরদপ্তরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করিয়া দেখা গিয়াছে, গত জানুয়ারিতে সমগ্র দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়াছে ৭১টি। পূর্বের বৎসর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ডাকাতির সংখ্যা ছিল ২৯। অর্থাৎ পুলিশের হিসাবেই ডাকাতি হইয়াছে দ্বিগুণের অধিক। এই কথাও বলা প্রয়োজন, পুলিশের পরিসংখ্যান দিয়া অপরাধ বা ডাকাতির সঠিক সংখ্যা জানা কঠিন। কারণ, অনেক ঘটনায় ভুক্তভোগী বহুবিধ কারণে মামলা করিতে উৎসাহ পান না। অনেক ঘটনায় পুলিশও সহজে মামলা গ্রহণ করে না। এদিকে, শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশেই গত দুই মাসে চারটি ডাকাতি হইয়াছে, যে সকল ঘটনায় ভুক্তভোগীর অর্থকড়ি ও স্বর্ণালংকার, এমনকি চাউলের বস্তাভর্তি ট্রাকও লুণ্ঠিত হইয়াছে। ইহার পূর্বে ঢাকা...
    আরবি মাসগুলির মধ্যে অন্যতম বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হইল রমজান, যাহা ইতোমধ্যে শুরু হইয়া গিয়াছে। এই মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মুসলমানেরাও সিয়াম সাধনা করিয়া থাকেন। তবে এই সাধনা এইবার কতটুকু নির্বিঘ্ন হইবে উহা লইয়া জনপরিসরে কিছুটা হইলেও উদ্বেগ সৃষ্টি হইয়াছে। বিশেষত নিত্যপণ্যের বাজার রমজান মাসে অস্থিতিশীল হইয়া উঠিবার প্রবণতা বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। প্রায় প্রতিবৎসর রোজার পূর্বমুহূর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সরবরাহ কমিয়া যাইবার অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াইয়া দিয়া থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, অন্তত কতিপয় ক্ষেত্রে এইবারও উহার ব্যতিক্রম ঘটে নাই। রোজা শুরুর পূর্বেই বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি ও দাম বাড়িয়া যাইবার বিষয়টা আঁচ করা গিয়াছে। বিশেষত বৃহস্পতিবারের সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোজার পূর্বেই ভোজ্যতৈলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। অভিযোগ রহিয়াছে, বড় আকারে শুল্ককর ছাড় দিবার পরও ব্যবসায়ীদের দর বাড়াইবার আবদারে সরকারি সাড়া...
    নিরাপদ পানিকে মৌলিক অধিকার হিসাবে ঘোষণা দান-সংক্রান্ত আদালতের রায়টি যুগান্তকারী বলিয়া আমরা মনে করি। কারণ যেই পানি জীবন রক্ষার উপকরণ, উহাই বিশুদ্ধ না হইলে জীবন হরণেরও কারণ হইতে পারে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই বিষয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করিয়াছিলেন হাইকোর্ট। উক্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি হিসাবে বৃহস্পতিবার যেই রায় প্রদান করা হইয়াছে, উহার মাধ্যমে পানির অধিকার নিশ্চিত হইবে বলিয়া আমাদের প্রত্যাশা। রায়ের পর্যবেক্ষণে যথার্থই বলা হইয়াছে, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তি মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র এই অধিকার নিশ্চিত করিবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে জনপরিসরে বিনামূল্যে নিরাপদ পানি সরবরাহ বিষয়েও ব্যবস্থা লইবার তাগিদ আসিয়াছে এই রায়ের মাধ্যমে। আমরা মনে করি, রায়ের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হইল, দেশে যত পানির উৎস বিদ্যমান, সেগুলিকে দূষণের হস্ত হইতে রক্ষা...
    সাম্প্রতিক সংঘাতের জের ধরিয়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েট যেইভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হইয়াছে, উহা দুঃখজনক। কুয়েটের অঘটনের পর এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই আমরা উদ্বেগ জানাইয়াছিলাম, সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষাঙ্গন বন্ধের পুরাতন সংস্কৃতি হইতে বাহির হইতে হইবে। তৎসত্ত্বেও কুয়েট প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনিতে ব্যর্থ। ফলস্বরূপ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হইতে সকল আবাসিক হলসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়েট বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত লওয়া হইল। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করিলেও অবশেষে নিরাপত্তার কারণে বুধবারের মধ্যে তাহারা প্রায় সকল আবাসিক হল শূন্য করিয়া দিয়াছেন। আমরা মনে করি, কুয়েট প্রশাসনের এই ব্যর্থতা মন্দ নজির হইয়া থাকিবে। চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার– সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন। অর্থাৎ পুরাতন ধারার সন্ত্রাসবাদের পরিবর্তে শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি চলিবে এবং শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত...
    বিশ্বের অন্যতম এবং দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, বাংলাদেশের সর্বাধিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারের পরিবেশ-প্রতিবেশ লইয়া উদ্বেগ দীর্ঘদিন যাবৎ জনমনে বিরাজমান। একদিকে এই জেলার নদী-খাল-জলাশয়, তৎসহিত পর্বত ও বন দখল-দূষণে বিপর্যস্ত। এমনকি সমুদ্রও রক্ষা পাইতেছে না; অন্যদিকে আইনের তোয়াক্কা না করিয়া বিশেষত সমুদ্রের তীর ঘেঁষিয়া যথেচ্ছভাবে হোটেল-মোটেলসহ ক্ষুদ্র-বৃহৎ স্থাপনা গড়িয়া উঠিয়াছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে মারমেইড বিচ রিসোর্ট এমনই এক স্থাপনা। ইহাকে ‘ইকো রিসোর্ট’ বা ‘পরিবেশবান্ধব’ দাবি করা হইলেও খাল ও সরকারি জমি দখল এবং বৃক্ষ কর্তন করিয়া ইহা নির্মিত হইতেছে। বাঁকখালী নদীতে পরিবেশ অধিদপ্তর সৃজিত বন ধ্বংস করিয়াও স্থাপনা নির্মাণ করা হইয়াছে। প্রশাসনের নাসিকার অগ্রভাগে এই প্রকার পরিবেশ-বিধ্বংসী তৎপরতা দুর্ভাগ্যজনক।  প্রতিবেদনের সহিত প্রকাশিত আলোকচিত্রেও স্পষ্ট দৃশ্যমান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকায় নদী ও...
    রবিবার এনবিআর-জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক-বাজেট বৈঠকে সংবাদপত্রের স্বত্বাধিকারীগণের সংগঠন ‘নোয়াব’ যেই সকল দাবি জানাইয়াছে, সেইগুলির যৌক্তিক সমাধান জরুরি বলিয়া আমরা মনে করি। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোয়াব নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ এবং ভ্যাট ১৫ শতাংশ হইতে কমাইয়া ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়াছে। ইহার সহিত সংবাদপত্র শিল্পকে সেবামূলক শিল্পরূপে বিবেচনাপূর্বক করপোরেট কর সর্বনিম্ন নির্ধারণ অথবা অবলোপনেরও অনুরোধ করিয়াছে নোয়াব। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ তাহাদের দাবির সপক্ষে যেই সকল যুক্তি উপস্থাপনা করিয়াছেন, সেইগুলিও প্রণিধানযোগ্য। তাহারা যথার্থই বলিয়াছেন, বর্তমানে সংবাদপত্রের মূল কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হইলেও এই বাবদ ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এইগুলির সহিত অগ্রিম আয়কর ও পরিবহন বীমা যুক্ত করিলে নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুধু কর-শুল্ক বাবদ প্রকৃত ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশে পৌঁছে। তদুপরি যুক্ত হইয়াছে নিউজপ্রিন্ট ও...
    যেই সময়ে দেশব্যাপী সেনাসদস্যসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলমান, সেই সময়েই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রমবর্ধমান অপরাধ সংঘটিত হইবার উদ্বেগজনক তথ্য আসিতেছে। রবিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধীদের বহুমাত্রিক তৎপরতার খবর মিলিতেছে এবং সংশ্লিষ্টরা এতটাই বেপরোয়া, ভুক্তভোগীকে প্রকাশ্যে অস্ত্রাঘাতে জখম করিতেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বাসে আরোহণ করিয়া যাত্রীদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, টাকা লুণ্ঠন করিতেছে। এমনকি চলমান বাসে অস্ত্রের মুখে নারীর শ্লীলতাহানিও ঘটাইতেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জানুয়ারিতে সমগ্র দেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২৯৪ জন। এই সময়ে ১৭১টি চুরি, ৭১টি ডাকাতি, ১০৫টি অপহরণ এবং ১ সহস্র ৪৪০ জন নারী- শিশু নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। গত বৎসর একই সময়ে হত্যার শিকার হন ২৩১ জন, ডাকাতি ২৯, চুরি ১৪১, অপহরণ ৪৩ এবং...
    মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র তথা আইসিইউ লইয়া দেশে যাহা চলিতেছে তাহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সরকারি হাসপাতালে শক্ত তদবির ব্যতীত আইসিইউ বরাদ্দ মিলিতেছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাগিতেছে ঘুষও। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে এই সেবার নামে কাটা হইতেছে রোগী ও স্বজনের পকেট। উপরন্তু, সমন্বয়হীনতার কারণে সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসিতেছে না। এক কথায় আইসিইউ লইয়া দেশের চিকিৎসা খাতে এক নৈরাজ্য চলিতেছে। শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, দেশে আইসিইউর শয্যা আছে সর্বমোট প্রায় বারো শত, যাহার ৭৫ শতাংশই রাজধানী ঢাকায়। উপরন্তু, ৩৪ জেলায় কোনো আইসিইউ নাই। তৈলাক্ত মস্তকে তৈল মর্দন সম্ভবত ইহাকেই বলে। ঢাকায় যেহেতু সরকারের শীর্ষ ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ থাকেন, পাশাপাশি আছেন দেশের সর্বাধিক অর্থবিত্তসম্পন্ন মানুষেরা, ওই কথাটি নিশ্চয় সচেতন কাহারও নিকট অপ্রাসঙ্গিক ঠেকিবে না। অন্যদিকে ঢাকাকেন্দ্রিক অতি...
    গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং স্বাভাবিক ঘটনা হইলেও এইবার উহা অস্বাভাবিক হারে দেখা দিবার আশঙ্কা তৈয়ার হইয়াছে। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থ সংকটে জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হইবার কারণে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করিতে পারে। বিশেষত আসন্ন রমজান মাসে গরম বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাইবে। তৎসহিত সেচ মৌসুম যুক্ত করিলে ধারণা করা কঠিন নহে, মার্চ-এপ্রিল হইতে বিদ্যুতের চাহিদা হইবে দেড় গুণ। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিলেও উহা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নহে।  বিশেষ করিয়া অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করিতে হইলে বেসরকারি খাত হইতে বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি। কিন্তু ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে সরকারের বিপুল ঋণ রহিয়াছে। সেই কারণে অর্থ সংকটে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক জ্বালানি ফার্নেস অয়েল ও কয়লা আমদানিতে হোঁচট খাইতেছে; গ্যাস খাতের পরিস্থিতিও তথৈবচ। বকেয়া ও ডলার সংকটে এলএনজি...
    খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটে মঙ্গলবার ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে যেই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। পূর্বের ন্যায় শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের মহড়া কেবল নিন্দনীয়ই নহে, একই সঙ্গে শিক্ষার পরিবেশের জন্যও মন্দ বার্তাবহ। ইতোপূর্বে ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যেইরূপ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করিয়াছিল, সেই কারণে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনরূপে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। গণঅভ্যুত্থানের ‘স্পিরিট’ হইল শিক্ষাঙ্গনে সকল ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সহাবস্থান বজায় থাকিবে এবং প্রত্যেকে স্বীয় কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনা করিতে পারিবে। কিন্তু বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করিয়া কুয়েটে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটিয়াছে। আমরা মনে করি, শিক্ষাঙ্গনকে এই ধরনের সংঘাতমুক্ত করিতেই হইবে। ইতোমধ্যে কুয়েটের ঘটনার প্রভাব দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়িয়াছে, যেইখানে মঙ্গলবারই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ...
    খাদ্য অধিদপ্তরে চাউল, আটা ও ময়দাকলের মালিকদের তালিকাভুক্তি লইয়া ব্যাপক অনিয়ম চলিতেছে বলিয়া মঙ্গলবার সমকাল এক উদ্বেগজনক সংবাদ দিয়াছে। সেই সংবাদে বলা হয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মিলিয়া উৎকোচ চক্র গড়িয়া তুলিয়াছেন, যাহাদের ‘খুশি’ করিতে না পারিলে যোগ্য কলমালিকগণ তালিকাভুক্ত হইতে পারেন না। এমনকি তালিকাভুক্ত কলমালিকের অনুমোদনপত্রও বাতিল হইয়া যায়। ফলে একদিকে সরকারি তালিকার বাহিরে থাকিয়া যাইতেছেন অনেক প্রকৃত কলমালিক, অপরদিকে অস্তিত্বহীন বা নামকাওয়াস্তে কার্যক্রম পরিচালনাকারীরা সরকারি খাতায় নাম লিখাইতে পারিতেছেন। বিষয়টা উদ্বেগজনক। কারণ ইহার ফলে দেশে খাদ্য মজুতের সঠিক চিত্র দুরূহ হইয়া যায়, যাহার নেতিবাচক প্রভাব বহুবিধ। প্রথমত, সময়মতো চাউল বা গমের ন্যায় প্রধান খাদ্যপণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ কঠিন হইয়া পড়ে। দ্বিতীয়ত, এই সকল পণ্যের বাজার চক্রের নিয়ন্ত্রণে চলিয়া যায়। আন্তরিক হইলেও সরকারের পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ...
    রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হইতে নিষ্কৃতি চাহিয়া বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণ প্রধান উপদেষ্টার নিকট যেই আবেদন জানাইয়াছেন, উহাকে স্বাগত জানানোই সংগত ছিল। রবিবার হইতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তিন দিনের সম্মেলনের প্রথম দিনেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহিত মুক্ত আলোচনায় জেলা প্রশাসকগণের উক্ত আবেদন সমর্থন না করিবার কী কারণ থাকিতে পারে? এই জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার তাহারা চাহিয়াছেন। কিন্তু প্রশ্ন হইতেছে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কি যাচিয়া আসিয়াছিল? নাকি জেলা প্রশাসকগণই ক্রমান্বয়ে এইরূপ হস্তক্ষেপ অনিবার্য করিয়া তুলিয়াছিলেন? বাংলা প্রবাদ মানিয়া এক্ষণে কম্বল ছাড়িতে চাহিলেই কি কম্বল সহজে ছাড়িয়া যাইতে পারে?  বস্তুত জনপ্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নূতন নহে। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বৎসরে যেই দলই ক্ষমতাসীন হইয়াছে, সেই দলই প্রশাসনের সর্বস্তরে পদায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দিয়াছে। বিষয়টি বিপরীত দিক...
    মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করে খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অনেকে। কেউ কেউ মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে অংশীজন নিয়ে আগামী বুধবার সভা ডেকেছে মন্ত্রণালয়। এতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টাও উপস্থিত থাকবেন। বিদ্যমান আইন সংশোধন করে প্রণীত এই খসড়ায় রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচিতি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ রাখা হয়েছে। অন্য সবার পরিচয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের বিষয়টি। এ ছাড়া পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ক্রমবিন্যাসও পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন-সংক্রান্ত খসড়া অধ্যাদেশ জনমত যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য গত ২...
    গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এবং গ্যাস লাইনের লিকেজ হইতে সৃষ্ট আগুনে মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই থামানো যাইতেছে না। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত শুক্রবার ঢাকার নিকটবর্তী সাভারের আশুলিয়ায় একটি আবাসিক ভবনে গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ১১ জন দগ্ধ হন, তন্মধ্যে দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারাইয়াছেন। তদুপরি, অন্যদেরও অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নহে, যাহাদের অদিকাংশের শ্বাসনালি দগ্ধ হইয়াছে। সমকালের অপর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবারই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এক সিএনজি স্টেশনে গ্যাস পূর্ণকরণকালে অকস্মাৎ গাড়িতে আগুন লাগিয়া অভ্যন্তরে থাকা শিশু দগ্ধ হইয়া প্রাণ হারাইয়াছে। উপরন্তু, ৯ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ হন একই পরিবারের তিনজন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, গত পাঁচ বৎসর গ্যাসলাইন ও সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ হইতে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ৪৪ জন মৃত্যুবরণ করিয়াছেন; আহত হইয়াছেন শতাধিক। স্মরণ করা যাইতে পারে, অতীতের এহেন ঘটনায়...
    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার, ভুক্তভোগী ও সংবাদমাধ্যমের একটি দলের বহুল আলোচিত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের মাধ্যমে জনপরিসরে ঘূর্ণয়মান অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলিয়াছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাস অতিক্রান্ত হইলেও এই গোপন বন্দিশালা অন্তরালে থাকিয়া যাইবার বিষয়ে জনমনে ক্ষোভও জমিয়া উঠিতেছিল। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ও বর্তমানে অকার্যকর এই সকল আয়নাঘর বুধবার পরিদর্শনের মাধ্যমে উহার বর্বর কাঠামো উন্মুক্ত হইবার মাধ্যমে এইরূপ বন্দিশালায় সংঘটিত নৃশংসতা কেবল জনসমক্ষে উন্মোচিতই হয় নাই; আয়নাঘরের অস্তিত্ব অস্বীকারকারীদের চাঁদবদনেও চুনকালি পড়িয়াছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত নিদর্শন এহেন আয়নাঘর যাহারা তৈরি করিয়াছিল, তাহাদের বিচারের আওতায় আনা এখন জনদাবি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিরোধীদের উপর কতটা দমন-নিপীড়ন এবং বেআইনিভাবে নাগরিকদের ধরিয়া আনিয়া যেই বীভৎস নির্যাতন চালাইয়াছিল, আয়নাঘরের খণ্ডচিত্রই উহার প্রমাণ। নির্যাতনের...
    বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ বলিয়া পরিচিত তিস্তা নদী ঘিরিয়া বহুল আলোচিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যেইভাবে উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে, উহা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। তিস্তাতীরবর্তী জনসাধারণের উৎসাহ স্বাভাবিকভাবেই দ্বিগুণ হইতে বাধ্য। রবিবার রংপুরে তিস্তা রেলসেতু এলাকায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে জনসমাগমেই উহা স্পষ্ট। কেবল সশরীতে উপস্থিতির ক্ষেত্রে নহে, গত কয়েক বৎসর ধরিয়া ঐ অঞ্চলের মানুষ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পক্ষে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে উহার পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করিয়া আসিতেছে। মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনও কম অনুষ্ঠিত হয় নাই। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারও উহার পক্ষে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ লইয়াছিল। প্রকল্পের প্রস্তাবনা ও বাস্তবায়নের সহিত চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পৃক্ত থাকিবার কারণে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারই শেষ মুহূর্তে কীভাবে পিছাইয়া আসিয়াছিল, আমরা জানি। এমনকি ঐ সরকারের পক্ষে যেইভাবে চীনের পরিবর্তে ভারতকে...
    আলু লইয়া কৃষক এইবারও দুর্দশায় নিপতিত হইল। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলিতেছে, এক কেজি আলুর উৎপাদন ব্যয় ১৪ হইতে ১৬ টাকা হইলেও কৃষককে উহা বিক্রয় করিতে হইতেছে মাত্র ১০-১২ টাকায়। ফলে প্রতি কেজি আলুতে কৃষককে লোকসান গুনিতে হইতেছে ৫ টাকা অবধি। শুধু উহাই নহে, লোকসান হইতে বাঁচিতে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার কৃষকের হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও নূতন সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। প্রথমত, দেশে চলতি বৎসর আলু উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন হইবে বলিয়া ধারণা করা হইতেছে। কিন্তু বিদ্যমান হিমাগারসমূহের মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৫ লক্ষ টন। সেই হিসাবে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারের বাহিরে থাকিবে। দ্বিতীয়ত, গত বৎসর অপেক্ষা এইবার কেজিতে ১ টাকা বৃদ্ধি করিয়া হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হইয়াছে, যাহা বহন করা বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের পক্ষে কঠিন। উপরন্তু, পূর্বে...
    বুধবার রাত্রি হইতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী যেই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলিতেছে, উহা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কেহই সমর্থন করিতে পারে না। ইহারই প্রতিফলন ঘটাইয়া বিএনপিসহ দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে এহেন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের নিন্দা জানাইবার পাশাপাশি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করিয়াছে। আমরা দেখিয়াছি, বিলম্বে হইলেও অন্তর্বর্তী সরকারও বিগত সরকারসংশ্লিষ্ট যেই কাহারও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হইতে বিরত থাকিবার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছে। দুর্ভাগ্যবশত, সরকারের সেই আহ্বান উপযুক্ত সাড়া পায় নাই। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, শুক্রবার রাত্রিতেও ধসাইয়া দেওয়া হইয়াছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং মনিরামপুর এলাকায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। পাশাপাশি শক্তিপুর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার সড়কের নামফলকসহ উপজেলা সদরের কয়েকটি সড়কের নামফলকও ভাঙিয়া ফেলা হইয়াছে।...
    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করিয়া রাজধানীর ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর’ বলিয়া পরিচিত সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনসহ সমগ্র দেশের বিভিন্ন জনপদে যেই ভাঙচুরের অঘটন চলিতেছে, উহাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতিই স্পষ্ট হইয়াছে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হইতে বিক্ষোভকারীরা ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী ঐ ভবনের সম্মুখে একত্র হইয়া হস্তচালিত বিভিন্ন দেশীয় সরঞ্জাম দিয়া ভাঙচুর শুরু করে। পরে ‘বুলডোজার’ দিয়া বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ভবনটি ধসাইবার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ভবনটি ভাঙ্গিয়া ফেলিবার অযুত আলোকচিত্র ও ভিডিওচিত্র সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। অনেক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়। তদুপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীগণকে নিবৃত্ত করিতে পারিল না কেন– এই প্রশ্ন রহিয়া...
    দেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের সুরক্ষা কর্মসূচি সংকোচনের বিষয়টি উদ্বেগজনক। বুধবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন হইতে ইহা স্পষ্ট, একদিকে টিসিবির ট্রাক সেল কর্মসূচি বন্ধ; অন্যদিকে ৪৩ হাজার ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বাতিল করিলেও সমসংখ্যক পরিবারকে এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই। যেই সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি বৃদ্ধি করা দরকার, সেই সময়ে এই পরিণতি কেন?   অবশ্য সমকালের প্রতিবেদনে স্পষ্ট, সরকারের ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য বিতরণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা থাকিলেও অর্থাভাবে তাহা সম্ভব হইতেছে না। সরকারের রাজস্ব আয় হ্রাসের কারণে এবং সামগ্রিক আয় ও ব্যয়ের মধ্যে বড় ঘাটতির প্রভাবে দরিদ্রের সুরক্ষায় ভাটা পড়িয়াছে। কিন্তু বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা বৃদ্ধির বিকল্প নাই। খাদ্য সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। ফলে...
    বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত-সংক্রান্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়িতে শুরু করিয়াছে। ইতোমধ্যে এই দেশে মার্কিন অর্থায়নে চলমান বহু প্রকল্পের কাজ বন্ধ বা স্থগিত হইয়া গিয়াছে। সোমবার প্রকাশিত সমকালের এক সংবাদ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) রোহিঙ্গা সহায়তা ব্যতীত বাংলাদেশের অবশিষ্ট সকল কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটাইয়া লইয়াছে। কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও বিপুল কর্মীসংখ্যার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থারূপে পরিচিত ব্র্যাক বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করিয়াছে। সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি সহস্রাধিক কর্মী ছাঁটাই করিয়াছে, যেই সংস্থাটি স্বাস্থ্য খাতে বৃহৎ গবেষণা চালাইতেছে; সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত বহু হাসপাতাল পরিচালনা করিতেছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগের জীবন রক্ষাকারী ঔষধের সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দিয়াছে। বন্ধ হইয়া গিয়াছে পুষ্টি-সংক্রান্ত দুইটি প্রকল্প। ফলে এইচআইভি-এইডস,...
    বন্দরে ড্রেজার ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি শাওন (৩২)কে স্থানীয় জনতা  আটক করে পুলিশে সোর্পদ করার পরও মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার  অভিযোগ পাওয়া গেছে বন্দর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। জনতা কর্তৃক আটককৃত মামলার আসামিকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল।  বন্দর থানা পুলিশের এ রকম কর্মকান্ডের জন্য র্তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে গনমাধ্যমের কাছে এসব কথা জানিয়েছে মামলার বাদিনী সিনথিয়াসহ তার পরিবার। জনতা কর্তৃক আটককৃত হামলাকারি শাওন বন্দর থানার নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে। এর আগে গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বন্দর থানার চৌরাপাড়া এলাকা থেকে ওই হামলাকারিকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে স্থানীয় জনতা। উল্লেখ্য, বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের দেওলী চৌরাপাড়া এলাকার মৃত সামছুজ্জামান ওরফে বাচ্চু মিয়ার ছেলে...
    কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা ঘিরিয়া যেই তোলপাড় ও প্রতিবাদ চলমান, উহা অস্বাভাবিক নহে। মানবাধিকার ও নাগরিক মর্যাদাবোধের অঙ্গীকার সম্মুখে রাখিয়া সংঘটিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও এইরূপ অঘটন কেন ঘটিবে? বিগত সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ভয়ংকররূপে বৃদ্ধি পাইয়াছিল। অন্যান্য বিষয়ের সহিত এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিও শিক্ষার্থী-জনতাকে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সংঘটনে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল। আর বর্তমান সরকার ওই গণঅভ্যুত্থানেরই ফসল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনরোষের অন্যতম কারণ যথা আইনি হেফাজতে প্রাণহানি; ঐ সরকারের পতনের পরও উহার ধারাবাহিকতা চলিবে কেন? নিহতের ভ্রাতাকে উদ্ধৃত করিয়া সমকাল জানাইয়াছে, চট্টগ্রামের কর্মস্থল হইতে বাড়ি আসিয়া তৌহিদ যখন পিতার কুলখানি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন সেনাবাহিনীর কয়েক সদস্য সাদা পোশাকের পাঁচ যুবকসহ আসিয়া অস্ত্র অনুসন্ধানের কথা বলিয়া তাঁহাকে তুলিয়া লইয়া যান।...
    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ফি বা পরামর্শ/কনসালটেন্সি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (মুসক বাস্তবায়ন) মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর প্রথম তফসিলের দ্বিতীয় খণ্ড (মূল্য সংযোজন কর হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেবাসমূহ) এর মাধ্যমে সরকার প্রদত্ত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা এবং বেসরকারি পর্যায়ে প্রদত্ত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবাকে মূল্য সংযোজন কর হইতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬...
    বৈষম্যহীন টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বিশেষত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের যেই চিত্র উঠিয়া আসিয়াছে উহা অনাকাঙ্ক্ষিত হইলেও অপ্রত্যাশিত নহে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ হস্তান্তরিত প্রতিবেদনটিতে বলা হইয়াছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা এবং স্বজন-তোষণ নীতির কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয় নামিয়া আসিয়াছে। সেই আমলে চাহিদা না থাকিলেও ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অতিরিক্ত স্থাপিত হইয়াছে, যাহার ফলে অলস বসিয়া থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকেও কেবল ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ হিসাবে এক লক্ষ কোটি টাকা দিতে হইয়াছে। অনুরূপভাবে নিছক সরকারঘনিষ্ঠ কোম্পানির মুনাফার লক্ষ্যে আমদানিনির্ভর নীতিমালা বানাইয়া দেশের জ্বালানি খাতকে ঝুঁকির সম্মুখে ঠেলিয়া দেওয়া হইয়াছে। এই দুইয়ের ফলস্বরূপ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধির খেসারত দিতে হইতেছে সাধারণ ভোক্তাদের...
    দেশে গত কয়েক দিন যাবৎ বাধা ও হুমকির মুখে একের পর এক নারীকেন্দ্রিক আয়োজন বন্ধ হইবার ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শুক্রবার সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, মঙ্গল ও বুধবার কথিত তৌহিদি জনতা নামক গোষ্ঠীর হুমকির মুখে জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারীর ফুটবল খেলা বন্ধ করিয়া দিতে হইয়াছে। দিনাজপুরে উক্ত ‘তৌহিদি জনতা’ মাঠে হামলা-ভাঙচুরও চালাইয়াছে। শুধু উহাই নহে; অতি সম্প্রতি অনুরূপ গোষ্ঠীর হুমকির মুখে প্রথমে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এক অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমণি এবং পরবর্তী সময়ে খোদ রাজধানীতে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানে আরেক চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস উপস্থিত হইতে পারেন নাই। এমনকি ঢাকায় ‘কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক নারী সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশে বাধা প্রদান করা হইয়াছে, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এই সকল ঘটনা স্পষ্ট করিয়া দেয়–...
    বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বাজারে বিক্রয় হইবার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সমস্যা এতই ব্যাপক যে, বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান সত্ত্বেও বাজারে পুস্তক মিলিতেছে। বস্তুত প্রায় প্রতি বৎসরই কালোবাজারে বিনামূল্যের পুস্তক বিক্রয় হইয়া থাকে। কিন্তু চলতি বৎসর অধিক হারে বিক্রয়ের কারণ হইল, শিক্ষার্থীদের বিপুলাংশের এখনও পাঠ্যপুস্তক হস্তগত হয় নাই। এই সুযোগে এক শ্রেণির কালোবাজারি স্বল্প বিনিযোগে অতি মুনাফার আশায় বেআইনিভাবে স্বীয় উদ্যোগে মুদ্রণ করিয়া পাঠ্যপুস্তক বিক্রয় করিতেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবির কার্যাদেশপ্রাপ্ত অনেক মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানও এহেন অপকর্মে লিপ্ত। উপরন্তু, অনেক অসাধু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও অতিরিক্ত চাহিদা প্রদর্শনপূর্বক সংগৃহীত পাঠ্যপুস্তক কালোবাজারিদের নিকট বিক্রয় করিয়া দিতেছেন বলিয়া অভিযোগ উত্থাপিত হইয়াছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা প্রতি বৎসর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরকারের তরফ হইতে পাইবার বিষয়টি একদিকে যদ্রূপ স্বস্তিদায়ক, তদ্রূপ শিক্ষার্থীদের জন্যও উদ্দীপকরূপে...
    বরিশাল তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদনদীর পানি লবণাক্ত হইবার যেই চিত্র মঙ্গলবার সমকালের এক প্রতিবেদনে তুলিয়া ধরা হইয়াছে, উহা উদ্বেগজনক। প্রতিবেদনে উদ্ধৃত বরিশাল মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের তথ্য বলিতেছে, সেচের জন্য উপযুক্ত নদীর প্রতি মিটার পানিতে শূন্য দশমিক ৭ ডিএস এবং প্রতি মিটার মাটিতে ২ ডিএসের কম লবণাক্ততা থাকিতে হয়। কিন্তু ইনস্টিটিউটের সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণায় দক্ষিণাঞ্চলের নদীর পানিতে সর্বোচ্চ ১৫ হইতে ২০ ডিএস পার মিটার এবং মাটিতে সর্বোচ্চ ২৫ ডিএস পার মিটার লবণাক্ততা পাওয়া গিয়াছে। উপরন্তু, এক দশক পূর্বেও শুষ্ক মৌসুম তথা নভেম্বর হইতে এপ্রিল অবধি সমুদ্র-সংলগ্ন তিন-চারটি নদীতে লবণপানি পৌঁছাইত। বর্তমানে সেই নদীর সংখ্যা ২০। বিশেষ করিয়া বর্ষা মৌসুমে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত না হওয়া, তৎসহিত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঋতু স্বাভাবিক আচরণ হারাইবার কারণে সংকট তীব্র হইয়াছে। নদনদীর পানিতে লবণ বৃদ্ধি পাইলে...
    সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলন করিয়া জানাইয়া দিলেন– রাজধানীর সাতটি কলেজ আর তাহাদের অধীনে থাকিতেছে না। বস্তুত দীর্ঘদিন ধরিয়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি হইতে বাহির হইবার অভিপ্রায়ে কলেজগুলির শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করিতেছিল, ঢাবি উপাচার্যের উক্ত ঘোষণা উহারই ফল। তবে সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি উত্থাপন করিয়াছে, উপাচার্য সেই সম্পর্কে কিছু বলেন নাই। তিনি বলিয়াছেন, সাত কলেজের এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, তাহাদের ‘স্বতন্ত্র পরিচয়’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি দেখভাল করিবে। উহার পরও উক্ত বিষয়ে ধোঁয়াশা রহিয়া গেল বলা যায়। ঢাকার সাতটি কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্ত ছিল অপরিকল্পিত– উহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না। আমরা দেখিয়াছি, কলেজগুলি ইতোপূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকিয়া সেশনজটসহ যেই সকল সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছিল, ঢাকা...
    বন্দরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রেলওয়ের  লিজকৃত পুকুর থেকে ৩ লাখ টাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ  মতিন, ইব্রাহিম ও জীবনগং এর বিরুদ্ধে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে বন্দর উপজেলা  পশ্চিম হাজীপুর এলাকায় এ মাছ লুটের ঘটনাটি ঘটে।  এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত লিজকৃত মালিক মো. নাদিম মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন দুপুরে উল্লেখিত ৩ জনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানা ও জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এদিকে বন্দর থানা পুলিশ অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার ২০৪ নং সালেহনগর এলাকার মোতালিব মিয়ার ছেলে নাদিম মিয়া নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি রেলওয়ে কর্তৃক লীজকৃত ব্যক্তি মানিক মিয়ার নিকট হইতে গত ৮ জানুয়ারি তিনশত টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পের...
    নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার হইতে বাংলাদেশে আশ্রয় লওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি মার্কিন অনুদান বন্ধ-সংক্রান্ত সংবাদে মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষমাত্রই উদ্বিগ্ন হইবে। আমাদের জন্য উদ্বেগ, তৎসহিত উৎকণ্ঠাও কম নহে। কারণ বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয়প্রাপ্ত। উহাদের মধ্যে ২০১৭ সালে রাখাইনে গণহত্যা, ধর্ষণ-নিপীড়ন, অগ্নিসংযোগ পরিহারে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী প্রায় ৮ লক্ষ রোহিঙ্গার অধিকাংশই কক্সবাজার জেলার টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থাকে। ২০১৭ সাল হইতে রোহিঙ্গাদের সহায়তাকল্পে যুক্তরাষ্ট্র ২৫০ কোটি ডলারের অধিক দিয়াছে, তন্মধ্যে বাংলাদেশে আসিয়াছে প্রায় ২১০ কোটি ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের ঘাটতি পূরণ প্রায় অসম্ভব। কারণ, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তীব্র সংগ্রামরত বাংলাদেশের যদ্রূপ রোহিঙ্গাদের জন্য সামান্য বাড়তি অর্থ ব্যয়ের সামর্থ্য নাই, তদ্রূপ বিদ্যমান বিশ্ব-বাস্তবতায় ইউরোপ বা অন্য কোনো উন্নত রাষ্ট্রও অগ্রসর হইবে বলিয়া মনে হয় না। এহেন পরিস্থিতিতে পরিবেশ-প্রতিবেশগতভাবে স্পর্শকাতর কক্সবাজার ও...
    চাউলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপ সত্ত্বেও এই প্রধান খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যথেষ্ট উদ্বেগজনক সংবাদ। গত কয়েক মাসব্যাপী চাউলের বাজার তপ্ত। ভোক্তা অধিকার লইয়া কর্মরত বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং সচেতন মহলের অব্যাহত দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে শুল্ক হ্রাস, আমদানিসহ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু সকলই গরল ভেল। শুক্রবার সমকাল যদ্রূপ জানাইয়াছে, আমদানির খবরে মাঝে দুই-এক টাকা হ্রাস পাইলেও পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে সকল প্রকার চাউলের। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মানভেদে বিভিন্ন প্রকার চাউলের মূল্য কেজিতে ২ হইতে ১০ টাকা অবধি বৃদ্ধি পাইয়াছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সরেজমিন পরিদর্শনের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ভোক্তা পর্যায়ে মধ্যবিত্তের মধ্যে জনপ্রিয় প্রতি কেজি সরু বা মিনিকেট চাউল মানভেদে ৭৮ হইতে ৮২ টাকা, নাজিরশাইল মানভেদে ৮০ হইতে ৯০ টাকায় বিক্রয় হইতেছে। অথচ মাসখানেক পূর্বেও...
    বুধবার যেইভাবে গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা দফায় দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালাইয়াছে, উহা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের কয়েকটি কারখানা মাসখানেক পূর্বে বন্ধ হইবার কারণে শ্রমিকরা বর্তমানে কর্মহারা। একদিকে তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্য কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি, অন্যদিকে বকেয়া পারিশ্রমিক পরিশোধও কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। আমরা দেখিয়াছি, ইহার পূর্বেও শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামিয়াছেন; সপ্তাহখানেক পূর্বে কারখানা খুলিয়া দিবার জন্য মানববন্ধনও করিয়াছেন। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য এবং কেবল তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্যই নহে, বরং দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশক্তি চালু রাখিবার তাগিদ হইতেও কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি।  আমরা জানি, গত মধ্য ডিসেম্বরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর ১৬টি...
    শীতকালীন বিভিন্ন সবজির দাম কৃষক পর্যায়ে প্রান্তদেশ স্পর্শ করিয়াছে বলিয়া মঙ্গলবার সমকাল যেই সংবাদ দিয়াছে, উহা প্রধানত দুইটি কারণে উদ্বেগজনক বলিয়া আমরা মনে করি। ইহাতে শুধু উৎপাদকগণই চরম ক্ষতির শিকার হইতেছেন না; জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখোমুখি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে নাটোরে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি কেজি মুলার দর ২ বা ৩ টাকা, প্রতিটি লাউ ৫-৭ টাকা, শসার কেজি ৮-১০ টাকা, লালশাকের আঁটি ১ টাকা, ধনিয়া পাতার কেজি ৫-১০ টাকা, যেইগুলির অধিকাংশের উৎপাদন ব্যয় উক্ত বিক্রয় দর অপেক্ষা অধিক। উদাহরণস্বরূপ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, প্রতিটি লাউ উৎপাদনে ব্যয় হয় অন্তত ১৩ টাকা ২০ পয়সা। ফলে অধিক মুনাফার আশায় শীতের সবজি চাষ করিয়া উৎপাদকদের এখন পুঁজিই বিপন্ন হইবার পরিস্থিতি মোকাবিলা করিতে হইতেছে। উৎপাদকগণের এহেন দুর্দশা শুধু নাটোরেই নহে; বগুড়া, ঠাকুরগাঁওসহ সবজি উৎপাদনের...
    মিয়ানমারের রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হস্তে বাংলাদেশমুখী চারিটি পণ্যবাহী জাহাজ আটক হইবার ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সোমবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ইয়াংগুন হইতে পণ্য লইয়া টেকনাফে বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশের পূর্বেই আরাকান আর্মির সদস্যরা নাবিকগণকে জিম্মি করিয়া জাহাজগুলি বৃহস্পতি ও শুক্রবার মংডুতে লইয়া যায়। যদিও উভয় পক্ষের ‘সমঝোতায়’ জাহাজগুলি পরবর্তী সময়ে টেকনাফ বন্দরে ভিড়িয়াছে; ঘটনাকে সীমান্ত বাণিজ্যের প্রশ্নে সতর্ক সংকেত বলিয়া আমরা মনে করি।  আমরা জানি, ইতোমধ্যে রাখাইনের সিংহভাগ এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে আসায় রাজ্যটি কার্যত মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তচ্যুত হইয়াছে। বাংলাদেশের সহিত মিয়ানমারের প্রায় সম্পূর্ণ সীমান্তই সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরপরই তাহারা নাফ নদের মিয়ানমার অংশে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করিলে উহার প্রভাব টেকনাফকেন্দ্রিক সীমান্ত বাণিজ্যেও পড়িয়াছে। প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৮ ডিসেম্বর সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মংডু...
    বেসরকারি সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় দখল ও ‘ফোকলা’ করিবার যেই অভিযোগ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে উঠিয়াছে, উহা উদ্বেগজনক হইলেও বিস্ময়কর নহে। রবিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত সরকারের আমলে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের ক্ষমতাবলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পূর্বেকার ট্রাস্টি বোর্ড ভাঙিয়া তথায় বসানো হয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের। পেশিশক্তি ব্যবহার করিয়া আরও অন্তত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে ঢুকিয়া কয়েক শত কোটি টাকা লুটিয়াছেন তাহারা। আমরা জানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আয়ের সম্পূর্ণ অংশই আসে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি হইতে। বিগত আমলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করিয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার্থীদের উপর বর্ধিত বেতন ও ফি চাপানো হইয়াছে একাধিকবার। ঐরূপ পদক্ষেপের সহিত গোষ্ঠীগত স্বার্থের সংযোগ এখন স্পষ্ট হইল। ইহাও স্পষ্ট, আলোচ্য দখলদারিত্বে সরাসরি ক্ষতির শিকার হইয়াছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক বিবেচনায় গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডসমূহের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত মানহীন...
    চাহিদা অপেক্ষা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অত্যধিক হইবার কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র নামক এক প্রকার শ্বেতহস্তী পালন করিতে হইতেছে বলিলে ভুল হয় না। কারণ চুক্তি অনুযায়ী এই সকল কেন্দ্র হইতে বিদ্যুৎ ক্রয় না করিয়াও পিডিবিকে বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে একদিকে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায় অনাকাঙ্ক্ষিতরূপে, অন্যদিকে জনগণের উপর ইহার চাপ হ্রাসকল্পে ফি বৎসর ভর্তুকির পরিমাণ বর্ধমান। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, বর্তমানে চাহিদা অপেক্ষা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫৪ শতাংশের অধিক; যদিও এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ২০ শতাংশ। ইহার ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বৎসরে ১ লক্ষ ৩৩ সহস্র কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটস্থ হইয়াছে। সমস্যার এইখানেই ইতি ঘটে নাই। এই ক্রমবর্ধমান ব্যয় সামলাইতে সরকারকে উক্ত সময়ে...
    গত ৯ জানুয়ারি সরকার শতাধিক পণ্য ও সেবায় কর-শুল্ক বৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়াছিল, কতিপয় ক্ষেত্রে উহা পুনর্বিবেচনা করা হইতেছে বলিয়া শুক্রবার সমকাল জানাইয়াছে। জনপ্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট না হইলেও, সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভাশেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানাইয়াছেন, রেস্তোরাঁর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পূর্বের ন্যায় ৫ শতাংশই থাকিবে, ৯ জানুয়ারি যাহা ১৫ শতাংশ করা হইয়াছিল। পাশাপাশি ই-বুকের আমদানি ও সরবরাহে আরোপিত যথাক্রমে ১৫ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটও প্রত্যাহার করা হইয়াছে। একইসঙ্গে হজযাত্রীর বিমানের টিকিটের উপর কোনো আবগারি শুল্ক না রাখা, ঔষধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত বাড়তি ভ্যাট কার্যকর না করা এবং মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবার বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও আসিতেছে বলিয়া জানা গিয়াছে। তবে ই-বুকের ভ্যাট অব্যাহতির...
    পাঠ্যবইয়ের মলাটে ‘আদিবাসী’ শব্দ-সংবলিত গ্রাফিতি ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে দুইটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরিয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সম্মুখে সংঘর্ষের বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। পাঠ্যপুস্তকের আধেয় বিষয়ে মতপার্থক্য থাকিতেই পারে। উহা লইয়া পরস্পরবিরোধী কর্মসূচিতেও আপত্তি নাই। কিন্তু এক পক্ষ যখন অপর পক্ষের উপর শারীরিকভাবে হামলা করিয়া থাকে, তখন উহা সন্দেহাতীতভাবেই ফৌজদারি অপরাধ। বিশেষত বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে যেইভাবে এক পক্ষকে প্রহার ও রক্তাক্ত করা হইয়াছে, উহা সন্ত্রাসী তৎপরতা ব্যতীত কী হইতে পারে! আমরা দেখিতে চাহিব, অবিলম্বে দায়ীদিগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা লওয়া হইয়াছে। বৃহস্পতিবার যদিও অন্তত দুইজন হামলাকারী আটকের খবর পাওয়া গিয়াছে, দায়ী সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ব্যতীত এই প্রকার অঘটনের আরও শঙ্কা থাকিয়া যায়।    আলোচ্য সংঘর্ষের নেপথ্যে যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দুইটি সংগঠন যথাক্রমে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির নাম আসিয়াছে...
    প্রশাসনিক কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়েরই যেইখানে অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা বন্ধ তখন ‘হায়রে কপাল মন্দ’ ব্যতীত কী আর রহিয়াছে বলিবার! মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদনে উঠিয়া আসা চিত্র আমাদের স্মরণ করাইয়া দিতেছে গীতিকার আমজাদ হোসেনের বহুল জনপ্রিয় সংগীতের সেই চরণ- ‘হায়রে কপাল মন্দ/ চোখ থাকিতে অন্ধ’! নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা যেইখানে ‘চক্ষু’রূপে ব্যবহৃত হইতেছে, সেই ক্যামেরা বন্ধ থাকিবার বিষয়ে আলোচ্য সংগীতের ন্যায় আক্ষেপ প্রকাশ ব্যতীত আমরা আর কী করিতে পারি? আক্ষেপের অন্তরালে অবশ্য এই প্রশ্ন ঢাকা পড়িয়া যায় না– সচিবালয়ে গতিবিধি পর্যবেক্ষণে স্থাপিত সোয়া ছয়শত ক্যামেরার প্রায় ছয়শতই এত শীঘ্র বিনষ্ট হইল কী প্রকারে? খোদ সচিবালয়েই যখন নিরাপত্তার এই হাল তখন অপরাপর সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পরিস্থিতি সহজেই অনুমেয়।  বস্তুত বিদায়ী বৎসরের শেষ সপ্তাহে সচিবালয়ে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের অব্যবহিত পরই প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা লইয়া...
    পর্যটকের চাপে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের ত্রাহি অবস্থা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। আমরা জানি, অতিরিক্ত নৌযান ও পর্যটকের চাপজনিত ক্ষতি হইতে বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ২০১৪ সালে সুন্দরবন ভ্রমণ নীতিমালা প্রণীত হইয়াছিল, যথায় বনের অভয়ারণ্যের উপর চাপ হ্রাসকরত প্রান্তসীমায় নূতন পর্যটনকেন্দ্র গঠন, তৎসহিত প্রকৃতিবান্ধব পর্যটনের উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু সোমবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া ইদানীং প্রত্যহ গড়ে ৩০টি নৌযান অভয়ারণ্যে পূর্ণ দিবস অবস্থান করিতেছে। শুধু তাহাই নহে; নৌযানেই বসিতেছে ব্যাপক হই-হুল্লোড় সহযোগে ‘বনভোজন’। বলিয়া রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত বনটির সম্পূর্ণ অংশ সংরক্ষিত এবং ৫৩ শতাংশ এলাকা ঘোষিত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হইলেও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগ ১১টি পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করিয়াছে, যাহার মধ্যে চারটি পড়িয়াছে অভয়ারণ্য এলাকায়।  সুন্দরবনে পর্যটনের প্রভাব লইয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের...
۱