Samakal:
2025-04-11@08:39:58 GMT

কথা নহে, কাজ চাহি

Published: 10th, March 2025 GMT

কথা নহে, কাজ চাহি

অপরাধ দমনে স্বীয় বাহিনীর মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশে মহাপুলিশ পরিদর্শক- আইজিপি যেই শক্ত বার্তা দিয়াছেন, উহা গুরুত্বপূর্ণ বলিয়া আমরা মনে করি। রবিবার ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারের সহিত ভার্চুয়াল বৈঠক করিয়া আইজিপি তাহাদিগকে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতাসহ যেই কোনো প্রকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি শক্তভাবে মোকাবিলার নির্দেশ দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, কেহ অপরাধে সংশ্লিষ্ট হইলে দল-মত-গোষ্ঠী পরিচয় না দেখিয়া তাহার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ লইতে হইবে। সাম্প্রতিক সময়ে খোদ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নজিরবিহীন যেই মব ভায়োলেন্সের সম্প্রসারণ ঘটিয়াছে, কথিত নৈতিক পুলিশির নামে নারী হেনস্তা চলিতেছে, এমনকি একাদিক্রমে নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনা জনসমক্ষে আসিতেছে, প্রধানত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনীগুলির নিষ্ক্রিয়তা এহেন পরিস্থিতির জন্য দায়ী। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানির ন্যায় অপরাধের বাড়বাড়ন্তের পশ্চাতেও একই কারণকে দায়ী করা যায়। এই অবস্থায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান বাহিনীর সর্বোচ্চ মহল হইতে আলোচ্য নির্দেশনা নিঃসন্দেহে পুলিশের মাঠ প্রশাসনের আত্মবিশ্বাস ফিরাইয়া দিতে পারে। 

মুশকিল হইতেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শক্ত হস্তে নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা পুলিশপ্রধানের পূর্বে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, এমনকি সরকারের শীর্ষ মহলের নিকটেও শুনিয়াছি, যাহার প্রভাব মাঠ পর্যায়ে কার্যত পরিলক্ষিত হয় নাই। বরং বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপরই আক্রমণ সংঘটিত হইতেছে। পুলিশ হেফাজত হইতে আসামি ছিনাইয়া লইবার একাধিক ঘটনা অথবা একই উদ্দেশ্যে থানা ঘেরাওয়ের ঘটনাও ঘটিয়াছে। এই সকল ঘটনায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের আহত হইবার উদাহরণও বিরল নহে। আমরা মনে করি, শীর্ষ মহল হইতে যতই নির্দেশনা প্রদান করা হউক; সাধারণ পুলিশ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধি করিতে না পারিলে, আরও স্পষ্ট করিয়া বলিলে, আইন প্রদত্ত কর্তৃত্ব ফিরিয়া না পাইলে পুলিশকে প্রত্যাশিত মাত্রায় সক্রিয় করা কঠিনই থাকিবে। পুলিশের কর্তৃত্ব ফিরাইয়া দিবার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হইল সকল প্রকার বাহ্যিক হস্তক্ষেপমুক্তভাবে বাহিনীটিকে আইন ও বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

দুঃখজনক, পূর্বসূরিদের ন্যায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বাস্তব পরিস্থিতি অস্বীকারের প্রবণতা দৃশ্যমান, যাহা পুলিশের মধ্যেও ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা লুক্কায়িত করিবার প্রবণতা সৃষ্টি করিতে পারে। সরকারের শীর্ষ মহল হইতে যেই কোনো অপরাধজনক ঘটনার জন্য বিশেষ কোনো দল বা মহলকে দায়ী করিবার যেই প্রবণতা পরিলক্ষিত হইতেছে, উহাতে দোষারোপের পুরাতন ক্রীড়া অব্যাহত রাখিতে পারিলেও জননিরাপত্তা বিধানে ভূমিকা রাখে না। অস্বীকার করা যাইবে না, বিশেষত গত আগস্ট হইতে অদ্যাবধি পুলিশের উপর যত প্রাণঘাতী হামলা হইয়াছে; বাহিনীটির যত স্থাপনা ধ্বংস করা হইয়াছে, সেই সকল ঘটনার তদন্ত হয় নাই; অপরাধীদেরও আইনি বেষ্টনীতে আনা হয় নাই। ইহা বাহিনীটির মনোবল ফিরাইয়া আনিবার পথে প্রতিবন্ধকতাস্বরূপ– এই বিষয়ও সরকারকে অনুধাবন করিতে হইবে। দায়িত্ব পালনে পুলিশকে যে এখনও বিভিন্ন মহল বাধা প্রদানে দুঃসাহস  পাইতেছে, উহারও উৎস এইখানে নিহিত।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেই অবনতি ঘটিয়াছে, তাহা শুধু নাগরিকদের জীবন ও সম্পদকেই বিপন্ন করিতেছে না; জাতীয় অর্থনীতির জন্যও ভয়ংকর পরিণামকে আহ্বান জানাইতে পারে। এহেন অবস্থায় একদিকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস, অন্যদিকে বৈদেশিক বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব পড়িতে পারে। ফলে শুধু নির্দেশনা জারি নহে, এখন সময় উক্ত নির্দেশনা বাস্তবে রূপায়ণের। এই বিষয়টিই দেশের নীতিনির্ধারকগণ উপলব্ধি করিবেন বলিয়া আমরা প্রত্যাশা করি। তৎসহিত বর্তমান সমাজেও বিশেষ করিয়া তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতার বিরুদ্ধে যে জাগরণ দৃশ্যমান, উহাও অব্যাহত রাখিতে হইবে। আমরা জানি, যে কোনো পরিবর্তনে নাগরিক সচেতনতাই প্রাথমিক গতি সঞ্চার করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত প রবণত অপর ধ সরক র ল হইত

এছাড়াও পড়ুন:

পিএসসি জরুরি সভায় বসেছে, আসতে পারে কিছু সিদ্ধান্ত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোসহ পিএসসি’র সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ ও অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সভায় বসেছে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)। পিএসসির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে এ সভা শুরু হয়। পিএসসি চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম সভায় সভাপতিত্ব করছেন।

পিএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, বেলা আড়াইটার দিকে সভা শুরু হয়। সভা থেকে চাকরিপ্রার্থীদের দাবি সংবলিত যেকোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে। চলমান নানা পরিস্থিতি নিয়ে সভায় আলোচনা হবে।

আরও পড়ুনযেসব নিরাপত্তাঝুঁকিতে আছে পিএসসি, কী বলছেন চেয়ারম্যান৫ ঘণ্টা আগে

এর আগে সকালে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোসহ পিএসসি’র সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন একদল চাকরিপ্রার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে তাঁরা সেখান থেকে পাবলিক সার্ভিস কমিশন-পিএসসির দিকে যেতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রথমে বাধা দেন। পরে চাকরিপ্রার্থীদের জোর করে নির্বাচন কমিশন থেকে পিএসসির যাওয়ার পথ থেকে সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

এ সময় চাকরিপ্রার্থীদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগানের প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডে ‘৮ মে করব দে’, ‘ড্রিম পিএসসি’ , ‘ফ্যাসিজম নট অ্যালাউড’সহ নানা স্লোগান লেখা ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৌলভীবাজারে শাহ নিমাত্রার (রহ.) দরগাহের ওরস বন্ধের দাবিতে কর্মসূচির ঘোষণা, উত্তেজনা
  • মানুষ বলছে, আপনারা আরও ৫ বছর থাকেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • মানুষ বলতাছে আপনারা আরও ৫ বছর থাকেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • বাংলাদেশে যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের: জয়শঙ্কর
  • লালগালিচা দেখে চটে গেলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা 
  • পিএসসি জরুরি সভায় বসেছে, আসতে পারে কিছু সিদ্ধান্ত
  • রূপগঞ্জে শ্রমিক অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষ
  • মব ঠেকাতেই হবে
  • ঈদযাত্রায় নিহত ৩৫২, দুর্ঘটনা ও হতাহত গত বছরের তুলনায় কম: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জে আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১১২৪ কোটি টাকা