মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করে খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অনেকে। কেউ কেউ মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে অংশীজন নিয়ে আগামী বুধবার সভা ডেকেছে মন্ত্রণালয়। এতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টাও উপস্থিত থাকবেন।

বিদ্যমান আইন সংশোধন করে প্রণীত এই খসড়ায় রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচিতি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ রাখা হয়েছে। অন্য সবার পরিচয় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের বিষয়টি। এ ছাড়া পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ক্রমবিন্যাসও পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধন-সংক্রান্ত খসড়া অধ্যাদেশ জনমত যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ জন্য গত ২ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়। গতকাল রোববার এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৬টি মতামত মন্ত্রণালয়ে জমা হয়েছে। এতে অনেক মুক্তিযোদ্ধা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ করার প্রস্তাবকে ‘অপমানজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ খসড়া অধ্যাদেশের পক্ষে মত দিয়েছেন।

অন্যদিকে খসড়া অধ্যাদেশের ওপর মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে– এমন তথ্য জানা নেই বলে সমকালের কাছে দাবি করেছেন অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা জানান, ইন্টারনেট (ই-মেইল) ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। কখন কীভাবে মতামত চাওয়া হয়েছে, জানা নেই। আর আইন সংশোধন করে পরিচয় পরিবর্তনকে সমাজে হেয় করার অপচেষ্টা বলে মনে করছেন। এতে তাদের বিভেদ বাড়বে। জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করার আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সংগঠনগুলোর মতামত নেওয়া উচিত। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে খসড়াটি টানিয়ে দিতে হবে। নয় তো খসড়াটি অধ্যাদেশে পরিণত হলে তা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক সমকালকে বলেন, ‘নৌ কমান্ডোসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে আলাপ হয়েছে। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা বহির্বিশ্বে সংগঠক হিসেবে বা যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি বা অন্য কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন, তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সেই মতামতের আলোকে খসড়াটি প্রণয়ন করা হয়েছে। রণাঙ্গনের বাইরে যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাদের আমরা মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী প্রস্তাব করেছি। এখন মুক্তিযোদ্ধাদের আপত্তি থাকলে সেটা পর্যালোচনা করে দেখা হবে। এ জন্য বুধবার সভা ডাকা হয়েছে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনলাইন ব্যবহারে অভ্যস্ত নন– প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এই প্রশ্ন তোলা যৌক্তিক। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে খসড়া টানিয়ে দিয়ে মতামত সংগ্রহ করা গেলে ভালো হতো। সেই চেষ্টা করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের ভাতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ফারুক-ই-আজম বলেন, ভাতা হিসেবে এখন যেটা আছে, তারা সেটা পাবেন। শুধু স্বীকৃতির শ্রেণি পরিবর্তন হবে। তবে সেটাও খসড়া অধ্যাদেশে পরিণত হওয়ার পর।

খসড়ায় ২এর ১০ উপধারা সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্থ যাহারা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামেগঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করিয়াছেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়া হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল শামস, মুসলীম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামী ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করিয়াছেন– এইরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক উক্ত সময়ে যাহাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে ছিল এবং সশস্ত্র বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, বিএলএফ ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্ট (ইপিআর), নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স এবং আনসার সদস্য, তাহারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হইবেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞায় ২ ধারার ১২ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ অর্থ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষায় হানাদার ও পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামী ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’ অথচ বিদ্যমান আইনের সংজ্ঞায় বলা রয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া দখলদার ও হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম ও মুসলিম লীগ এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুজাহিদ বাহিনী ও পিস কমিটির বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধ।’ দুটি সংজ্ঞা পর্যালোচনায় দেখা যায়, খসড়ায় রাষ্ট্রের নাম ও মূলনীতি পরিবর্তনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর অবদান বাতিল এবং পাকিস্তান বাহিনীর দোসর হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগী বাহিনীগুলোর নাম আগে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

খসড়ায় ২ ধারার ১৫ উপধারায় মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের সংজ্ঞা সংযোজন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী অর্থ যাহারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে বা প্রবাসে অবস্থান করিয়া মুক্তিযোদ্ধাগণকে উদ্দীপিত করা এবং মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করিবার প্রয়াসে সংগঠকের ভূমিকা পালন, বিশ্বজনমত গঠন, কূটনৈতিক সমর্থন অর্জন এবং মনস্তাত্ত্বিক শক্তি অর্জনের প্রেক্ষাপটে নিম্নবর্ণিত যে সকল বাংলাদেশের নাগরিক প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করিয়াছেন’ তাদের বোঝাবে। এর মাধ্যমে বিশ্বজনমত গঠনে পেশাজীবী, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, গণপরিষদের সদস্য, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কর্মরত সব সাংবাদিক এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন। জীবিত ৯১ হাজার ৯৯৮ জন।

খসড়া অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন হচ্ছে বা এ নিয়ে খসড়া তৈরি হয়েছে– এমন তথ্য জানা নেই। এটি অবাক করার বিষয়। সব মুক্তিযোদ্ধাকে বিষয়টি জানানো উচিত। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি এ সময় এই প্রতিবেদকের কাছ থেকে খসড়া অধ্যাদেশটি সংগ্রহ করেন।
অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী আরও বলেন, অনলাইনে খসড়া দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মতামত চাওয়াটা লোক দেখানো। এই বয়সে ফেসবুক ও টিভি ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে আমাদের কাছে তথ্য পৌঁছায় না।

খসড়া অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব সমকালকে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ কতটুকু যুক্তিসংগত তা সময় নির্ধারণ করবে। রণাঙ্গনের নগণ্য অংশীদার হিসেবে আশা করব বৃদ্ধ বয়সে মুক্তিযোদ্ধারা যেন আর নতুন করে হয়রান না হন। যদি হন, তা হবে দুর্ভাগ্যজনক।’
তাঁর মতে, মুক্তিযুদ্ধ জাতির ইতিহাসে মীমাংসিত সত্য। তাই এ বিষয় নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টির অবকাশ নেই। বহু দলমতে বিভক্ত হয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, মত ও মতের অমিলের যৌথ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হবে– এটাই প্রত্যাশা।
‘খসড়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই’ জানিয়ে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো.

শাহজাহান কবির বীরপ্রতীক সমকালকে বলেন, ‘দেশের যে অবস্থা তাতে মুক্তিযোদ্ধারা এখন অসহায়। মন্ত্রণালয়ে গিয়ে খসড়ার বিষয়ে খোঁজখবর করতে হবে।’

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ক ত য দ ধ র সহয গ মত মত আপত ত সমক ল ইসল ম খসড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

১৯৭১ সালের ২২ মার্চের সমাবেশটি কেন ‘অনন্য’

১৯৭১ সালের ১ মার্চে সংসদ অধিবেশন বাতিল হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের আনুগত্য কমতে থাকে। একই অবস্থা সামরিক বাহিনীতেও লক্ষ করা যায়। অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি সৈনিকেরাও শেখ মুজিবের ডাকে সাড়া দেন।

তৎকালীন গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী হাউ পাকিস্তান গট ডিভাইডেড বইয়ে তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এ সময়ে খুব উল্লেখযোগ্য ও উদ্বেগজনক অবস্থা পরিলক্ষিত হয়, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ব পাকিস্তানি সদস্যদের আনুগত্য সন্দেহের চোখে দেখা হতে থাকে। এ সময়ে কর্নেল ওসমানীর নেতৃত্বে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা ঘন ঘন বৈঠকে মিলিত হতে থাকেন। উদ্দেশ্য, সাংবিধানিকভাবে সমস্যার সমাধান না হলে আওয়ামী লীগের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী গঠনের প্রস্তুতি।’

২ মার্চ শেখ মুজিব এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীসহ প্রত্যেক বাঙালির পবিত্র কর্তব্য হচ্ছে গণবিরোধী শক্তির সঙ্গে সহযোগিতা না করা। অধিকন্তু তাদের উচিত সবটুকু শক্তি দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেওয়া।’ [হাসান হাফিজুর রহমান (২য় খণ্ড)]

এই নির্দেশের পর পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় কর্মরত বেসামরিক বঙালি কর্মচারীরা অসহযোগ আন্দোলনে শরিক হন এবং তাঁরা কর্মবিরতি পালন করতে শুরু করেন। ১৩ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক বাঙালি কর্মচারীদের ১৫ মার্চের মধ্যে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয় যে আদেশ অমান্য করলে তাঁদের ছাঁটাই করা হবে, এমনকি ১০ বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হতে পারে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাঙালি কর্মচারীরা এ আদেশ অমান্য করেন। অর্ডন্যান্স ডিপো কর্মচারী ইউনিয়নের মুখপাত্র জানান, ‘গতকাল (১৫ মার্চ) সামরিক বিভাগের অধীনস্থ প্রায় ১১ হাজার বেসামরিক কর্মচারীর মধ্যে কেউই কাজে যোগদান করেননি।’ (ইত্তেফাক, ১৬ মার্চ ১৯৭১)

সেনাবাহিনীর তৎকালীন ১৪ ডিভিশনের জিওসি খাদিম হোসেন রাজা আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি বইয়ে বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানিরা সকল স্থানীয় প্রশাসনিক সহায়তা প্রত্যাহার করে নেয়। এমনকি মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের (বেসামরিক) স্টাফরা কাজ বন্ধ করে দেয়।’

কারা ছিলেন আয়োজক

অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে সামরিক বাহিনীর বেসামরিক কর্মচারীদের পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত বা প্রাক্তন সৈনিকেরা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশ নিতেন। অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকেরা এককভাবে অথবা সমষ্টিগতভাবে গণমাধ্যমে বিবৃতির মাধ্যমে আন্দোলনের সপক্ষে সমর্থন প্রদান করেন। কখনো কখনো সৈনিকেরা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সভার আয়োজন করেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সৈনিকেরা স্বাধীনতার দাবি জানান। তাঁদের অনেকে শেখ মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে স্বাধীনতার ঘোষণার জন্য অনুরোধ করেন।

■ সমাবেশটি আয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ও সৈনিকেরা বিভিন্নভাবে তত্পরতা চালান।  ■ পাকিস্তানিরা মনে করে যে বাঙালি সৈনিকেরা সামরিক প্রস্তুতি নিলে তা তাদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

১৯৭১ সালের ২২ মার্চ অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন প্রাক্তন সৈনিক সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বেলা তিনটায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছুটিতে থাকা অনেক চাকরিরত সৈনিকও পরিচয় গোপন রেখে সমাবেশে অংশ নেন।

২১ মার্চের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গিয়েছিল, ২০ মার্চ প্রাক্তন সৈনিকদের কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এ জে এম খলিলুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন যে ২২ মার্চ বেলা তিনটায় বায়তুল মোকাররমে প্রাক্তন সৈনিকদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। (দ্য পিপল, ২১ মার্চ ১৯৭১)। অপর একটি পত্রিকা উল্লেখ করে, সভায় সভাপতিত্ব করবেন মেজর জেনারেল (অব.) ইসফাকুল মজিদ। (পূর্বদেশ, ২১ মার্চ ১৯৭১)। ২২ মার্চ একই সংবাদ দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হিসেবে প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সব পদবির অবসরপ্রাপ্ত সৈনিককে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান করা হয়।

সমাবেশটি আয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সৈনিকেরা বিভিন্নভাবে তত্পরতা চালান। তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সৈনিকদের উদ্বুদ্ধ করেন এবং সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য উত্সাহিত করেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আহমেদ রেজা একাত্তরের স্মৃতিচারণ বইয়ে বলেন, ‘২২শে মার্চ সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন বাঙালি অফিসার ও সৈনিকদের বিরাট সমাবেশ হলো বায়তুল মোকাররামের সামনে। এই সমাবেশে নেতৃত্ব দিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মজিদ ও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ওসমানী। সমাবেশের ব্যবস্থাপনায় অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইং অফিসার আলমের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিলো। জনাব আলম তখন ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা অফিসার। বস্তুত তাঁরই অক্লান্ত একক প্রচেষ্টায় এই সমাবেশ সফল হয়েছিলো। ২৫শে মার্চ রাতেই তিনি নিহত হন পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে।’

২২ মার্চের সমাবেশ সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তান উল্লেখ করে, ‘প্রতিদিনের অসংখ্য সমাবেশের স্মৃতিবাহী বায়তুল মোকাররমে গতকাল (২২ মার্চ) সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে এক অনন্য অনুষ্ঠান। অন্য সব সভা অন্য সব অনুষ্ঠান থেকে এই সমাবেশ ছিল সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এ সমাবেশ ছিল অভূতপূর্ব বৈশিষ্ট্যময়। এই একটি সমাবেশ এবং সমাবেশ শেষে একটি মিছিল যেন এক অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিল গতকাল ঢাকাবাসীদের মনে। এক একটি সমাবেশ যেন তাদের হৃদয়ে সঞ্চার করেছিল এক দুর্দমনীয় সংগ্রামী প্রেরণা। হাজার হাজার মানুষ কাল ছুটে এসেছিল এই সমাবেশ এই মিছিলের আকর্ষণে। এই একটি সমাবেশ, এই একটি মিছিল যেন ছিল ঢাকাবাসীদের বহু আকাঙ্ক্ষিত। এই সমাবেশ ও মিছিলটি ছিল প্রাক্তন সৈনিকদের, স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রাক্তন সৈনিকদের মিলিত সমাবেশ ও মিছিল।’ (দৈনিক পাকিস্তান, ২৩ মার্চ ১৯৭১)

লে. কমান্ডার জয়নাল আবেদীন সমাবেশের উপস্থিতি সম্পর্কে উল্লেখ করেন, ‘১৯৭১ সালের ২২শে মার্চ প্রায় ঊনসত্তর জন সাহসী ও নির্ভীক অফিসার ও সাবেক সতেরো হাজার কর্মচারী নিয়ে বায়তুল মোকাররমে মিছিল বের করি।’ (দৈনিক বাংলা, ২৩ মার্চ ১৯৭৫)

সমাবেশের বক্তব্য

ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন মেজর জেনারেল (অব.) ইসফাকুল মজিদ। সভা পরিচালনা করেন কর্নেল এম এ জি ওসমানী। ‘জয় বাংলা’ সংগীতের মাধ্যমে সভার কাজ শুরু হয়। এ সময় সমবেত সৈনিকেরা ‘অ্যাটেনশন’ বা ‘সাবধানে’ দাঁড়িয়ে থাকেন। সভায় বক্তৃতা করেন কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, মেজর খাজা হাসান আসকারী, মেজর শফিউল্লাহ, লে. কমান্ডার ইমাম হোসেন, মেজর আফসারউদ্দিন, মেজর জামাল আতহার, লে. কমান্ডার ফারুক, লে. কমান্ডার জয়নাল আবেদীন, ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট খলিলুল্লাহ, ক্যাপ্টেন আহসানউদ্দিন, করপোরাল মাহমুদুন্নবী প্রমুখ। প্রাক্তন সৈনিকদের কথা শোনার জন্য বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে বিপুল জনসমাগম হয়।

সভাপতির ভাষণ সম্পর্কে পত্রিকায় উল্লেখ ছিল, ‘সভাপতির ভাষণে মেজর জেনারেল মজিদ বলেন, “আমরা সৈনিক। কথার চাইতে কাজে বেশি বিশ্বাস করি”। তিনি আরও বলেন যে, “বাংলার মুক্তি সংগ্রামে লিপ্ত যে কোনো মানুষের সহিত প্রাক্তন সৈনিকেরা কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া সংগ্রাম করিয়া যাইবে”।’(আজাদ, ২৩ মার্চ ১৯৭১)

কর্নেল ওসমানী তাঁর বক্তৃতায় বলেন যে দেশ ও জাতির প্রতি এই প্রাক্তন সৈনিকদের যথেষ্ট দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তিনি তাঁদের প্রতি বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের জন্য শেখ মুজিবের নেতৃত্বে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। (দৈনিক পাকিস্তান, ২৩ মার্চ ১৯৭১)

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট খলিলুল্লাহ বলেন, ‘অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা সৈনিক। শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনে আমরা বিশ্বাসী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের অপেক্ষায় রহিয়াছি। একবার নির্দেশ লাভ করিলে কি করিয়া স্বাধীনতা অর্জন করিতে হয় তাহা আমরা জানি।’ (আজাদ, ২৩ মার্চ ১৯৭১)

সমাবেশে সৈনিকেরা অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিকে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলা এবং দেশের আসন্ন স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য শপথ গ্রহণ করেন। যাঁরা এই সমাবেশে আসতে পারেননি, সভা থেকে তাঁদেরও আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সভা শেষে সৈনিকেরা ব্যান্ডের তালে তালে কুচকাওয়াজ করে শহীদ মিনারে যান। সৈনিকদের পক্ষ থেকে মেজর জেনারেল মজিদ শহীদ মিনারে পূর্ণ সামরিক কায়দায় পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

সৈনিকেরা যান মুজিবের বাড়ি

শহীদ মিনারে কর্নেল ওসমানী বক্তব্য দেওয়ার পর স্বাধীনতাযুদ্ধে যোগদানের জন্য রক্তশপথের অঙ্গীকারনামা পাঠ করেন। তারপর সৈনিকেরা মিছিল করে শেখ মুজিবের বাড়িতে যান। সৈনিকদের মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মেজর জেনারেল মজিদ ও কর্নেল ওসমানী। বায়তুল মোকাররম থেকে শুরু করে শেখ মুজিবের বাসভবন পর্যন্ত সারাটি পথে তাঁরা রাস্তার দুই পাশে উদ্বেলিত জনতার হর্ষধ্বনি ও করতালি লাভ করেন।

সৈনিকদের মিছিল শেখ মুজিবের বাড়ির গেটে এসে পৌঁছালে তিনি তাঁদের স্বাগত জানান। সেখান থেকে মেজর জেনারেল মজিদ, কর্নেল ওসমানীসহ চারজন বাড়ির ভেতরে যান এবং তাঁর লাইব্রেরিতে একান্ত বৈঠকে মিলিত হন। প্রতিনিধিদল অসহযোগ আন্দোলনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বের প্রতি তাঁদের আনুগত্য প্রকাশ করে। বৈঠককালে মেজর জেনারেল মজিদ বঙ্গবন্ধুর হাতে সংগ্রাম, শক্তি ও আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে একটি তরবারি তুলে দেন। শেখ মুজিব সসম্মান চুম্বনের মাধ্যমে তরবারিটি গ্রহণ করেন। (আজাদ, ২২ মার্চ ১৯৭১)

সমাবেশের প্রতিক্রিয়া

২৪ মার্চ সৈনিকদের সমাবেশকে উপলক্ষ করে ইত্তেফাক পত্রিকা ‘“প্রাক্তন” সৈনিকদের একাত্মতা’ শিরোনামে একটি দীর্ঘ সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ ছিল, ‘গত পরশু (২২ মার্চ) “বায়তুল মোকাররম” প্রাঙ্গণে প্রাক্তন স্থলসেনা, নাবিক ও বৈমানিকদের এক সমাবেশে সাবেক সৈনিকেরা সাত কোটি বাঙ্গালীর স্বাধিকার সংগ্রামের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তাঁহারা বলেন, আমরা প্রাক্তন সৈনিকগণ আজ আর “প্রাক্তন” হিসাবে বসিয়া থাকিতে পারি না।

‘সত্য সত্যই আজিকার এই সর্বাত্মক সংগ্রামে “সাবেক” বা “প্রাক্তন” বলিয়া কাহারও আর অবসর যাপনের সুযোগ নাই। সকল শ্রেণীর মানুষ ক্ষেত-খামার, শিল্প-শিক্ষায়তন, বাজার, বিপণী-অফিস-আদালত হইতে রাজপথে নামিয়া আসিয়া পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া সমতালে অগ্রসর হইতেছে। দুই-চারিটা ডিভিশন লইয়া এই বাহিনী নয়, সারা বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষ লইয়া এই গণ-বাহিনী। প্রাক্তন সৈনিকরাও সামাজিক শ্রেণীগত বৈষম্য বা দলগত বিভিন্নতা বিসর্জন দিয়া এক কাতারে শামিল হইয়াছেন এবং বৃহত্তর জনসমষ্টির সহিত একাত্মতা ঘোষণা করিয়াছেন, ইহা সত্য সত্যই সকল সংগ্রামী পক্ষেই একটি প্রেরণার বিষয়।’ (ইত্তেফাক, ২৪ মার্চ ১৯৭১)

২২ মার্চের সৈনিক সমাবেশ পাকিস্তানিদের বেশ ভাবিয়ে তোলে। তারা মনে করে যে বাঙালি সৈনিকেরা সামরিক প্রস্তুতি নিলে তা তাদের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এবং তাদের আক্রমণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সমাবেশটি সংগঠনে সহায়তা করার জন্য তারা চট্টগ্রামের ইবিআরসির কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার এম আর মজুমদারকে সন্দেহ করে। ক্যাপ্টেন (পরে মেজর জেনারেল) আমীন আহম্মেদ চৌধুরী ১৯৭১ ও আমার সামরিক জীবন বইয়ে বলেন, ‘ঢাকায় প্রাক্তন সেনাদের সমাবেশ হওয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড ব্রিগেডিয়ার মজুমদারের ওপর শ্যেনদৃষ্টিতে তাকাতে শুরু করে। তারা ধারণা করে প্রাক্তন সেনাদের সমবেত করার পিছনে ব্রিগেডিয়ার মজুমদারের হাত আছে। প্রাক্তন সেনাদের একটি তালিকা রেকর্ড অফিস থেকে তিনি নিয়েছেন। আর ফেরত দেননি। এটা বোধ হয় পাকিস্তানিরা জেনে ফেলে। ফলে তাঁর উপর পাকিস্তানের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হতে থাকে।’

পাকিস্তানিদের এই শঙ্কা গবেষক রিচার্ড সিজন ও লিও ই রোজের গবেষণায়ও উদ্‌ঘাটিত হয়েছে। তাঁরা উল্লেখ করেন, প্রাক্তন সৈনিকদের একটি সভা সেনা কর্তৃপক্ষের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে পড়ে, সেখানে দুজন অবসরপ্রাপ্ত বাঙালি অফিসার, মেজর জেনারেল এম ইউ (এম আই হবে) মাজিদ ও কর্নেল এম এ জি ওসমানী ভাষণ দেন। তাঁরা বাংলাদেশ আন্দোলনকে সমর্থন জানান এবং মুজিবের আশীর্বাদের জন্য মিছিলসহ তাঁর ধানমন্ডির বাসায় যান।

এই সমাবেশের পর পাকিস্তানি বাহিনী ২৩ মার্চের মধ্যে অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে এবং ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

মুহাম্মদ লুৎফুল হক গবেষক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৯৭১ সালের ২২ মার্চের সমাবেশটি কেন ‘অনন্য’
  • পাল্টা আক্রমণে নিহত হয় পাকিস্তানিরা