2025-04-16@21:31:40 GMT
إجمالي نتائج البحث: 114
«স দ ইবন»:
কোরআনে আল্লাহ ‘এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত’ বর্ণনা করে বলেছেন, ‘যখন তাঁদের কাছে এসেছিল রাসুলগণ।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ১৩)এই জনপদের নাম কোরআনে উল্লেখ নেই। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক, ইবনে আব্বাস, কাব ইবনে আহবার ও ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ’র মতো ইতিহাসবেত্তগণ বলেছেন, জনপদটির নাম ‘আন্তাকিয়া’। মুজামুল বুলদান গ্রন্থে আছে, আন্তাকিয়া শাম অঞ্চলের প্রাচীন নগরী। এটি বর্তমান তুরস্কে অবস্থিত। সেই যুগে সমৃদ্ধি ও স্থাপত্যে প্রসিদ্ধ ছিল আন্তাকিয়া। নগরীটি দর্শনার্থীদের চোখ আটকে রাখত নিজস্ব সৌন্দর্যে। এতে খ্রিষ্টানদের সোনা-রুপার কারুকার্য খচিত বড় বড় গির্জা ছিল। সাহাবি আবু উবায়দা ইবনে জাররা (রা.) এ শহর জয় করেন। (তাফসিরে মারেফুল কোরআন, মূল: মুফতি মুহাম্মাদ শফি, অনুবাদ, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, পৃষ্ঠা: ১,১২৯) আন্তাকিয়ার অধিবাসীরা আল্লাহর একত্ববাদকে অস্বীকার করত। তাদের বাদশাহ আন্তিখিস বিন আন্তিখিসও ছিলেন বহু ঈশ্বরের পূজারী। তাঁদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহ...
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ-উপাচার্য ড. সোবহান মিয়া, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়াত হোসেন নয়নসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। সোমবার নগরীর খানজাহান আলী থানায় মামলা দুটি করেন কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান ও মাহদী হাসান। মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র আদালতে পাঠানো হলে তথ্যটি প্রকাশ পায়। খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের ১ মে রাতে লালন শাহ হলের গেস্ট রুমে লুৎফর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারপিট করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীদের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। একই রাতে মাহদী হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীরা খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতটি থানাকে মামলাটি গ্রহণের...
মানুষকে যেহেতু প্রতিবেশীকে ‘ইহসান’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এটাই বলে দেয় যে, প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরও বেশি করেই।রাসুল (সা.) প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া থেকে সতর্ক করেছেন।আবু শুরাইহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়।’ জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আল্লাহর রাসুল, কে মুমিন নয়? তিনি বললেন, যার পীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৬)আবু হোরায়রা (রা.)-র পক্ষ থেকেও একই রকম একটি বর্ণিত হয়েছে, যেখানে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে না, যার পীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৬)আরও পড়ুনযাঁর নামে কোরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে০৮ এপ্রিল ২০২৫তিনি আরও বলেন, ‘নবীজিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর রাসুল, অমুক নারী...
মুসলিম সভ্যতায় খাওয়ার সংস্কৃতি কথা তখনকার সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছে। সাহিত্যিকদের অনেকে রান্নার স্বাদ, রস ও প্রকার বিভিন্ন উপমায় বর্ণনা করেছেন। অনেকে ভোজনশালার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন চটুল ও রহস্যময় বর্ণনায়। কেউ কেউ বুদ্ধিবৃত্তিক সমালোচনাও করেছেন। তাঁদের বইয়ে রান্নার সঠিক নিয়ম কী হওয়া উচিত এবং সুস্বাদু খাবারের পূর্বশর্ত কী, তা অনুসন্ধান করেছেন। আবু বাকার আল-রাযির (৩১১ হিজরি, ৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) মুনাফি আল-গিজা ওয়াদাফিউল আযমারাহ এ বিষয়ে একটি অনন্য গ্রন্থ।বাগদাদি লেখক ‘মিসাল বাগদাদ’ বাগদাদের রন্ধনশিল্পের বিশালতা কাব্যিক ঢঙে বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যেখানে কালো সিসা রুটির ওপর ছড়িয়ে দেওয়া ছিল, সেটি দেখলে মনে হতো যেন পূর্ণ চাঁদ, এবং তার স্বাদ এত মিষ্টি ছিল যেন এক গ্রাসে খেয়ে ফেলা যেত।’ইবন তাইফুর মারভেজি (২৮০ হিজরি, ৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর কিতাব বাগদাদ গ্রন্থে মাওমুন নামে এক বাগদাদি বিশেষজ্ঞের...
সামিট কর্পোরেশন লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ পেয়েছেন ইমতিয়াজ ইবনে সাত্তার (ইমতিয়াজ)। সামিট কর্পোরেশন লিমিটেড সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের (এসপিআই) শতভাগ মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (আইপিপি) এবং অন্যতম প্রধান এলএনজি অবকাঠামো অপারেটর। ইমতিয়াজ ইবনে সাত্তার সামিট কর্পোরেশনের সামষ্টিক অর্থ বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন। যেখানে তিনি প্রকল্প অর্থায়ন, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কাজের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী, অর্থদাতা ও সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। ইমতিয়াজ সামিট কর্পোরেশন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ এবং সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের উচ্চতর নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট করবেন। এর আগে ইমতিয়াজ ইবনে সাত্তার আট বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিএফও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে তিনি ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যালান্স শিট তত্ত্বাবধান করেছেন। একই সময়ে তিনি স্ট্যান্ডার্ড...
অধ্যাপক আবু বকর আল-সুলী (৩৩৯ হিজরি, ৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ) তাঁর আদাব আল-কাতিব গ্রন্থে এক আরব আর এক পার্সির ঝগড়ার গল্প বলেছেন। পারসি লোকটি আরবকে বলছিল, ‘আমরা কখনো আপনাদের সাহায্য ছাড়া কিছু করিনি। আপনাদের রান্না, পানীয় আর শাসন ব্যবস্থাও একইভাবে রেখেছি। কিছুই বদলাইনি। এভাবে তো চলে না।’ আরব উত্তরে জানাল, ‘ধৈর্য ধরুন, এক হাজার বছর শাসন করার পর কিছু পরিবর্তন নিশ্চয় আনব, তখন আপনার সমস্যা হবে না।’এই ধরনের বিতর্ক তখনকার সময়ে সভ্যতা ও সংস্কৃতির অভূতপূর্ব মিলনের চিত্র ফুটিয়ে তোলে। একই সঙ্গে তা রান্নার শিল্প কীভাবে সভ্যতার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল, তা-ও চিত্রায়িত করে।আদি খাদ্যসংস্কৃতিআরবরা আদিতে এমন একটি পরিবেশে বাস করত, যেখানে খাদ্যের প্রাপ্যতা ছিল সীমিত। তখন তাদের প্রধান খাবার ছিল সারিদ। সারিদ ছিল এক ধরনের পিঠা, মাংসের স্যুপে ভিজিয়ে খাওয়া হতো। আর ছিল...
নামাজে দুই রাকাত বা চার রাকাতের বৈঠকে আমরা যে ‘আত-তাহিয়্যাতু’ পাঠ করি, তার আরবি নাম হলো তাশাহ্হুদ। তাশাহ্হুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া, যা নামাজের প্রত্যেক বৈঠকে পড়তে হয়। তাশাহুদ বা আত-তাহিয়্যাতু হচ্ছে মহান আল্লাহ ও মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি কথোপকথন; যা মিরাজের রাত্রিতে সংঘটিত হয়। নামাজে যে দোয়াটি পড়া হয় এর অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করা প্রয়োজন।আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে নামাজ আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম, ‘আসসালামু আলা জিবরিলা ওয়া মিকাইলা ওয়া আসসালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আল্লাহ নিজেই তো সালাম। তাই যখন তোমরা কেউ নামাজ আদায় করবে, তখন সে যেন তাশাহহুদ পড়ে । কেননা, যখন তোমরা এই দোয়া পড়বে, তখন তা আসমান ও জমিনে অবস্থানকারী আল্লাহর...
৬২২ সালে মহানবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদিনায় যান। ইসলামে একে বলা হয় ‘হিজরত’। হিজরি সনের সূচনা হয় মহানবীর (সা.) হিজরতের সময়কে কেন্দ্র করেই। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর আমলে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজরি সন গণনা শুরু হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, বসরার গভর্নর আবু মুসা আশআরি (রা.) ওমরের কাছে এক পত্রে লেখেন, ‘আমিরুল মুমিনিন, আমাদের কাছে বহু পত্র আসে, যাতে তারিখ লেখা থাকে শাবান। কিন্তু তা চলমান বছরের, নাকি অতীতের—আমরা বুঝতে পারি না। তারপর ওমর (রা.) সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন। (ইবনুল আসির, আল-কামিল ফিত-তারিখ: ১ /৮)আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘ওমর (রা.) হিজরি সন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তখন একটি পরামর্শ সভার আহ্বান করেন। সভায় নবীজি (সা.)-এর জন্ম, মৃত্যু, নবুওয়াত ও হিজরত—বিশেষত এই চারটি সময় থেকে বর্ষ গণনার প্রস্তাব আসে। আরও পড়ুনকথার...
ইসলামের সোনালি যুগ থেকেই নারীরা আর্থসামাজিক উন্নয়নের অংশীদার হয়েছেন। বিচিত্র পেশায় অংশ নিয়ে সমাজে অবদান রেখেছেন। রাসুল (সা.)-এর যুগ থেকে হাজার বছরের মুসলিম শাসনের ইতিহাসে নারীরা জ্ঞানচর্চা, সমাজসেবা ও অর্থনীতিতে সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা লাভ করেছেন। মহানবী (সা.)-এর যুগে অনেক স্বাবলম্বী নারী ছিল এবং তারা বিচিত্র পেশা গ্রহণ করেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যবহু নারী সে সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। নারী সাহাবি কায়লা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবীজির (সা.) কোনো এক ওমরাহ আদায়কালে মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রাসুল(সা.), আমি একজন নারী। আমি বেচাকেনা করি। কিছু কিনতে চাইলে আমার কাঙ্ক্ষিত মূল্যের চেয়ে দাম কম বলি। এরপর দাম বাড়াতে বাড়াতে কাঙ্ক্ষিত মূল্যে গিয়ে পৌঁছাই। আবার কিছু বিক্রি করতে চাইলে কাঙ্ক্ষিত মূল্যের চেয়ে দাম চাই বেশি। পরে দাম কমাতে কমাতে কাঙ্ক্ষিত মূল্যে নেমে আসি।’ রাসুল...
মক্কায় রাসুলের (সা.) অন্যতম শত্রু ছিল উকবা ইবনে আবি মুঈত। সে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও রাসুলুল্লাহকে অপমান করতে নির্লজ্জ কাজ করত। নামাজে সেজদায় গেলে সে মৃত উটের নাড়িভুঁড়ি রাসুলের ওপর ছুঁড়ে মারত।বদর যুদ্ধে উকবা নিহত হয়।উকবার স্ত্রীর নাম ছিল আরওয়া বিনতে কুরাইয। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। উকবার ৬ জন সন্তানের প্রত্যেকেই পরবর্তীকালে মুসলমান হন। তাদের একজন ছিলেন উম্মে কুসলুম (রা.)।উকবার মেয়ে উম্মে কুলসুম ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কায়, কিন্তু সাহাবিদের সঙ্গে মদিনায় হিজরত করতে পারেননি। ষষ্ঠ হিজরিতে হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় তিনি একাকী মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। পেছন থেকে তাঁকে অনুসরণ করেন তাঁর দুই ভাই ওয়ালিদ ও আম্মার। দুই ভাই তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি। বোনের পিছু নেন তারা, যাতে করে তাঁকে মক্কায় ফিরিয়ে নিতে পারেন।আরও পড়ুনদুই কিশোরের বীরত্বে মারা গেল...
উম্মে সালামার(রা.)পুরো নাম হিন্দ বিনতে আবু উমাইয়া ইবন আল-মুগীরা। তিনি ছিলেন রূপে ও গুণে অনন্য, অভিজাত বংশোদ্ভূত এবং অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এক মহান নারী। তাঁর স্বামী আবদুল্লাহ ইবন আবদ আল-আসাদ ছিলেন ইসলামের প্রাথমিক যুগের সাহসী সাহাবিদের একজন, যিনি রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-এর গোপনে দাওয়াতকালে ইসলাম গ্রহণ করেন।উম্মে সালামা (রা.) ও তাঁর স্বামী দুজনেই ছিলেন ইসলামের সূচনালগ্নের প্রথম দিককার অনুসারী। তাঁর স্বামী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাচাতো ভাই, আর স্বামীর মা ছিলেন নবীর পিতৃপক্ষের ফুফু—আরওয়া বিনতে আবদুল মুত্তালিব। এ দম্পতি ইসলামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যারা আবিসিনিয়ায় (বর্তমান ইথিওপিয়া) হিজরত করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম।আরও পড়ুনআবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ছিলেন বিজ্ঞ ও সাহসী সাহাবি১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী উম্মে সালামা শিরক ও মূর্তিপূজার অযৌক্তিকতা অনুধাবন করে নিজ উদ্যোগে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবু উমাইয়া ছিলেন মক্কার...
উম্মু খালিদ বিনতে খালিদ (রা.) ছিলেন খ্যাতিমান সাহাবি খালিদ ইবনে সাইদ ইবনুল আসের (রা.) মেয়ে। মক্কায় কুরাইশদের নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে দ্বিতীয়বার মুসলিমদের যে-দলটি আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন, তার মধ্যে খালিদও ছিলেন। হিজরতে তিনি তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নেন। সেখানেই জন্মগ্রহণ করেন আমা বিনতে খালিদ; যিনি উম্মু খালিদ নামে পরিচিত।খায়বার বিজয়ের পর আবিসিনিয়ায় যাওয়া মুসলিমরা মদিনায় চলে এলে খালিদ ইবনে সাঈদ (রা.)-ও পরিবার নিয়ে মদিনায় আসেন। উম্মু খালিদ মা-বাবার মুখে রাসুলের (সা.) কথা শুনেছিলেন। এবার তিনি তাঁকে স্বচক্ষে দেখতে পান। ফলে তিনিও হয়ে যান সাহাবি। তখন তাঁর বয়স কতো হবে? ছয় বা সাত বছর।একদিন রাসুল (সা.)-কে কিছু কাপড় উপহার দেওয়া হলো। একটি ছিল নকশাদার কালো চাদর। তিনি সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই চাদরটি কাকে দেব?’ সাহাবিরা ভদ্রতাবশত কিছু বললেন না। রাসুল (সা.) বললেন,...
কুরাইশের বনু তাইমি গোত্রের কন্যা সালমা বিনতে সাখার (রা.)। চাচাতো ভাই আবু কুহাফার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ব্যক্তিত্ব আবু বকর সিদ্দিক (রা.)। ফলে তাঁকে ‘উম্মুল খাইর’ বা ‘কল্যাণের জননী’ উপনামে ডাকা হতো। খাইর অর্থ হচ্ছে কল্যাণ। এখানে খাইর বলতে আবু বকর (রা.)-কে উদ্দেশ্য। (ইবনুল আসির, উসদুল গাবা: ৭/১৪৯; ইবনে হাজার, আল-ইসাবা: ৮/১৮৪)তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা তাঁর নাতনি আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আবু বকর (রা.) ইসলাম গ্রহণ করার পর একদিন রাসুলের (সা.) সঙ্গে কাবা চত্বরে উপস্থিত হলেন। সেখানে উপস্থিত কাফের ও অবিশ্বাসীদের আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি দাওয়াত দিয়ে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। তাঁর কথা শুনতে না শুনতে অবিশ্বাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ল। তখন পর্যন্ত আবু তালিব জীবিত ছিল বলে তারা রাসুলের (সা.)...
জুলাইবিব (রা.) ছিলেন মহানবীর (সা.)-এর একজন প্রিয় সাহাবি। যদিও তিনি ইতিহাসের মহান নায়কদের সারিতে তেমনভাবে স্থান পাননি। জুলাইবিবের (রা.) জীবন এবং তার কর্মকাণ্ড সেভাবে স্মরণ করা হয়নি, তবে তার সম্পর্কে যতটুকু তথ্য পাওয়া যায়, তাতে অনেক হতাশ হৃদয় প্রেরণা খুঁজে পাবেন। বাধার পাহাড় পেরিয়েজুলাইবিব (রা.)দেখতে লম্বা বা সুন্দর কেউ ছিলেন না। ইসলামের আগমনের আগে তিনি সাহসী যোদ্ধা হিসেবে পরিচিতও ছিলেন না। তার শারীরিক অবস্থা ছিল সমাজের সাধারণ নায়কদের থেকে ভিন্ন। তিনি ছিলেন এক অঙ্গহীন, প্রতিবন্ধী এবং অতিরিক্ত খাটো ছিলেন। বংশেও তেমন সম্ভ্রান্ত নন। ফলে সমাজ তাকে তেমনভাবে গ্রাহ্য করেনি, বরং তার প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা ছিল। তবে এই হতাশা ও অপমান সত্ত্বেও জুলাইবিব(রা.) কখনও আত্মসম্মান বা ভালোবাসার অভাবে ছিলেন না।আরও পড়ুনইসলামের শত্রু আবু জাহেলের মা আসমা (রা.) সাহাবি ছিলেন ১০ জানুয়ারি ২০২৫নতুন...
আবু জাহেলের বাবার নাম হিশাম ইবনে মুগিরা। হিশাম ছিল পৌত্তলিক। মুহাম্মদ (সা.) নবুয়ত লাভের পূর্বেই হিশামের মৃত্যু হয়। আসমা বিনতে মুখাররাবার প্রথম বিয়ে হয়েছিল সেই হিশাম ইবনে মুগিরার সঙ্গে। তাঁদের দুজন ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। একজন আবু জাহেল, আরেকজন হারিস। (তাবাকাতে ইবনে সাদ: ৮/২০৯)অর্থাৎ, আসমার দুই ছেলের এক ছেলে ইসলামের অন্যতম শত্রু আবু জাহেল, রাসুল (সা.) যাকে ‘আমার উম্মতের ফেরাউন’ বলে উল্লেখ করেছেন। অথচ অন্য ছেলে হারিস ইবনে হিশাম ছিলেন রাসুলের সাহাবি। (মুসনাদে আহমাদ: ৬/৩৭৫; তারিখে তাবারি: ১১/৯৭)হিশাম ইবনে মুগিরা মারা গেলে তাঁকে বিয়ে করেন তাঁর দেবর আবু রাবিআ ইবনে মুগিরা। (তাবাকাতে ইবনে সাদ: ৮/২০৯)আরও পড়ুনগিবত নিয়ে কোরআন হাদিসে কি আছে২৭ ডিসেম্বর ২০২৪তৎকালীন আরবে ভাইয়ের ইন্তেকালের পর বিধবা ভাবিকে বিয়ের প্রচলন ছিল। আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে রাসুলের...
আব্বাসি খলিফা মামুন তার দুই ছেলেকে জ্ঞানার্জনের জন্য পাঠিয়েছিলেন সেকালের বিখ্যাত পণ্ডিত ইমাম ফাররা (রহ.)-এর কাছে। দুই শাহজাদা তাঁর কাছ থেকে দিনরাত জ্ঞান আহরণ করতে থাকে। একদিন ইমাম ফাররা (রহ.) কোনো প্রয়োজনে বাইরে বেরোচ্ছিলেন। দুই ছাত্র শিক্ষকের জুতা এগিয়ে দিতে দৌড়ে এলো। এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কেউ শিক্ষকের পাদুকা বহনের সৌভাগ্য ছাড়তে রাজি নয়। অবশেষে তারা সম্মত হলো, প্রত্যেকে একটি করে জুতা এগিয়ে দেবে। হলোও তাই। দুজনই একটি করে জুতা শিক্ষকের পায়ের দিকে এগিয়ে দিল।এ সংবাদ খলিফা মামুনের কাছে পৌঁছালে ইমাম ফাররা (রহ.)-কে ডেকে পাঠালেন খলিফা। দরবারে এলে ইমাম ফাররা (রহ.)-কে খলিফা প্রশ্ন করলেন, ‘কে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি?’আরও পড়ুনযেভাবে নির্মিত হলো মসজিদে নববি০৭ মার্চ ২০২৫ইমাম ফাররা (রহ.) বললেন, ‘মুসলিম জনসাধারণের খলিফা হিসেবে আপনার চেয়ে অধিক...
ফাতিমা বিনতে আসাদ (রা.) ছিলেন রাসুলের (সা.) চাচি। তিনি ছিলেন আবু তালিবের স্ত্রী, আলীর (রা.) মা। (তাবাকাতে ইবনে সাদ, ৮/১৫৬)আবু তালিব ছিলেন ফাতিমার (রা.) চাচাতো ভাই। তাঁর বাবার নাম আসাদ ইবনে হিশাম, দাদার নাম হিশাম ইবনে আব্দে মানাফ। তাঁর বংশধারা রাসুলুল্লাহ (সা.) বংশধারার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। (ড. মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, আসহাবে রাসুলের জীবনকথা: ৬/১৬১)প্রথম পর্বে মক্কা থেকে যেসব সাহাবি মদিনায় হিজরত করেন, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। দাদার ইন্তেকালের পর রাসুল (সা.) তাঁর চাচা আবু তালিবের গৃহে লালিত-পালিত হন। ফাতিমা বিনতে আসাদ (রা.) শৈশবে তার (সা.) দেখাশোনা করেন। তিনি তাঁকে ‘মায়ের পর মা’ বলে মনে করতেন। (ড. মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, আসহাবে রাসুলের জীবনকথা: ৬/১৬২)রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর চাচিকে শ্রদ্ধা করতেন, মাঝেমধ্যে চাচির কাছে উপহার পাঠাতেন। একবার তাঁর কাছে উন্নতমানের দুটি নতুন...
নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে, তারপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন সারা বছর রোজা রাখছে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২,৪৩৩)‘সারাবছর রোজা রাখা’র পুণ্যের ব্যাখ্যা অন্য হাদিসে এভাবে পাওয়া যায়—সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘রমজানের রোজা দশ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ অপর রেওয়ায়েতে আছে, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসনাদে আহমদ, ৫/২৮০; দারেমি, হাদিস: ১,৭৫৫)আরও পড়ুনমহানবীর (সা.) হাঁটা-চলার ধরন১৩ ডিসেম্বর ২০২৪শাওয়ালের রোজা কীভাবে রাখবেনএ রোজা মাসের শুরু-শেষ-মাঝামাঝি সব সময় রাখা যায়। শাওয়ালের ছয় রোজার ক্ষেত্রে বিধান কী হবে, এগুলো কি ধারাবাহিভাবে রাখা জরুরি, নাকি বিরতি দিয়েও রাখতে পারবে—এ-বিষয়টি নিয়ে...
আরব উপদ্বীপের আস-সারাত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন উম্মু রুমান বিনতে আমির। তাঁর বিয়ে হয় আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনে সাখবারার সঙ্গে। এই বিয়েতে তুফাইল ইবনে আবদিল্লাহ নামের এক পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেন উন্মু রুমানের ঘরে। (তাবাকাতে ইবনে সাদ, ৮/১৯৩)আবদুল্লাহ ইবনুল হারিসের স্বপ্ন ছিল কাবার প্রতিবেশী হওয়া। স্ত্রী সন্তান নিয়ে তিনি বসতি স্থাপন করেন কাবায়। সেই যুগের নিয়ম ছিল, বাইরের কেউ যদি মক্কায় এসে থাকতে চায়, তাহলে স্থানীয় কারও সঙ্গে মৈত্রী চুক্তি করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস মৈত্রী চুক্তি করেন আবু বকরের (রা.) সঙ্গে। (তাবাকাতে ইবনে সাদ: ৮/১৯৩)কিছুদিন যেতে না যেতে আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইন্তেকাল করেন। উম্মু রূমানের কাছে মক্কা ছিল ‘বিদেশ’। এখানে তাঁর আত্মীয় নেই, পরিচিত কেউ নেই। স্বামী হারিয়ে ছোট সন্তান নিয়ে একেবারে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। ঠিক সেই সময়...
খ্যাতিমান সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) খালার নাম ছিল উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.)। তিনি দুধপানের দিক থেকে রাসুলের(সা.) ও খালা ছিলেন। তার স্বামী ছিলেন উবাদা ইবনে -সামিত (রা.)। মদিনায় হিজরতের সময় প্রায় দুই সপ্তাহ রাসুল (সা.) কুবায় অবস্থান করেন। সেই সময় তিনি সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন, মসজিদে কুবা। এই মসজিদের পাশে ছিল উম্মু হারাম বিনতে মিলহানের বাড়ি।রাসুল (সা.) প্রতি শনিবার মসজিদুল কুবাতে যেতেন। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো বাহনে চড়ে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৯৩)কুবায় গেলে প্রায়ই উম্মু হারামের বাড়িতে তিনি বেড়াতে যেতেন এবং দুপুরে বিশ্রাম নিতেন। একদিন তেমন করেই তিনি সে-বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। উম্মু হারাম রাসুল(সা.)কে খাবার খাওয়ান। খাওয়ার পর তিনি বিশ্রাম নেন, উম্মু হারাম রাসুলের মাথার উকুন বাছতে থাকেন। এক সময় রাসুলুল্লাহ(সা.) ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ তিনি হাসতে হাসতে...
নবীজি (সা.) কখনো কখনো রাত-দিনের পুরোটা সময় অনাহারে কাটাতেন এবং রোজা রাখতেন। আল্লাহর ইবাদতে সারা সময় নিয়োজিত থাকতেন। (ইবনে কায়্যিম, যাদুল মাআদ, ২/৩২)রাত-দিন একত্রে এভাবে ধারাবাহিক রোজা পালন করাকে ‘সাওমে ওসাল’ বলে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সওমে ওসাল পালন করো না।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘আপনি তো পালন করছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমি তোমাদের কারও মতো নই। আমাকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) পানাহার করানো হয়।’ অথবা বলেছেন, ‘আমি রাত যাপন করি পানাহার করানো অবস্থায়।’’ (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬১) নবীজি(সা.) র পানাহার যেভাবে হতোআল্লাহর পক্ষ থেকে পানাহারের পদ্ধতি সম্পর্কে আলেমদের মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেন, তাঁর খাদ্য ও পানীয় ছিল ইন্দ্রিয়গত—আধ্যাত্মিকভাবে নয়। তাকে সরাসরি খাদ্য প্রদান করা হতো। হাদিসের বাহ্যিক শব্দ-প্রয়োগ এ অর্থই বহন করছে। তবে কারও মতে, তা ইন্দ্রিয়গত ছিল না—আল্লাহ তাকে...
রাসুল (সা.) রমজান চলে যাওয়ার পরও সাহাবিদের রোজা পালন অব্যাহত রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। অর্থাৎ, রোজা শুধু রমজানের ইবাদত নয়। রমজানের রোজা তো ফরজ, বাকি সারা বছর আরও রোজা আছে সেগুলো সুন্নত। বছরের অন্যান্য সময়ের রোজারাসুল (সা.) অধিক পরিমাণে নফল রোজা পালন করতেন। রোজার জন্য নিষিদ্ধ পাঁচ দিন ছাড়া বছরের যেকোনো সময় নফল রোজা রাখা যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু কিছু সময়ের রোজা সাধারণ নফল রোজার থেকে বেশি ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) গুরুত্বসহকারে সেই রোজাগুলো পালন করতেন। তিনি আরও যেসব নফল রোজা পালন করতেন তা হলো :১. শাওয়াল মাসের রোজা : নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে অত:পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখে। ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৪৩৩২. আরাফা দিবসের রোজা : জিলহজ মাসের নয় তারিখে—যাকে...
অষ্টম হিজরির রমাদান মাসে মুসলিমগণ বিজয়ী বেশে মক্কায় প্রবেশ করেন। তখন এক নারী রাসুলের (সা.) কাছে এসে প্রবল উৎসাহে ইসলাম গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি অত্যন্ত দরদের সঙ্গে জানান, ‘আল্লাহর রাসুল, আমার স্বামী প্রাণের ভয়ে ইয়েমেনের দিকে পলায়ন করেছে। আমি আপনার কাছে তাঁর নিরাপত্তা ভিক্ষা চাইছি। যদি নিশ্চিত করেন তবে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে পারি।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘যাও, তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হলো।’ এই নারী হলেন উম্মু হাকিম বিনতে হারিস (রা.)। তার মা ফাতিমা বিনতে ওয়ালিদ হলেন খ্যাতিমান বীর সাহাবি খালিদ ইবনে ওয়ালিদের (রা.) বোন। (ইমাম ইবনুল আসির, উসদুল গাবা: ৭/৩০৯)উম্মু হাকিম জন্মগ্রহণ করেন এমন এক পরিবারে যা ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে এক বিষাক্ত দুর্গ। তার পিতা হারিস ইবনে হিশাম ইসলামের কঠোর শত্রু এবং চাচা কুখ্যাত আবু জাহেল। অবশ্য পিতা হারিসও মক্কা বিজয়ের...
আপনার বাড়ি যদি ৪৮ মাইল বা ৭২ কিলোমিটার দূরে হয়, তাহলে ভ্রমণ শুরু করামাত্রই আপনি একজন মুসাফির। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ সফর করা এবং যারা সবসময় সফরে থাকে তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। মুসাফিরের জন্য রোজা না রাখা বৈধ। তবে যদি আপনি দিনের আলো থাকতেই বাড়িতে পৌঁছে থাকেন, তাহলে বাকি অংশ না খেয়ে থাকবেন এবং পরে সময়ে রোজাটির কাজা আদায় করে নেবেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৯,৪৩৬-৯,৪৩৮)ঈদের আগে যদি গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে কোনও দূরদেশে ভ্রমণে যান, যার দূরত্ব ৪৮ মাইল বা ৭২ কিলোমিটারের বেশি এবং যতি ১৫ দিনের কম সময় থাকেন, তাহলে পুরো দিনগুলোতেই চাইলে রোজা না রেখে থাকতে পারেন। পরবর্তী সময় রোজাগুলো সুবিধামতো আদায় করে নিলেই হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/২০৬)আরও পড়ুনইতিকাফ অবস্থায় কী করা যায়, করা যায় না২১...
বিদায়লগ্নে মহিমান্বিত রমজান মাস। আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা যে রমজান আমাদের কাছে এসেছিল, এখন আমাদের কাছ থেকে কী বার্তা নিয়ে ফিরে যাচ্ছে তা ভেবে দেখা মুমিনের দায়িত্ব। রমজানে মহান আল্লাহ দয়া ও অনুগ্রহ করে আমাদের তাঁর নৈকট্য ও ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার যে অবকাশ দিয়েছিলেন তা কি আমরা আদৌ কাজে লাগাতে পারলাম, না কি অবহেলা আর অযত্নে কেটে গেল স্বর্ণপ্রসূ সময়টুকু? নিজের আমলের এই হিসাব গ্রহণকে ইসলামের পরিভাষায় বলা হয় মুহাসাবা বা আত্মপর্যালোচনা ও আত্মজিজ্ঞাসা। সুফি আলেমরা বলেন, আত্মশুদ্ধি ও আত্মোন্নয়নের আত্মপর্যালোচনা অপরিহার্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা মুমিনদের আত্মপর্যালোচনার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য উচিত আগামীকালের জন্য (পরকাল) সে কী প্রেরণ করেছে, তা চিন্তা করা। আর তোমরা তাদের...
‘রমজান মাস, যাতে কোরআন নাজিল হয়েছে; যা মানুষের দিশারি ও সৎ পথের নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫) কোরআন নাজিলের রাত হলো শবে কদর। এই রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার জাবালে রহমত তথা হেরা গুহায় আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের প্রধান জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল–কোরআন নাজিলের সূচনা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মহিমান্বিত রজনীতে। আপনি কি জানেন সে মহিমাময় রজনী কী? মহিমান্বিত সেই নিশি হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রজনীতে ফেরেশতাগণ এবং রুহুল কুদুস (জিবরাইল আ.) তাঁদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক কাজে অবতরণ করেন। শান্তির এই ধারা চলতে থাকে উষালগ্ন পর্যন্ত।’ (সুরা কদর, আয়াত ১-৫) কোরআন প্রথম নাজিল হওয়ায় এই রাত বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ রাত। এই রাতকে আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’, ফারসিতে ‘শবে কদর’...
পবিত্র রমজান বিদায় নিচ্ছে। চারদিকে ঈদের আমেজ। জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদ আমেজে অনেকটাই আড়াল হয়ে যাচ্ছে রমজানের মাহাত্ম্য ও পবিত্রতা। পবিত্র রমজান মাস সংযম ও সাম্যের যে বার্তা নিয়ে আগমন করেছিল তার অনেকটাই ম্লান হয়ে যাচ্ছে ঈদের কেনাকাটায়। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সন্দেহ নেই, ঈদের আনন্দ ইসলামে অনুমোদিত। ইসলাম সাধ্যানুসারে ঈদের দিন ভালো পোশাক ও খাবার গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছে। তবে সেই আনন্দেরও একটি সীমারেখা টেনে দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম ঈদ উপলক্ষ্যে অসংযত আনন্দ ও উৎসবের অনুমতি দেয় না; এমনকি ঈদ উৎসবে ভিনদেশী ও ভিন্ন ধর্মের রীতি-নীতিও গ্রহণযোগ্য নয়। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনাতে এসে দেখেন মদিনাবাসীরা নির্দিষ্ট দুটি দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ করে থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, এই দুটি দিন কিসের? সকলেই বলল, জাহেলি...
শিশুদের ওপর রোজা ফরজ নয়। পালন করলে সওয়াব পাওয়া যাবে, ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে না। (সালেহ আল-উসাইমিন, ফিকহুল ইবাদাত, ১৮৬)ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এক নারী তার শিশু সন্তানকে তুলে ধরে রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, তার জন্য কি হজ আছে? রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ, এবং এজন্য সে সওয়াব পাবে। (মুসলিম, হাদিস: ১৩৩৬) কখন শিশুর ওপর রোজা ফরজনামাজের মতোই রোজার বিধান। রাসুল (সা.) বলেছেন, সাত বছর হলে তোমরা তোমাদের সন্তানদের নামাজের আদেশ দাও, দশ বছর হলে তাদের এ জন্য প্রহার কর এবং তাদের মধ্যকার বিছানা পৃথক করে দাও। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫; মুসনাদে আহমদ, ২/১৮৭)গ্রহণযোগ্য মত হলো, ফরজ হওয়ার মানদণ্ড হলো সাবালকত্ব। সাবালক হওয়ার আগে কারও ওপর রোজা ফরজ নয়। (লাজনায়ে দায়েমা লিল-ইফতা, ফাতাওয়া নাম্বার ১৭৮৭)আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫শিশু...
উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান (রা.) একজন বুদ্ধিমতী নারী সাহাবি। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী আনসারদের মধ্যে অন্যতম এবং খ্যাতিমান সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) মা। আনাসের বাবা মালিক ছিলেন উম্মে সুলাইমের মুসলিম হওয়ার আগের স্বামী। উম্মে সুলাইম ও আনাস ইসলাম গ্রহণ করলে স্বামী ক্ষোভে স্ত্রী-পুত্র ত্যাগ করে চলে যান। বিধবা হয়ে পড়েন উম্মে সুলাইম (রা.)।রাসুল (সা.) বলেন, ‘একবার স্বপ্নে আমি জান্নাতে প্রবেশ করি। হঠাৎ আমার সামনে কারও জুতার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করলাম, কে? তারা বললেন, আনাস ইবনে মালিকের মা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫৬)শিশু পুত্র আনাসকে নিয়ে কাটছিল তার দিন। উম্মে সুলাইম (রা.) ঠিক করলেন, আনাস বড় না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে করবেন না। আনাস যখন তার মায়ের বিয়েতে মত দেবে তখনই তিনি বিয়ে করবেন। একসময় আনাস...
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা মুজাদালা, সুরা হাশর, সুরা মুমতাহিনা, সুরা সাফ, সুরা জুমা, সুরা মুনাফিকুন, সুরা তাগাবুন, সুরা তালাক ও সুরা তাহরিম তিলাওয়াত করা হবে। ২৮তম পারা পড়া হবে। আজকের তারাবিতে তালাক, পারিবারিক ও বৈবাহিক জীবন, স্ত্রীর ভরণপোষণ, বৈঠকের আদব, আনসারদের সুসংবাদ, কাফেরদের সঙ্গে মুসলমানদের আচরণনীতি, নবীজির গুণাবলি, আজান হলেই জুমার নামাজে যাওয়া, মানুষের বিভক্তি ও আল্লাহর পথে ব্যয়, দুনিয়ায় নারীর জান্নাতের সুসংবাদ, আল্লাহ এবং শয়তানের দল, কানাঘুষা, আল্লাহর প্রশংসা, আল্লাহর দ্বীনের সাহায্যকারী, ইহুদি সম্প্রদায়, রিসালাতের উদ্দেশ্য, কাফেরদের পরিণতি, ইবাদতের জন্য মুমিনের আফসোস, কৃপণতা ইত্যাদি বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। যে নারীর কথা আল্লাহ শুনলেন২২ আয়াতবিশিষ্ট সুরা মুজাদালাহ মদিনায় অবতীর্ণ। মুজাদালাহ অর্থ ঝগড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে খাওলা (রা.) তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে এমন স্বরে অভিযোগ করেছিলেন, যেন তিনি ঝগড়া করছেন। তাই এর...
আজকাল মুসলিম সমাজের অনেক স্থানে দেখা যায় রমজান মাসে বিবাহ-শাদি অনুষ্ঠানে সর্বাগ্রে বর্জন করা হয়। একশ্রেণির পরহেজগার আলেম এ-বিষয়ে নিরুৎসাহিত করেন। তারা মনে করেন, রমজানে বিবাহ অনুষ্ঠানে রোজার ভাব-গাম্ভীর্য এবং রমজানের আমলের সঙ্গে মানানসই নয়। অবশ্য রাসুলের (সা.) জীবন থেকে আমরা এমন কোনো নির্দেশনা পাই না। বরং রাসুল (সা.) নিজেও রমজানে বিবাহ করেছেন। নবীজির অন্তত তিনটি বিবাহ রমজানে সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ পাওয়া যায়।জয়নব বিনতে খুযাইমার জীবনালেখ্য উল্লেখ করতে গিয়ে ইবনে সাদ বলেন, ‘হিজরি একত্রিশতম মাসে রাসুলের (সা.) সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়’ (ইবনে সাদ, তাবাকাত, ৮/১১৫)। আল্লামা তাবারি (রহ.) বলেন, ‘চতুর্থ হিজরিতে রমজান মাসে রাসুল (সা.) উম্মুল মাসাকিন জয়নব বিনতে খুযাইমার সঙ্গে ঘর বাঁধেন’ (তারিখে তাবারি, (৮/৫৪৫)। ইবনুল আম্মাদ বলেন, ‘হিজরি তৃতীয় বর্ষের রমজান মাসে রাসুল (সা.) যথাক্রমে উম্মুল...
যে মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, তাকে জুমার মসজিদ বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)। জুমার তাৎপর্য তাফসিরবিদেরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।সুরা...
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আগামী দু’সপ্তাহের জন্য ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্ল্যাটফর্মটির সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ। ঘোষিত এ কর্মসূচির আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহিদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, গণসংযোগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নাগরিক সমাজের ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণা, দেয়াল লিখন’ শীর্ষক প্রচারণামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, জুলাই গণহত্যার সাত মাস অতিবাহিত হলেও খুনিদের বিচারের ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। খুনিরা বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেশে অরাজকতা...
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ, রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ মেশকের তুলনায় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়; আল্লাহ বলেন, “সে আমার উদ্দেশ্যে তার পানাহার ও প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করেছে, রোজা আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান। পুণ্যকর্মের প্রতিদান দশগুণ।”’ (বুখারি, হাদিস: ১,৮৯৪)ভিন্ন শব্দে একই হাদিস আছে এভাবে, ‘রোজাদারের আনন্দের মুহূর্ত দুটি—ইফতারের সময়, আরেকটি হলো যখন সে প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। নিশ্চয় তার মুখের দুর্গন্ধ মেশকের সুগন্ধি থেকেও আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয়। (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫১) এর অর্থ কিন্তু এই নয় যে রোজাদার মুখ অপরিষ্কার রাখবেন। বরং রোজাদারের উচিত নিজেকে আল্লাহর সন্নিধানে পেশ করার জন্য পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকা। যাদের মুখ থেকে কোনো কারণে দুর্গন্ধ বের হয়, তারা অবশ্যই রমজান মাসে এই বিষয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবেন, যাতে তার মুখের দুর্গন্ধের কারণে অন্য...
ক’দিন আগেই সিনেমা ছাড়ার ঘোষণা নিয়ে খবরের শিরোনাম হন চিত্রনায়িকা আফিয়া নুসরাত বর্ষা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়। এবার তিনি জানালেন, আপাতত সিনেমার চেয়ে পরিবারকে বেশি সময় দিতে চান অনন্তঘরনী। বর্ষা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। আদর্শ মা হতে চাই। আমাদের দায়িত্ব তাদের সুন্দর একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া।’ বর্ষ জানান, তার হাতে ‘নেত্রী: দ্য লিডার’, ‘মাসুদ রানা’, ‘কিল হিম-২’ নামে তিনটি ছবি আছে। ছবিগুলোর শুটিং শেষ করে নতুন আর কোনো সিনেমায় অভিনয় করবেন না। বর্ষার কথায়, ‘সিনেমা তিনটি শেষ করতে সময় লাগবে। সিনেমা ছাড়ব, কিন্তু এখন না। দুই-তিন বছর লেগে যাবে। এগুলো শেষ হলে আর সিনেমা করব না।’ ২০১০ সালে ‘খোঁজ: দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক হয় বর্ষার। এতে নায়ক অনন্ত জলিলের বিপরীতে অভিনয় করেন...
অসহনীয় তাপমাত্রা দেখা দিলে রাসুল (সা.) মাথায় পানি ঢালতেন। আবু বকর বিন আবদুর রহমান কয়েকজন সাহাবির উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রমজানে আরজ এলাকায় অত্যধিক পিপাসা বা তাপমাত্রা দেখা দিলে রাসুল (সা.)-কে দেখেছি যে তিনি মাথায় পানি ঢালছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২,৩৬৫) দৈহিক প্রশান্তি ও স্বস্তির জন্য এমন করা দোষের নয়। এর ফলে রোজাদারের ইবাদতের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ, বান্দা স্বতঃস্ফূর্ত ও সানন্দ্যচিত্তে রবের আদেশ-নিষেধ পালন করবে—এটাই মুখ্য। রোজা রাখার উদ্দেশ্য দৈহিক কষ্টভোগ, নির্যাতন কিংবা কঠোরতা আরোপ করা নয়। একই ভাবে ভালোভাবে গোসল করা, কাপড় ভেজানো, পানিতে ডুব দেওয়া—সবই মাথায় পানি ঢালার হুকুম ভুক্ত। ইমাম বুখারি (রহ.) তার ‘সহিহ’ গ্রন্থে কয়েকজন সাহাবি ও তাবেইনের উদ্ধৃতিসহ উল্লেখ করেছেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) একটি কাপড় পানিতে ভিজিয়ে শরীরে জড়িয়ে নিলেন। তিনি ছিলেন রোজাদার। শাবি (রহ.)...
তাঁর নাম মালেক ইবনে দিনার। থাকতেন একটি ভাড়া বাসায়। তাঁর প্রতিবেশী ছিল এক ইহুদি। মালেকের ঘরের সামনেই তাঁর ঘর। সেই ঘরের সামনে শৌচাগার তৈরি করেছিল ইহুদিটি। সে নোংরা এনে ফেলত মালেক ইবনে দিনারের দরজায়। দুর্গন্ধে সেখানে বাস করা কষ্টকর হয়ে ওঠে। এভাবে অনেক দিন চলল।মালেক ইবনে দিনার কারও কাছে অন্যায়ের বিচার না চেয়ে নীরবে সহ্য করে যান। একদিন প্রতিবেশী নিজেই মালেক ইবনে দিনারের কাছে এসে বলল, ‘মালেক, আমার নোংরার জন্য আপনার কষ্ট হয় না?’তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, হয়। প্রতিদিন পরিষ্কার করি, ধুয়ে ফেলি।’আরও পড়ুনজালালুদ্দিন রুমির ‘মসনভি’তে কোরআনের মর্মবাণী২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইহুদি বলল, ‘কোনো রাগ বা ক্ষোভ দেখান না যে?’মালেক বললেন, ‘আল্লাহর জন্য। তিনি রাগ দমনকারীকে ভালোবাসেন।’ইহুদি বিস্মিত হয়ে বলে, ‘ইসলাম এত চমৎকার! প্রেমিক তার স্রষ্টার খুশির জন্য শত্রুর অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করে তবু...
রমজান মাসে মহানবী (সা.) সাহাবিদের বিভিন্নভাবে উপদেশ দিতেন, ছোট ছোট সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের সত্য ও ন্যায়ের পথ বাতলে দিতেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত হয়েছে।ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশ দিনে ইতেকাফ পালন করতেন, মসজিদে খেজুর গাছের শাখায় বানানো তাঁবু টানাতেন। আমরা একদিন তার তাঁবুর পাশে উপস্থিত হলাম। তিনি মুখমণ্ডল বের করে বললেন, ‘নামাজ আদায়কারী তার প্রতিপালকের কাছে একান্তে প্রার্থনা করে, তোমাদের প্রত্যেকের ভাবা উচিত, কীভাবে সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করবে। (অন্যকে কষ্ট দেয় এমন) উচ্চ স্বরে তোমাদের কেউ যেন তিলাওয়াত না করে।’’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৫,৩৫৯)আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, ‘তিনি খুব যত্নসহকারে রমজানের দিনগুলোতে আমাদের উপদেশ দিতেন এবং আমরা বিরক্ত হচ্ছি কি না তার প্রতিও খেয়াল...
কথিত ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ (প্রাচীন ধাতব মুদ্রা) নিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজধানীর আদাবর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে এই চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আবদুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) ও আবুল কালাম আজাদ (৪৬)।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে চারটি কথিত অ্যান্টিক মেটাল কয়েন, ৫০ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক,...
রমজানে দানের গুরুত্ব এত বেশি যে, অনেক আলেমের মতে, রমজানের উপাদান তিনটি—এক. দিনে রোজা রাখা, দুই. রাতে ইবাদত করা, যাকে ‘কিয়ামুল লাইল’ বলে, এবং তিন. দান ও সেবামূলকজ কাজ করা।আজকাল আমরা রমজানে জনকল্যাণমূলক কাজ এড়িয়ে কেবল ব্যক্তিগত ইবাদতে মগ্ন থাকি এবং দান-সদকা থেকে হাত গুটিয়ে রাখি। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে রমজানের এই তৃতীয় উপাদানকে অবহেলা করা হয়। অথচ নবীজির (সা.) আদর্শ হলো, রমজানে দানের পরিমাণ বাড়ানো। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) মানবকুলের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল ছিলেন। রমজান মাসে যখন জিবরাইল (আ.) নিয়মিত আসতে শুরু করেন, তখন তাঁর দানশীলতা বহুগুণ বেড়ে যেত। জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রজনীতে নবীজির (সা.) সঙ্গে সাক্ষাতে এসে তার সঙ্গে কোরআন পাঠের অনুশীলন করতেন। নিঃসন্দেহে নবীজি(সা.) ছিলেন বেগবান ঝড়ের চেয়েও অধিক গতির দানশীল। (মুসলিম, হাদিস: ২,৩০৮) হাদিসের ব্যাখ্যায়...
ফকিহ আবুল লাইস সামারকান্দি রহ. তার বিখ্যাত গ্রন্থ তাম্বিহুল গাফেলিন-এ অতীতকালের কোনো এক ব্যক্তির ঘটনা বর্ণনা করেছেন। ওই ব্যক্তিটির খুব প্রিয় একটি ঘোড়া ছিল। একদিন সে ঘোড়ার কাছে এসে দেখে, কেউ ঘোড়াটির একটি পা কেটে ফেলেছে। পাশেই তার গোলাম দাঁড়ানো। লোকটি গোলামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার ঘোড়ার এই অবস্থা কে করেছে? গোলাম বলল, আমি। মালিক প্রশ্ন করলেন, কেন এমনটি করেছ? সে বলল, এর মাধ্যমে আমি আপনাকে রাগাতে চেয়েছি। তিনি খুব স্বাভাবিকভাবে বললেন, “যে তোমাকে এই নির্দেশ দিয়েছে-অর্থাৎ শয়তান, আমিও তাকে উত্তেজিত করব। যাও, আজ থেকে তুমি স্বাধীন। আমি তোমাকে আজাদ করে দিলাম এবং এই ঘোড়াও তোমাকে দিয়ে দিলাম।” রাগ বা ক্রোধ মানুষের সহজাত বিষয়। রাগ না থাকলে তাকে ভালোমানুষ বলা যায় না। রাগ বা ক্রোধের যেমন প্রয়োজন আছে, সাথে সাথে...
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন একদল শিক্ষার্থী। রাত দুইটায় মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।মিছিল থেকে ‘আমার সোনার বাংলায় খুনি লীগের ঠাঁই নাই’, ‘অবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ করতে হবে’, ‘ ফ্যাসিবাদের দোসরেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ব্যান ব্যান খুনি লীগ’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি যুবায়ের বলেন, ‘যে বাংলায় আওয়ামী লীগ রক্ত ঝরিয়েছে, যাঁরা গণহত্যায় জড়িত তাদের নিষিদ্ধ না করলে এ দেশের ছাত্র জনতা মেনে নেবে না। গণহত্যার দায় নিয়ে অবশ্যই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থী এবি যুবায়ের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।’অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো...
সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালের সাইনবোর্ডে হঠাৎ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ভেসে উঠেছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে নগরের ইবনে সিনা হাসপাতালের সাইনবোর্ডে এ লেখা ভেসে ওঠে। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের সোবহানীঘাট এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের দুটি ভবনের বাইপাস লেনের সংযোগস্থলে ডিজিটাল সাইনবোর্ড লাগানো আছে। ওই সাইনবোর্ডে গতকাল রাতে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ভেসে ওঠে। সাইনবোর্ডের অন্য পাশে ‘তালামিজে যোগ দিন’ লেখাও দেখতে পান প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা।এ ঘটনায় ইবনে সিনা হাসপাতাল সিলেট লিমিটেডের পরিচালক মুদাব্বির হোসেনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল রাতেই হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) কর্নেল (অব.) রুকনুল ইসলাম চৌধুরী এ...
২০১০ সালে ‘খোঁজ: দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় আফিয়া নুসরাত বর্ষার। এতে অনন্ত জলিলের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভালোবেসে ঘর বাঁধেন এই তারকা জুটি। এরপর জুটি হয়ে অভিনয় করেছেন বেশ কয়েকটি ছবিতে। এবার সিনেমা ছাড়ার ঘোষণা দিলেন চিত্রনায়িকা বর্ষা। স্বামী অনন্ত জলিলের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান বর্ষা। তিনি বলেন, ‘হাতে কয়েকটি সিনেমা আছে, এগুলো শেষ করতে করতেই বেশ সময় চলে যাবে। এরপর আমি আর নতুন কোনো সিনেমা করব না।’ বর্ষার কথায়, ‘আমি খুব বাস্তববাদী মানুষ। ফলে আমি বাস্তবতা মাথায় রেখে চিন্তা করি। আমার মনে হয় নায়িকাদের একটা বয়স পর্যন্ত স্ক্রিনে ভালো লাগে। ততদিনই কাজ করা উচিত। আমার ক্ষেত্রেও তাই।’ এসময় বর্ষার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে অনন্ত...
বদর যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে মক্কার কুরাইশরা। তাদের ৭০ জন নিহত এবং ৭০ জন বন্দী হয়েছে মুসলিম যোদ্ধাদের হাতে। রাসুল (সা.) একেকজন বন্দীকে একজন বা দুজন সাহাবির দায়িত্বে দিয়ে দিলেন, তাঁরা আপাতত তাদের পাহারা দিয়ে রাখবেন এবং পরবর্তী সময়ে নিরাপদে মদিনায় নিয়ে যাবেন। আবু আজিজের পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হলো তার মুসলমান ভাই মুসআব ইবনে উমায়ের এবং আবুল ইয়াসারকে, যেহেতু তিনিই তাকে বন্দী করেছিলেন। আবুল ইয়াসার যখন আবু আজিজের হাত বাঁধছিলেন তখন মুসআব ছিলেন সেখানে। তিনি আবুল ইয়াসারকে বললেন, ‘এর হাত শক্ত করে বাঁধো। তার মা ধনী মানুষ, তার মুক্তিপণ হিসেবে তুমি হয়তো মোটা অঙ্কের অর্থ পাবে।’ এ কথা শুনে আবু আজিজ বেদনার্ত কণ্ঠে বলল, ‘আমার ভাই হয়ে তুমি এভাবে কথা বললে?’ মুসআব আবু আজিজের চোখে চোখ রেখে বললেন, ‘তুমি নয়, এখন আবুল ইয়াসার আমার...
মহানবী (সা.) বিশেষভাবে রমজানকে তিলাওয়াতের জন্য বেছে নিচ্ছিলেন। কেন তিনি রমজানে এত বেশি তিলাওয়াত করতেন, এর উত্তরে ইবনে বাত্তাল (রহ.) বলেন, রাসুলের (সা.) কোরআন শিক্ষা ও অনুশীলনের একমাত্র কারণ ছিল পরকালের আকাঙ্ক্ষা ও ব্যাকুল ভাবনার জাগরণ এবং পার্থিব বিষয়ে অনীহার সৃষ্টি করা। (ইবনে বাত্তাল, শরহে বুখারি, ১/১৩) রমজানে কোরআন শিক্ষায় রাসুলের (সা.) সহপাঠী হওয়ার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে জিবরাইল (আ.) নিয়োজিত হতেন; যিনি রমজানে প্রতি রাতে নবীজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং ফজর অবধি তাঁর সঙ্গে অবস্থান করতেন। নবীজি তাকে কোরআন শোনাতেন। (বুখারি, হাদিস: ১,৯০২)আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫অন্য একটি বর্ণনায় আছে, নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা ফাতেমাকে গোপনে জানালেন যে, জিবরাইল প্রতি বছর আমাকে একবার কোরআন শোনাতেন এবং শুনতেন, এ বছর তিনি দুবার আমাকে শুনিয়েছেন ও শুনেছেন। একে...
রোজার দিনে এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয় যে আমরা ধন্দে পড়ে যাই, রোজাটা আসলেই নষ্ট হয়ে গেল কিনা। আসুন, এ সম্পর্কে কয়েকটি মাসআলা জেনে নিই। মাসআলা ১: রোজা অবস্থায় মুখে জমা থুতু বা লালা গিলে ফেলার কারণে রোজার ক্ষতি হয় না। কিন্তু মুখ থেকে রক্ত বের হলে সেই রক্ত থুতুর সঙ্গে গিলে ফেললে তাতে রোজা ভেঙে যাবে। তবে থুতুর চেয়ে রক্তের পরিমাণ কম হলে এবং গিলে ফেলার সময় রক্তের অনুভূতি না পেলে রোজা নষ্ট হবে না। (কিতাবুল ফিকহ, ১/৯২০) মাসআলা ২: দাঁতের ফাঁকে গোশত বা সুপারির অংশ অথবা অন্য কোনও বস্তু কিংবা খাদ্যদ্রব্য আটকে থাকলে তা যদি খিলাল বা জিহ্বা দিয়ে বের করে ফেলা হয়, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। কিন্তু তা বের না করে যদি গিলে ফেলে এবং সেই খাদ্যদ্রব্য একটি...
পবিত্র রমজান মাসেই অর্জিত হয়েছে ইসলামের বড় বড় সফলতা। এর অন্যতম হলো হিজরতের দ্বিতীয় বছর ১৭ রমজানের ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ বিজয়।এ বছর থেকেই মুসলমানদের দুটি ঈদ ‘ঈদুল ফিতর’ ও ‘ঈদুল আজহা’ উদ্যাপিত হয়। বদরের বিজয়ের ১৩ দিন পর হিজরি দ্বিতীয় বর্ষে দশম মাসের প্রথম তারিখ ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ উদ্যাপিত হয়।মদিনার ইহুদি সুদখোর মহাজন বনুকাইনুকা সম্প্রদায়কে পরাজিত করার পর দ্বিতীয় হিজরি সনের দ্বাদশ মাসে জিলহজের ১০ তারিখ প্রথম ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ পালন করা হয়।মানবতার মুক্তিদূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর নবুয়ত ও রিসালাতের ঘোষণা প্রকাশ হয় রমজান মাসেই। রমজান মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়।সব ক্ষেত্রে মহানবী (সা.)–এর সুন্নত ও সাহাবায়ে কিরামের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে পারলে, সাহাবায়ে কিরামের আদর্শ অনুসরণ করলে, রমজানের লক্ষ্য তাকওয়া অর্জিত হলে আল্লাহর সাহায্য আসবেই।৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে...
যুদ্ধাভিযান ছাড়াও রমজানে নানা কারণে নবীজির (সা.) সফর হতো। এ-সময় তিনি কখনো রোজা রাখতেন, কখনো রাখতেন না, বরং খাওয়া-দাওয়া করতেন এবং অন্যদেরও আদেশ দিতেন রোজা না-রাখার। ইবনে আব্বাস তরফ থেকে তাউস বর্ণনা করেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানে রোজা রেখে সফরে বের হলেন, পথে উসফান এলাকায় পৌঁছে পানির পাত্র আনতে বললেন। সবাইকে দেখাতে প্রকাশ্যে পানি পান করলেন তিনি। মক্কায় পৌঁছা অবধি তিনি পানাহার স্বাভাবিক রাখলেন। ইবনে আব্বাস বলতেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানের সফরে রোজা রেখেছেনও, আবার ভেঙেছেনও। সুতরাং এ-সময় যার ইচ্ছা রাখবে, যার ইচ্ছা রাখবে না। (বুখারি, হাদিস: ৪২৮৯) আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে অসুখে পড়বে হবে বা সফরে থাকবে, সে অন্য দিনগুলোতে সে-সময়ের (রোজার) সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ চান, কঠিন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫) নবীজি (সা.) কখন রোজা রাখতেন আবু...
তিনটি অবস্থায় রোজা ভঙ্গকারী বিষয়টি ঘটালেও রোজা ভাঙে না।এক. রোজার কথা ভুলে গেলে: যদি সাওমের কথা ভুলে যাওয়ার কারণে পানাহার করা হয়, তখন রোজা ভঙ্গ হয় না এবং রোজা পূর্ণ হতেও কোনও অসুবিধা হয় না। নবীজি (সা.) বলেছেন, যে রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করে সে যেন তার রোজা অব্যাহত রাখে কারণ তাকে আল্লাহ তা আলা পানাহার করিয়েছেন। (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫৫)দুই. রোজার বিষয়ে অজ্ঞ হয়ে গেলে: এর উদাহরণ হলো, যেমন কেউ ভাবল এখনো ফজরের ওয়াক্ত হয়নি—তাই সে সাহরি খেয়ে নিল। অথবা ভাবল সূর্য অস্ত গেছে—অথচ তা অস্ত যায়নি। অতএব সে ইফতার করল। এমন হলে তার রোজা ভঙ্গ হবে না—অটুট থাকবে। আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, নবীজির (সা.) যুগে এক মেঘাচ্ছন্ন দিনে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে আমরা ইফতার করলাম। তারপর...
একবার খলিফা উমর (রা.) এক নারীর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কী হয়েছে?’ নারীটি বললেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমার স্বামী আমার কাছ থেকে দূরে আছে। তাঁকে আমার কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়ে উঠেছে।’উমর (রা.) তখন তাঁর মেয়ে হাফসা (রা.)–র কাছে গিয়ে বললেন, ‘আমি তোমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চাই। আমাকে সাহায্য করো। স্বামী কত দিন দূরে থাকলে স্বামীকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মেয়েদের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে?’হাফসা (রা.) লজ্জায় মাথা নত করে ফেলেন। উমর (রা.) তখন বললেন, ‘আল্লাহ সত্য প্রকাশের ব্যাপারে লজ্জা করেন না।’হাফসা (রা.) তখন হাতে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন তিন বা চার মাস।উমর (রা.) নির্দেশ দিলেন, কোনো সৈনিককে যেন চার মাসের বেশি সময় আটকে রাখা না হয়।হাফসা (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)–র কন্যা। তাঁর ভাই...
ফসলের জাকাত ‘উশর’ গরিবের পাওনা হক। এটি আদায় করা ফরজ ইবাদত। ‘উশর’ ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক আদায় করতে হয়, বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ) এমন যে যিনি সৃজন করেছেন বাগান সুউচ্চ (মাচানে লতানো) ও অনুচ্চ (মাচানবিহীন) এবং খেজুরগাছ ও খেত; তার স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন আর জলপাই ও ডালিম, সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। তোমরা খাও তার ফল যখন ফল পরিপক্ব হয়; আর তার হক (উশর) প্রদান করো তা উত্তোলনের দিনে; আর (উশর প্রদান না করে) সীমা লঙ্ঘন করো না, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৪১)রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক জিনিসের জাকাত আছে, শরীরের জাকাত রোজা।’ (ইবনে মাজাহ: ১৭৪৫) ভূমিতে উৎপাদিত শস্য তথা ফল-ফসলেরও জাকাত রয়েছে। উশর মানে হলো এক-দশমাংশ। প্রাকৃতিক পানি...
সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের সহধর্মিণী শায়লা কামাল ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন মরহুমার কন্যা, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নায়াব ইউসুফ। তিনি বলেন, “আমার শ্রদ্ধেয় আম্মা বেগম শায়লা কামাল ভোর সাড়ে ৫টায় ইন্তেকাল করেছেন। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।” মরহুমার প্রথম জানাজা বুধবার সকাল ১১টায় গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে বাদ আসর ফরিদপুর শহরের ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। শায়লা কামালের মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পরিবার ও দলের...
গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লাকি আক্তারকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা লাকি আক্তারকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এর আগে ‘পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী বানানোর অন্যতম খলনায়ক লাকি আক্তারসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদী দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল’—শীর্ষক কর্মসূচির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। শিক্ষার্থীরা ‘শাহবাগ নো মোর, ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা, চব্বিশের বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই, শাহবাগীরা হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন,...
কোরআন নাজিলের মাস রমজান। রমজান মাসে কদরের রাতে আল্লাহ লওহে মাহফুজ থেকে পৃথিবীর আসমানে কোরআন অবতরণ করেন এবং রমজান মাসেই মহানবী (সা.)- এর ওপর কোরআন নাজিল শুরু করেন। পবিত্র কোরআনে উভয় ঘটনার বর্ণনা এসেছে। কদরের রাত সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চিয়ই আমি তা কদরের রাতে অবতীর্ণ করেছি।’ (সুরা কদর, আয়াত : ১) আর রমজান মাস সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের পথপ্রদর্শকরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫) রমজানে নবীজি (সা.)-এর তিলাওয়াত কোরআন নাজিলের মাসে কোরআন চর্চা করা এবং কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা মুমিনের দায়িত্ব। রমজান মাসে মহানবী (সা.) অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। ফাতেমা (রা.) থেকে বর্ণিত, তার পিতা তাকে বলেছেন, প্রতি রমজানে জিবরাইল (আ.)-কে একবার কোরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর...
মহানবীর (সা.) ইফতার ছিল খুব সাদামাটা। তবে তিনি আগ্রহ নিয়ে ইফতার করতেন। রোজা ভাঙার সময় হলে দ্রুত ইফতার করে নিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রোজা পালনকালে রাসুল (সা.) মাগরিব ও ইফতার দ্রুত করতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০৯৯) তিনি ইফতার করতেন ভেজা বা শুকনা খেজুর, অথবা শুধু পানি দিয়ে। তাঁর দীর্ঘ দিনের সেবক আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) নামাজ আদায়ের পূর্বে কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, যদি ভেজা খেজুর না থাকত, তবে সাধারণ শুকনা খেজুর গ্রহণ করতেন। তা-ও না থাকলে কয়েক ঢোক পানিই হতো তাঁর ইফতার। (তিরমিজি, হাদিস: ৬৯৬) আবদুল্লাহ বিন আবি আউফা বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, কখনো তার ইফতার ছিল কেবল ছাতু ও পানি মিশ্রিত ইফতার খাবার। তিনি বলেন, ‘একবার, রমজান মাসে আমরা রাসুলের (সা.) সঙ্গে সফরে ছিলাম। সূর্য অস্তমিত হলে...
তারাবি নামাজে দুটি বিষয় লক্ষণীয়। তারাবি জামাতের সঙ্গে পড়া হয় এবং রমজান মাসের রাতে পড়া হয়।সুতরাং কেউ যদি কিয়ামুল লাইলের সওয়াব পেতে চায়, তাহলে তার উচিত হবে জামাতের সঙ্গে তারাবি আদায় করা এবং ইমাম যত রাকাতই পড়ুন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার অনুসরণ করে যাওয়া। কেননা হাদিসে রয়েছে, যে-ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়ে এবং তার নামাজ শেষ করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকে, সেই ব্যক্তির জন্য সারা রাত্রি ‘কিয়াম’ করার সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস: ১২২৭) অন্য হাদিসে আরও বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। আবু যর (রা.) বলেন, ‘আমরা রাসুলের (সা.) সঙ্গে রোজা পালন করেছি। যখন মাসের মাত্র সাত দিন বাকি ছিল, তখন তিনি আমাদের নিয়ে রাতের এক-তৃতীয়াংশ নামাজ আদায় করলেন। ষষ্ঠ দিনে তিনি আমাদের সঙ্গে নামাজ আদায় করেননি। পঞ্চম রাতে অর্ধরাত্রি...
হজরত ইউনুস (আ.) ছিলেন একজন নবী। সুরা ইউনুস নামে পবিত্র কোরআনে স্বতন্ত্র একটি সুরা আছে। এই সুরায় তওহিদের প্রমাণ ও অংশীবাদের প্রতিবাদ রয়েছে। সুরাটিতে অবিশ্বাসীদের সম্বোধন করে তওহিদ, ওহি, নবুয়ত ও পরকালের সত্যতা ঘোষণা করা হয়েছে।সুরা ইউনুস ছাড়াও কোরআনে আরও ছয়টি সুরায় হজরত ইউনুস (আ.) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দুজন নবী মায়ের নামে পরিচিত হয়েছেন। একজন হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ.), অন্যজন হজরত ইউনুস ইবনে মাত্তা (আ.)। মাত্তা হজরত ইউনুস (আ.)-এর মায়ের নাম। মায়ের নামেই তাঁকে ইউনুস ইবনে মাত্তা বলা হয়। কোরআনে তাঁকে তিনটি নামে উল্লেখ করা হয়েছে—ইউনুস, জুননুন ও সাহিবুল হুত। জুননুন ও সাহিবুল হুতের অর্থ মাছওয়ালা। মাছ–সংশ্লিষ্ট ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তাঁকে এ নামে ডাকা হয়েছে।হজরত ইউনুস (আ.)-কে বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর কাছাকাছি নিনাওয়া জনপদে নবী হিসেবে পাঠানো...
ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহ.) অত্যাচারিত হয়ে একবার বলেছিলেন, ‘আমাদের এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পাবে আমাদের জানাজায়।’ এখানে ‘তারা’ ছিলেন তার অত্যাচারীরা। তারা তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। ইমাম আহমাদ কথাটি বলেছিলেন এই ভেবে যে, অন্ধকার কারাগারেই তার মৃত্যু হবে এবং তারপর সত্য প্রকাশিত হলে বিপুল মানুষ তার জানাজায় আসবে, ফলে অত্যাচারী বিচারক আহমাদ ইবন আবি দুআদও শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বাধ্য হবেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ইমাম আহমাদ সেই যাত্রায় টিকে যান এবং অপরাধীর অপবাদ থেকে মুক্ত হন। জনগণের কাছে তিনি পুনরায় ব্যাপক সমাদর লাভ করেন। এবং সত্যি সত্যি তার যখন মৃত্যু হয়, আল্লাহ তাকে এমন সম্মানিত জানাজা দান করেন, যা আরব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ও বৃহৎ জানাজা হিসেবে পরিচিত। বিপরীতে, সেই বিচারক আহমাদ ইবন আবি দুআদ এতটা ঘৃণার পাত্র হন...
উসাইর ইবনে আমের, কিংবা মতান্তরে ইবনে জাবের একটি হাদিসের বর্ণনা করেছেন।হজরত উমর (রা.)-র কাছে যখনই ইয়ামেন থেকে সহযোগী যোদ্ধারা আসতেন, তখনই তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করতেন, ‘তোমাদের মধ্যে কি উয়ায়েস ইবনে আমের আছে?’এক দলের সঙ্গে উয়ায়েস করনি মদিনা এলেন। এরপর উমর (রা.) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি উয়ায়েস ইবনে আমের?’তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’উমর (রা.) বলেন, ‘মুরাদ (পরিবারের) এবং করন (গোত্রের)?’উয়ায়েস বললেন, ‘হ্যাঁ।’তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার শরীরে শ্বেতরোগ ছিল, এক দিরহাম সমান জায়গা ছাড়া তার সবটাই কি সেরে গেছে?’উয়ায়েস বললেন, ‘হ্যাঁ।’উমর (রা.) বললেন, ‘তোমার মা আছে?’আরও পড়ুনরাতে ঘুমানোর আগে সুরা মুলক পড়ার কারণ১২ এপ্রিল ২০২৪উয়ায়েস বললেন, ‘হ্যাঁ।’তিনি বললেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে বলতে শুনেছি, মুরাদ (পরিবারের) এবং করন (গোত্রের) উয়ায়েস ইবনে আমের ইয়েমেনের সহযোগী ফৌজের সঙ্গে তোমাদের কাছে আসবে। তার গায়ে ধবল দাগ...
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান ‘প্রবর্তনা’য় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই ব্যক্তি ওই বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যান।শনিবার রাতে ‘প্রবর্তনা’র একজন কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রবর্তনা’য় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমসহ (সিটিটিসি)বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন।ইবনে মিজান বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শুক্রবার রাত নয়টার পর দুজন ব্যক্তি ‘প্রবর্তনা’য় পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে...
আল্লাহর আরশের কম্পনের বিষয়ে একটি হাদিস আছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, সাদ ইবনে মুয়াজের মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল। সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) ছিলেন মদিনার একজন আনসার সাহাবি। তিনি ছিলেন আনসারদের নেতা। তিনি সব সময় মহানবী (সা.)–কে রক্ষার চেষ্টা করতেন। মহানবী (সা.)-এর যেকোনো সিদ্ধান্তে তিনি সমর্থন জানাতেন। বিশেষ করে মদিনার আনসারদের সঙ্গে মক্কার মুহাজিরদের কোনো মনোমালিন্য তৈরি হলে তিনি তাঁর সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করতেন। তিনি আনসারদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। অথচ এই মহৎ চরিত্রের সাহাবি ইসলাম গ্রহণের পর মাত্র পাঁচ বছর জীবিত ছিলেন। এ কারণেই আমাদের নবী (সা.) বললেন, তাঁর মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল। আরও পড়ুনরোজার নিয়ত কখন করবেন১৯ মার্চ ২০২৪সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) এর জানাজার ব্যাপারে সাহাবিরা বলেছিলেন, ‘আমরা যখন তার মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলাম,...
মদিনায় এক লোক ছিল, যাকে সবাই বলত ‘হিমার’ মানে গাধা। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে সে এত ভালোবাসত যে, নবীজি (সা.) তাঁর সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, নিশ্চয়ই সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসে।তার নাম ছিল আবদুল্লাহ। তার বাবার নাম নুয়াইমান। সেই সূত্রে তাকে ইবন নুয়াইমান, আবার কখনো বাবার নামে তাকে নুয়াইমান আনসারিও বলা হতো। (আল-ইসাবা ফি তাময়িয আস-সাহাবা, ৩/৩৬৬)তার সঙ্গে নবীজির সম্পর্ক ছিল হাস্যরসের। সে প্রায়ই নবীজির জন্য সুস্বাদু খাবার উপহার আনত। একবার কোনো ব্যবসায়ী কাফেলা মদিনায় এলে সে তাদের কাছ থেকে খানিকটা মাখন বা মধু বাকিতে কিনে নবীজির (সা.)সামনে রাখল। পরে বিক্রেতা অর্থ দাবি করলে আবদুল্লাহ তাকে নিয়ে নবীজির (সা.)কাছে এল। বলল, এগুলোর দাম এই লোকটাকে দিয়ে দিন।আরও পড়ুনইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম কেন পড়া দরকার০৩ মার্চ ২০২৫নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এসব...
আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি; লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম। অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই আমার সব পাপের, আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বাঁচার ও নেক কাজ করার কোনোই শক্তি নেই। (মুসলিম ও তিরমিজি)।আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ অর্থাৎ, আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর কাছেই ফিরে আসছি। এই ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০ থেকে একশবার পড়কে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সত্তরবারের বেশি তওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।’ (বুখারি)আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ অর্থ ‘আমি আল্লাহর ক্ষমাপ্রার্থনা করছি’। প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।’ (মিশকাত)আরও পড়ুনসুরা লোকমানের উপদেশগুলো বদলে দিতে পারে জীবনে চলার ধরন২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’ অর্থাৎ ‘হে আমার...
সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন যারা, তাদের মধ্যে আনাস ইবনে মালিক (রা.) অন্যতম। তিনি নাজ্জার গোত্রের জুনদুব ইবন আমিরের বংশধর। এই জুনদুব হলেন নবীজির (সা.) দাদা আবদুল মুত্তালিবের মা সালামার ভাই। সেই হিসেবে তিনি ছিলেন মদিনায় নবীজির (সা.) আপনজন। তার বয়স যখন দশ, তখন তার মা উম্মু সুলাইম তাকে নবীজির ঘরের কাজে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে রেখে যান। তিনি নবীজি (সা.)কে অজুর পানি এগিয়ে দিতেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, ৩/৩৯৫; সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,১৮৫ ও ২,৭৬৮)এই সময় নবীজির (সা.)ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে একটি ইহুদি ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মদিনার অধিবাসীদের অর্ধেকেরও বেশি তখন ইহুদি। ছেলেটিও ছিল সাধারণ ইহুদি পরিবারের একজন। জীবিকার তাগিদে সে একটি কাজ খুঁজছিল, যা মাধ্যমে পরিবারকে সাহায্য করা যায়। সে মদিনার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করছিল। ছোটখাটো কাজ, ফুটফরমাশ খাটা বলতে যা...
সাহ্রি রোজা ও রমজানের অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সাহ্রি শব্দের অর্থ শেষরাতের খাবার। ইসলামি পরিভাষায় রোজা বা সাওম পালনের উদ্দেশ্যে ভোররাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে যে আহার গ্রহণ করা হয়, তা হলো সাহ্রি। সাহ্রি একটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নত। ইসলামি বিধান সহজ, সাবলীল, যৌক্তিক ও মানবিক। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কোনো সত্তাকে তার সামর্থ্যের অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৮৬)।পূর্ববর্তী উম্মতদের রোজায় সাহ্রির বিধান ছিল না। তখন নিয়ম ছিল, সন্ধ্যারাতে এশার ওয়াক্তের মধ্যে ঘুমানোর আগেই পানাহার শেষ করতে হতো। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও ওই নিয়ম বিদ্যমান ছিল। সাহাবি হজরত কয়েস ইবনে সারমাহ আনসারি (রা.) সারা দিন পরিশ্রমের পর ইফতার করে আহারের পূর্বেই ঘুমিয়ে পড়েন এবং পরদিন রোজা রেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বিষয়টি প্রিয় নবীজি (সা.)–এর সমীপে পেশ করা হলে সাহ্রির...
ঘরে বসেই মুঠোফোনে মদিনার মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে ঘুরে দেখা যাবে। শারীরিক, আর্থিক বা অন্য কারণে যাঁরা মদিনার মসজিদে নববিতে যেতে পারবেন না, তাঁরাও মসজিদে নববির ভেতর-বাইরে দেখার সুযোগ পাবেন। ঘরে বসে ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি ঘুরে দেখার জন্য এই ঠিকানার (https://vr.qurancomplex.gov.sa/msq/) ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ভার্চ্যুয়াল মসজিদে নববি দেখার সময় আজানসহ পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শোনা যাবে। মসজিদে নববি প্রাঙ্গণে থাকা উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে ত্রিমাত্রিক ছবি দেখা যাবে এবং দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে আরবির পাশাপাশি ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষায়ও তথ্যগুলো পড়তে পারবেন।বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রবেশের পর মসজিদে নববিতে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের সামনের ও পাশের অংশ দেখতে পাবেন ভার্চ্যুয়াল ভ্রমণকারীরা। মসজিদে নববির বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ রয়েছে। আল সালাম গেট, জিবরাইল গেট, আবু বকর আল সিদ্দিক গেট, আল...
আজ খতমে তারাবিহতে পবিত্র কোরআনের সুরা নিসার ৮৮ থেকে সুরা মায়িদার ৮২ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করা হবে। পঞ্চম পারার দ্বিতীয়ার্ধ এবং পুরো ষষ্ঠ পারা—মোট দেড় পারা। এই অংশে মুসলমানদের পারস্পরিক সম্পর্ক, মানুষের অধঃপতনের কারণ, বন্ধু নির্বাচনে নীতিমালা, মুনাফিকদের কূটচাল, মানুষ হত্যা, জিহাদ, ঈসা (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র, কুফর ও শিরক, সমাজসংস্কারের নানা দিক, চুরির শাস্তি, ইহুদিরা যে কারণে অভিশপ্ত, হিজরত ও হাবিল-কাবিলের কাহিনিসহ নানা বিষয়ের কথা রয়েছে। সফর অবস্থায় নামাজ আদায়ের পদ্ধতিসুরা নিসার ১০১ আয়াতে আল্লাহ তাআলা সফর অবস্থায় কীভাবে নামাজ আদায় করতে হবে, সে পদ্ধতি বলে দিয়েছেন। কেউ অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল, তথা ৭৮ কিলোমিটারের দূরত্বে সফর করলে মুসাফির হয়। গন্তব্যে পৌঁছার পর ১৫ দিনের কম সময় অবস্থানের ইচ্ছা থাকলে মুসাফির থাকবে। এর বেশি সময় থাকলে মুসাফির থাকবে না। মুসাফির...
পবিত্র রমজান মাস ইবাদতের মাস। রমজানের সঙ্গে তারাবিহ নামাজের সম্পর্ক অত্যন্ত সুনিবিড়। রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন, আর আমি তোমাদের জন্য তারাবিহ নামাজকে সুন্নত করেছি। যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসে দিনের বেলায় রোজা পালন করবে এবং রাতে তারাবিহ সালাত আদায় করবে, সে গুনাহ থেকে এরূপ পবিত্র হয়ে যাবে, যেরূপ নবজাতক শিশু মাতৃগর্ভ থেকে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়।’ (নাসায়ি, পৃষ্ঠা: ২৩৯)রমজান মাসের বিশেষ ইবাদত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবিহ নামাজ আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি: ৩৬)যাঁরা শরিয়তসম্মত কোনো গ্রহণযোগ্য ওজরের কারণে রোজা পালনে অক্ষম, তাঁদের জন্যও সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে তারাবিহ নামাজ...
পবিত্র রমজান মুমিনের জন্য প্রশিক্ষণকাল। এ মাসে মুমিন সংযমে ভরা পুণ্যময় জীবনে অভ্যস্ত হয় এবং বছরের অন্য মাসগুলোতে সেভাবে জীবনযাপন করে। একজন রোজাদারের রোজনামচা কেমন হতে পারে, তার একটি ধারণা এখানে দেওয়া হলো। সুবিধামতো এসব আমল করা যায়। সকালআজানের জবাব: একজন মুমিনের দৈনন্দিন জীবন শুরু হয় ফজরের আজান শুনে। সে প্রথমেই আজানের উত্তর দেয় এবং আজানের দোয়া পাঠ করে। আজানের উত্তর প্রদানকারীর ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ লাভ করবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৪) ফজরের সুন্নত: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকে উত্তম।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭২৫) জামাতে ফজর নামাজ আদায়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রাতের আঁধারে মসজিদে আগমনকারীদের কিয়ামতের দিন পূর্ণ আলো লাভের সুসংবাদ দাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস: ৫৬১) জিকির ও তাসবিহ পাঠ: ফজরের নামাজের পর পুরুষেরা মসজিদে এবং নারীরা জায়নামাজে বসে জিকির, তিলাওয়াত ও তাসবিহ পাঠ...
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সাবেক ডিন ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. শাহিদা রফিক (৭৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি বিএনপির বর্ধিত সভায় গিয়ে আহত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রবিবার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভাস্থলে গর্তে পড়ে আহত হন তিনি। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন শাহিদা রফিক। চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে পরবর্তীতে তাকে ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরো পড়ুন: ‘দায় ও দরদের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করবে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পরিচিতি সভা তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রবীণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার রফিকুল...
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন প্রিমিয়াম ব্যাংকিং ও এসএমই বরেণ্য গ্রাহকদের জন্য বিশেষ এক্সিকিউটিভ হেলথ প্যাকেজ অফার করতে ইবনে সিনা ট্রাস্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রিমিয়াম ব্যাংকিং ও এসএমই বরেণ্য গ্রাহকরা ইবনে সিনা’র যেকোনো শাখায় বিনামূল্যে একটি এক্সিকিউটিভ হেলথ চেক-আপ প্যাকেজ নিতে পারবেন। গ্রাহকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এটি ব্র্যাক ব্যাংকের একটি বিশেষ উদ্যোগ। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন এসএমই ব্যাংকিংয়ের হেড অব স্মল বিজনেস, আলমগীর হোসেন; হেড অব এসএমই স্ট্র্যাটেজি, মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম; হেড অব প্রিমিয়াম ব্যাংকিং প্রপোজিশন, আরমিন আহমেদ; এবং হেড অব প্রিমিয়াম ব্যাংকিং বিজনেস অ্যাক্যুজিশন, সৈয়দ মাহিন জুবায়েদ। অন্যদিকে ইবনে সিনা ট্রাস্টের পক্ষ...
রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আবারো এসেছে পবিত্র রমজান। মহান আল্লাহর কাছে মুমিনের যত প্রত্যাশা তার সবই ধারণ করে রমজান। কেননা রমজান দয়া ও অনুগ্রহের মাস, রমজান মুক্তি ও ক্ষমা লাভের মাস। রমজান আত্মিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। রমজানের আগমনে খুশি হয় মুমিন। যেভাবে খুশি হতেন তাদের প্রিয় নবীজি (সা.)। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের আগমনে খুশি হতেন এবং রমজানের চাঁদকে অভিনন্দন জানাতেন। রমজানকে স্বাগত জানাতেন তার সাহাবিরাও। হজরত হাসান ইবনে আলী (রা.) চাঁদ দেখে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! এ মাসকে প্রাচুর্য ও জ্যোতির্ময় করুন, পুণ্য ও ক্ষমার মাধ্যম করুন। হে আল্লাহ! আপনি (এ মাসে) আপনার বান্দাদের মাঝে কল্যাণ বিতরণ করবেন, সুতরাং আপনার পুণ্যবান বান্দাদের জন্য যা বণ্টন করবেন, তা আমাদেরও দান করুন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি...
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শাহিদা রফিক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিএনপির বর্ধিত সভাস্থলে গর্তে পড়ে আহত হন তিনি। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। দলের বর্ধিত সভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল শনিবার সকালে হঠাৎ করে শাহিদা রফিকের ব্লাড প্রেসার একদম কমে যাওয়ায় চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। তার কিডনি ও হার্ট স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না বলে জানানো হয়েছিল। বিএইচ
বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখলেও কেবল রমজান মাসের রোজা পালন করা ফরজ। রোজা কেবল উম্মতে মুহাম্মাদ জন্য ফরজ নয়, বরং তা অতীত নবী-রাসুলদের উম্মতদের জন্যও ছিল। কিন্তু রোজার সময়, পদ্ধতি ও ধারা ভিন্ন ছিল। রোজা ফারসি শব্দ, অর্থ উপবাস থাকা। কোরআন-হাদিসে এটিকে সিয়াম বলে। রোজা শব্দটিই প্রচলিত। সাওম বা সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা। শরিয়তের পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া, পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম, সিয়াম বা রোজা বলে। কোরআন যে আয়াতটির মাধ্যমে রোজা ফরজ হয়, সেটিতেই ইঙ্গিত রয়েছে যে পূর্ববর্তী জাতি-গোষ্ঠীর জন্য রোজা ফরজ ছিল। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের জন্য সিয়াম (রোজা) বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)। আদম (আ.)-এর...
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক তরুণীর ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে এসেছে।প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।পুলিশের এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার সন্ধ্যার সময় মোহাম্মদপুরের আসাদগেটের কাছে আড়ং গলির পেছনে ওই তরুণী ধূমপান করছিলেন। স্থানীয় লোকজন সেটি দেখে ওই তরুণীর উদ্দেশে উচ্চবাচ্য করেন। এ হট্টগোলের খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। তরুণীকে আটক করা হয়নি। নিরাপদ হেফাজতের জন্য তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তরুণীর পরিবার থানায় এসেছে।ডিসি ইবনে মিজান জানান, ওই তরুণী বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর সঙ্গে তাঁর এক বান্ধবীও ছিলেন।
আাগামীকাল পহেলা রমজান থেকে বৈশাখী টিভিতে শুরু হচ্ছে স্থপতি, লেখক, নির্মাতা ও পর্যটক শাকুর মজিদের ৩০ পর্বের প্রামাণ্যচিত্র ইসলামের স্থাপত্যধারা। এটি প্রচার হবে প্রতিদিন ইফতারের পর । বিগত ১৪০০ বছর ধরে ইসলামের বিকাশের সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী ইসলামী স্থাপত্যধারার যে বিকাশ ও বিবর্তন ঘটেছিল- উমাইদ, আব্বাসী, ফাতেমীয়, মামলুক, আইয়ুবীয়, সুলতানী, তুঘলকী, মুঘল আমল থেকে শুরু করে বর্তমান আমলের নির্বাচিত স্থাপনাগুলোই স্থান পেয়েছে এ ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্রে। এ প্রামাণ্যচিত্রের পর্বগুলো সাজানো হয়েছে যেভাবে তাহলো- ইসলামি স্থাপত্যের সূচনাকাল-উমাইয়া আমল, ওমর ইবনে আল-আস মসজিদ দিয়ে মিশরে ইসলামি স্থাপত্যের সূচনা, কুব্বাত আস সাখরা: প্রথম গম্বুজের ব্যবহার, উকবা মসজিদ: তিউনিশিয়ায় ইসলামি স্থাপনার সূত্রপাত, করদোবায় মুরিশ স্থাপত্যকৌশলের সূচনা, ৮ম শতাব্দীতে শুরু হয় আব্বাসী রীতির বিশালাকার স্থাপত্য, আব্বাসী রীতির ইবনে তুলন মসজিদ, বাগদাদকেন্দ্রিক আব্বাসী আমলের স্থাপত্য, ১০ম শতাব্দীতে...
প্রতিনিয়ত রিজিকের সন্ধানে আমরা ছুটছি। উচ্চ খরচের জীবনযাত্রায় একটু শান্তি, একটু স্বস্তি এবং একটু সুখের আশায়—তুলনামূলক বেশি আয়-উপার্জনের পথ ও উপায় খুঁজে ফেরেন অধিকাংশ মানুষ। জরিপ করলে দেখা যাবে, রিজিকের বৃদ্ধি ঘটুক বা আয়-উপার্জনে বরকত আসুক চান না, এমন একজন মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানুষমাত্রই চান রিজিকের বৃদ্ধি ঘটুক এবং আয়-উপার্জনে বরকত আসুক। রিজিক নির্ধারিত মানে কোনোভাবেই রিজিকে প্রবৃদ্ধি আসবে না—বিষয়টি এমন নয়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অনেক এমন আমলের বর্ণনা এসেছে, যার মাধ্যমে রিজিকে সমৃদ্ধি আসতে পারে। (রিযক হালাল উপার্জন, দারুস সালাম রিসার্চ টিম, অনুবাদ ও সম্পাদনা: কায়সার আহমাদ, মুসলিম ভিলেজ, পৃষ্ঠা ৮৭-১০৩)আসুন জেনে নিই, কী কী আমলের মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি ঘটে এবং আয়-উপার্জনে বরকত আসে: ১. তওবা-ইস্তিগফার করা তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে...
চট্টগ্রামে ছিনতাইকারীদের আস্তানায় অভিযানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন পুলিশের দুই উপপরিদর্শক (এসআই)। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের ডবলমুরিং থানার বারিকবিল্ডিং মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আহতরা হলেন- আহলাদ ইবনে জামিল ও মো. নজরুল ইসলাম। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হলেন- জাহিদুল ইসলাম (২৪), মো. জুয়েল (৪৫) ও মো. তারেক (২৫)। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই ও ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ২ লাখ ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, নগরের বারিকবিল্ডিং মোড়ে সীমানা দেয়াল ঘেরা একটি শিল্পগ্রুপের পরিত্যক্ত জায়গায় আস্তানা গাড়ে ছিনতাইকারীরা। নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে সেখানে গিয়ে ভাগবাটোয়ারা করে তারা। এছাড়া সেখানে মাদকও সেবন করে। ছিনতাইকারীরা আস্তানায় অবস্থান করছে এমন তথ্য পেয়ে অভিযানে যায় ডবলমুরিং থানা-পুলিশের একটি...
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সঙ্গে ইবনে সিনা ট্রাস্টের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নোবিপ্রবি উপাচার্যের কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। এ সময় নোবিপ্রবির পক্ষে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজীদ হোছাইন চৌধুরী এবং ইবনে সিনা ট্রাস্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির এজিএম ও হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদ নিয়াজ মাখদুম শিবলী স্বাক্ষর করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “এ চুক্তির মাধ্যমে নোবিপ্রবি ও ইবনে সিনা ট্রাস্টের একটি পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে উঠবে, যা উভয় প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে গবেষণা ক্ষেত্রে নোবিপ্রবি ও ইবনে সিনা ট্রাস্ট যুগপৎ কাজ করলে আমরা তা স্বাগত জানাব।” তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে টেকনিক্যাল স্টাফরা রয়েছেন, তাদের...
মেরাজের রাতে রাসুল (সা.) জান্নাত পরিদর্শনের সময় হজরত বেলাল ইবনে রাবাহ (রা.)–র পায়ের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে রাসুল (সা.) হজরত বেলাল (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে বেলাল, ইসলাম গ্রহণের পর তুমি কী এমন কাজ করেছিলে, যে কারণে তুমি জান্নাতে পৌঁছে গেলে? গতরাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করে তোমার পায়ের শব্দ শুনতে পেলাম!’হজরত বেলাল (রা.) বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি এমন কিছুই করিনি। তবে আমি কোনো গুনাহ করলেই দুই রাকাত নামাজ আদায় করি। আর অজু চলে গেলে তখনই আবার অজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি।’আরও পড়ুনহজ ও কোরবানির প্রস্তুতির মাস জিলকদ ২৬ মে ২০২৩কৃষ্ণাঙ্গ সাহাবি হজরত বেলাল (রা.)–র জন্ম মক্কায়। তবে তিনি ছিলেন আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) বংশোদ্ভূত। মক্কার প্রভাবশালী কুরাইশ নেতা উমাইয়া ইবনে খালফের ক্রীতদাস ছিলেন তিনি। কুরাইশদের চোখে ক্রীতদাস হিসেবে...
হাসির মতো কান্নাতেও মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে। হাসি-কান্না মানুষের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এ দুটি মানবতত্ত্বের এক নিগুঢ় রহস্য। আল্লাহ–তায়ালা বলেন, তিনিই হাসান ও কাঁদান। (সুরা নাজম, আয়াত: ৪৩)আল্লাহ্ই মানুষের মধ্যে হাসি-কান্নার উপাদান সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কান্নার ধরনকান্নার ধরন অনেক। ভয়ের কান্না, বিরহের কান্না, অসহায়ত্বের কান্না, শোক ও বিষণ্নতার কান্না ইত্যাদি। রাসুল (সা.) স্বাভাবিক মানবীয় প্রকৃতির মতোই কোনো আত্মীয় ও প্রিয়জনের মৃত্যুতে কাঁদতেন। এ ধরনের বহু ঘটনা হাদিসের কিতাবে রয়েছে।ইবনুল কাইয়িম (র.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর কান্না ছিল হাসিরই অনুরূপ। তিনি সশব্দে যেমন হাসতেন না, তেমনই শব্দ করে কাঁদতেনও না। কেবল তাঁর দু চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরত। (জাদুল মায়াদ, খণ্ড ১, হাদিস: ১৮৩)আরও পড়ুনমহানবী (সা.)-এর কথা বলার ভঙ্গি০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩সন্তান–শোকে কান্নাআনাস (রা.) বলেন, (নবী-পুত্র) ইব্রাহিমকে আমি নবীজির(সা.) সামনে মৃত্যুপ্রায় অবস্থায় দেখেছি নবীজির (সা.)...
হাসি ও আনন্দ মানুষের ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে দেয়। নবীজির (সা.)হাসিখুশির ভঙ্গিও ছিল তাঁর ব্যক্তিত্বের খুবই জরুরি অনুষঙ্গ। এ সম্পর্কিত হাদিসগুলো খণ্ডিত হলেও একেবারে অপ্রতুল নয়।মহানবী (সা.)-এর আনন্দ তাঁর চেহারায় প্রকাশ পেতো। সাহাবিদের অনেকেই তাঁর আনন্দের টুকরো টুকরো ছবি তুলে ধরেছেন। আনন্দের প্রকাশমহানবী (সা.)-এর আনন্দ প্রকাশের ধরন নিয়ে দুটি ঘটনার উল্লেখ করা যায়।সিরাত পাঠকমাত্রই কাব ইবনে মালেকের (রা.) ঘটনা সম্পর্কে জানেন। তাবুক যুদ্ধে শরিক না থাকায় তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। পরে যখন আল্লাহ তাঁর তাওবা কবুল করেন। সে সময়ে নবীজির অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি নিজেই বলেছেন, আমি নবীজিকে সালাম দিলাম, আনন্দে তাঁর চেহারা ঝলমল করছিল। তিনি বললেন, ইতোমধ্যে তোমার কেটে যাওয়া জীবনের ওপর সুসংবাদ গ্রহণ করো...। (বুখারি, হাদিস: ৪৪১৮)কাব (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আনন্দিত হলে তাঁর চেহারা এমন আলোকিত...
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ও উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল আহাদ ইবনে মালেকের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্বামী ভাষ্য, ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে তার স্ত্রীকে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়পুর গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়। বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত মিনারা বেগম (৩৮) উপজেলা জামায়াতের মহিলা বিভাগের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি মিরপুর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। আরো পড়ুন: গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী-সতিন গ্রেপ্তার সাতক্ষীরায় শিশু কন্যাকে পুড়িয়ে ও মাকে পিটিয়ে হত্যা নিহতের স্বামী আব্দুল আহাদ ইবনে মালেকে জানান, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে উপজেলায় সরকারি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে যোগ দিয়ে হবিগঞ্জে রোকন বৈঠক করে...
আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে মানুষ ঋণ নিতে বাধ্য হয়। ঋণের টাকায় প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে। তবে সাধ্যের বাইরে ঋণ দেওয়া-নেওয়া দুটিই ইসলাম নিষেধ করেছে। কারণ, তাতে সময়মতো ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কমে যায়। এর ফলে ঋণদাতাকে যেমন হতাশাগ্রস্ত হয়, ঋণগ্রহীতার আত্মমর্যাদাও ক্ষতির শিকার হয়।মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন যাতে তিনি ঋণে জড়িয়ে না পড়েন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজের পরে দোয়া করতেন—হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ ও ঋণ থেকে পানাহ চাচ্ছি। এক প্রশ্নকারী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি ঋণ থেকে বেশি পানাহ চান কেন? রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করে। (বুখারি, হাদিস: ২,৩৯৭)হাদিসে ঋণ থেকে মুক্তির আরও কয়েকটি দোয়া রয়েছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া...
হজরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) রাসুল (সা.)–কে মুমূর্ষু অবস্থায় রেখে তাঁর ঘর থেকে বের হয়ে এলে লোকজন জানতে চান, ‘হে হাসানের পিতা, নবীজি (সা.)–এর কী অবস্থা?’ তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তিনি এখন সুস্থ।’ আব্বাস (রা.) তখন আলী (রা.)-এর হাত ধরে বলেন, ‘খোদার শপথ, তিন দিন পর তোমার অনুগত হয়ে থাকতে হবে। তাঁর অবস্থা যা দেখেছি, তিনি এই অসুস্থ অবস্থাতেই ইন্তেকাল করবেন। মৃত্যুর সময় আবদুল মুত্তালিবের সন্তানদের চেহারা কেমন হয়, তা আমি জানি। চলো, আমরা গিয়ে নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করি, পরবর্তী দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে? যদি আমাদের মধ্যে কেউ হয়, তবে তো জেনে নিলাম, অন্য কেউ হলে, তা-ও জানলাম। তিনি আমাদের অসিয়তও করবেন।’ আলী (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর শপথ, যদি আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করি আর তিনি আমাদের না করে দেন, তবে তাঁর...
শনিবার রাতের ও দিনের নফল নামাজহজরত আবু হুরায়রা (রা.) ও হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, শনিবার রাতে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি শনিবার দিন চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা পাঠাবেন, যারা কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকবে এবং কিরামান কাতেবিন তার জন্য শহীদের সওয়াব লিখতে থাকবে; সমুদ্রের ফেনা ও আকাশের তারকা সমান তার গোনাহ থাকলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে।রোববারের নফল নামাজহজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোববার চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।সোমবারের নফল নামাজহজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সোমবার দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, সে অসংখ্য সওয়াবের অধিকারী হবে।...
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য মিশরে সাংবাদিক ও কলামিস্ট প্রবাসী আফছার হোসাইনকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার ‘দারুল আজহার বাংলাদেশ’ প্রদান করা হয়েছে । বুধবার (১৯শে ফেব্রুয়ারি) বুধবার সন্ধ্যায় মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘দারুল আজহার বাংলাদেশ’ এর মিফতাহুল মাকামাতের সমাপনী ও সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে আফছার হোসাইন এর হাতে এই সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মিশরের বিখ্যাত ক্বারী ফাদিলাতুশ শাইখ ইয়াসির ইবনু আব্দুল বাসেত ইবনে আব্দিস সামাদ হাফিজাহুল্লাহ। এসময় উপস্থিত ছিলেন- কারী সাইয়্যেদ রাশেদ মিশরি হাফিজাহুল্লাহ, শাইখ কারী আব্দুল লতীফ ওয়াহদান হাফিজাহুল্লাহ, শায়েখ ফাউকি জাওয়াদা ফিলিস্তিনি হাফিজাহুল্লাহ, আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার বাংলাদেশর একমাত্র বিচারক ক্বারী শোয়াইব মোহাম্মদ আল- আজহারী ও দারুল আজহার বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা শাইখ হাবিবুল বাশার আজহারী প্রমুখ। আফছার হোসাইন এর আগে...
যেকোনো মানুষের দৈহিক গঠনের সঙ্গে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রকাশভঙ্গি না জানলে দৈহিক সৌন্দর্য আসলে অস্পষ্ট থেকে যায়। চলাফেরা ও কাজেকর্মের মধ্য দিয়েই ব্যক্তিকে চেনা যায় সবচেয়ে বেশি। কেউ কীভাবে হাঁটেন, খাবার খান, কথা বলেন, কাঁদেন কিংবা হাসেন ইত্যকার বিষয়াদি জানলেই মূলত কল্পনায় ব্যক্তির পূর্ণছবি দাঁড় করানো সম্ভব হয়। হাদিসের বর্ণনাকে মাধ্যম করে আমরা চেষ্টা করব নবীজি(সা.)র ব্যক্তিত্ব ও অঙ্গ-সৌষ্ঠবের প্রকাশভঙ্গি একটি যথার্থ চিত্র তুলে ধরতে। এই নিবন্ধে আমরা নবীজি (সা.) র হাঁটা-চলার ধরন সম্পর্কে আলোচনা করব।রাসুল (সা.)-এর হাঁটাচলা ছিল একজন প্রাণবন্ত ও উদ্যমী পুরুষের মতো। তার হাঁটার গতি ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে একটু দ্রুত। আনাস (রা.) বলেন, তিনি একটু ঝুঁকে হাঁটতেন। কোথাও গেলে পথে ছড়িয়ে পড়া সুগন্ধির সূত্র ধরে বোঝা যেতো যে, তিনি এই পথ ধরে গেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ২,৩৩০)আরও পড়ুন দুই...
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানকালে ‘গুলিবিনিময়ে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান এই তথ্য জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের নাম জানা গেছে। তাঁর নাম জুম্মন (২৫)। তাঁকে সন্ত্রাসী বলছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে পরে যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।অন্যদিকে মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দিবাগত রাত একটার দিকে যৌথবাহিনী চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযান চালাতে যায়। এ সময় যৌথবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। যৌথবাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। এতে সন্ত্রাসী জুম্মনসহ দুজন নিহত হন। এ ঘটনায় যৌথবাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে...
‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ অর্থ ‘আমি আল্লাহর ক্ষমাপ্রার্থনা করছি’। প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।’ (মিশকাত)‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ অর্থাৎ, আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর কাছেই ফিরে আসছি। এই ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০ থেকে একশবার পড়কে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সত্তরবারের বেশি তওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।’ (বুখারি)আরও পড়ুননবীজি (সা.)-এর মুজিজা২৫ এপ্রিল ২০২৩রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’ অর্থাৎ ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তওবা কবুলকারী করুণাময়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)দিনের যেকোনো ইবাদত-বন্দেগি, তথা ক্ষমাপ্রার্থনার সময় এভাবে তওবাহ-ইসতেগফার করকে হবে। ‘আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া...
মহানবী (সা.) হিজরতের আগে মক্কায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অসম্ভব কঠিন এক পরিস্থিতি। তাকে উপেক্ষা করে মক্কার বায়তুল্লাহ প্রাঙ্গণে মহানবী (সা.)–এর সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি কাবা শরিফে মাকামে ইবরাহিমের কাছে দাঁড়িয়ে উচচ স্বরে সুরা আর রহমানের কিছু অংশ তিলাওয়াত করেন। কুরাইশ নেতারা তা শুনে হতবাক হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তারা তাঁর দিকে ছুটে গিয়ে নির্দয়ভাবে তাঁর মুখে আঘাত করতে থাকে। নির্যাতনের পরও তিনি বলেছিলেন, আল্লাহর শত্রুরা আমার কাছে খুবই তুচ্ছ। আমি আবারও গিয়ে তাদের সামনে কোরআন তিলাওয়াত করব। তিনিই প্রথম মুসলমান যিনি প্রকাশ্যে কোরআন তিলাওয়াত করেছিলেন।আরও পড়ুনঅনাথ ও দরিদ্রের প্রতি কোমলতা সুরা দোহার শিক্ষা১২ এপ্রিল ২০২৩হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র আবেগময় কোরআন তিলাওয়াতের প্রশংসা করে রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরআর যেভাবে নাজিল হয়েছে, কেউ...
বদরের যুদ্ধে তুমুল লড়াই চলছে। চারদিকে শত্রু খুঁজছে সবাই। হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) এক জায়গায় দাঁড়িয়ে লক্ষ করেছিলেন, শত্রুকে কীভাবে ঘায়েল করা যায়। তাঁর দুই পাশে এসে দাঁড়াল দুটি বালক।আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-কে তারা বলল, চাচা, আপনি আবু জাহেলকে চেনেন? আমাদের দেখিয়ে দিন। তিনি দূর থেকে আবু জাহেলকে দেখিয়ে দিলেন।ছুটতে ছুটতে আবু জাহেলের সামনে গিয়ে হাজির হলো দুই বালক। আবু জাহেল তখন ঘোড়ায় চড়ে ছুটছিলেন। বালক দুজনের পক্ষে ঘোড়ায় চড়ে থাকা আবু জাহেলের শরীরে সরাসরি আঘাত করা অসম্ভব ছিল।আরও পড়ুনবদর যুদ্ধের ইতিহাস: বদর যুদ্ধক্ষেত্রে একটি দিন০৯ এপ্রিল ২০২৩একজন আক্রমণ করল আবু জাহেলের ঘোড়ায়। আরেকজন তলোয়ার দিয়ে আবু জাহেলের পায়ে। মুহূর্তের মধ্যেই আবু জাহেল মাটিতে গড়িয়ে পড়লেন। পড়ে ছটফট করতে লাগলেন। বালক দুজন সমানতালে তাঁকে আঘাত করে চলল।...
যে মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, তাকে জুমার মসজিদ বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)। জুমার তাৎপর্য তাফসিরবিদেরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।সুরা...
শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। ‘শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি; শবে বরাত অর্থ মুক্তির রজনী। ‘শবে বরাত’–এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা ও হিন্দি ভাষায় এটি ‘শবে বরাত’ নামেই অধিক পরিচিত।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল এবং এ উভয়ের মাঝে যা আছে, সবার...
হাদীসের ভাষায় ‘শবে বরাত’কে বলা হয় ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শা‘বান’। বাংলা অর্থ হলো: শা‘বান মাসের মধ্য রজনী। এ রজনীর মর্যাদা ও তাৎপর্য সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. এর পবিত্র জবানীতে যা পাওয়া যায় তাতে বুঝা যায়, এ রাত্রি অত্যন্ত মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ। রজনীটির মর্যাদা ও তাৎপর্যের দিকে লক্ষ্য করে অনারবরা এ রাতের নাম দিয়েছেন ‘শবে বরাত’ বা ‘মহিমান্বিত রজনী’। গুরুত্বের বিবেচনায় প্রকৃত অর্থেই এ রাতটি অত্যন্ত মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ। এ রজনী সম্পর্কে হাদীসে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। বর্ণনাকারীদের তারতম্যের কারণে কিছু বর্ণনার মান নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হলেও গ্রহণযোগ্য বর্ণনাও কিন্ত কম নয়। এর মধ্যে সর্বজন গ্রহণযোগ্য হাদীসটি আলোচিত হয়েছে সুনানে ইবনে মাজাহ এ। হযরত মু‘আয ইববে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত তিনি নবীজি সা. থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তা‘আলা মধ্য শা‘বানের...
আগের দুই পর্বে আমরা রাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.) যেসব কাজ করতেন, তার কিছু কিছু আলোচনা করেছি। সেই আলোচনার এটি শেষ পর্ব। এখানে আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর আরও কিছু আমলের কথা বলব।১২. শেষ রাতে রাসুল (সা.)-এর দোয়া-মোনাজাত এবং আল্লাহ্র কথা ভেবে ক্রন্দনের বর্ণনা বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি বিভিন্ন দোয়া পড়তেন এবং কাঁদতেন। (বুখারি, হাদিস: ১১২০; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৭২৯; মুসলিম, হাদিস: ৭৭২; তিরমিজি, হাদিস: ২৬২)১৩. রাসুল (সা.) তিন রাকাত বিতর পড়তেন। বিতর পড়ার জন্য স্ত্রীকেও মাঝেমধ্যে জাগিয়ে তুলতেন। প্রথম রাকাতে সুরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়তেন। কখনও কখনও সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়তেন। (বুখারি, হাদিস: ৫১২, ৯৯৭; মুসলিম, হাদিস: ৭৪৪; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৭২০; তিরমিজি, হাদিস: ৪৬২)আরও পড়ুননামাজ ও কোরআন পড়ার আগে অজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোরআনে০৭ আগস্ট...