রমজান মাসে মহানবী (সা.) সাহাবিদের বিভিন্নভাবে উপদেশ দিতেন, ছোট ছোট সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের সত্য ও ন্যায়ের পথ বাতলে দিতেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশ দিনে ইতেকাফ পালন করতেন, মসজিদে খেজুর গাছের শাখায় বানানো তাঁবু টানাতেন। আমরা একদিন তার তাঁবুর পাশে উপস্থিত হলাম। তিনি মুখমণ্ডল বের করে বললেন, ‘নামাজ আদায়কারী তার প্রতিপালকের কাছে একান্তে প্রার্থনা করে, তোমাদের প্রত্যেকের ভাবা উচিত, কীভাবে সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করবে। (অন্যকে কষ্ট দেয় এমন) উচ্চ স্বরে তোমাদের কেউ যেন তিলাওয়াত না করে।’’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৫,৩৫৯)

আরও পড়ুন  যেমন ছিল মহানবীর (সা.

) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫

ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, ‘তিনি খুব যত্নসহকারে রমজানের দিনগুলোতে আমাদের উপদেশ দিতেন এবং আমরা বিরক্ত হচ্ছি কি না তার প্রতিও খেয়াল রাখতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৮)

এ-সময় রাসুল (সা.) ছোট ছোট বাক্যে সাহাবিদের সৎকর্মের আহ্বান জানাতেন। যেমন তিনি বলতেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ, রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ মেশকের তুলনায় আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয়। (আল্লাহ বলেন) রোজাদার সে আমার উদ্দেশ্যে তার পানাহার ও প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করে, রোজা আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান। পুণ্যকর্মের প্রতিদান দশগুণ।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৮৯৪)

কিংবা বলতেন, ‘রোজাদারের আনন্দের মুহূর্ত দুটি—ইফতার এবং প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫১)

অপর হাদিসে এসেছে, আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলকে রমজানের রাত যাপনে উৎসাহ দিতে শুনেছি। তিনি বলছিলেন, ‘প্রতি ইফতারকালে আল্লাহ তাআলা অনেককে মুক্তি প্রদান করেন, আর তা প্রতি রাতে ঘটে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৬৪৩)

রমজান মাসে নামাজের পরে রাসুল (সা.) সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘ফজরের নামাজের জন্য তিনি বেরোলেন; নামাজ সমাপ্ত করে মানুষের দিকে ফিরে তাশাহ্হুদ পাঠ করে বললেন, আমি তোমাদের অবস্থান আমার জানা, কিন্তু আমার ভয় হয় তোমাদের ওপর তারাবি ফরজ করে দেওয়া হবে এবং তোমরা তা পালনে অক্ষম হয়ে পড়বে। (বুখারি, হাদিস: ৯২৪) 

আরও পড়ুনযেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার১০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমানোর আগে রিলস দেখা কতটা ক্ষতিকর?

সামাজিক মাধ্যমে বড় ভিডিও দেখার চেয়ে এখন অনেকেই ছোট ছোট রিলস দেখে বিনোদন খোঁজেন। কারও কারও ক্ষেত্রে রিলস দেখা রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সারাদিন তো বটেই,অনেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমোনোর আগে টানা রিলস দেখা শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের উপরই নয়, প্রভাব ফেলে শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরও। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে একটানা রিলস দেখলে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। যেমন-


হাইপারটেনশনের ঝুঁকি

সম্প্রতি চীনের এক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বয়সের ৪ হাজার ৩১৮ জনের উপর একটি গবেষণা করা হয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে রিলস্ দেখার সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের কোনও সম্পর্ক আছে কি না-তা জানাই ছিল এই গবেষণার লক্ষ্য। ওই গবেষণায় রিলস দেখার সঙ্গে হাইপারটেনশনের ঝুঁকির যোগসূত্র খুঁজে পান গবেষকরা। বিশেষ করে তরুণ এবং মধ্যবয়সীদের মধ্যে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

মানসিক চাপ

গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত রিলস দেখা মনের উপর চাপ ফেলে। পাশাপাশি এর প্রভাবে চিন্তার অভ্যাস কমে যাওয়া, সৃজনশীল চর্চার পরিধি এবং স্থায়ীত্বেরও ব্যাঘাত ঘটে চলেছে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে রিলস দেখার পরিণাম আরও ভয়াবহ।

রিলস দেখার ফলাফল

যেকোন ধরনের স্ক্রিনের দিকে একটানা তাকিয়ে থাকা কারও জন্যই ভালো নয়। এর ফলে শরীর যেটুকু নড়াচড়া করে, সে সবের কোনও অবকাশই থাকে না। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখলে শরীর আড়ষ্ট হয়ে পড়ে। ফলে রক্ত চলাচলও স্তিমিত হয়ে পড়ে। এর ফলে শরীরে হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা দানা বাঁধে। আবার এই ভাবে দীর্ঘক্ষণ রিলস দেখার সময় শরীরের সিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেম আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ভিডিও দেখার সময় হৃৎস্পন্দন তুলনামূলক বেড়ে যায়। নিয়মিত একই কাজ করলে এর প্রভাব হতে পারে ভয়াবহ।

প্রতিকার

প্রতিকার হিসেবে গবেষকদের পরামর্শ, যতই রিলস দেখুন না কেন, তাতে আসক্ত হওয়া যাবে না। ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্ক্রিন টাইম ঠিক করে নিন। প্রয়োজনে স্মার্ট ফোন দূরে রেখে ঘুমাতে যান। এতে ঘুম ভালো হবে, আবার শরীরও পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ