ফসলের জাকাত ‘উশর’ গুরুত্বপূর্ণ ফরজ
Published: 14th, March 2025 GMT
ফসলের জাকাত ‘উশর’ গরিবের পাওনা হক। এটি আদায় করা ফরজ ইবাদত। ‘উশর’ ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক আদায় করতে হয়, বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ) এমন যে যিনি সৃজন করেছেন বাগান সুউচ্চ (মাচানে লতানো) ও অনুচ্চ (মাচানবিহীন) এবং খেজুরগাছ ও খেত; তার স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন আর জলপাই ও ডালিম, সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য। তোমরা খাও তার ফল যখন ফল পরিপক্ব হয়; আর তার হক (উশর) প্রদান করো তা উত্তোলনের দিনে; আর (উশর প্রদান না করে) সীমা লঙ্ঘন করো না, নিশ্চয় আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৪১)
রাসুলুল্লাহ (সা.
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বৃষ্টির পানি, প্রবাহিত ঝরনার (নদীর) পানি ও মাটির স্বাভাবিক আর্দ্রতা দ্বারা যে ফল-ফসল উৎপাদিত হয়, তার ১০ ভাগের ১ ভাগ (১০ শতাংশ) এবং সেচের মাধ্যমে যে ফল-ফসল উৎপাদন করা হয়, তার ২০ ভাগের ১ ভাগ (৫%) জাকাত প্রদান করতে হবে।’ (বুখারি, তিরমিজি)
প্রাকৃতিক উপায়ে আহরিত মধু ও সনাতন পদ্ধতিতে উৎপাদিত লবণের ‘উশর’ (১০%) এবং আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করা মধু ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করা লবণে ‘নিসফ উশর’ (৫%) প্রদান করতে হয়। সংরক্ষণযোগ্য ফল-ফসল নিসাব পরিমাণ (২০ মণ) বা এর বেশি হলে তবেই উশর সরকার আদায় করবে। এর কম হলে বা সংরক্ষণযোগ্য না হলে মালিক নিজেই প্রদান করবেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘প্রত্যেক জিনিসের জাকাত আছে, শরীরের জাকাত রোজা।’ (ইবনে মাজাহ: ১৭৪৫)। ভূমিতে উৎপাদিত শস্য তথা ফল-ফসলেরও জাকাত রয়েছেযেসব উৎপাদনের উশর প্রদান করতে হয়: ১. ফল-ফলারি: খেজুর, আঙুর, কিশমিশ, নারকেল, সুপারি, কলা, পেঁপে, আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আমড়া, আমলকী, তেঁতুল, তরমুজ, বাঙ্গি ইত্যাদি ফল-ফলারি এবং ২. শাকসবজি: লাউ, কুমড়া, ঝিঙে, করলা, বেগুন, শসা, ক্ষীরা, পুঁইশাক, শিম, বরবটি, আলু, কচু ইত্যাদি এবং ৩. মসলা-প্রসাধন: পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, মরিচ, ধনে, জাফরান, মেহেদি, জাইতুন, জিরা, শর্ষে-রাই, সয়াবিন ইত্যাদি। এবং (৪) খাদ্যশস্য: ধান, গম, যব, ভুট্টা, ডাল, মসুর, ছোলা, কলাই, চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, আখরোট ইত্যাদি এবং (৫) ফসল: শণ, পাট, তুলা, রেশম, আখ, মধু, লবণ ইত্যাদি।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে সব মুসলিম নাগরিকের জমিই উশরী ছিল। খলিফা হজরত ওমর (রা.) শুধু যুদ্ধ বিজিত ভূমিতে ‘খারাজ’ বা কর আরোপ করেন। এতে মুসলিম ফকিহরা একমত হয়েছেন, মুসলিম মালিকানাধীন কোনো ভূমিতে খারাজ বা ভূমিকর আরোপ করা যাবে না; শুধু বিজিত দেশের অমুসলিম নাগরিকদের ভূমিতে খারাজ আরোপ করা হবে। ইমাম আবু ইউসুফ (রা.) বলেছেন, ‘যেসব ভূমির মালিকগণ স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন, সেসব ভূমি উশরী।’ (আল মাবসুত)
মুসলিম বিজয়ের সময় মালিকহীন, পরিত্যক্ত বা পতিত ভূমি যা পরবর্তীকালে মুসলিমগণ মালিকানা লাভ করেন বা ব্যবহার করেন; সেসব ভূমিও উশরী হিসেবে গণ্য। মুসলিম শাসক কর্তৃক মুসলিম নাগরিককে চাষাবাদের জন্য প্রদত্ত ভূমি এবং মুসলিম কর্তৃক আবাদকৃত সব ভূমিতে উশর প্রযোজ্য। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের সব ফসলি ভূমি উশরী। তাই এই সব ভূমির উৎপাদনের উশর প্রদান করা জরুরি। ‘উশর’ সেসব খাতে ব্যয় করা যায়, জাকাত যেসব খাতে ব্যয় করা যায়।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ম ণ সব ভ ম ফসল র
এছাড়াও পড়ুন:
বিটিসিএলে ১৩১ পদে নিয়োগ, নবম-দশম গ্রেডে চাকরি করতে চাইলে করুন আবেদন
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) নবম ও দশম গ্রেডে ১৩১ পদে বিজ্ঞপ্তিতে (পুনরায় বিজ্ঞপ্তি) আবেদন চলছে। আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন অনলাইনে। এই দুটি পদে আগে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। আগের আবেদনই গ্রহণ করা হবে।
১. পদের নাম: হিসাবরক্ষকপদসংখ্যা: ৩৪
আবেদনের যোগ্যতা: স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকাউন্টিংসহ বাণিজ্য বিভাগে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। ন্যূনতম সিজিপিএ ৪–এর স্কেলে ২.০ এবং এসএসসি/এইচএসসি পর্যায়ে ন্যূনতম সিজিপিএ ৫–এর স্কেলে ৩.০ থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১৬,৫২০–৪১,৭৪৫ টাকা (গ্রেড–৯)
আরও পড়ুনবিসিএসে নতুন সিলেবাস, ভারত–শ্রীলঙ্কা–সিঙ্গাপুরের চাকরির পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে কাজ করছে পিএসসি৩ ঘণ্টা আগে২. পদের নাম: টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টপদসংখ্যা: ৯৭
আবেদনের যোগ্যতা: স্বীকৃত ইনস্টিটিউট থেকে বেতার/বৈদ্যুতিক/যান্ত্রিক শীতাতপে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
বেতন স্কেল: ১৪,৫৬০-৩৬,৭৯২ টাকা (গ্রেড-১০)
এআই/প্রথম আলো