যে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল
Published: 8th, March 2025 GMT
আল্লাহর আরশের কম্পনের বিষয়ে একটি হাদিস আছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, সাদ ইবনে মুয়াজের মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল।
সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) ছিলেন মদিনার একজন আনসার সাহাবি। তিনি ছিলেন আনসারদের নেতা। তিনি সব সময় মহানবী (সা.)–কে রক্ষার চেষ্টা করতেন। মহানবী (সা.)-এর যেকোনো সিদ্ধান্তে তিনি সমর্থন জানাতেন। বিশেষ করে মদিনার আনসারদের সঙ্গে মক্কার মুহাজিরদের কোনো মনোমালিন্য তৈরি হলে তিনি তাঁর সাধ্যমতো সমাধানের চেষ্টা করতেন। তিনি আনসারদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। অথচ এই মহৎ চরিত্রের সাহাবি ইসলাম গ্রহণের পর মাত্র পাঁচ বছর জীবিত ছিলেন। এ কারণেই আমাদের নবী (সা.
সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) এর জানাজার ব্যাপারে সাহাবিরা বলেছিলেন, ‘আমরা যখন তার মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল যেন তার শরীরের কোনো ওজন নেই। মনে হচ্ছিল, আমরা কোনো তুলা বহন করে নিয়ে যাচ্ছি।’ এটা শুনে মদিনায় কিছু মুনাফেক তামাশার ছলে বলেছিল, ‘দেখলে তো, সাদ ইবনে মুয়াজের কোনো ওজন নেই। একইভাবে তার কাজেও কোনো ওজন ছিল না।’
পরে মহানবী (সা.) বিষয়টি পরিষ্কার করলেন, ‘সেদিন ফেরেশতারা সাদ ইবনে মুয়াজকে বহন করেছিল। তাই তোমরা কোনো ওজন অনুভব করোনি।’
কিন্তু আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠল কীভাবে?
মহানবী (সা.) এই কথা বলেননি যে সাদ (রা.)–এর মৃত্যুর কষ্টে বা ভয়ে আরশ কেঁপে উঠেছিল। বরং মহানবী (সা.) বলেন, ‘সাদ ইবনে মুয়াজের রুহ আল্লাহর দিকে ফিরে যাচ্ছে, এই খুশিতে আরশ কেঁপে উঠেছিল।’
ইমাম হাসান বসরী (র.) এই হাদিসটি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আরশ আসলে কষ্টে বা ভয়ে কেঁপে ওঠেনি, বরং এটি খুশিতে কেঁপে উঠেছিল। একইভাবে উহুদ পাহাড়ও কেঁপে উঠেছিল যেদিন মহানবী (সা.), আবু বকর (রা.), ওমর (রা.) এবং উসমান (রা.) পাহাড়ে উঠেছিলেন। আমাদের নবী (সা.) পাহাড়কে লক্ষ করে বলেছিলেন, ‘তোমার কম্পন বন্ধ করো, হে উহুদ, তোমার ওপর একজন নবী, একজন সিদ্দিক এবং দুজন শহীদ আরোহণ করেছে।’
আরও পড়ুনহাতির গল্প১৬ মার্চ ২০২৪আরেক বর্ণনায় মহানবী (সা.) বলেন, ‘উহুদ হলো এমন পাহাড় যা আমাদের ভালোবাসে এবং আমিও তাকে ভালোবাসি।’
সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.) মারা গিয়েছিলেন খন্দকের যুদ্ধের সময়ের এক আঘাতের ফলে। সেই আঘাতে আক্রান্ত হয়ে পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। অর্থাৎ তিনি শহীদ হয়েছিলেন।
মহানবী (সা.) শহীদদের আত্মার মহত্ত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘একজন শহীদ যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখন তাঁর রুহ একটি সবুজ পাখির মতো উড়ে যায়। এই পাখির বাসা সাত আসমানের ওপর আল্লাহর আরশ থেকে যে আলোকিত ঝাড়বাতি ঝুলছে, সেখানে অবস্থিত। সবুজ পাখিরা সেখানে থাকে এবং তারা জান্নাতের ওপর দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। জান্নাতের নেয়ামত উপভোগ করে আবারও তাদের ঘরে ফিরে আসে।’
সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.)-এর মৃত্যুতে তার রুহ সবুজ পাখির ন্যায় ফিরে আসছে তার আপন নীড়ে। সেই খুশিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল।
অনুবাদ: সাজিদ আল মাহমুদ
আরও পড়ুনরোজার তাৎপর্য, ইতিহাস ও উদ্দেশ্য১৭ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দ ইবন আম দ র আনস র
এছাড়াও পড়ুন:
ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমণিকে রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে: শেখ সাদী
ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমণিকে তাদের রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কণ্ঠশিল্পী শেখ সাদি। সম্প্রতি পরীমণির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন পিংকি আক্তার নামের এক গৃহকর্মী। এ নিয়ে ঢাকার ভাটারা থানায় অভিযোগও করেছেন সেই গৃহকর্মী। পরীমণি ও গৃহকর্মীর এই ইস্যুতে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। এমন অবস্থায় নায়িকার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর কথিত প্রেমিক তরুণ গায়ক শেখ সাদী। পিংকি আক্তারকে তিনি মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের সমালোচনা করেছেন এই গায়ক।
বেশ কয়েক মাস ধরেই নায়িকা পরীমণির সঙ্গে নাম জড়িয়েছেন শেখ সাদী। প্রায় সময় তাদের একসঙ্গে দেখা মেলে। দুজনের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, তাঁরা দুজন প্রেমের সম্পর্কে আছেন। পরীমণি ও শেখ সাদীর প্রসঙ্গটি প্রথম আলোচনায় আসে কয়েক মাস আগে, ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এদিন পরীমণি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এলে জামিনদার হন শেখ সাদী। এর পর থেকে পরীমণি ও শেখ সাদী দারুণভাবে চর্চায় আসেন।
শেখ সাদী নিজের ফেসবুক পোস্টে কয়েকটি প্রশ্ন রেখে লিখেছেন, ‘একটু ভাবেন তো, অনলাইনে আপনার ছবি পোস্ট করে একজন জানাল, আপনি একজন রেপিস্ট! যার কোনো প্রমাণ নেই এবং ঘটনাটা অবাস্তব। এটা দেখার পর নিশ্চয়ই আপনার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠবে। ধরুন, এই পরিস্থিতিতে আপনি কোনোভাবেই সে পোস্ট সরাতে পারছেন না। মানুষ আপনার বাবা-মাকে ট্যাগ করছে। আপনার আত্মীয়স্বজনকে ট্যাগ করছে। আপনার পাশের বাসায় থাকা লোকটাও তা শেয়ার করে ছি ছি করছে। কিন্তু আপনার কিচ্ছু করার নাই। আপনি কয়জনকে বোঝাবেন? মিডিয়ার এই ভিউ ব্যবসার ফাঁদে বন্দী হয়ে যদি আপনার সম্মানহানি হয়, আপনার করারও কিছু থাকে না। তখন আসলে আপনার পরিস্থিতিটা কী হতে পারে, একবার কি ভেবেছেন?’
পরীমণির সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে ফেসবুক পোস্টে শেখ সাদী লিখেছেন, ‘আপনাদের জীবনে এমনকি কখনো হয় নাই যে আপনি কোনো কাজ ঠিকমতো করার পরও আপনার প্রতি ক্ষোভ বা জেদের বশবর্তী হয়ে মিথ্যা ছড়ানো হয়েছে? সত্য জানার আগেই মিডিয়ার কিছু ক্ষোভ বা বানোয়াট গল্পকে আপনি সত্য ধরে নিয়ে পরীকে বুলিং করছেন। একবারও কি মনে হলো না, সে একজন প্রতারক বা বড় মাপের মিথ্যাবাদী? সেটা যাচাই ছাড়াই সস্তা ভিউয়ের জন্য এসব প্রচার করলেন। এখানে তো আমার বা সৌরভের কথা আসার প্রশ্নই আসে না। তাই এটা পরিষ্কার যে উক্ত ঘটনার মূল উদ্দেশ্য পরীকে হেয় করা। আর পরীর সঙ্গে আমি ও আমার পরিবার, মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি, যেটা আমি আর আমার পরিবার ডিজার্ভ করি না। পরী আপনাদের ভালোবাসার জন্যই আজ একজন সুপারস্টার। কিন্তু তার উপহারস্বরূপ যেকোনো বিষয়ে তার ব্যক্তিগত জীবনকে টেনে তাঁকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়! কিছু ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীর জীবনের খবরকে বানিয়েছে তাদের রুটিরুজি অংশ! তারা ভুলে যায়, নায়িকা চরিত্রের বাইরেও পরী একজন নারী, একজন মা ও সবার ঊর্ধ্বে সে একজন মানুষ।’