মদিনায় এক লোক ছিল, যাকে সবাই বলত ‘হিমার’ মানে গাধা। মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-কে সে এত ভালোবাসত যে, নবীজি (সা.) তাঁর সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, নিশ্চয়ই সে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসে।
তার নাম ছিল আবদুল্লাহ। তার বাবার নাম নুয়াইমান। সেই সূত্রে তাকে ইবন নুয়াইমান, আবার কখনো বাবার নামে তাকে নুয়াইমান আনসারিও বলা হতো। (আল-ইসাবা ফি তাময়িয আস-সাহাবা, ৩/৩৬৬)
তার সঙ্গে নবীজির সম্পর্ক ছিল হাস্যরসের। সে প্রায়ই নবীজির জন্য সুস্বাদু খাবার উপহার আনত। একবার কোনো ব্যবসায়ী কাফেলা মদিনায় এলে সে তাদের কাছ থেকে খানিকটা মাখন বা মধু বাকিতে কিনে নবীজির (সা.
নবীজি (সা.) বললেন, তুমি এসব আমাকে উপহার হিসেবে দাওনি?
আবদুল্লাহ বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল, চেয়েছিলাম আপনি খান, কিন্তু দাম দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।
দুজনেই হেসে দিলেন। তারপর নবীজি (সা.) নিজেই ব্যবসায়ীকে খাবারের দাম পরিশোধ করলেন। (মুসনাদে আবু ইয়া’লা, হাদিস: ১৭৬; সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৭৮০)
আরেকবার এক বেদুইন কোনো কাজে মহানবী (সা.)-র কাছে এলেন। উট বেঁধে রাখলেন নবীজির (সা.) বাড়ির সামনে। কেউ একজন গিয়ে হিমারকে বললেন, তুমি যদি উটটি জবাই করার ব্যবস্থা করতে, তাহলে আমরা মাংস খেতে পারতাম।
সে তা-ই করল।
বেদুইন বাইরে এসে চিৎকার করতে লাগল, হায়, আমার উট কে জবাই করল, মুহাম্মাদ?
নবীজি (সা.) বাইরে এসে দেখেন এই কাণ্ড। জিজ্ঞেস করলেন, এটা কে করেছে?
আরও পড়ুনমক্কার জমজম কূপের উৎপত্তি০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫লোকজন বলল, নুয়াইমান।
নবীজি (সা.) তাকে ধরতে বের হলেন। খুঁজে বের করলেন, সে নবীজির (সা.)চাচা জুবাইর ইবনে আবদুল মুত্তালিবের মেয়ে যুবাআর বাড়িতে লুকিয়ে আছে। (আল-ইসাবা ফি তাময়িয আস-সাহাবা, ৩/৩৬৬)
আবদুল্লাহ মদ্যপও ছিলেন। মাঝেমধ্যে তিনি এমন মাতাল হয়ে যেতেন যে তাকে রাস্তায় দুলতে দেখে নবীজির (সা.) সামনে ধরে আনা হতো। প্রতিবার নবীজি (সা.) নির্ধারিত শাস্তি কার্যকর করার নির্দেশ দিতেন। বিখ্যাত হাদিস বর্ণনাকারী আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, আমাদের কেউ তাকে হাত দিয়ে মারছিল, কেউ জুতা দিয়ে, আবার কেউ কাপড় দিয়ে। মার শেষ হলে যখন সে চলে যাচ্ছিল তখন আমাদের একজন বলল, ‘তার কী হয়েছে? আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করুন।’ শুনে মহানবী (সা.) বললেন, ‘তোমাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে তোমরা শয়তানের সহযোগী হয়ো না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস ৬৭৮১)
ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, উপস্থিতিদের একজন বললেন, ‘আল্লাহ, অভিশাপ দিন তাকে। কতবার এই জন্য ডাকা হয়!’ মহানবী (সা.) তাকে তিরস্কার করে বললেন, তাকে অভিশাপ দিও না, কারণ আল্লাহর শপথ, যদি তুমি জানতে পারতে যে, সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে কত বেশি ভালোবাসে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৭৮০)
আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আল ল হ বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
পা ভাঁজ করে বসার কিছুক্ষণ পরেই অবশ হয়ে আসে কেন
প্রশ্ন: আমি একজন ছেলে, বয়স ১৮ বছর। বিএমআই ১৩। আমি খাটে বসে পড়ালেখা করি। গত ২ মাস ধরে ৫-১০ মিনিট পা ভাঁজ করে বসলে আমার হাঁটু থেকে দুই পা পুরো অবশ হয়ে যায়, তখন পা সোজা করতে ও হাঁটতে অনেক কষ্ট হয়। এ সময়ে হাঁটুতে অনেক ব্যথা হয়। সমস্যাটি আবার ১০-১৫ মিনিট পরে সেরে যায়। এটার কারণ কী? প্রতিকার মিলবে কীভাবে?
ছিদরাতুল মুন্তাহার
পরামর্শ: এক বা একাধিক কারণে সমস্যাটি হতে পারে। এ অবস্থায় শুধু এই কয়েকটি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা শুরু করা ঠিক হবে না। আগে সঠিক কারণ জেনে নিতে হবে। শরীরে রক্তস্বল্পতা তৈরি হলে পা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে জেনে নিতে হবে শরীরে রক্তস্বল্পতা আছে কি না। আবার স্নায়বিক কোনো জটিলতার কারণেও এমনটি হতে পারে। এ ছাড়া হাড়ের সংযোগস্থলে সৃষ্ট কোনো জটিলতা থেকেও বর্ণিত লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। আপনি উল্লেখ করেছেন সমস্যাটি দুই মাস পার হতে চলেছে। সমস্যাটি অবহেলা করলে আপনার জটিলতা আরও বেড়ে যেতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা–নিরীক্ষাগুলো করিয়ে নিন। সমস্যার সঠিক কারণ শনাক্ত হলে সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে। খাদ্য গ্রহণের সময় বেশি বেশি ক্যালসিয়ামযুক্ত এবং ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার খাবেন। সুচিকিৎসা গ্রহণ করলে ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আশা করি আপনি দ্রুত সেরে উঠবেন।
আরও পড়ুনরোজা রেখে পেট খারাপ হলে কী করবেন২৬ মার্চ ২০২৪