উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান (রা.) একজন বুদ্ধিমতী নারী সাহাবি। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী আনসারদের মধ্যে অন্যতম এবং খ্যাতিমান সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) মা। আনাসের বাবা মালিক ছিলেন উম্মে সুলাইমের মুসলিম হওয়ার আগের স্বামী। উম্মে সুলাইম ও আনাস ইসলাম গ্রহণ করলে স্বামী ক্ষোভে স্ত্রী-পুত্র ত্যাগ করে চলে যান। বিধবা হয়ে পড়েন উম্মে সুলাইম (রা.
রাসুল (সা.) বলেন, ‘একবার স্বপ্নে আমি জান্নাতে প্রবেশ করি। হঠাৎ আমার সামনে কারও জুতার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করলাম, কে? তারা বললেন, আনাস ইবনে মালিকের মা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫৬)
শিশু পুত্র আনাসকে নিয়ে কাটছিল তার দিন। উম্মে সুলাইম (রা.) ঠিক করলেন, আনাস বড় না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে করবেন না। আনাস যখন তার মায়ের বিয়েতে মত দেবে তখনই তিনি বিয়ে করবেন। একসময় আনাস উপযুক্ত বয়সে উপনীত হন।
আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫সে সময় আবু তালহা আল আনসারি নামে এক লোক উম্মে সুলাইমকে পছন্দ করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু তালহা মুসলিম ছিলেন না। তাই তিনি বিয়েতে অমত করলেন। আবু তালহা বললেন, ‘তুমি অর্থকড়ি চাও? আমি তোমাকে মূল্যবান সবকিছুর বিনিময়ে বিয়ে করতে চাই।’ উন্মু সুলাইম (রা.) বললেন, ‘না, আমি তোমার মধ্যে ইসলাম চাই।’
অবশেষে আবু তালহা ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। উম্মে সুলাইমের (রা.)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং বিয়ের মোহর হয় ‘আবু তালহার ইসলাম গ্রহণ’। সাবিত (রা.) বলেছেন, উম্মে সুলাইমের বিয়ের মোহরের চেয়ে উত্তম মোহরের কথা আমরা আর শুনিনি। আবু তালহার ইসলাম গ্রহণের যুগপৎ এই সিদ্ধান্ত ও তাঁদের বিয়ে আরবে সেসময় বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। বলা হয়, ইসলামের ইতিহাসে এটিই ছিল বিয়েতে সবচেয়ে মূল্যবান মোহর।
উম্মে সুলাইম (রা.) যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে শরিক হয়েছিলেন। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি আয়েশা (রা.) ও আমার মা উম্মে সুলাইমকে যুদ্ধের দিন মশক ভরে পানি এনে আহতদের পানি পান করাতে দেখেছি। মশক খালি হয়ে গেলে তারা আবার ভরে এনে পান করিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, ২/৫৮১)
আরও পড়ুন ধৈর্য কাকে বলে১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বেকয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এএসটি গার্মেন্টস নামের একটি পোষাক তৈরি কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১টার সময় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মাদানীনগর এলাকায় শ্রমিকরা এই বিক্ষোভ করে।
আন্দোলনরত শ্রমিকদের মধ্যে আবুল হোসেন বলেন, “গার্মেন্টসের মালিক পক্ষ আমাদের বেতন বোনাস ঈদের পর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঈদের পূর্বে ছুটি দিয়ে দেন। ঈদের পর ছুটি শেষ হলে আমরা সকল শ্রমিক কাজের উদ্দেশ্যে এসে দেখি গার্মেন্টসে তালা ঝুলছে। পরবর্তীতে যোগাযোগ করে জানতে পারি মালিক পক্ষ কৌশল করে আমাদের ছুটি দিয়ে রাতের অন্ধকারে সকল মালামাল নিয়ে পালিয়ে গেছে। গার্মেন্টসটিতে প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।”
প্রায় তিন থেকে চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবি নিয়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশের সহায়তায় ১ ঘণ্টা পর মহসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে গার্মেন্টসের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, “আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে মহসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু তাদের মোবাইল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যদি কেউ থানায় অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/অনিক/এস