আবু বকরের (রা.) মা যেভাবে মুসলমান হন
Published: 5th, April 2025 GMT
কুরাইশের বনু তাইমি গোত্রের কন্যা সালমা বিনতে সাখার (রা.)। চাচাতো ভাই আবু কুহাফার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ব্যক্তিত্ব আবু বকর সিদ্দিক (রা.)। ফলে তাঁকে ‘উম্মুল খাইর’ বা ‘কল্যাণের জননী’ উপনামে ডাকা হতো। খাইর অর্থ হচ্ছে কল্যাণ। এখানে খাইর বলতে আবু বকর (রা.)-কে উদ্দেশ্য। (ইবনুল আসির, উসদুল গাবা: ৭/১৪৯; ইবনে হাজার, আল-ইসাবা: ৮/১৮৪)
তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা তাঁর নাতনি আয়িশা (রা.
ঘরে পৌঁছে কিছুক্ষণ পর যখন তাঁর একটু হুঁশ ফিরে এলো, সর্বপ্রথম তিনি জিজ্ঞেস করেন, রাসুল (সা.) কেমন আছেন? শুনে উপস্থিত সবাই তাঁকে গালমন্দ করে বলল, নিজের খবর নেই; এই অবস্থায়ও মুহাম্মদের খবর জানতে চায়! সবাই চলে যাওয়ার পর তিনি একটু সুস্থতা অনুভব করলে তাঁর মাকে আবার একই প্রশ্ন করলেন। উম্মুল খাইর (রা.) উত্তর দিলেন, তিনি জানেন না।
রাতে আবু বকরের (রা.)খবর নিতে ওমরের (রা.) বোন ফাতিমা আসেন। তিনি জানান, রাসুল দারুল আরকামে অবস্থান করছেন। আবু বকর(রা.) তাঁকে রাসুলের (সা.) কাছে নিয়ে যেতে বললেন। রাত গভীর হলে উম্মুল খাইর ও ফাতিমা দুজন দু দিক থেকে ধরে তাকে দারুল আরকামে নিয়ে যান। আবু বকর(রা.)কে দেখে রাসুল (সা.) বাকরুদ্ধ হয়ে যান এবং ভালোবাসার প্রাবল্যে তাঁর কপালে চুম্বন করে কল্যাণের প্রার্থনা করেন। আবু বকর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল(সা.) , ইনি আমার মা, তাঁর জন্য প্রার্থনা করুন তিনি যেন ইসলাম গ্রহণ করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারেন।’
রাসুল (সা.) দু হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, আল্লাহ তা কবুল করেন। উম্মুল খাইরের (রা.) অন্তরের ভাবান্তর হলো। তিনি সেখানেই রাসুল (সা.) হাতে মুসলমান হন।
আবু বকরের (রা.) মা উম্মুল খাইর ও বাবা আবু কুহাফা দীর্ঘ জীবন পেয়েছেন। তাঁরা উভয়ে তাঁদের সন্তানের খেলাফতকালে বেঁচে ছিলেন এবং ছেলের মৃত্যুর পরও জীবিত ছিলেন এবং তাঁর মিরাসের অংশ লাভ করেন। দ্বিতীয় খলিফা ওমরের (রা.) খেলাফতকালে তাঁদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনসাধকের প্রাপ্তি২৪ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপস থ ত গ রহণ বকর র
এছাড়াও পড়ুন:
মেজর সিনহা হত্যায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরের দাবি
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার দাবি জানিয়েছে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।
এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড উচ্চ আদালতে বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলেছে, এই শুনানি শেষে রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। অন্যথায় রায় কার্যকর করার দাবিতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন এমন দাবি জানিয়েছে। ‘শহীদ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপের মৃত্যুদণ্ড অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবি’ ব্যানারে তারা এই সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে এক্স–ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলমান। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, রায় কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনো হুমকি, প্রলোভন বা রাজনৈতিক চাপ যেন আপনাদের প্রভাবিত করতে না পারে। রায় ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।’
সংগঠনটির দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘আশা করছি, চলমান শুনানি আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এবং উচ্চ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখবেন।’
সংগঠনের সদস্যসচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি আগামী এক মাসের মধ্যে শেষ করার অনুরোধ করেন। প্রদীপ, লিয়াকতসহ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবিও জানান তিনি।
এ মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কোনো মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুনসিনহা হত্যা: সেদিন যা ঘটেছিল৩১ জানুয়ারি ২০২২সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান, ক্যাপ্টেন (অব.) শুভ আফ্রিদি, করপোরাল (অব.) তফসীর আহমেদ, নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য সাইদ ও সাবেক সৈনিক মো. নাইমুল ইসলাম।
আরও পড়ুনআসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে পেপারবুক থেকে উপস্থাপন চলছে২৪ এপ্রিল ২০২৫