প্রতিবেশীকে কষ্ট দিলে জান্নাতে যাওয়া যাবে না
Published: 15th, April 2025 GMT
মানুষকে যেহেতু প্রতিবেশীকে ‘ইহসান’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এটাই বলে দেয় যে, প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরও বেশি করেই।
রাসুল (সা.) প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া থেকে সতর্ক করেছেন।
আবু শুরাইহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়; আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়।’ জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আল্লাহর রাসুল, কে মুমিন নয়? তিনি বললেন, যার পীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৬)
আবু হোরায়রা (রা.
তিনি আরও বলেন, ‘নবীজিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর রাসুল, অমুক নারী রাতভর ইবাদত করেন, দিনভর রোজা রাখেন, বহু সৎকাজ করেন এবং প্রচুর সদকা করেন। কিন্তু প্রতিবেশীকে মুখের কথায় কষ্ট দেন। রাসুল (সা.) বললেন, তার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। সে আগুনের অধিবাসী হবে। (আল-আদাবুল মুফরাদ, ইমাম বুখারি, হাদিস: ১১৯)
তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,০১৮)
প্রতিবেশীর যদি কষ্ট দেয়
প্রতিবেশীর অধিকার আদায়ের সম্পূর্ণতা হলো, তার দেওয়া কষ্ট সহ্য করা, তার সঙ্গে কোমল আচরণ করা এবং তার কল্যাণ কামনা করা।
এক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে বললেন, ‘আমার এক প্রতিবেশী আছে, সে আমাকে কষ্ট দেয়, আমাকে গালমন্দ করে, আমাকে সংকীর্ণ অবস্থায় ফেলে।’ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, ‘সে তোমার ব্যাপারে আল্লাহর অবাধ্যতা করছে বটে, কিন্তু তুমি তার ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ অমান্য করো না।’ (ইহইয়াউ উলুম আদ-দীন, ২/২১২)
আরও পড়ুনমন্দ প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের উপায়০৬ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন নয় আল ল হ বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ
গর্ভাবস্থায় যেকোনো শারীরিক জটিলতা সঠিক সময়ে চিহ্নিত করে চিকিৎসা না করলে মা ও শিশুর নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ তেমনি একটি রোগ। বিশ্বে ৫ থেকে ১০ শতাংশ নারী গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে পারেন। বাংলাদেশে এই হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। প্রি–একলাম্পশিয়ার (উচ্চ রক্তচাপের একটি জটিলতা) হার ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
গর্ভাবস্থায় যদি রক্তচাপ সিস্টোলিক ১৪০ মিমি মার্কারি বা তার বেশি এবং ডায়াস্টলিক ৯০ মিমি মার্কারি বা তার বেশি হয়, তবে তাকে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সপ্তাহের ওপর ভিত্তি করে একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রকারভেদ
১. গর্ভধারণের আগে থেকে বিদ্যমান বা গর্ভের ২০ সপ্তাহের আগে শনাক্ত হয়েছে এমন। এর মধ্যে রয়েছে ক্রনিক উচ্চ রক্তচাপ, পারিবারিক, হোয়াইট কোট হাইপারটেনশন অর্থাৎ বাড়িতে স্বাভাবিক থাকা কিন্তু চিকিৎসকের কাছে গেলে বেড়ে যাওয়া, এমন ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে কিন্তু প্রি–একলাম্পশিয়ার হওয়া ঝুঁকি আছে।
২. গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ পর শনাক্ত হয়েছে এমন উচ্চ রক্তচাপ। এর মধ্যে রয়েছে জেস্টেশনাল উচ্চ রক্তচাপ বা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ, প্রি–একলাম্পশিয়া।
ঝুঁকিগুলো কী কী
অল্প বয়সে অথবা প্রথমবার গর্ভধারণ। অতীতে গর্ভকালীন প্রি–একলাম্পশিয়া। ওজন বেড়ে যাওয়া। পরিবারে উচ্চ রক্তচাপ। গর্ভে একের অধিক সন্তান। ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা ও অটো–ইমিউন রোগ। আইভিএফ ((ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) প্রেগন্যান্সি।
কীভাবে বুঝবেন
রক্তচাপের মাত্রা তুলনামূলক কম থাকলে মাঝেমধ্যে ঘাড় বা মাথায় ব্যথা হতে পারে। তবে মাত্রা বেশি হলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, বুকে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, পা বা সারা শরীর ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
পরীক্ষা–নিরীক্ষা
নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা দেখা। রক্তে ও প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা এবং রক্ত জমাট বাঁধার পরীক্ষা করা। গর্ভে থাকা শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না, তা দেখার জন্য পরীক্ষা করা।
চিকিৎসা
■ গর্ভকালীন নির্ধারিত ওষুধ সেবন করতে হবে।
■ নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যকারিতা ঠিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা।
■ শিশুর অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখতে আলট্রাসনোগ্রাম, ডপলার ও সিটিজি নামক পরীক্ষা করা।
ডা. আরিফা শারমিন: কনসালট্যান্ট, প্রসূতি ও গাইনি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
আগামীকাল পড়ুন: ব্রেন টিউমার থেকে বাঁচার উপায়