অসহনীয় তাপমাত্রা দেখা দিলে রাসুল (সা.) মাথায় পানি ঢালতেন। আবু বকর বিন আবদুর রহমান কয়েকজন সাহাবির উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রমজানে আরজ এলাকায় অত্যধিক পিপাসা বা তাপমাত্রা দেখা দিলে রাসুল (সা.)-কে দেখেছি যে তিনি মাথায় পানি ঢালছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২,৩৬৫)

 দৈহিক প্রশান্তি ও স্বস্তির জন্য এমন করা দোষের নয়। এর ফলে রোজাদারের ইবাদতের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ, বান্দা স্বতঃস্ফূর্ত ও সানন্দ্যচিত্তে রবের আদেশ-নিষেধ পালন করবে—এটাই মুখ্য। রোজা রাখার উদ্দেশ্য দৈহিক কষ্টভোগ, নির্যাতন কিংবা কঠোরতা আরোপ করা নয়।

 একই ভাবে ভালোভাবে গোসল করা, কাপড় ভেজানো, পানিতে ডুব দেওয়া—সবই মাথায় পানি ঢালার হুকুম ভুক্ত। ইমাম বুখারি (রহ.

) তার ‘সহিহ’ গ্রন্থে কয়েকজন সাহাবি ও তাবেইনের উদ্ধৃতিসহ উল্লেখ করেছেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) একটি কাপড় পানিতে ভিজিয়ে শরীরে জড়িয়ে নিলেন। তিনি ছিলেন রোজাদার। শাবি (রহ.) রোজা রেখেই গোসলের জন্য হাম্মামে প্রবেশ করেন। হাসান বলেন, কুলকুচা কিংবা শীতলতা গ্রহণ রোজাদারের জন্য দোষের নয়। ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, তোমাদের যে রোজা রাখবে, সে যেন সকালে মাথায় তেল দিয়ে চুল পরিপাটি করে রাখে। আনাস (রা.) বলেন, আমার একটি পানির টব রয়েছে, রোজা রেখেই আমি তাতে প্রবেশ করি। (বুখারি, ২/৬৮০-৬৮১)

আরও পড়ুনফিতরা কীভাবে হিসাব করব১১ মার্চ ২০২৫

সে-হিসেবে রোজা রেখে বর্তমানে এ-সি রুমে সময় কাটানোও একই হুকুম ভুক্ত ধরা যাবে। (হাকাজা কানান নাবি স. ফি রমাদান, ফয়সাল বিন আলী আল-বাদানি, ৪৪)

এ ক্ষেত্রে মৌলিক ও সাধারণ নীতিমালা হলো, ব্যক্তির জন্য ইবাদত পালন যা সহজ করে দেয়, স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে করা সম্ভব হয়, তা করা রোজাদারের জন্য বৈধ। আর যে পরিশ্রম ও কষ্টভোগের কারণে রোজা থেকে বিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা এড়িয়ে যাওয়াই কাম্য। তবে যে-কষ্ট রোজাকে আরও মহিমান্বিত করে, তাকে মেনে নেওয়া উত্তম। কেননা, তাতে ইবাদতের প্রতিদান বৃদ্ধি পায়। যেমন, অধিক শীতে অজু করা, হজের জন্য সফর, প্রচণ্ড শীত বা গরমে জামাতে নামাজ আদায় ইত্যাদি।

ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, অযৌক্তিক আত্মাকে কষ্টদান কিংবা কঠোরতা আরোপ করা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায় হতে পারে না। অধিকাংশ মূর্খ ভাবে—আমল যত কঠিন, পুরস্কার তত বেশি। তারা ভাবে, কষ্টের মাত্রা অনুসারে প্রতিফল নির্ধারিত হয়। অথচ প্রতিফল নির্ণয় করা হয় আমলের উপকারিতা ও পরিণতি হিসেবে। বান্দা যতটা আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা.) আনুগত্যের বিভায় উদ্ভাসিত হবে, তত তার আমল কবুলযোগ্য হবে। সংখ্যাধিক্যের বিচারে নয়, বরং আমল সমৃদ্ধ হয় অন্তরের অবস্থা অনুসারে। (মাজমুউল ফাতাওয়া, ২৫/২৮১-২৮২)

আরও পড়ুনঈদ যেভাবে এল১১ এপ্রিল ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পল্টনে রান্নার সময় চুলায় পড়ে মা দগ্ধ, বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন মেয়েও

রাজধানীর পল্টন এলাকার কালভার্ট সড়কের একটি বাসায় রান্না করার সময় চুলায় পড়ে হোসনে আরা (৬৩) নামের এক নারী দগ্ধ হয়েছেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন তাঁর মেয়ে তাসলিমা সুলতানাও (৩৪)।

আজ সোমবার দুপুরে এ ঘটনার পর মা ও মেয়েকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হোসনে আরার শরীরের ৮৮ শতাংশ এবং তাঁর মেয়ে তাসলিমা সুলতানার শরীরের ২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

চিকিৎসকেরা জানান, হোসনে আরা আগে থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ