যাঁর নামে কোরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে
Published: 8th, April 2025 GMT
মক্কায় রাসুলের (সা.) অন্যতম শত্রু ছিল উকবা ইবনে আবি মুঈত। সে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও রাসুলুল্লাহকে অপমান করতে নির্লজ্জ কাজ করত। নামাজে সেজদায় গেলে সে মৃত উটের নাড়িভুঁড়ি রাসুলের ওপর ছুঁড়ে মারত।
বদর যুদ্ধে উকবা নিহত হয়।
উকবার স্ত্রীর নাম ছিল আরওয়া বিনতে কুরাইয। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। উকবার ৬ জন সন্তানের প্রত্যেকেই পরবর্তীকালে মুসলমান হন। তাদের একজন ছিলেন উম্মে কুসলুম (রা.
উকবার মেয়ে উম্মে কুলসুম ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কায়, কিন্তু সাহাবিদের সঙ্গে মদিনায় হিজরত করতে পারেননি। ষষ্ঠ হিজরিতে হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় তিনি একাকী মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। পেছন থেকে তাঁকে অনুসরণ করেন তাঁর দুই ভাই ওয়ালিদ ও আম্মার। দুই ভাই তখনও ইসলাম গ্রহণ করেননি। বোনের পিছু নেন তারা, যাতে করে তাঁকে মক্কায় ফিরিয়ে নিতে পারেন।
আরও পড়ুনদুই কিশোরের বীরত্বে মারা গেল আবু জাহেল১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫হুদাইবিয়ার সন্ধির একটি ধারা ছিল, মক্কা থেকে কেউ যদি মদিনায় চলে যায়, তাকে ফেরত পাঠাতে হবে। সেই ধারা অনুযায়ী উম্মে কুলসুমকে তাঁর ভাইদের হাতে তুলে দিতে হতো। দুই ভাই চুক্তি অনুযায়ী রাসুলের কাছে আবেদন জানান।
উম্মে কুলসুম (রা.) আপন ভাইদের সঙ্গে মক্কায় ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। চুক্তির প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এতে নারীদের কথা উল্লেখ ছিল না বা নারীদের বোঝানো হয়নি। মক্কা থেকে মদিনায় চলে যাওয়া বলতে মূলত কোনো পুরুষকে বোঝাচ্ছিল, যাতে সে মুসলিম বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হতে না পারে। সেই জায়গা থেকে উম্মে কুলসুম (রা.) আবেদন করেন, ‘আল্লাহর রাসুল, আপনি আমাকে কাফিরদের কাছে ফিরিয়ে দেবেন? অথচ, আমার ধৈর্যধারণের ক্ষমতা নেই। আর নারীরা যে কী দুর্বল অবস্থায় আছে, তা তো জানেনই!’
আরও পড়ুনযে সাহাবির কোরআন তিলাওয়াতে মুগ্ধ হন ফেরেশতারা২৮ জানুয়ারি ২০২৫মদিনায় তখন পিনপতন নীরবতা। একজন নারী একাকী এত দূর চলে এসেছেন, এবার তাঁকে যদি তাঁর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফেরত পাঠানো হয় তাঁর কেমন লাগবে? তার ওপর চুক্তি। এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই মুহূর্তে আল্লাহ পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত নাজিল করলেন।
আল্লাহ জানিয়ে দেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ, বিশ্বাসী নারীরা দেশত্যাগী হয়ে তোমাদের কাছে এলে তোমরা তাদের পরীক্ষা করো। আল্লাহ তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে ভালো করে জানো। যদি তোমরা জানতে পারো যে তারা বিশ্বাসী, তবে তাদের আর অবিশ্বাসীদের কাছে ফেরত পাঠিয়ো না।’ (সুরা মুমতাহানাহ, আয়াত: ১০)
যাঁর বাবা নবীজিকে (সা.) অপদস্থ করতে চাইত, তার মুসলিম মেয়ের নিরাপত্তা, সুরক্ষার জন্য আল্লাহ পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত নাজিল করেন। আয়াত অনুসারে নবীজি সিদ্ধান্ত নিলেন, উম্মে কুলসুম (রা.)-কে তাঁর পরিবারের সঙ্গে ফেরত পাঠানো হলো না, তাঁকে মদিনায় থাকার অনুমতি দেওয়া হলো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪,১৮০)
উম্মে কুলসুমের (রা.) দেখাদেখি আরো কয়েকজন নারী মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। মক্কায় থাকা মুসলিম নারীদের জন্য উম্মে কুলসুম পরিচিতি লাভ করেন একজন সাহসী নারী হিসেবে। উম্মে কুলসুমকে বিয়ে করেন যায়িদ ইবনে হারিসা (রা.); একমাত্র সাহাবি, যার নাম পবিত্র কোরআনে আছে।
আরও পড়ুনসুরা মুজাদালাহর ২২ নম্বর আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট ২৫ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক রআন মদ ন য় আল ল হ ক লস ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমণিকে রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে: শেখ সাদী
ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমণিকে তাদের রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কণ্ঠশিল্পী শেখ সাদি। সম্প্রতি পরীমণির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন পিংকি আক্তার নামের এক গৃহকর্মী। এ নিয়ে ঢাকার ভাটারা থানায় অভিযোগও করেছেন সেই গৃহকর্মী। পরীমণি ও গৃহকর্মীর এই ইস্যুতে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। এমন অবস্থায় নায়িকার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর কথিত প্রেমিক তরুণ গায়ক শেখ সাদী। পিংকি আক্তারকে তিনি মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের সমালোচনা করেছেন এই গায়ক।
বেশ কয়েক মাস ধরেই নায়িকা পরীমণির সঙ্গে নাম জড়িয়েছেন শেখ সাদী। প্রায় সময় তাদের একসঙ্গে দেখা মেলে। দুজনের একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, তাঁরা দুজন প্রেমের সম্পর্কে আছেন। পরীমণি ও শেখ সাদীর প্রসঙ্গটি প্রথম আলোচনায় আসে কয়েক মাস আগে, ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এদিন পরীমণি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এলে জামিনদার হন শেখ সাদী। এর পর থেকে পরীমণি ও শেখ সাদী দারুণভাবে চর্চায় আসেন।
শেখ সাদী নিজের ফেসবুক পোস্টে কয়েকটি প্রশ্ন রেখে লিখেছেন, ‘একটু ভাবেন তো, অনলাইনে আপনার ছবি পোস্ট করে একজন জানাল, আপনি একজন রেপিস্ট! যার কোনো প্রমাণ নেই এবং ঘটনাটা অবাস্তব। এটা দেখার পর নিশ্চয়ই আপনার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠবে। ধরুন, এই পরিস্থিতিতে আপনি কোনোভাবেই সে পোস্ট সরাতে পারছেন না। মানুষ আপনার বাবা-মাকে ট্যাগ করছে। আপনার আত্মীয়স্বজনকে ট্যাগ করছে। আপনার পাশের বাসায় থাকা লোকটাও তা শেয়ার করে ছি ছি করছে। কিন্তু আপনার কিচ্ছু করার নাই। আপনি কয়জনকে বোঝাবেন? মিডিয়ার এই ভিউ ব্যবসার ফাঁদে বন্দী হয়ে যদি আপনার সম্মানহানি হয়, আপনার করারও কিছু থাকে না। তখন আসলে আপনার পরিস্থিতিটা কী হতে পারে, একবার কি ভেবেছেন?’
পরীমণির সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে ফেসবুক পোস্টে শেখ সাদী লিখেছেন, ‘আপনাদের জীবনে এমনকি কখনো হয় নাই যে আপনি কোনো কাজ ঠিকমতো করার পরও আপনার প্রতি ক্ষোভ বা জেদের বশবর্তী হয়ে মিথ্যা ছড়ানো হয়েছে? সত্য জানার আগেই মিডিয়ার কিছু ক্ষোভ বা বানোয়াট গল্পকে আপনি সত্য ধরে নিয়ে পরীকে বুলিং করছেন। একবারও কি মনে হলো না, সে একজন প্রতারক বা বড় মাপের মিথ্যাবাদী? সেটা যাচাই ছাড়াই সস্তা ভিউয়ের জন্য এসব প্রচার করলেন। এখানে তো আমার বা সৌরভের কথা আসার প্রশ্নই আসে না। তাই এটা পরিষ্কার যে উক্ত ঘটনার মূল উদ্দেশ্য পরীকে হেয় করা। আর পরীর সঙ্গে আমি ও আমার পরিবার, মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি, যেটা আমি আর আমার পরিবার ডিজার্ভ করি না। পরী আপনাদের ভালোবাসার জন্যই আজ একজন সুপারস্টার। কিন্তু তার উপহারস্বরূপ যেকোনো বিষয়ে তার ব্যক্তিগত জীবনকে টেনে তাঁকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়! কিছু ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীর জীবনের খবরকে বানিয়েছে তাদের রুটিরুজি অংশ! তারা ভুলে যায়, নায়িকা চরিত্রের বাইরেও পরী একজন নারী, একজন মা ও সবার ঊর্ধ্বে সে একজন মানুষ।’