রাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.) কী আমল করতেন
Published: 14th, February 2025 GMT
আগের দুই পর্বে আমরা রাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.) যেসব কাজ করতেন, তার কিছু কিছু আলোচনা করেছি। সেই আলোচনার এটি শেষ পর্ব। এখানে আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর আরও কিছু আমলের কথা বলব।
১২. শেষ রাতে রাসুল (সা.)-এর দোয়া-মোনাজাত এবং আল্লাহ্র কথা ভেবে ক্রন্দনের বর্ণনা বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি বিভিন্ন দোয়া পড়তেন এবং কাঁদতেন। (বুখারি, হাদিস: ১১২০; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৭২৯; মুসলিম, হাদিস: ৭৭২; তিরমিজি, হাদিস: ২৬২)
১৩.
শেষ রাতে জেগে উঠবেন, এ ব্যাপারে যাঁদের আস্থা আছে, তাঁদের শেষ রাতে বিতর পড়াই উত্তম। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছিলেন, বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ নামাজ করো। (বুখারি, হাদিস: ৯৯৮)
শেষ রাতে জেগে ওঠার ব্যাপারে আস্থা না থাকলে এশার নামাজের পর বিতর পড়ে নেওয়াই উচিত। (আল-মুহিতুল বুরহানি, ২/২৬৫; ফতোয়া খানিয়া, ১/২৪৪; ফাতহুল কাদির, ১/৪০৯; শরহুল মুনইয়া, পৃষ্ঠা ৪২১; মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা ২১১)
আয়েশা (রা.)–র বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজ আদায় করতেন, তখন আমি তাঁর বিছানায় আড়াআড়িভাবে ঘুমিয়ে থাকতাম। অতঃপর তিনি যখন বিতর পড়ার ইচ্ছা করতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমিও বিতর আদায় করে নিতাম। (বুখারি, হাদিস: ৯৯৭)
আরও পড়ুনজুমার খুতবা শুনে গাছের গুঁড়ি কেঁদেছিল০৭ আগস্ট ২০২৩১৪. বিতরের নামাজের পর রাসুল (সা.) দোয়া পড়তেন। বিতর নামাজ শেষে তিনবার বলতেন, সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস। অর্থাৎ, মহামালিক মহাপবিত্র সত্তার জন্য মহিমা। তৃতীয়বার একটু টেনে লম্বা করে দোয়াটি পড়তেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৬,৯৪৩; তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬৬; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৫,৩৫৪)
১৫. জীবনের শেষ দিকে রাতের শেষ প্রহরে রাসুল (সা.) জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের জন্য দোয়া করতেন। তাঁর এ ঘটনার সাক্ষী আয়েশা (রা.)। তিনি বলেন, প্রতি রাতের শেষ দিকে রাসুল (সা.) জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে যেতেন এবং দোয়ায় বলতেন, মুমিন নিবাসীদের এ জায়গায় আসসালামু আলাইকুম! তোমাদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তোমরা তা পেয়েছ। অপেক্ষা করছ আগামী দিনের। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরাও আসব। হে আল্লাহ! বাকি গারকাদবাসীকে ক্ষমা করে দিন। (মুসলিম, হাদিস: ৯৭৪; সুনানে আবি দাউদ, হাদিস: ৩২৩৭)
আরও পড়ুন কতদিন থাকবেন, মেহমান হয়ে০৭ আগস্ট ২০২৩১৬. কখনও কখনও রাসুল (সা.) এ সময়ে তাঁর মেয়ে ফাতেমার (রা.) বাসায় গিয়ে তাদের তাহাজ্জুদের নামাজের জন্য ডেকে তুলতেন। আলি ইবনে আবু তালিব (রা.) বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) এক রাতে তাঁর কন্যা ফাতিমার কাছে এসে বললেন, তোমরা কি নামাজ আদায় করছ না? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের আত্মাগুলো তো আল্লাহতায়ালার হাতে রয়েছে। তিনি যখন আমাদের জাগাতে ইচ্ছা করবেন, জাগিয়ে দিবেন। আমরা যখন একথা বললাম, তখন তিনি চলে গেলেন। আমার কথার কোনো জবাব দিলেন না। পরে শুনতে পেলাম, তিনি ফিরে যেতে যেতে আপন উরুতে করাঘাত করছিলেন এবং কুরআনের এ আয়াত (সুরা কাহাফ,আয়াত: ৫৪) তিলাওয়াত করছিলেন, মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয়। (বুখারি, হাদিস: ১,১২৭; মুসলিম, হাদিস: ৭৭৫; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৫,৫৭১)
১৭. রমজান মাসে অথবা বছরের অন্য যে কোনো মাসের যে কোনো দিনে রোজা রাখার নিয়ত থাকলে রাসুল (সা.) এ সময় সাহরি খেতেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা সাহরি খাও। কারণ, সাহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি, হাদিস: ১৯২৩)
তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি রোজা রাখার নিয়ত করেছে, সে অল্প করে হলেও যেন সাহরি খায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৯০০৯।) অন্য বর্ণনামতে, এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও যেন সাহরি করে।(প্রাগুক্ত, হাদিস: ৯০১০।)
আরও পড়ুনকোরআন শুনে একদল জিন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন০৬ আগস্ট ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য আল ল হ আগস ট করত ন পড়ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখার বিষয়টি মানব সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, “পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখার বিষয়টি প্রকৃত অর্থে মানব সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিবেশকে সুন্দর রাখতে হলে প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু করে যেতে হবে। এসব কাজ একা একা কখনোই করা যায় না। ব্যক্তি ও সামষ্টিক উভয়ভাবেই করতে হয়। তাহলে কাজগুলোর পরিপূর্ণতা আসে।”
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ‘উন্নয়নের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন সবুজ ক্যাম্পাস’ অনুষ্ঠানের সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এসব কথা বলেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ইউনিডো, ঢাকাস্থ নরওয়ে দূতাবাস এবং প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
নববর্ষে ডুজায় পান্তা-ইলিশ উৎসব
এ সময় উপাচার্য বলেন, “এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানুষের অস্তিত্বের যে সংগ্রাম, সেটাতে ভূমিকা রাখবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় এসব কাজের সঙ্গে থাকবে। আমাদের এখানে পরিবেশ ক্লাবগুলো কাজ করছে। আমি খুব আশাবাদী। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এ কাজগুলো যাতে থেমে না যায়। কোনো না কোনোভাবে কাজগুলো নিয়ে লেগে থাকতে হবে। চেষ্টা করে যেতে হবে। তাহলেই সফলতা পাওয়া সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানটি তিনটি পর্বে বিভক্ত ছিলো। উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম।
এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি মো. কামরুজ্জামান, ইউনিডোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি জাকি উজ জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. রিদওয়ানুল হক, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল আল মামুন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সুমাইয়া তাবাসসুম আহমেদ প্রমুখ।
দ্বিতীয় পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল ও বুয়েটের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী