আজকাল মুসলিম সমাজের অনেক স্থানে দেখা যায় রমজান মাসে বিবাহ-শাদি অনুষ্ঠানে সর্বাগ্রে বর্জন করা হয়। একশ্রেণির পরহেজগার আলেম এ-বিষয়ে নিরুৎসাহিত করেন। তারা মনে করেন, রমজানে বিবাহ অনুষ্ঠানে রোজার ভাব-গাম্ভীর্য এবং রমজানের আমলের সঙ্গে মানানসই নয়। অবশ্য রাসুলের (সা.) জীবন থেকে আমরা এমন কোনো নির্দেশনা পাই না। বরং রাসুল (সা.
জয়নব বিনতে খুযাইমার জীবনালেখ্য উল্লেখ করতে গিয়ে ইবনে সাদ বলেন, ‘হিজরি একত্রিশতম মাসে রাসুলের (সা.) সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়’ (ইবনে সাদ, তাবাকাত, ৮/১১৫)। আল্লামা তাবারি (রহ.) বলেন, ‘চতুর্থ হিজরিতে রমজান মাসে রাসুল (সা.) উম্মুল মাসাকিন জয়নব বিনতে খুযাইমার সঙ্গে ঘর বাঁধেন’ (তারিখে তাবারি, (৮/৫৪৫)। ইবনুল আম্মাদ বলেন, ‘হিজরি তৃতীয় বর্ষের রমজান মাসে রাসুল (সা.) যথাক্রমে উম্মুল মুমিনিন হাফসা, জয়নব বিনতে জাহাশ এবং জয়নব বিনতে খুযাইমা (রা.)-এর বিয়ে সম্পন্ন হয়। (ইবনে আম্মাদ, সাযারাতুয যাহাব, ১/১১৪)
আরও পড়ুনজীবনজুড়ে রমজান২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তবে হাফসা (রা.) বিবাহ ইবনে আম্মাদ ‘উহুদের যুদ্ধের পূর্বে হিজরি একত্রিশতম মাস শাবান মাসে’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন, যা আল্লামা তাবারির মতে ‘রমজান মাসে’। আবার শাবান মাসে হলেও মনে রাখতে হবে, এই মাস আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা মতে রমজানের আগে রাসুলের (সা.) সবচেয়ে বেশি রোজা রাখার মাস। এমনকি তিনি এ-মাসে এত বেশি রোজা রাখতেন যে, মনে হতো আর রোজা ভাঙবেন না।
এর মানে এই নয় যে, রাসুল (সা.) কেবল বিবাহের সাধারণ কর্ম সম্পাদন করেছেন, অলিমা বা কোনওরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনের করেননি। বরং রাসুল (সা.) বিবাহের পরে অলিমা-উৎসব ত্যাগ করেছেন বলে পাওয়া যায় না। যেমন তিনি বলেছেন, ‘একটি ছাগল দিয়ে হলেও অলিমা কর।’ (বুখারি, হাদিস: ৫১৫৫)
সুতরাং তিনি রমজান মাসেই অলিমার আয়োজন করেছেন। মহানবীর (সা.) দীর্ঘ দিনের সেবক আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘জয়নব (রা.)-কে বিয়ে করার পর রাসুল (সা.) যত বড় অলিমা করেছিলেন, তত বড় অলিমা তিনি তার অন্য কোনও স্ত্রীর বেলায় করেননি।’ (বুখারি, হাদিস: ৫,১৬৮; মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৯)
তিনি আরও বলেন, ‘জয়নব বিনতে জাহাশ-এর বিবাহের অলিমায় রাসুল (সা.) মানুষকে রুটি-গোশত দিয়ে তৃপ্তিসহকারে খাইয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৪,৭৯৪)
নবুয়তির ভারসাম্য ও মধ্যপন্থার এ-হচ্ছে এক উত্তম ও অনুসরণীয় উদাহরণ—যা রাসুল (সা.) মানব জাতির সামনে প্রত্যক্ষ কর্মের মাধ্যমে হাজির করেছেন। রাসুল (সা.) তার জীবনাচারে বাস্তবতাকে স্বীকার করেছেন, সে অনুসারেই আচার পদ্ধতি সাজিয়েছেন এবং লোক-দেখানো, ঠুনকো দুনিয়া ত্যাগী মনোভাব বর্জন করেছেন।
আরও পড়ুনফিতরা কীভাবে হিসাব করব১১ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রমজানে কেন বিয়ের আয়োজন হয় না
আজকাল মুসলিম সমাজের অনেক স্থানে দেখা যায় রমজান মাসে বিবাহ-শাদি অনুষ্ঠানে সর্বাগ্রে বর্জন করা হয়। একশ্রেণির পরহেজগার আলেম এ-বিষয়ে নিরুৎসাহিত করেন। তারা মনে করেন, রমজানে বিবাহ অনুষ্ঠানে রোজার ভাব-গাম্ভীর্য এবং রমজানের আমলের সঙ্গে মানানসই নয়। অবশ্য রাসুলের (সা.) জীবন থেকে আমরা এমন কোনো নির্দেশনা পাই না। বরং রাসুল (সা.) নিজেও রমজানে বিবাহ করেছেন। নবীজির অন্তত তিনটি বিবাহ রমজানে সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ পাওয়া যায়।
জয়নব বিনতে খুযাইমার জীবনালেখ্য উল্লেখ করতে গিয়ে ইবনে সাদ বলেন, ‘হিজরি একত্রিশতম মাসে রাসুলের (সা.) সঙ্গে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়’ (ইবনে সাদ, তাবাকাত, ৮/১১৫)। আল্লামা তাবারি (রহ.) বলেন, ‘চতুর্থ হিজরিতে রমজান মাসে রাসুল (সা.) উম্মুল মাসাকিন জয়নব বিনতে খুযাইমার সঙ্গে ঘর বাঁধেন’ (তারিখে তাবারি, (৮/৫৪৫)। ইবনুল আম্মাদ বলেন, ‘হিজরি তৃতীয় বর্ষের রমজান মাসে রাসুল (সা.) যথাক্রমে উম্মুল মুমিনিন হাফসা, জয়নব বিনতে জাহাশ এবং জয়নব বিনতে খুযাইমা (রা.)-এর বিয়ে সম্পন্ন হয়। (ইবনে আম্মাদ, সাযারাতুয যাহাব, ১/১১৪)
আরও পড়ুনজীবনজুড়ে রমজান২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫তবে হাফসা (রা.) বিবাহ ইবনে আম্মাদ ‘উহুদের যুদ্ধের পূর্বে হিজরি একত্রিশতম মাস শাবান মাসে’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন, যা আল্লামা তাবারির মতে ‘রমজান মাসে’। আবার শাবান মাসে হলেও মনে রাখতে হবে, এই মাস আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা মতে রমজানের আগে রাসুলের (সা.) সবচেয়ে বেশি রোজা রাখার মাস। এমনকি তিনি এ-মাসে এত বেশি রোজা রাখতেন যে, মনে হতো আর রোজা ভাঙবেন না।
এর মানে এই নয় যে, রাসুল (সা.) কেবল বিবাহের সাধারণ কর্ম সম্পাদন করেছেন, অলিমা বা কোনওরূপ অনুষ্ঠান আয়োজনের করেননি। বরং রাসুল (সা.) বিবাহের পরে অলিমা-উৎসব ত্যাগ করেছেন বলে পাওয়া যায় না। যেমন তিনি বলেছেন, ‘একটি ছাগল দিয়ে হলেও অলিমা কর।’ (বুখারি, হাদিস: ৫১৫৫)
সুতরাং তিনি রমজান মাসেই অলিমার আয়োজন করেছেন। মহানবীর (সা.) দীর্ঘ দিনের সেবক আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘জয়নব (রা.)-কে বিয়ে করার পর রাসুল (সা.) যত বড় অলিমা করেছিলেন, তত বড় অলিমা তিনি তার অন্য কোনও স্ত্রীর বেলায় করেননি।’ (বুখারি, হাদিস: ৫,১৬৮; মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৯)
তিনি আরও বলেন, ‘জয়নব বিনতে জাহাশ-এর বিবাহের অলিমায় রাসুল (সা.) মানুষকে রুটি-গোশত দিয়ে তৃপ্তিসহকারে খাইয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৪,৭৯৪)
নবুয়তির ভারসাম্য ও মধ্যপন্থার এ-হচ্ছে এক উত্তম ও অনুসরণীয় উদাহরণ—যা রাসুল (সা.) মানব জাতির সামনে প্রত্যক্ষ কর্মের মাধ্যমে হাজির করেছেন। রাসুল (সা.) তার জীবনাচারে বাস্তবতাকে স্বীকার করেছেন, সে অনুসারেই আচার পদ্ধতি সাজিয়েছেন এবং লোক-দেখানো, ঠুনকো দুনিয়া ত্যাগী মনোভাব বর্জন করেছেন।
আরও পড়ুনফিতরা কীভাবে হিসাব করব১১ মার্চ ২০২৫