খাবারে বৈচিত্র্য আর মানের কারণে চট্টগ্রামের ভোজনপ্রিয় মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে চট্টগ্রাম নগরের স্টেডিয়ামপাড়ার নান্দনিক রেস্টুরেন্ট ‘রোদেলা বিকেল’। খাবার তৈরিতে বাছাইকরা সেরা উপাদান ব্যবহার করায় গ্রাহকদের কাছে আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে রেস্তোরাঁটি। প্রতিবারের মতো এবারের রমজানেও ‘রাজকীয়’ ইফতারের আয়োজন করেছে রোদেলা বিকেল। মানের দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ অন্যদের চেয়ে পুরোপুরি ব্যতিক্রম। এবারের ইফতারের নানা আইটেম তৈরিতে ব্যবহৃত বাছাইকৃত নানা উপাদান অন্যদের চেয়ে রোদেলা বিকেলকে দিয়েছে ভিন্নতা।
রেস্তোরাঁটি ইফতার তৈরিতে ব্যবহার করছে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের ‘অলিও অরলিও’ ব্র্যান্ডের সানফ্লাওয়ার ওয়েল, সিঙ্গাপুরের চিনি, কোরিয়ার ময়দা, কাশ্মীরের জাফরান, নিউজিল্যান্ডের বাটার অয়েল। দেশি খাঁটি গাওয়া ঘিয়ে তরজাতা উপকরণে এখানে প্রতিদিন ইফতারের নানা আইটেম তৈরি করা হয়। এবারের ইফতারে আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে ওরস বিরিয়ানি। স্পেশাল চিনি গুঁড়া সিদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ এই আইটেম। প্রতি বৃহস্পতিবার থাকে বিশেষ এই আয়োজন। রোজা শুরুর পর গত বৃহস্পতিবার প্রথম দিনই ওরস বিরিয়ানি খেতে ও বাসায় নিয়ে যেতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে ছুটে আসেন। প্রথম দিনেই অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় বড় পাতিলে রান্না করা আকর্ষণীয় ওরস বিরিয়ানির সবটুকুই।
রোজাদারদের সুবিধার্থে এখানে সপ্তাহের একেকদিন রাখা হয়েছে ইফতারের একেক আকর্ষণীয় আইটেম। এরমধ্যে শনিবার থাকছে বিফ কাচ্চি বিরিয়ানি ও শুক্রবার মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি। রোজাদারদের জন্য ৪০ পদের ইফতারের এলাহী আয়োজন রয়েছে এই রেস্তোঁরায়। রোজার প্রথম দিন থেকেই এখানকার রুচিশীল ইফতার গ্রাহকদের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে। ভোজনপ্রিয় মানুষদের সুবিধার্থে এখানে আছে প্রতিদিন দুই ধরনের প্যাকেজও।
রোদেলা বিকেলের ৪০ পদের ইফতারে রয়েছে, দেশি চিকেন হালিম, মাটন হালিম, মেজবানের গরুর মাংস, মিহিদানা, জিলাপি, লাচ্ছা জিলাপি, পাটিসাপটা পিঠা, কিসমিস ফিরনি, স্পেশাল পরোটা, দেশি চিকেন তান্দুরি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন চাপ, চিকেন ললিপপ, বিফ বটি কাবাব, প্রণ তন্দুরি, ফিশ ফিঙ্গার, বিফ কাচ্চি ও আকনি বিরিয়ানি, মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন পায়া, চিকেন মোমা, চিকেন শর্মা, বিফ এগ রোল, চিকেন এগ রোল, ফিশ টিক্কা কাবাব, টক দই, মিষ্টি দই, ম্যাংগো লাচ্ছি, গরুর নলা, চিকেন শামী কাবাব, সুজির হালুয়া, ঘিয়ে ভাজা লুচি, চিটা পিঠা, চিকেন আলুর চপ, চিকেন সাসলিক, ওরস বিরিয়ানি, মাটন চুইঝাল, মাটন লেগ কোরমা এবং দেশি মোরগ মাসাল্লাম।
৫২০ টাকার প্যাকেজে রয়েছে খেজুর, চনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, জাফরান মিল্ক জিলাপি, আনারসের জুস, মেজবানের গরুর মাংস, তান্দুরি চিকেন পরোটা, কুমিল্লার মুড়ি, চিকেন আলুর চপ ও মিনারেল ওয়াটার। ৮২০ টাকার প্যাকেজে আছে, আবুধাবির খেজুর, চনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চিকেন মোমো, কিসমিস ফিরনি, জাফরানি মিল্ক জিলাপি, প্রিমিয়াম হালিম চিকেন অথবা মাটন, সুইট লাচ্ছি, কুমিল্লার মুড়ি, চিকেন এগ রোল, চিকেন আলুর চপ ও মিনারেল ওয়াটার।
রোদেলা বিকেলের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটির সঙ্গে কখনও কম্প্রোমাইজ করি না। একযুগেরও বেশি সময় ধরে খাবারের কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারায় অনেক দূর-দূরান্ত থেকেও পছন্দের ও সুস্বাদু ইফতার কিনতে এখানে ছুটে আসেন মানুষ। আমাদের আরেকটি বৈশিষ্ট হচ্ছে প্রতিদিনের আইটেম প্রতিদিন বিক্রি করা। আমাদের কাছে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি সবার আগে। যে কারণে আমরা দেশের বাছাই করা সেরা উপাদান গ্রাহকদের জন্য সংগ্রহ করি। এছাড়াও সিঙ্গাপুর, কোরিয়ার, কাশ্মির, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের নামকরা দেশের সেরা সেরা উপাদান ব্যবহার করা হয় নানা আইটেম তৈরিতে। আমরা রান্নার সময় তদারকিটাও খুব শক্তভাবে করি। আমাদের কাছে গ্রাহকের সন্তুষ্টিই সবার আগে।’
খুলশি থেকে ইফতার কিনতে আসা রোখসানা হক বলেন, ‘গ্রাহকদের সন্তুষ্টি আর বিশ্বাস বেশিরভাগ হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা খাবার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান অর্জন করতে পারে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রোদেলা বিকেল। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ায় অনেক দূর থেকে ইফতার কিনতে এসেছি।’
আরেক গ্রাহক ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমান বলেন, ‘খাবার তৈরিতে ক্ষতিকর ক্যামিকেল, রং ইত্যাদি ব্যবহার করার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এ কারণে মানুষের মধ্যে একটা ভয় বেশি কাজ করে কোন প্রতিষ্ঠানের ইফতার কেমন তা নিয়ে। পেট খারাপ হওয়া বা স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ কি না সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তবে প্রায় ছয়বছর ধরে আমি প্রতিবছর পুরো রমজান মাসে পরিবারের জন্য এখান থেকেই ইফতার কিনে আসছি। এখানকার ইফতার যেমন রুচিশীল; তেমনি সুস্বাধুও। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো রোদেলা বিকেল মানের দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র ওরস ব র য় ন ব যবহ র কর গ র হকদ র ইফত র ক ন র ইফত র ইফত র র উপ দ ন র জন য আইট ম
এছাড়াও পড়ুন:
কোমল পানীয় কেনা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ-বাড়িতে আগুন, নিহত ১
কোমল পানীয় কেনা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বাড্ডা ও বাড়াইল গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
নিহত আজিজ মিয়া (৬০) বাড্ডা গ্রামের মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সলিমগঞ্জ বাজারে গত ৩ এপ্রিল ইসহাক মিয়ার দোকানে কোমল পানীয় ‘পেপসি’ কিনতে যান বাড্ডা গ্রামের এক যুবক। এ সময় দোকানির সাথে ওই যুবকের ঝগড়া ও মারামারি হয়। এতে বাড্ডা গ্রামের জজ মিয়ার ছেলেসহ তিনজন আহত হন। এই খবর পেয়ে বাড্ডা গ্রামের লোকজন বাড়াইল গ্রামের একটি বাড়িতে আগুন দেয় ও কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পর থেকে উভয়গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এমনকি দুই গ্রামে লোকজন আলাদা আলাদাভাবে মিটিং করে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। যদিও প্রশাসনের সহযোগিতায় আগামী ১ মে সমঝোতায় বসার কথা ছিল। কিন্তু বাড্ডা গ্রামের লোকজন আজ দুপুরে বাড়াইল গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন আহত হন। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে বাড্ডা গ্রামের আজিজ মিয়া নিহত হন।
আহতদের মধ্যে কাইয়ুম মিয়া (৫৫), আরিফুল ইসলাম (১২), জাফর আলী, রজবআলী, ওয়াস করনি, আলী মিয়া, তাহের মিয়া, মিজান মিয়া, জুনায়েদ আহমেদ, মাসুম মিয়া, মানিক মিয়া, কামাল মিয়া প্রমুখ।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুর রাজ্জাক ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় গ্রামের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।