রংপুরে কালবৈশাখীতে ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি, অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন
Published: 27th, April 2025 GMT
রংপুর ও আশপাশের অঞ্চলে বজ্রসহ কালবৈশাখী বয়ে গেছে। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে ঝড়ে কয়েক শ কাঁচা ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অসংখ্য গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া ঝড়ে ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের খেত নষ্ট হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে বিভিন্ন এলাকা। ঝড়ে ঘর ভেঙে পড়ে গঙ্গাচড়ার তিনজন আহত হয়েছেন বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
রংপুর আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১০টার দিকে ঝড় শুরু হয়, চলে দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত।
গঙ্গাচড়া উপজেলার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রাত ১০টার দিকে পশ্চিম দিক থেকে হঠাৎ কালবৈশাখী আঘাত হানে। গঙ্গাচড়া, কোলকোন্দ, বড়বিল, মর্ণেয়া, গজঘণ্টা, আলমবিদিতর, লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ গ্রামের নুরজামাল মিয়া বলেন, হঠাৎ বৃষ্টি ও প্রচণ্ড বাতাসে ঘরবাড়ি গাছপালা উপড়ে পড়ে। ঝড়ে তাঁর ঘরের চাল উড়ে গেছে।
ঝড়ে উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের বেশ কিছু বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে রাত থেকে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ। তবে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলায় কালবৈশাখীতে দেড় শর মতো বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ঘর পড়ে বলবিল ইউনিয়নের দুজন ও লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের একজন আহত হয়েছেন বলে সেখানকার চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত হয় ছ উপজ ল ঘরব ড় ফসল র
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫