ভিনদেশিদের খাদ্যাভ্যাস ভাগ্য বদলেছে কাদেরের
Published: 18th, April 2025 GMT
ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এ প্রকল্পে কর্মরত রয়েছেন রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশের অন্তত ৫ হাজার নাগরিক। তাদের খাদ্য তালিকায় থাকা ১৫ থেকে ২০ ধরনের সবজির অধিকাংশই স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না। তাদের খাদ্যাভ্যাসের কথা চিন্তা করে তরুণ কৃষক আব্দুল কাদের চিন্তা করলেন ভিন্ন কিছু করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্তত ১৬ ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেন তিনি।
বক্তারপুর গ্রামের ২০ বছরের তরুণ কৃষকের এক উদ্যোগেই বদলে গেছে ভাগ্য। বছরে অন্তত ২০ লাখ টাকা আয় করছেন এ গ্রামের কৃষক শাহদাত হোসেন প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল কাদের। ২০১৮ সালে রাশিয়ানসহ বিদেশিদের মধ্যে সবজি ও ‘চায়নিজ পাতার’ চাহিদা দেখে আগ্রহী হন। শুরুতে তিন কাঠা জমিতে আবাদ শুরু করেন। এখন সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আবাদ করছেন। মাসে তাঁর আয় বেড়ে হয়েছে অন্তত দেড় লাখ টাকা।
আব্দুল কাদের জানান, বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী তিনি লেটুসপাতা, সেলারি, পি-তুরস্কা, উগ্রো, বিটরুট, শ্যাওল, ক্যাবিস, ব্যাইজেলিক, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিক্যামসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করছেন। গ্রিনহাউস বা পলিনেট হাউস না থাকায় অনেক সময় লোকসান হয়। তাপ থাকায় অনেক সবজি আবাদ করতে পারছেন না।
সনাতন পদ্ধতিতে কাপড় ও পলিনেট ব্যবহার করে তাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চারা রোপণ করেন বলে জানান আব্দুল কাদের। তাপ নিয়ন্ত্রণ করতেই বেশি খরচ হয় বলে জানান তিনি। সরকারিভাবে পলিনেট হাউসের ব্যবস্থা করলে অনেক ধরনের বিদেশি সবজি চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ তরুণ। তখন দেশের চায়নিজ রেস্টুরেন্টের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।
তরুণ এ কৃষকের কাছে রাজশাহীর আড়ানী থেকে পরামর্শ ও বীজ নিতে আসেন জহুরুল হক। তিনিও এসব সবজির চাষে সফল হতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকারের ভাষ্য, সহযোগিতা পেলে কাদেরের সফলতা দেশের কৃষিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: খ দ যপণ য করছ ন সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন সরবরাহ, আহ্বায়ককে অব্যাহতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউনিটটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এ অভিযোগ ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, ‘সি’ ইউনিটে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা প্রশ্নপত্র নির্ধারিত থাকলেও কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একাধিক হলে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়। পরে ভুল বুঝতে পেরে প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
যানজটে স্বপ্ন ভঙ্গ কুবির এক ভর্তিচ্ছুর
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা যারা বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, আমাদের কেন্দ্র ছিল মূলত সেই বিভাগের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু ওই ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভুল করে আমাদের কাছে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর বিষয়টি সংশোধন করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথমে খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। পরে ১ ঘণ্টার পূর্ণ সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হয়েছে।”
চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, “ভুল প্রশ্ন দেওয়ার কারণে পরীক্ষার শুরুতে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকদের জানালে সেটা ফিরিয়ে নিয়ে সঠিক প্রশ্ন দেওয়া হয়।”
এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “মানবিক বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর কাছে ভুল করে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন পৌঁছে যায়। রোল নম্বর যাচাই করে আমরা বিষয়টি শনাক্ত করি এবং তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেওয়া হয়।”
এদিকে, পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্ন প্রদানের দায়ে ওই ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “ঘটনার পর আমি নিজে ওই কক্ষে গিয়েছিলাম। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এমন ভুল অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তা অপেশাদারিত্বের পরিচায়ক। দায়িত্বরতদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনার জন্য ইতোমধ্যে উনাকে (আহ্বায়ক) ভর্তি পরীক্ষার সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উনাকে এ ঘটনার কারণ জানানোর জন্য শোকজ করা হয়েছে।”
ইউনিটের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি ফলাফলসহ বাকিসব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।”
অব্যাহতির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “আমি এ ধরনের কোনো লিখিত চিঠি পাইনি। লিখিত চিঠি পাওয়ার পর মন্তব্য করতে পারবো।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী