শুল্কমুক্তভাবে চাল আমদানির অনুমতির মেয়াদ না বাড়ানোয় দিনাজপুরের হিলি বন্দর বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।

আমদানিকারকরা বলছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম একটু বেড়ে গেছে। আরো কিছুদিন শুল্কমুক্ত চাল আমদানির সুযোগ দিলে বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকত।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে হিলি বন্দর বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। গত ১৫ এপ্রিল শুল্কমুক্ত চাল আমদানির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকেই বাজারে বাড়তে শুরু করে চালের দাম। কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে চালের দাম।

আরো পড়ুন:

শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন

সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি: ক্রেতা-বিক্রেতার অস্বস্তি, প্রত্যাহার দাবি

হিলির খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, তিন থেকে চারদিন আগেও ভারত থেকে আমদানিকৃত সম্পা কাটারি চাল খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৬৪ টাকা কেজি দরে। বর্তমান তা বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৬৯ টাকা কেজি দরে। স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে। 

হিলি বন্দরে চাল কিনতে আসা পাইকার নজরুল ইসলাম বলেন, “আমদানিকারকরা গত কয়েকদিন রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি করেন। এতো চাল আমদানি হওয়ার পরেও কেন চালের দাম বৃদ্ধি পেল? এভাবে হঠাৎ দাম বাড়লে মোকামে তো আমরা টিকে থাকতে পারব না।”

হিলির খুচরা বাজারে চাল কিনতে আসা লুৎফর রহমান বলেন, “তিনদিন আগেও সম্পা কাটারি চাল ৬৪ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। আজ সেই চাল ৬৮ টাকা কেজি কিনতে হলো। এভাবে দাম বাড়লে আমরা সাধারণ মানুষ কীভাবে চলব?”

চাল আমদানিকারক নুর-ইসলাম বলেন, “চাল আমদানি বন্ধ হওয়ার খবরে ভারত থেকে একসঙ্গে অনেক চাল আমদানি করতে গিয়ে গাড়ি ভাড়া বেশি পড়েছে। তা ছাড়া, চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম একটু বেড়ে গেছে। আমাদের উত্তরবঙ্গে ধান কাটা শুরু হতে এখনো এক মাস দেরি। এ কারণে আর কয়েকদিন আমদানির অনুমতি দিলে দেশের বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকত।” 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, “ভারত থেকে চাল আমদানির সময় বৃদ্ধির জন্য বন্দরের আমদানিকারকরা আবেদন করেছেন। সরকার সময় বৃদ্ধি না করে গত ১৫ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। ভারত থেকে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা সম্ভব হবে না। আর মাত্র ১৫ দিন আমদানির সময় বৃদ্ধি করলে বাজারে চালের দাম বাড়ার প্রভাব পড়ত না।”

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, “গত ১৫ এপ্রিল থেকে হিলি স্থলবন্দরে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত চাল বাজারজাত করতে পারেন সেই লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত ছাড়করণ করা হয়েছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ২৫৩৮টি ট্রাকে ১ লাখ ৮ হাজার ২৭২ মেট্রিকটন চাল আমদানি হয়েছে।”

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমদ ন শ ল কম ক ত চ ল আমদ ন আমদ ন ক রকর চ ল আমদ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন

ভারতের সুতা আমদানি বন্ধের প্রজ্ঞাপনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন ব্যাখ্যা অনুসারে, গত ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির জন্য যাঁরা ঋণপত্র খুলেছেন, তাঁরা আগের মতো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সুতার চালান খালাস করতে পারবেন। এমনকি ১৩ এপ্রিল বা এর আগে যাঁরা এ–সংক্রান্ত ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, তাঁরাও একই সুবিধা পাবেন।

গতকাল বুধবার এনবিআর এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।

আগে গত ১৩ এপ্রিল আরেক প্রজ্ঞাপনে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে এনবিআর। যাঁরা ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ঋণপত্র খুলেছিলেন, তাঁরা কী করবেন—এ নিয়ে মাঠপর্যায়ের অস্পষ্টতা দূর করতে নতুন ব্যাখ্যা দিল এনবিআরের শুল্ক বিভাগ।

এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যেসব আমদানিকারক ১৩ এপ্রিল বা তার পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র স্থাপন করেছেন বা উক্ত তারিখের পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, সেসব ঋণপত্রের পণ্য চালান উক্ত প্রজ্ঞাপনের (১৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন) আওতায় পড়বে না।

স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার দাবি দীর্ঘদিন করেছেন দেশীয় স্পিনিং মিলমালিকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস আগে সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। অবশ্য এই অনুরোধ করার আগে বিটিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল ট্যারিফ কমিশন।

ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইলশিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্ত–সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপারের সিমেন্টে নজর আরাকান আর্মির
  • ভারত-বাংলাদেশ শীতল সম্পর্ক আন্তসীমান্ত বাণিজ্য ও অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে
  • সাতক্ষীরায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ১
  • প্রতিবেশী দেশের কিছু ঘটনার কারণে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন
  • হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে কমেছে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার
  • ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধে বাংলাদেশের লাভ কী