এক চিমটি পরম্পরা ও সংস্কৃতির স্যালাইন
Published: 13th, April 2025 GMT
গিমা শাকের বহু নাম। তিতা গিমা, গিমাই, গিমে, মাইটাখুদরি। দেশি ধানের জমিন, জমির আইল, রাস্তার কিনার, গ্রামীণ বন, খোলা প্রান্তর ও মাঠে এই শাক জন্মে। মুখের রুচি বাড়াতে, পেটের নানা সমস্যা মেটাতে, খোস-পাঁচড়া ও ব্যথা কমাতে এই শাক উপকারী। জ্বর, হাড়ের ব্যথা, চোখের সমস্যা, কাশি, পেট ফাঁপাসহ নানা সমস্যায় কাজে লাগে এই শাক। বসন্তের শেষে বর্ষাকালের আগ পর্যন্ত এই শাকের ব্যবহার বেশি। কিন্তু বর্তমানে গিমা শাক বিরল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে উপকূল এবং হাওরাঞ্চলে। একে তো লুণ্ঠিত হচ্ছে জমিন, প্রাণ-প্রকৃতি হচ্ছে খুন, এর ওপর আবার জলবায়ু পরিবর্তনের বিষফোড়া। গিমা শাক খুব বেশি গরম সহ্য করতে পারে না। তীব্র তাপদাহে শুকিয়ে যায়, এমনকি বীজদানাও মরে যায়। গ্রামের প্রবীণ ও কিশোর নারীদের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারি, আগের মতো গিমা শাক এখন দেখা যায় না। গিমা শাকের ঝাঁঝালো তিতা স্বাদ অনেক কমে গেছে। আগের মতো ঝোপালো গিমা এখন কম দেখা যায়। তো চৈত্রসংক্রান্তির দিন বাংলাদেশের সমতল জনপদে গিমা শাক খাওয়া হয়। কেবল গিমা নয়; মিশ্র তিতা শাক ও সবজি ছাড়া বাঙালি কি আদিবাসী সমাজে বর্ষবিদায় কৃত্য হয় না। নাইল্যা, দণ্ডকলস, আমরুল, থানকুনি, নিম, নিশিন্দা, তেলাকুচা, মালঞ্চ, কানশিরা, বাসক, ঘৃতকাঞ্চন, শেফালি, কলমি, হেলেঞ্চা, ঘুম, আদাবরুণ, পিপুল, গন্ধভাদালি, কাঁটাখুদি, ক্ষেতপাপড়া এমন ১৩ থেকে ২৯ রকমের তিতা স্বাদের শাক খাওয়ার চল আছে দেশের নানা জনপদে। পাহাড়ে চাকমারা তিতকরলা, তিত্তুলগুলো, হনাগুলো, বনআলু, কচু, বাঁশকোড়লসহ নানা পাহাড়ি সবজি দিয়ে রান্না করেন ‘পাজন’ নামে খাবার। প্রায় ৩০ থেকে ১০৭ রকমের মিশ্র সবজির এই রান্নাকে চাক ভাষায় বলে ‘কাইনবোং’, মারমারা বলেন ‘হাং-র’ এবং ত্রিপুরারা বলেন ‘মৈজারবং’। গিমা শাক যেমন কমছে সমতলে, তেমনি পাহাড়ে উধাও হচ্ছে হনাগুলো বা কানাইডিঙ্গা গাছ। তাহলে চৈত্রসংক্রান্তি, বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, চানক্রান, সাংগ্রাইং আয়োজন হবে কী দিয়ে? নাকি পান্তা-ইলিশের মতো কোনো উটকো বিশৃঙ্খলা ‘সংস্কৃতি’ হিসেবে গেলানো হবে? তারপর পেট খারাপ আর বদহজম। সুশীল শহুরে শিক্ষিতজনেরা এই পেট খারাপ চান না। তাই এক চিমটি ‘পরম্পরার’ ছিটা দিয়ে ‘সংস্কৃতির স্যালাইন’ জারি রাখেন। রাষ্ট্র, এজেন্সি, করপোরেট, মিডিয়া, বিদ্যায়তন সবাই সম্মতি জানায়। শহরে বা যারে ‘জাতীয় সংষ্কৃতি’ বলা হইতেছে, সেখানে এইসব চলতেছে। সংস্কৃতির স্যালাইন। এখানে গিমা শাকের আলাপ নাই, ভাতজরা ফুল বা কাইনকো ফুলের আলাপ নাই। শোভাযাত্রার নাম, শোভাযাত্রার মোটিফ কিংবা বর্ষবরণের ন্যারেটিভ কে ওলটপালট আর কর্তৃত্বে রাখতে পারে সেটাই মুখ্য বিষয়। এখানে দেশের ৯০ ভাগ মানুষের বিবরণ নাই। তাহলে এত যন্ত্রণা, রক্তক্ষরণ আর আঘাত সয়ে কীভাবে জেগে আছে আমাদের কৃত্য-পরবেরা? কী তার শক্তি? স্যালাইনগিরি থেকে কে আমাদের বর্ষবিদায় ও বরণের পরবকে মুক্ত রাখছে? কৃত্য-পরবের মূলশক্তি হলো প্রকৃতি ও সংস্কৃতির জটিল সন্ধি। আর গ্রামীণ নিম্নবর্গের লোকায়ত বীক্ষা এবং পরম্পরাই সকল বাহাদুরির বিরুদ্ধে জাগ্রত রেখেছে সংস্কৃতির লড়াই। তো গিমা শাক তোলা কিংবা হনাগুলোর ফল সিদ্ধ করার বিশেষ কৌশল আছে। শিশুরা পরিবার ও সমাজ থেকেই এগুলো শিখে বড় হয়। দাদি, নানি, মা, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুদের সঙ্গে শিশু-কিশোরেরা এই শাকলতা সংগ্রহ করে। ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানে। পরব আয়োজন, গীতবাদ্য পরিবেশন বিষয়ে জানে। আমাদের গ্রামীণ জনপদে এভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে লোকায়ত সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও জীবনদর্শন বহমান থাকে। কৃত্য-পরবের মৌলিক জিজ্ঞাসাগুলিকে আড়াল করে বারবার যারা কোনো রেজিমের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তাদের কাছে পরম্পরার কোনো মর্যাদা নাই। এক চিমটি পরম্পরা দিয়া তারা সংস্কৃতির স্যালাইন জনগণের ওপর চাপিয়ে রাখতে চান। কিন্তু তেভাগা, নানকা, টংক, মুক্তিযুদ্ধ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এই কর্তৃত্ববাদকে জানবাজি রেখে প্রশ্ন করছে। জনআকাঙ্ক্ষার দাবির ভেতর সাংস্কৃতিক দরবার ও পরম্পরাকে সামনে আনছে। পরম্পরার মর্যাদা ও মান সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
প্রতিটি ঋতুর সন্ধিক্ষণ, শুরু ও শেষকে মানুষের সমাজ কৃত্য-পরবের ভেতর দিয়ে মান্য করেছে। প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার সমষ্টিগত বার্তা দেয় আমাদের বর্ষবিদায় ও বরণের পরবগুলো। এটাই চলমান নিওলিবারেল ব্যবস্থার জন্য প্রচণ্ড হুমকি। বৈশাখে ভাটিপরব, জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে কর্মাদি, শ্রাবণে করন্ডি, ভাদ্রে কারাম, আশ্বিনে দাসাই, কার্তিকে জালাবর্ত, অগ্রহায়ণে ওয়ান্না, পৌষে পুষরা, মাঘে বাঘাই শিরনি, ফাল্গুনে ঘাটাবান্ধা আর চৈত্রে চইতপরব বা চৈত্রসংক্রান্তি। একেক ঋতুতে প্রকৃতি নানা প্রাণের ভেতর দিয়ে তার সমাপনী ও শুরুর নির্দেশনা জানায়। প্রকৃতির নয়া শস্য ফসল গ্রহণ ও ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রার্থনা ও আশীর্বাদের তরে নানা সমাজ আয়োজন করে নানা কৃত্য। প্রতিটি ঋতু বেশ কিছু নির্দেশনা নিয়ে আসে। প্রকৃতির নির্দেশনা। গ্রামীণ নিম্নবর্গ হাজার বছর ধরে প্রকৃতির এসব নির্দেশনা মান্য করেছে, করে তুলেছে জীবনের আরাধ্য। বিকশিত হয়েছে বর্ষবিদায় ও বরণের মতো বহু কৃত্য এবং উৎসব। আজকের তরুণ প্রজন্ম কি এই ঋতুচক্র ও ব্যাকরণে বেড়ে উঠতে পারছে? তাহলে আমরা এইসব মৌলিক জিজ্ঞাসাকে কেন এতদিনেও আমাদের রাজনৈতিক প্রশ্ন হিসেবে হাজির করিনি? রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে এসব নিয়ে কোনো মৌলিক রূপরেখা নাই। তাহলে পরম্পরার গণিত টিকিয়ে রাখা কি কেবল পাহাড় ও সমতলের গ্রামীণ নিম্নবর্গের দায়িত্ব? চিহ্নিত সুশীল নাগরিক সমাজের দায় ও দায়িত্ব কোথায়?
চৈত্রসংক্রান্তির সর্বাধিক পরিচিত চিহ্ন হলো গ্রামাঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো গাজন, দেল, নীল বা চড়কের দল। লাল সালু কাপড় পরিধান করে এবং শিব-গৌরী সেজে, কেউবা মুখোশ চাপিয়ে মাগন সংগ্রহ করেন। গ্রামে গ্রামে এখনও শিশুরা কিশোর-তরুণ-প্রবীণের দলের পেছনে ঘুরে বেড়ায়। এদের গরিষ্ঠভাগই গরিব ভূমিহীন বর্গাচাষি পরিবারের। কিংবা জেলে, বনজীবী, কামার, কুমার, তাঁতি পরিবারের। এরা সবাই স্কুলের গণ্ডি পেরুতে পারে না। বড় হয়ে এরা দিনমজুর, কৃষক, জেলে, বর্গাচাষি, গৃহকর্মী, গার্মেন্টস শ্রমিক, ইট ভাটার শ্রমিক হয়। কিন্তু এরাই শ্রম-ঘামে-জ্ঞান ও অনুশীলনে এখনও দেশের ঋতুভিত্তিক বৈচিত্র্যময় কৃত্য-পরবগুলো জাগিয়ে রেখেছে। এরা গ্রামে গ্রামে মাগন তোলে, এলিট ভাষায় ‘গণচাঁদা’। এখনও এরাই সমষ্টির সংহতিতে সংস্কৃতির বিকাশের জন্য লড়াই করে। কোনো বিষাক্ত পানীয় কোম্পানি বা নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বিক্রয়কারী কোম্পানি থেকে বিজ্ঞাপন নিয়ে এক চিমটি পরম্পরা গুলিয়ে সংস্কৃতির স্যালাইন বানায় না। এরা কখনোই শিল্পী বা সংস্কৃতিকর্মী বা সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠক– কোনো সামাজিক বর্গীয় পরিচয়ে সম্মানিত বা পরিচিত হয়ে ওঠে না। দেশের এই গরিষ্ঠভাগ গ্রামীণ নিম্নবর্গ, যারা উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তারা বর্ষবিদায় বা বরণের কৃত্য-পরবকে তার যাপিত জীবনের অংশ হিসেবেই দেখে। কোনো বহিরাগত এলিয়েন ইনভ্যাসিভ চাপানো বিশৃঙ্খলা হিসেবে নয়। তাই এই কৃত্য-পরবের টিকে থাকবার শক্তি এত প্রখর ও প্রবল।
আমরা পরম্পরা বহন করছি। এই পরম্পরা কোন পরম্পরা? কিছু বাইনারি বিভাজন, কলোনিয়াল ন্যারেটিভ আর এজেন্সির হেজমনি কিংবা মব-বাহাদুরি আমাদের পরম্পরাকে নিদারুণভাবে কোণঠাসা এবং অপর করে দেয়। সমাজের নানা স্তর ও বর্গের ক্ষমতাকাঠামো এবং অপরায়নকে প্রশ্ন না করে জোর করে কারও অবদানও খারিজ করতে চায়। বর্ষবিদায় ও বরণের কৃত্য-পরব জনআকাঙ্ক্ষার আওয়াজে বিকশিত হওয়ার জন্য আমি বা আমরা নিজেরা কতটা প্রস্তুত? কারণ আমাদের সকল কৃত্য-পরব একেকটি বিশেষ বাস্তুতন্ত্র এবং প্রতিবেশ ব্যবস্থা থেকে বিকশিত হয়েছে। এখানে আছে কৃষিকাজের মতো উৎপাদন সম্পর্কের বিজ্ঞান। প্রতিটি কৃত্য-পরব-উৎসবের সঙ্গে নানা গাছ, পাখি, মাছ, নদী, পাহাড়, বন প্রাণ-প্রকৃতি জড়িত। সংস্কৃতির পক্ষে দাঁড়ানো মানে প্রকৃতির পক্ষে দাঁড়ানো। আমাদের কি সেই দায় ও দরদ আছে? চৈত্রসংক্রান্তি বা চানক্রান পরব টিকে থাকবে কেবল এই দায় ও দরদের পরম্পরার ভেতর। যদি আমরা মনে ও মগজে আমাদের কৃত্য-পরবের দর্শন এবং কারিগরি ধারণ করি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের সেই সম্ভাবনা এবং স্বপ্ন দেখিয়েছে। দেশজুড়ে গ্রাফিতির ভেতর দিয়ে পরম্পরার জনআকাঙ্ক্ষাই তুলে ধরেছে জেন-জি তরুণ প্রজন্ম। আমরা বিশ্বাস রাখি এই প্রজন্মের ভেতর দিয়েই সুরক্ষিত থাকবে বর্ষবিদায় ও বরণের কৃত্য-পরব-উৎসবের ধারাবাহিকতা। কোনো এক চিমটি পরম্পরার স্যালাইন নয়, যাপিত জীবনের লড়াই-সংগ্রাম হয়েই টিকে থাকবে কৃত্য-পরব সংস্কৃতি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘নববর্ষ’ প্রবন্ধে জানান, ‘.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স স ক ত চর চ স স ক ত র স য ল ইন গ র ম ণ ন ম নবর গ চ ত রস ক র ন ত ক ত য পরব র র ক ত য পরব প রজন ম ব যবস থ আম দ র র জন য এই শ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মে মাসের প্রথমার্ধে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে এবং একই মাসের মাঝামাঝি ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে তফসিল ও চূড়ান্ত নির্বাচনের তারিখ কবে ঘোষণা করা হবে, সেটি রোডম্যাপে বলা নেই।
আরো পড়ুন:
বিএনপির বর্ধিত সভায় ঐক্যের ডাক, ভোটের জোর প্রস্তুতিতে চোখ
ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ভোট: প্রেস সচিব
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন মনে করে ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর এবং সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সম্বলিত পথনকশা প্রকাশ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহে ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন অংশীদারীর সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর ডাকসু সংবিধান সংশোধন কমিটি গঠিত হয়। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি ডাকসু নির্বাচন আচরণবিধি কমিটি গঠিত হয়, যা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারি পরামর্শ প্রদান কমিটি গঠিত হয়, যা এপ্রিলের প্রথমার্ধে চূড়ান্ত করা হবে।
এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, প্রভোস্ট, ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালকদেরকে অবহিত করা হবে।
জুনের প্রথমার্ধেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত ৩৭ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ বারই হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছরে নির্বাচন হয়েছে মাত্র মাত্র আটবার।
১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডাকসু মনোনীত পাঁচ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগের বিষয় তুলে ধরেন সিনেটে।
২০১৯ সালে সর্ববেশ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। সেই সংসদের মেয়াদপূর্তির পর পেরিয়ে গেছে আরো পাঁচ বছর। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব শূন্যতা চলতে দীর্ঘদিন ধরে।
গত বছর গণঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ডাকসু নির্বাচনের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। এই নির্বাচনের পক্ষে জোরালো মত রয়েছে দেশের বুদ্ধিজীবীদেরও।
ঢাকা/সৌরভ/রাসেল