ইউক্রেনে গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
Published: 13th, April 2025 GMT
রাশিয়ার সুধজা শহর থেকে ইউক্রেনের উঝহোরোদের মধ্য দিয়ে স্লোভাকিয়ার সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত গ্যাস বহনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনের ‘নিয়ন্ত্রণ’ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সোভিয়েত যুগে নির্মিত এই ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন ইউক্রেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও ইউরোপের একটি প্রধান জ্বালানি সরবরাহ পথ। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঔপনিবেশিক চাপ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
শুক্রবার ওয়াশিংটন ও কিয়েভের কর্মকর্তারা খনিজ সম্পদবিষয়ক চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাইডেন সরকারের দেওয়া অস্ত্রের বিনিময়ে ইউক্রেনকে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে। রয়টার্স জানায়, এ প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় আলোচনা ক্রমেই তিক্ত হয়ে ওঠে।
ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাবিত প্রথম খসড়ার চেয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনেক বেশি আগ্রাসী। আগের খসড়ায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিরল খনিজ, তেল ও গ্যাসের বিনিময়ে চুক্তির প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সর্বশেষ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র চায়, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন যেন ইউক্রেনের গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে ইউক্রেনের পাঁচ বছরের গ্যাস চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন। যুদ্ধ চলাকালে এ পাইপলাইন ব্যবহার করে মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরোর ট্রানজিট ফি পকেটে পুরেছে ইউক্রেন।
গত বছর প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে ইউক্রেনের খনিজ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি তখন আশা করেছিলেন, এর বিনিময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে। কিন্তু ট্রাম্প এখন বিনিময় ছাড়াই খনিজ সম্পদ দাবি করছে। গত সপ্তাহে তিনি অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি ‘চুক্তি থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন’ এবং সই না করলে ‘বড় ধরনের সমস্যায় পড়বেন’ তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেন আধুনিকায়নের জন্য চুক্তিতে প্রস্তুত, তবে তা উভয় পক্ষের জন্য ‘সমানভাবে লাভজনক’ হওয়া জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে আলোচনাও চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউক র ন র প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন ডলারের মান সর্বনিম্নে নেমেছে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের জেরে মার্কিন ডলারের মান সর্বনিম্নে নেমেছে। শুক্রবার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এই মুদ্রার মান গত তিন বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ পতন হয়েছে।
বিশ্বে মার্কিন ডলারের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের সূচক (ডিএক্সওয়াই) ও মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মার্কিন ডলারের মান তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মান সাধারণত ডলারের মানের ওপর নির্ভর করে।
মার্কিন ডলারের সূচকে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ডলারের মূল্য কমে ৯৯ দশমিক ০১-এ দাঁড়িয়েছে। যা এক বছরের মধ্যে ডলারের মানের প্রায় ৮ শতাংশ পতনের রেকর্ড।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর ডলারের মানের বেশি পতন ঘটেছে। ওই দিন বিশ্বের কয়েক ডজন দেশের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আমদানি শুল্ক আরোপ করেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপের পর বৈশ্বিক বাজার ব্যবস্থায় ব্যাপক টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়ার শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস শুরু হয়। যদিও পরবর্তীতে চীন ছাড়া বাকি সব দেশের ওপর আরোপিত এই শুল্ক আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয় আলাদা দুটি দেশের মুদ্রায়। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার ক্রয়। যার ফলে এক দেশের মুদ্রার মান আরেক দেশের মুদ্রার মানের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। যা ‘এক্সচেঞ্জ রেট’ নামে পরিচিত।
বিশ্বের বেশিরভাগ মুদ্রার মানই ওঠানামা করে। যার অর্থ চাহিদা এবং সরবরাহ অনুযায়ী দাম পরিবর্তন হয়ে থাকে। কিছ মুদ্রার মান স্থির। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার একটি নির্দিষ্ট দামে নির্ধারিত। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন ডলারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ডলারের মান নির্দিষ্ট করা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি বাতিল করা হয়
এখন চাহিদা ও সরবরাহ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্য ওঠানামা করে। মুদ্রা শক্তিশালী হয় বিভিন্ন কারণে। যার মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, পণ্যের চাহিদা ইত্যাদি।