ইউক্রেনে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন খবরে এ তথ্য উল্লেখ করে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন চাওয়াকে ঔপনিবেশিক ধারার নিপীড়ন হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের শাসনামলে ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তার ‘বিনিময়ে’ কিয়েভ যেন তার প্রাকৃতিক সম্পদের মজুত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি খনিজ চুক্তি সই নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গত শুক্রবার বৈঠক করেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের শাসনামলে ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তার ‘বিনিময়ে’ কিয়েভ যেন তার প্রাকৃতিক সম্পদের মজুত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ক্রমেই বেশি বিদ্বেষপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের দেওয়া খসড়া প্রস্তাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি দাবি করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের কাছে তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি তার ৫০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বিরল খনিজ সম্পদ দেওয়ার দাবি জানায়।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গত ১ জানুয়ারি এ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই দেশই এ পাইপলাইন দিয়ে কোটি কোটি ইউরো ট্রানজিট ফি আয় করেছে। এমনকি রাশিয়া-ইউক্রেন পুরোদমে যুদ্ধ চলার মধ্যেও প্রথম তিন বছর তাদের এ আয় অব্যাহত ছিল।

শুক্রবারের আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একটি সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, সাম্প্রতিকতম নথিপত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন’ ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে সরবরাহ করা রুশ গ্যাসের পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে।

আরও পড়ুনইউক্রেনের বিরল খনিজ কী, এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কেন চুক্তিতে যাচ্ছে দেশটি২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

গ্যাস পাইপলাইনটি রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সুদজা থেকে ইউক্রেনের উঝঝোরদ শহরে গেছে। শহরটি ইইউ ও স্লোভাকিয়া সীমান্ত থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার (প্রায় ৭৫০ মাইল) দূরে অবস্থিত। পাইপলাইনটি সাবেক সোভিয়েত আমলে তৈরি। এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামো ও জ্বালানি সরবরাহের পথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আরও পড়ুনখনিজ নিয়ে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গত ১ জানুয়ারি এ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুদেশই এ পাইপলাইন দিয়ে কোটি কোটি ইউরো ট্রানজিট ফি আয় করেছে। এমনকি রাশিয়া–ইউক্রেন পুরোদমে যুদ্ধ চলার মধ্যেও প্রথম তিন বছর তাদের এ আয় অব্যাহত ছিল।

আরও পড়ুনইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র২১ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনইউক্রেনের খনিজে ভাগ বসাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত

ইসরায়েলের অবরোধে সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণের অভাবে গাজায় আহত ও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হলেও পাচ্ছে না ওষুধ। ইসরায়েল বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখায় বিভিন্ন হাসপাতালে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পোলিওসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে গাজার মানুষ ‘ধীর-মৃত্যু’র দিকে এগিয়ে চলেছেন। সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।

কথাগুলো বলছিলেন বিশ্বব্যাপী কাজ করা চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের (এমএসএফ) জরুরি বিভাগের সমন্বয়ক মিরিয়াম লারৌসি। গাজার খান ইউনিসের আল মাওয়াসি থেকে আলজাজিরাকে তিনি বলেন, প্রতিদিনই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এতে লোকজন স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিকঠাক করতে যুদ্ধবিরতির কোনো বিকল্প নেই। 

গাজার অন্তত ১০ হাজার মানুষকে জরুরি 
ভিত্তিতে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল শুক্রবার জানায়, গাজায় জরুরি ওষুধের মজুত একেবারেই কম। এতে বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ অস্ত্রোপচার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেন, ‘আমাদের প্রধান তিন জরুরি উপাত্ত– অ্যান্টিবায়োটিক, আইভি ফ্লুইড ও ব্যাগের রক্ত নেই। গত ২ মার্চ ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এ অবস্থায় গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার দক্ষিণ গাজায় অন্তত ১০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে সাত শিশু রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে গাজার উত্তরাংশ। সেখানে গাজা সিটি থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল।

৩৬ হামলায় কেবল নারী-শিশুর মৃত্যু : জাতিসংঘ
গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের চলমান হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, এসব হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলছে, ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন করে গাজার আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে ২২৪টি হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে ৩৬টিতে প্রাণ গেছে কেবল নারী ও শিশুর।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে গৃহদাহ
মিডলইস্ট মনিটর শুক্রবার জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে একটি চিঠিতে সই করে রোষানলে পড়েছেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ও প্রায় ১ হাজার রিজার্ভ সেনা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তাদের বরখাস্ত করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামির। সপ্তাহের শুরুতে গাজায় সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর (আইএএফ) সেনারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখেন। চিফ অব স্টাফ জামির বলেন, সেনাসদস্যরা এ ধরনের কোনো চিঠিতে সই করে আবার চাকরিতে ফিরতে পারেন না। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউক্রেনে গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
  • ৩০ দিনের বেশি আমেরিকায় থাকলে নাম নথিভুক্ত না করলে জরিমানা
  • ৩০ দিনের বেশি সময় আমেরিকায় থাকলে নাম নথিভুক্ত না করলে জরিমানা
  • ধরা পড়ছে না ইলিশ, জেলেদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে
  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
  • আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু
  • আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, লোডশেডিং বাড়তে পারে
  • গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত