ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, চীনের যোদ্ধারা রাশিয়ার হয়ে লড়াই করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে চীনের নাগরিকদের রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

বুধবার ভলোদিমির জেলেনস্কি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দুজন চীনের নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা রাশিয়ার হয়ে লড়াই করছিলেন। আরও বেশ কিছু চীনের নাগরিক রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে নেমেছেন, তাঁদের কাছে এমন প্রমাণ আছে বলে দাবি করেন তিনি।

জেলেনস্কির অভিযোগ, বেইজিংয়ের অনুমতি নিয়েই ওই ব্যক্তিরা রাশিয়ার হয়ে লড়াইয়ে নেমেছেন। সব মিলিয়ে ১৫৫ জন চীনের সেনা রাশিয়ার দলে আছেন বলে তাঁরা খবর পেয়েছেন। তাঁদের নাম ও পাসপোর্টের তথ্যও ইউক্রেনের হাতে আছে বলে জানানো হয়েছে।

চীনের বক্তব্য

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছিল, তারা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। চীনের নাগরিকদের বারবার জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন কোনোভাবেই অন্য কোনো দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ না দেন।

তবে জেলেনস্কির অভিযোগের পর নতুন করে কোনো মন্তব্য করেনি চীনের সরকার।

ইউক্রেনের শরণার্থীদের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেবে না জার্মানি

গত ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে নির্বাচন হয়েছিল। তবে এখনো নতুন সরকার গঠিত হয়নি। সরকার গঠন নিয়ে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) ও সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এসপিডি) মধ্যে আলোচনা চলছে। সেই আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের আর নাগরিক সুযোগ–সুবিধা দেওয়া হবে না। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যে ভাতা দেওয়া হয়, ইউক্রেনের শরণার্থীদেরও সমপরিমাণ ভাতা দেওয়া হবে।

জার্মানির দলগুলো আপাতত একটি জোট সরকারের চুক্তিপত্র তৈরি করছে। চুক্তিপত্র এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সেই চুক্তি আলোচনাতেই নতুন এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

তবে চুক্তিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের নাগরিকদের অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে হবে না। গোটা ইউরোপেই তাঁদের জন্য বিশেষ সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে অভিবাসনের আবেদন না করেই তাঁরা ইউরোপের যেকোনো দেশে থাকার সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুনরাশিয়ায় গিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরির স্বপ্নপূরণ, যুদ্ধের ময়দানে গেল প্রাণ০৩ এপ্রিল ২০২৫

২০২২ সালের ১ জুন থেকে ইউক্রেনের যে নাগরিকেরা জার্মানিতে এসেছেন, তাঁরা নাগরিক সুযোগ–সুবিধা পাচ্ছিলেন, এবার সেই নাগরিক সুবিধা বন্ধ করা হবে বলে চুক্তিপত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জার্মানিতে বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ১২ লাখ শরণার্থী বসবাস করছেন। যুদ্ধ যত দীর্ঘ হচ্ছে, তত বেশি শরণার্থী ইউক্রেনের বিভিন্ন দেশে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

আরও পড়ুনইউক্রেন চুক্তি লঙ্ঘন করে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছে: অভিযোগ রাশিয়ার০৫ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র শ য় র হয় ইউক র ন র শরণ র থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাসের রায় দেন। 

রায়ের আগে বিচারক বলেন, ‘উনার (মোসাদ্দেক আলী ফালু) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলার কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। উনি তো সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। আর তার অবৈধ সম্পদ যদি থাকে, সেটা তো অবরুদ্ধ করতে হতো। সেটাও তো করা হয়নি। সুতরাং এ মামলা থেকে তাকে খালাস দেয়া হলো।’

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমদ আলী সালাম খালাসে তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিন স্ত্রীসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন ফালু। রায়ের পর তিনি হাসিখুশি মেজাজে নেতাকর্মীদের অভিবাদ গ্রহণ করেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। পরে আদালত প্রাঙ্গন ছেড়ে চলে যান।

২০০৭ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর মতিঝিল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানাও আসামি ছিলেন। মামলাটিতে পরের বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।

চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর ফালু ও তার স্ত্রী হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। যার কারণে দীর্ঘদিন মামলার বিচারকাজ বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ফালুর আবেদন খাজির করে দেন এবং স্ত্রীর মামলা গ্রহণ করে অব্যাহতির আদেশ দেন। ফলে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট মামলাটিতে ফালু পলাতক থাকা অবস্থায় চার্জগঠন করেন আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইস্যু করে। নোটিশের প্রেক্ষিতে ফালু ওই বছর ১ মার্চ আইনজীবীর মাধ্যমে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৮৬৬ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ এবং ১০ কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৫১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের তথ্য পায়। 

২০০৪ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে মোসাদ্দেক আলী ফালু ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। পরে আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

ঢাকা/মামুন/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ