রাশিয়াকে ট্রাম্পের হুমকির পর সুর নরম ক্রেমলিনের
Published: 1st, April 2025 GMT
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘খুব রেগে’ আছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসিকে গত রোববার এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়া ও পুতিনকে নিয়ে সুর বদল করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এনবিসির সাংবাদিক ক্রিস্টেন ওয়াকারের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আমি ও রাশিয়া যদি একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারি, আর যদি মনে করি যে এটা রাশিয়ার ভুলের কারণে হয়েছে, তাহলে রাশিয়া থেকে আসা সব জ্বালানি তেলের ওপর দ্বিতীয় ধাপে শুল্ক আরোপ করব।’
ট্রাম্পের এ ক্ষোভ প্রকাশের পর ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনের সঙ্গে কৃষ্ণসাগরের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ চলছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তিতে আগ্রহী রাশিয়া।
রাশিয়ার রাষ্ট্রমালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা তাস জানায়, ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ বলেছেন, কৃষ্ণসাগরে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাজ চলছে। তিনি কৃষ্ণসাগরে নৌ যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করছেন, যা গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পৃথক চুক্তিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন রাজি হয়েছে।
দিন কয়েক আগে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনে জেলেনস্কিকে সরিয়ে একটি সাময়িক প্রশাসনকে ক্ষমতায় আনতে হবে। তারাই যুদ্ধ বন্ধে কাজ করবে এবং দেশটিতে একটি নির্বাচনের আয়োজন করবে। রুশ প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের বিষয়ে ক্রিস্টেন ওয়াকারকে ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের ওপর ‘খুবই রাগান্বিত ও বিরক্ত’ হয়েছেন।
ইউক্রেনের তিন বছরের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন ও রাশিয়া—দুই পক্ষের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেছে তাঁর প্রশাসন। তবে এখনো কোনো অগ্রগতি আসেনি।
এ ছাড়া ইউক্রেনের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির যে যৌথ প্রস্তাব কিয়েভ ও ওয়াশিংটন দিয়েছিল, তা ফিরিয়ে দিয়েছেন পুতিন। এনবিসিকে ট্রাম্প বলেন, তিনি যে রেগে আছেন, তা পুতিন জানেন। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর খুবই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পুতিন যদি সঠিক কাজটা করেন, তাহলে রাগ দ্রুত প্রশমিত হবে।
খনিজ নিয়ে আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানি রাশিয়ার কয়েকটি বিরল খনিজ সম্পদ প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গতকাল সোমবার ক্রেমলিন এ তথ্য জানিয়েছে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছে, বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
লোহাগাড়ায় দুর্ঘটনা: আহত তিনজনের অবস্থা গুরুতর
দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচলেও ঝুঁকিমুক্ত নন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তিনজনের কেউই। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন যুবক ও একজন তরুণী।
বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আঘাত পান তারা। ঘটনার পর উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেক হাসপাতালে আনা হয় তাদের।
পরে তাদের মধ্যে শিশু ও তরুণীকে হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি বিভাগে ও যুবককে ২৬ নম্বর অর্থপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তবে দুপুরের পর যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি দুইজনকে আইসিইউতে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহতদের মধ্যে তরুণীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নারী, দুই জন শিশু ও পাঁচজন পুরুষ।
হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল সমকালকে বলেন, ‘আহত তিনজনের অবস্থায় এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। এরইমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত যুবককে এভারকেয়ারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি দুইজনের অবস্থাও ভালো নয়। তরুণীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তার জ্ঞানের মাত্রার অবস্থা খুব খারাপ। ছোট শিশুটির পায়ের হাঁড়ও ভেঙেছে। তাই তাদেরকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তাদের সেখানে নেওয়া হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় বুধবার হাসপাতালে পাঁচজনকে আনা হয়। এরমধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে বাকি তিনজনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরণের প্রস্তুতি রেখেছি আমরা। এরইমধ্যে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।’