ঢাকা বন বিভাগের উদ্যোগে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় হঠাৎ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার চন্দ্রা রেঞ্জের সিনাবহ ও বাঘাম্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘরবাড়িসহ আড়াই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযানের সময় বন বিভাগ ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

বন বিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরসহ বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ আগস্টের পর বনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বন বিভাগের জমি দখল করে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে অনেকেই দোতলা ভবন, কেউ টিনশেড, আবার কেউ আধা পাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। কয়েক মাস ধরেই বনের লোকজন মাইকিং করে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেননি। অবশেষে রোববার সকালে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় চারটি এক্সকাভেটর দিয়ে উপজেলার সিনাবহ ও বাঘাম্বর এলাকায় ঘরবাড়ি ভাঙা শুরু করা হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আড়াই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

বাঘাম্বর এলাকার মো.

আবুল কালাম বলেন, ‘যাঁরা নতুন ঘর নির্মাণ করেছেন, তাঁদের ঘর ভেঙে দিক। কিন্তু আমরা ১০ থেকে ১২ বছর আগে যে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি, সেই ঘরও ভেঙে দিয়েছে। ঈদের এক দিন আগে হঠাৎ ঘর ভেঙে দেওয়ায় এখন আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।’

একই এলাকার আসমা বেগম বলেন, ‘আমরা ঘরবাড়ি করার সময় বন বিভাগের লোকদের সঙ্গে আলোচনা করেই ঘর তৈরি করেছি। তাঁদের টাকাপয়সাও দিয়েছি। এখন হঠাৎ আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে ঈদের আনন্দ কেড়ে নিল।’

অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বশিরুল আল মামুন, ঢাকা বিভাগের এসিএফ ফাহিম মাসুদ, কালিয়াকৈর রেঞ্জের বিভিন্ন অফিসের বিট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব, আনসার বাহিনী এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সহযোগিতা করেছেন।

ডিএফও বশিরুল আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় ব্যক্তিরা বনের জমি দখল করে স্থাপনা তৈরি করছিলেন। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর দখলের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। তাঁদের নিজেরদের এসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল, কিন্তু সরাননি। বাধ্য হয়ে অভিযান চালিয়ে আড়াই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বনভূমি পুনরুদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র কর মকর ত ঘরব ড় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের রাতে অস্ত্রের মুখে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে অস্ত্রের মুখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম হাকিম (২৫)। তিনি একই উপজেলার টান চারিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলে ভুক্তভুগী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এর আগে, সোমবার দবিাগত রাতে টান চারিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, ঈদের দিন রাতে ছোট সন্তানকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। গভীর রাতে ঘরের জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন হাকিম মিয়া। মামলার আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে। সেই সঙ্গে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে।’’

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

তামাক চুল্লিতে নিয়ে কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’, অভিযুক্ত পলাতক

ঢাকা/রুম্মন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ