ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে ‘ভঙ্গিমাপূর্ণ ও কৌশলী’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তাঁর এ মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। 

উইটকফ বলেন, ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে ‘অতি সরলীকৃত’ ধারণা পোষণ করছেন এবং ‘চার্চিল হওয়ার অভিনয় করছেন’।

সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইটকফ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি তাঁকে খারাপ ব্যক্তি হিসেবে দেখি না। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান।’ তবে উইটকফের কিছু বক্তব্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এদিকে, সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনার আগে কিয়েভে রুশ ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা ‘কিছুটা সফল’ হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তিসংগত আলোচনার মাধ্যমেই এ যুদ্ধের সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, জেলেনস্কি রাশিয়ার অব্যাহত হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, রুশ হামলা এখন ইউক্রেনের ‘প্রতিদিনের বাস্তবতা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রুশ হামলা বন্ধ ও যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য মস্কোর ওপর আরও চাপ প্রয়োজন। ইউক্রেনের নিরাপত্তা জোরদারে আরও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

সিএনএন জানায়, ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে জার্মানি তাদের সামরিক বাহিনী শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়েছে। নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ ঘোষণা করেছেন, দেশটি জার্মান সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করবে। সামরিক খাতে বাজেট বাড়ানোর জন্য সংবিধান সংশোধন করেছে জার্মান সংসদ। যেখানে আগামী ১০ বছরে ৬০০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

পরোক্ষ আলোচনাই চলবে, ওমানে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক

ওমানের মধ্যস্থতায় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকের বিষয়ে ইতিবাচক মত দিয়েছে দু’পক্ষই। শিগগিরই দুই দেশ আবারও আলোচনার টেবিলে বসার কথা জানিয়েছে। তবে ইরান পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা হবে শুধু পরোক্ষভাবে, ওমানের মধ্যস্থতায়। সরাসরি বৈঠকে প্রবল আপত্তি তেহরানের। আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছে দেশটি।

ইরানের স্পষ্ট মতামত, এ আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া নিয়ে। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যাবে না তেহরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাঈল বাকাঈ রোববার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘ওমানের মধ্যস্থতায় আলোচনা পরোক্ষভাবেই চলবে। ভবিষ্যৎ আলোচনার স্থান এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’ আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বৈঠকে শুধুই পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে। অন্য কোনো ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলবে না ইরান।’

শনিবার মাসকাটে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ভেঙে পড়ার পর দেশ দুটির সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ইসরায়েলবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি তেহরানের সমর্থনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করতে পারে। তবে শুরু থেকেই এসব বিষয়ে আলোচনায় অসম্মতি দেখিয়ে আসছে ইরান।

গত শনিবারের আলোচনা উভয় পক্ষই ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। আলোচনা মূলত ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় পরোক্ষভাবে হলেও ইরান জানিয়েছে, পরে আরাগচি ও উইটকফ কয়েক মিনিট সরাসরিও কথা বলেন। ইরানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনা খারাপ যাচ্ছে না। তবে যতক্ষণ কিছু চূড়ান্ত না হয়, সে পর্যন্ত কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ সূত্র: এএফপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুক্তির জন্য ‘প্রস্তুত’ পুতিন, ‘যুদ্ধ শুরুর’ জন্য জেলেনস্কিকে দুষলেন ট্রাম্প
  • ওমানে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক
  • পরোক্ষ আলোচনাই চলবে, ওমানে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক