আমি তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি: নীনার এ কথা শুনে কী বলেছিলেন ভিভ রিচার্ডস
Published: 23rd, March 2025 GMT
ভিভ রিচার্ডস-নীনা গুপ্তা; ক্রিকেট-বলিউডের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রেমকাহিনিটা সম্ভবত তাঁদের দুজনের। সর্বকালের সেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সবচেয়ে বড় তারকা কীভাবে বলিউডের এক উঠতি অভিনেত্রীর প্রেমে মজলেন, কেমন ছিল তাঁদের যুগলজীবন, এ নিয়ে বহু গল্প লেখা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে, ভিভ-নীনাও বিভিন্ন সময় এ নিয়ে টুকটাক কথা বলেছেন সংবাদমাধ্যমে।
অবশেষে ২০২১ সালের জুনে প্রকাশিত হয় নীনা গুপ্তার আত্মজীবনী ‘সাচ কাহো তো’। যেখানে নিজের অভিনেত্রী হয়ে ওঠা, ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার দিনগুলো, বলিউডে প্রযোজকদের সঙ্গে তিক্ত অভিজ্ঞতা, অল্প বয়সে প্রথম বিয়েসহ অনেক কিছু নিয়েই অকপট লিখেছেন নীনা। তবে ক্রিকেটপ্রেমীদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হতে পারে নীনার সেই বইয়ে ‘হাউ আই মেট ভিভিয়ান’ অধ্যায়টা। যেখানে ভারতীয় এই অভিনেত্রী লিখেছেন ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভিভের সন্তানের মা হওয়া নিয়ে। কী লিখেছেন নীনা গুপ্তা
‘বাটওয়ারা’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় জয়পুরের মহারানি আমাদের জন্য একটা পার্টি দিলেন। ওই পার্টিতে আমাদের সিনেমার অনেকে তো ছিলেনই, ছিলেন বলিউডের আরও অনেকে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ও। যাঁদের মধ্যে ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই সময়ের অধিনায়ক ভিভিয়ান রিচার্ডস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল তখন ভারত সফর করছিল। আগের দিনই আমি ওদের একটা ম্যাচ দেখেছি।
আমি বরাবরই ক্রিকেটের পাগল ভক্ত। কলেজে পড়ার সময়ও যদি কোনো ম্যাচ থাকত, আমি ক্লাসে বসে কানে ট্রানজিস্টর রেডিও লাগিয়ে ধারাভাষ্য শুনতাম, স্কার্ফ দিয়ে মাথার চারপাশে মুড়িয়ে সেই রেডিও লুকিয়ে রাখতাম। ভাগ্য ভালো যে বেশির ভাগ ম্যাচই শীতকালে হতো, তাই কেউ আমাকে খুব একটা সন্দেহ করত না।
পার্টির আগের দিনই ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হয়ে গেছে। আমাদের দল সম্ভবত ১ বা ২ রানে হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যখন সবাই আনন্দে চিৎকার করছিল, আমি শুধু ভিভিয়ান রিচার্ডসের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। হারের পরেও লোকটা কী শান্ত ও দৃঢ়! তবে তার চোখে অশ্রু ছিল। স্পষ্ট মনে আছে, জয়ের এত কাছাকাছি এসেও হেরে যাওয়ায় তার যে যন্ত্রণা, সেটা তখন আমিও অনুভব করছিলাম। আমার শুধু মনে হচ্ছিল, কী অসাধারণ মানুষ! লাইভ টেলিভিশনেও লোকটা আবেগ প্রকাশ করতে দ্বিধা করছে না।
ভিভ রিচার্ডস ও নীনা গুপ্তা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ট ইন ড জ
এছাড়াও পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। তারা উপাচার্যকে অভিযোগপত্রের একটি কপি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত আব্দুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তার পোস্টটির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সমালোচনা হয়।
আরো পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ফ্যাসিবাদমুক্ত নববর্ষ
৫ বছর পর কুবিতে নববর্ষ উদযাপন
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী (আব্দুর রহমান, আইন বিভাগ ১৮তম আবর্তন) লাগাতার সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সোমবার (১৪ এপ্রিল) একটি পোস্টে সনাতন ধর্মকে ঘৃণিত ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখোনে ‘হিন্দুধর্ম। ইট'স রিকোয়াইর্স টু বি অ্যাগ্রেসিভলি রেপড, (গালি) ইন আ রুড ওয়ে। (গালি)।’ বলা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, এই বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান এবং ঘৃণিত করে। এ ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজ বা শিক্ষাঙ্গনে মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বর্তমানে ২ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে এমন কোনো মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত নয়, যা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে তাদের দাবি, ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণিত কাজ না করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) এম এ হোসাইন নামের একটি পেইজে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে জীবন্ত ছাগলকে পুড়িয়ে ফেলার একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেটার ক্যাপশন অপশনে লেখা ছিল ‘জনশ্রুতি আছে, পৃথিবীর নিকৃষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একটা নিরীহ জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে আগুনে পুড়ে মারার অধিকার কি কোনো ধর্মে আছে?’
পরবর্তীতে স্ক্রিনশটটি আরো ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারকৃত পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত আবদুর রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখা হয়েছে।
আইন বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজীব বিশ্বাস বলেন, “আব্দুর রহমান যেভাবে ফেসবুকে আমাদের ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ধর্মকে নিয়ে এমনভাবে গালি দিতে পারে? আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, বিগত বছরগুলাতে যেভাবে ধর্মকে অবমাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে, এবারো যেন তার ব্যতিক্রম না ঘটে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদুর রহমান বলেন, “আমি আমার বক্তব্য প্রক্টর অফিসে দিয়েছি।”
আইন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. আলী মোর্শেদ কাজেম বলেন, “আমি এই বিষয়ে অবগত নই। ঘটনা সম্পূর্ণ না জেনে আমি তো কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যেহেতু আইন বিভাগের, সেহেতু আমরা ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি শৃংখলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমি অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে শোকজ করা হবে। তার লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণের পর নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী