Samakal:
2025-03-21@09:35:21 GMT

শবেকদর তালাশ

Published: 20th, March 2025 GMT

শবেকদর তালাশ

মাহে রমজানের শেষ দশক চলছে। শেষ দশকের যে কোনো এক বিজোড় রাত শবেকদরের। এ রাতেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। এটি মহিমান্বিত রাত। যে রাতকে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’ (সুরা কদর, আয়াত-৩)। 
অতএব এই রাতের যে কোনো আমলের সওয়াব টানা হাজার মাস আমল করার মতোই।

রাসুলুল্লাহ (সা.

) পবিত্র রমজানে বিশেষ করে শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ করতেন। এ জন্য তিনি ইতেকাফ করতেন। লাইলাতুল কদর তালাশ করা মানে এই রাতের বিশেষ ফজিলত লাভের আশায় ইবাদতে আত্মমগ্ন থাকা। হাদিস শরিফে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)
মহাগ্রন্থ কোরআনুল কারিম অবতীর্ণ হয়েছে লাইলাতুল কদরে। এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি একে নাজিল করেছি মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন, মহিমান্বিত রাত কী? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সেই রাতে প্রতিটি কাজের জন্য ফেরেশতারা এবং রুহ তাদের প্রতিপালকের আদেশক্রমে অবতীর্ণ হয়। সেই রাতে শান্তিই শান্তি, ফজর হওয়া পর্যন্ত।’ (সুরা কদর: ১-৫)

শবেকদরের ইবাদতে সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। হাদিসে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত জাগবে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি)
শবেকদর পাওয়ার জন্য একটি আমলের বিকল্প নেই। সেটি হলো, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা। তাহলে হাদিস অনুযায়ী শবেকদরের ফজিলত লাভ হবে ইনশাআল্লাহ। কেননা, হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ে, সে যেন সারারাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে।’(সহিহ মুসলিম)
তাই আমাদের দায়িত্ব হবে রমজানের শেষ দশকে অবশ্যই জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা। অন্তত এশা ও ফজর অবশ্যই জামাতে পড়া। তাহলে সারারাত নামাজের সওয়াব পাওয়া যাবে। তবে যারা ইতেকাফ করছেন তারা নিশ্চিতভাবেই শবেকদর লাভ করবেন। ইতেকাফ অবস্থায় কেউ যদি রাতে ঘুমিয়েও থাকে, তবু তাকে ইবাদতকারীদের মধ্যে শামিল করা হবে। তখন শবেকদরের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতে ব্যয় করার ফজিলত অর্জন করবেন। 

হাজার মাসের চেয়ে উত্তম অর্থ, শুধু যে এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম– বিষয়টি এমন নয়। বরং অনেক বেশি বোঝাতেও হাজার শব্দটা ব্যবহার করা হয়। তারপরও আমরা যদি এখানে শুধু এক হাজার মাসই ধরি, এর সময় দাঁড়ায় ৮৩ বছর ৪ মাস। তার মানে, ৮৩ বছর ৪ মাস পর্যন্ত ইবাদত করার যে ফজিলত বা সওয়াব পাওয়া যায়, তা এই এক রাতের ইবাদতের দ্বারাই মহান আল্লাহ প্রদান করে থাকেন। 
শবেকদর কবে– এর সরাসরি উত্তর কোরআন-হাদিসে আসেনি। তাই নবীজি (সা.) রমজানের শেষ দশকে শবেকদর তালাশ করতে বলেছেন। (সহিহ বুখারি) 
হজরত উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ‘লাইলাতুল কদর’-এর ব্যাপারে খবর দিতে বের হলেন। এ সময় দুই মুসলমান ঝগড়া করছিলেন। তখন নবী (সা.) বললেন, “আমি আপনাদের ‘লাইলাতুল কদর’-এর ব্যাপারে অবহিত করতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু অমুক অমুক ব্যক্তি বিবাদে লিপ্ত হওয়ায় তা (সেই জ্ঞান) উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশা করি, উঠিয়ে নেওয়াটা আপনাদের জন্য বেশি ভালো হয়েছে। আপনারা সপ্তম (২৭তম), নবম (২৯তম) এবং পঞ্চম (২৫তম) তারিখে এর সন্ধান করুন।” (সহিহ বুখারি)
মূলত শবেকদরের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ অজানা রাখার পেছনে আল্লাহতায়ালার বিশেষ হেকমত নিহিত। এতে উম্মতের কল্যাণ রয়েছে বলেই নবীজিকে (সা.) তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমজ ন র শ ষ দশক সহ হ ব খ র কদর ত ল শ আল ল হ সওয় ব ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

রোজায় লুজ মোশনের ঝুঁকি এড়াতে করণীয়

রোজায় আমাদের খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আসে। খাওয়া দাওয়া বেশি হলে লুজ মোশন হতে পারে। আর লুজ মোশন হলে শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়।

অধ্যাপক ডা. মোঃ ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘রোজায় অনেকের সকাল বেলায় লুজ-মোশন দেখা দিতে পারে। এতে আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। অল্প স্বল্প লুজ মোশন হলে আপনি রোজা রাখতে পারেন। তবে লুজ মোশন যদি খুব বেশি হয়ে যায় এবং ব্লাড প্রেসার কমে যায় তাহলে রোজা রাখা সম্ভব না।’’
দই: ‍লুজ মোশনের ঝুঁকি এড়াতে খাবার তালিকায় রাখতে পারেন দই। এই দুগ্ধজাত খাবারটিতে রয়েছে উপকারি ব্যাকটেরিয়ারা। যা শরীরে প্রবেশ করে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। সেই সঙ্গে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তবে অতিরিক্ত দই খাওয়া যাবে না, প্রতিদিন ২-৩ কাপ দই খেতে পারেন।
কলা : পেকটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ ফল কলা। কলার সঙ্গে দই খেতে পারেন। 
বেদানা : যে কোনও ধরনের পেটের রোগের চিকিৎসায় বেদানার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই কারণেই লুজ মোশনের ঝুঁকি এড়াতে ইফতারে বেদানা খেতে পারেন। 

আরো পড়ুন:

হাত, পা দুর্বল হওয়া মানেই কি স্ট্রোক?

ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের ১৬ নির্দেশনা

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ