সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নলকূপের মালিকেরা সেচের নির্ধারিত দামের বেশি অর্থ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। সেচ মালিকেরা সেচ বাবদ বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ ভর্তুকি পেলেও সুফল পাচ্ছেন না কৃষক। উল্টো নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে সেচের খরচ বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। বেশি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই সেচ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ে প্রতিবাদও করছেন না তারা। 
উপজেলার আট ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আওতায় ৯৪টি গভীর ও পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ২ হাজার ৩০৭টি অগভীর সেচযন্ত্র রয়েছে। ক্ষুদ্র, প্রান্তিকসহ হাজার হাজার কৃষক বিদ্যুৎচালিত এসব সেচযন্ত্রের মাধ্যমে ফসল আবাদ করে থাকেন। তবে বেশির ভাগ সেচের মালিক বা পরিচালনার দায়িত্বে আছেন এলাকার প্রভাবশালী কৃষকরা। 
কৃষি অফিস ও বিএডিসি সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলায় ২২ হাজার ৫০৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর ৩৫ থেকে ৩৮ শতাংশ জমিতে বিদ্যুৎচালিত সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ হয়ে থাকে। উপজেলা সেচ কমিটি সভা করে সেচের খরচ নির্ধারণ করে দেয়। চলতি বোরো মৌসুমে গভীর-অগভীর সেচযন্ত্রে সেচ সুবিধা পেতে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কোনো সেচ মালিক বেশি টাকা নিয়েছেন এমন অভিযোগ পেলে কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে এ নিয়ম কেবল কাগজে-কলমে। বাস্তবে নানা অজুহাতে সেচ মালিকরা নির্ধারিত দামের দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ টাকা আদায় করেন। 
বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো.

সবুজ সরকার বলেন, সেচে ভর্তুকির যে সুবিধা আছে তার ৮০ শতাংশ পান সেচ মালিক। এছাড়া বিঘাপ্রতি সেচ খরচ বাবদ তাদের ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এ টাকা কমিটি নির্ধারিত টাকার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। 
একই অভিযোগ বারুহাঁস এলাকার কৃষক আলতাফ হোসেন ও ধাপতেঁতুলিয়া এলাকার রবিউল করিমের। তারা বলছেন, বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রে সেচের খরচ বিঘাপ্রতি ৮০০- ৯০০ টাকার বেশি না। অথচ তাদের কাছ থেকে তিনগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে। গভীর ও অগভীর সেচযন্ত্র মালিকরা বাধাহীনভাবে ভর্তুকি সুবিধা ভোগ করছেন। প্রতিবাদ করলেই সেচ বন্ধের হুমকি দেন। তারা জুলুম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও দেখার কেউ নেই।
পশ্চিম তাড়াশের বিদ্যুৎচালিত গভীর সেচযন্ত্রের পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ বিলে সরকারি ভর্তুকি পেলেও সেচযন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, ড্রেন পরিষ্কার, চালক বাবদও যে খরচ হয় তা সেচ মালিককেই বহন করতে হয়। এ কারণে হয়তো সামান্য কিছু টাকা বেশি নেওয়া হয়। কৃষকরা যেভাবে দ্বিগুণ-তিনগুণ বলছেন সেরকম নয়। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি সুইচিং মং মারমা বলেন, সরকার বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। সেই ভর্তুকির টাকা অবশ্যই কৃষককে ছাড় দিয়ে সেচের খরচ নিতে হবে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স চযন ত র র স চ র খরচ ভর ত ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বড়াইগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, একজন নিহত

নাটোরের বড়াইগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে নাজিম উদ্দিন (৫১) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), আরিফুল ইসলাম (৩৮) ও বাবু মিয়া (৪৫) নামে আরও তিনজন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহমেদপুর নওপাড়া এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত নাজিম উদ্দিন নওপাড়া গ্রামের প্রয়াত আলাউদ্দিনের ছেলে। আহতদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কবরস্থানে জমি দান করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নেতা গনি মিয়া ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের দ্বন্দ্ব চলছিল। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। আজ গনি মিয়ার ছেলে ফারুখ হোসেন ও জামাতা গুরুদাসপুর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা ফারুখ হোসেনের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের কথাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে গনি মিয়ার ছেলে ফারুখ হোসেন নজিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে। তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে জাহাঙ্গীর আলম, আরিফুল ইসলাম ও বাবু মিয়াকে আঘাত করলে তারাও আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নজীম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নজিম উদ্দিনের ভাই দুলাল উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগে গনি মিয়ার বাবা গোরস্থানে জমি দান করেন। গনি মিয়া সেই জমি অন্য লোকের কাছে বিক্রি করেন। একটি ধর্মীও প্রতিষ্ঠানে জমি দানের কারনে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

এ ব্যাপারে গনী মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার তারা আমার ছেলের ওমর ফারুখকে মারপিট করে। নিজেরা মারামারি করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নাজিমুদ্দিন নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টিতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ