পুতিন সম্ভবত ইউক্রেন থেকে যা চাইছেন, তা–ই পাবেন
Published: 20th, March 2025 GMT
পশ্চিমা নেতাদের জন্য এই যুদ্ধ থেকে একটি বড় শিক্ষা নেওয়ার আছে। গোটা মানবজাতিকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে, এমন কোনো পরমাণু শক্তিধর দেশকে সামরিকভাবে পরাজিত করা সম্ভব নয়। রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ‘সফট পাওয়ার’ বা কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব। এই হাতিয়ার পশ্চিমারা শীতল যুদ্ধের সময় অনেক সফলভাবে ব্যবহার করেছিল।
ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়ার সংস্কৃতি ও অর্থনীতি ইউরোপের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তা ভবিষ্যতেও থাকবে। ইউরোপ মেনে নিক বা না নিক, রাশিয়া নিজেকে ইউরোপীয় সমাজের অংশ বলেই মনে করে। এই বাস্তবতা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য এক কৌশলগত সুযোগ তৈরি করে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে রাশিয়াকে দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাবিত করলে বরং লাভ বেশি। রাশিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি কমানোর জন্য তা পশ্চিমাদের প্রক্সি যুদ্ধের চেয়ে ভালো হবে বলেই মনে হয়।
এ ছাড়া ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোতেও পরিবর্তন চাইবেন পুতিন। বিশেষ করে, ইউক্রেনের প্রধান গোয়েন্দা দপ্তর ও নিরাপত্তা সংস্থার কিছু শাখা থেকে পশ্চিমা প্রভাব কমানোর দাবি তিনি তুলতে পারেন।
রাশিয়াও ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ রাখতে রাজি হয়েছে। তবে তারা পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগে আরও আলোচনার পক্ষে। মস্কো আগেই বলেছে, যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন ও লঙ্ঘন ঠেকানোর নিশ্চয়তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ রয়েছে।
যুদ্ধের ময়দানে এখন রাশিয়া আছে সুবিধাজনক অবস্থানে। তাই তারা চূড়ান্ত চুক্তির কাঠামো ঠিক না করে কোনো সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। তবে ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের পর রাশিয়ান কর্মকর্তারা শান্তিচুক্তি নিয়ে আশাবাদী।
যদি যুদ্ধবিরতি এগিয়ে যায়, প্রশ্ন হচ্ছে, পুতিন কি তাঁর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের সময় করা সব দাবি আদায় করতে পারবেন?
পুতিন জোর দেবেন যে কিয়েভ ও ন্যাটোকে ২০০৮ সালের বুখারেস্ট সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে হবে। সেই সম্মেলনে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইউরোপীয় মিত্রদের ওপর এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে এবং পরে জর্জিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাতের পথ তৈরি হয়।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোন বিপদ না আসা ও ন্যাটোকে রাশিয়ার সীমান্ত থেকে দূরে রাখা ছাড়াও পুতিনের আরেকটি লক্ষ্য রয়েছে। আর তা হলো রাশিয়াকে আবারও বিশ্বমঞ্চে পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।এখন সব পক্ষই মোটামুটি বোঝে, বাস্তবসম্মত শান্তিচুক্তির কাঠামো কী হতে পারে। রাশিয়া বারবার বলেছে, এটি হবে ২০২২ সালের বসন্তে ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনায় গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে। সেখানে ছিল ইউক্রেনের সামরিক নিরপেক্ষতা, সেনাবাহিনীর আকার সীমিত রাখা এবং ইউক্রেনে বসবাসরত রুশভাষীদের অধিকার সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকার কথা। তবে তখন ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ইউক্রেন চুক্তি থেকে সরে এসেছিল।
এর মধ্যে তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলেছে। মস্কো এখন চায় যে কিয়েভ স্বীকার করুক, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলগুলো রাশিয়ার অংশ। যদিও রাশিয়া এখনো পুরোপুরি এসব অঞ্চল দখল করতে পারেনি। তবে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করেছে। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান কিছুটা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কি জানিয়েছেন, আলোচনায় জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎও স্থান পাবে। এটি বর্তমানে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। যদি রাশিয়া এই আলোচনার অংশ হয়, তাহলে এর মানে দাঁড়াবে যে তারা দখল করা অঞ্চলের অংশগুলো নিজেদের দাবি থেকে সরতে পারে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ টেলিফোন আলাপের পর মনে হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের দিকে যাচ্ছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে জেদ্দায় আলোচনা হয়েছিল।
ট্রাম্প শান্তিচুক্তির পক্ষে কাজ করছেন। মস্কো ও কিয়েভ দুই পক্ষই তাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে তাদের অবস্থান এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
ওয়াশিংটনের প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউক্রেন ৩০ দিনের জন্য শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এরপর শান্তি আলোচনা হবে। ইউক্রেন আগে থেকেই যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনায় যেতে চায়নি। তবে আরও ভূখণ্ড হারানোর আশঙ্কা, ক্ষয়ক্ষতি ও সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারানোর ভয়ে তারা এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়ে আলোচনা ইতিবাচক সংকেত দিচ্ছে যে পশ্চিমা দেশগুলো ও ইউক্রেন এখন বাস্তবসম্মত সমঝোতার দিকে এগোচ্ছে। আগে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স শান্তিরক্ষার নামে ন্যাটোর সেনা মোতায়েনের অবাস্তব দাবি করছিল।
পুতিনের যুক্তি বোঝার জন্য এটা জানা দরকার যে তিনি মূলত ভূখণ্ড দখলের জন্য লড়ছেন না। তাঁর কাছে ইউক্রেনে এই পূর্ণাঙ্গ হামলা এলে এক শাস্তি। ২০১৫-১৬ সালের মিনস্ক চুক্তি অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলগুলো ইউক্রেনের অধীনে থাকার কথা ছিল। কিন্তু ইউক্রেন সেটি বাস্তবায়ন করেনি। পুতিন মনে করেন, ইউক্রেন যখন ২০২২ সালের ইস্তাম্বুল চুক্তি থেকেও সরে আসে, তখন রাশিয়া এই চার অঞ্চলকে নিজের সঙ্গে সংযুক্ত করে ইউক্রেনকে শাস্তি দিয়েছে।
আরও পড়ুনপুতিন এবার ট্রাম্পকে লেনিন পদক দেবেন!১০ মার্চ ২০২৫পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিনিময়ে অন্য কোনো ভূখণ্ড বা রাজনৈতিক সমঝোতা হতে পারে। বিশেষ করে, রুশভাষী জনগণের অধিকার বা মস্কো-সমর্থিত ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স চার্চের স্বীকৃতি–সংক্রান্ত কোনো চুক্তি হতে পারে। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা কাঠামোয় ন্যাটোর স্থাপনা বা প্রভাব রাখা নিয়ে পুতিন কোনো রকম ছাড় দেবেন না।
এই সংঘাতের একটা মূল কারণ আছে। পশ্চিমা বিশ্ব ১৯৯০-এর দশকে নতুন গঠিত গণতান্ত্রিক রাশিয়াকে গ্রহণ না করে মোকাবিলা করার পথ বেছে নিয়েছিল। তবে আপাতত, পুতিন শুধু ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে সন্তুষ্ট হবেন না। তিনি চাইবেন, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে থাকা সব ন্যাটো স্থাপনা যেন সরিয়ে ফেলা হয়। এর মধ্যে আছে সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র, সরবরাহ সুবিধা এবং সিআইএর নজরদারি কেন্দ্রগুলো।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসা বার্তা বিশ্লেষণ করলে মনে হচ্ছে, রাশিয়ার এই চাওয়াগুলো বাস্তবায়িত হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়েও রাজি হতে পারে। অন্যদিকে ইউক্রেন ইঙ্গিত দিয়েছে যে পশ্চিমা দেশগুলোতে আটকে রাখা রাশিয়ার ৩০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ইউক্রেনের যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। রাশিয়া এই অর্থ ইতিমধ্যেই আর ফেরত পাবে না বলে ধরে নিয়েছে। সম্ভবত এই পদক্ষেপকে তারা সদিচ্ছার নিদর্শন হিসেবে দেখাতে চায়, যাতে ইউক্রেনের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক কিছুটা হলেও মেরামত করা সম্ভব হয়।
এসব আদায় করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই পুতিনের মনে হবে যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সহিংস যুদ্ধ শুরু করার সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত ছিল। ইউক্রেন সামাজিক, জাতিগত, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলা করে তিনি যে যুদ্ধাপরাধী হয়েছেন, তখন তিনি তা অগ্রাহ্য করতে পারবেন।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোন বিপদ না আসা ও ন্যাটোকে রাশিয়ার সীমান্ত থেকে দূরে রাখা ছাড়াও পুতিনের আরেকটি লক্ষ্য রয়েছে। আর তা হলো রাশিয়াকে আবারও বিশ্বমঞ্চে পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
পশ্চিমা নেতাদের জন্য এই যুদ্ধ থেকে একটি বড় শিক্ষা নেওয়ার আছে। গোটা মানবজাতিকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে, এমন কোনো পরমাণু শক্তিধর দেশকে সামরিকভাবে পরাজিত করা সম্ভব নয়। রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ‘সফট পাওয়ার’ বা কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব। এই হাতিয়ার পশ্চিমারা শীতল যুদ্ধের সময় অনেক সফলভাবে ব্যবহার করেছিল।
ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়ার সংস্কৃতি ও অর্থনীতি ইউরোপের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তা ভবিষ্যতেও থাকবে। ইউরোপ মেনে নিক বা না নিক, রাশিয়া নিজেকে ইউরোপীয় সমাজের অংশ বলেই মনে করে। এই বাস্তবতা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য এক কৌশলগত সুযোগ তৈরি করে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে রাশিয়াকে দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাবিত করলে বরং লাভ বেশি। রাশিয়ার পক্ষ থেকে হুমকি কমানোর জন্য তা পশ্চিমাদের প্রক্সি যুদ্ধের চেয়ে ভালো হবে বলেই মনে হয়।
লেওনিদ রাগোজিন লাটভিয়ার সাংবাদিক
আল জাজিরা থেকে নেওয়া ইংরেজির অনুবাদ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ন র জন য র ওপর ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পদ্মা ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার ‘টাইম লোন’ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তার অপব্যবহার ও অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন, ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম, পরিচালক ফারহানা মোনেম এবং পদ্মা ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান করপোরেট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম।
এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালে পদ্মা ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আবদুল মোনেম লিমিটেডের নামে ছয় মাস মেয়াদি ৫ কোটি টাকার একটি ‘টাইম লোন’ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঋণের শর্ত ভঙ্গ করে এ অর্থ ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার না করে অন্য ঋণের দায় মেটাতে ব্যয় করেন। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আবদুল মোনেম লিমিটেড ২০২২ সালের ২৯ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় একটি শর্ট নোটিশ ডিপোজিট (SND) হিসাব খুলে ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। অথচ এর আগেই ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ২৫ কোটি টাকার কম্পোজিট ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৮৪তম সভায় এ ঋণ অনুমোদন পায়। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ২০ কোটি টাকার এলসি ও ৫ কোটি টাকার টাইম লোনসহ মোট ২৫ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
এরপর ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর আরও একবার ৫ কোটি টাকার ছয় মাস মেয়াদি টাইম লোনের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ৫৫তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় (২৭ ডিসেম্বর) তা অনুমোদিত হয় এবং ২৮ ডিসেম্বর তা বিতরণ করা হয়। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, অর্থটি গুঁড়াদুধ, কাঁচামাল, প্যাকেজিং উপকরণ ও যন্ত্রাংশ কেনার মাধ্যমে আইসক্রিম ইউনিট চালু রাখতে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এই অর্থ অন্য খাতে স্থানান্তর করে অন্য ঋণের দায় পরিশোধে ব্যবহার করা হয়। ঋণের নির্ধারিত পরিশোধের সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের জুন, তবে গ্রাহক তা সময়মতো পরিশোধ করেননি এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
দুদকের অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনটি সন্দেহজনক নগদ লেনদেনের মাধ্যমে ঋণের অর্থ পরিশোধ করে ঋণটি সমন্বয় করা হয়। এজাহারে আরও বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু না হলে এই অর্থ আত্মসাতের প্রকৃত সম্ভাবনা ছিল।