হলে আসন বরাদ্দের দাবিতে বাকৃবি ক্যাম্পাসে সড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের
Published: 18th, March 2025 GMT
দ্বিতীয় বর্ষে উঠলেও গণরুমেই দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলের শিক্ষার্থীরা। কক্ষ বরাদ্দের দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হলের সামনের সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। রাত ৯টায়ও চলছিল অবরোধ।
অবরোধ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘গণরুম নাকি জেল, প্রশাসনের নাকে তেল’, ‘হলে হলে বৈষম্য, চলবে না চলবে না’, ‘সিঙ্গেল বেডে দুইজন করে, থাকব না থাকব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব গণরুম থেকে সরিয়ে তাঁদের হলের নির্দিষ্ট কক্ষে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে এক বেডে (শয্যা) দুজন করে থাকতে হচ্ছে। প্রশাসন যদি কক্ষ বরাদ্দে দেরি করে, অন্তত তখন পর্যন্ত এক বেডে একজন থাকার সুযোগ করে দিতে হবে।
সুলতানা রাজিয়া হলের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বর্ষের ১২৬ জন শিক্ষার্থী চারটি গণরুমে থাকি। সিঙ্গেল বেডেও দুজন করে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ১২৬ জনের জন্য মাত্র চারটি বাথরুম। দেড় বছর ধরে এই অমানবিক অবস্থায় আছি। আর পারছি না।’ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হল প্রাধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার কাছে পাঠালেন। উপদেষ্টা আবার জানালেন, তারও কিছু করার নেই। তাহলে আমরা যাব কোথায়? নিজেদের দাবি আদায় করতে আমরা এখন আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে জানার জন্য সুলতানা রাজিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে পুতিনের সম্মতি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ফোনালাপ করেছেন। ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি এবং যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেছেন তারা। উভয় নেতাই এই সংঘাতের সমাপ্তি টানতে স্থায়ী শান্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন। কথোপকথনে ৩০ দিনের জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন পুতিন। ফোনালাপ শেষে এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীকে এ-সম্পর্কিত আদেশও দিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ট্রাম্পের প্রস্তাবেও গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন।
গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আলাপ। ফেনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার ৩০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে মনে করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে ইউক্রেন এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল। আলোচনায় পুতিন এই যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ এবং ওই সময়ে ইউক্রেনের সেনা সংগ্রহ ও পুনরায় সশস্ত্র হওয়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উত্থাপন করেছেন। পুতিন এ সময় বলেছেন, সংঘাতের সমাধান সমন্বিত, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থ ও যুদ্ধের মূল কারণগুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফোনালাপে দুই নেতা উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই এই যুদ্ধে প্রচুর সম্পদ ও প্রাণ হারিয়েছে, যা তাদের জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত ছিল। এই সংঘাত কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না এবং এটি বহু আগেই আন্তরিক ও সদিচ্ছাপূর্ণ শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত ছিল। তারা কৌশলগত অস্ত্রের বিস্তার এবং ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বন্ধ করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দুই নেতা একমত হয়েছেন, ইরান কখনোই এমন অবস্থানে থাকা উচিত নয়, যাতে তারা ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উভয় নেতা বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উন্নত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৃহৎ অর্থনৈতিক চুক্তি এবং ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জিত হবে, যখন শান্তি নিশ্চিত হবে।
পরে ক্রেমলিনও একটি বিবৃতি দিয়ে জ্বালানি অবকাঠামো সম্পর্কিত যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করে। এতে বলা হয়েছে, আলোচনায় ট্রাম্প প্রস্তাব করেন ৩০ দিনের জন্য সংঘর্ষে থাকা পক্ষগুলোকে জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত থেকে পারস্পরিকভাবে বিরত থাকতে হবে। পুতিন এই উদ্যোগের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেন এবং রুশ সেনাবাহিনীকে তা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কৃষ্ণসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে ট্রাম্পের একটি সুপরিচিত উদ্যোগ বাস্তবায়নের প্রস্তাবেও গঠনমূলকভাবে সাড়া দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। উভয় নেতাই এই ধরনের চুক্তির সুনির্দিষ্ট বিবরণ আরও বিস্তারিত আলোচনা শুরু করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সংঘাতের উত্তেজনা কমাতে এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে এর সমাধান খুঁজতে বিদেশি সামরিক সহায়তা ও কিয়েভকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি।
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা মঙ্গলবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে কিয়েভ বাধা নয়। তিনি বিশ্বাস করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে তারা ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে পারবেন।