রাশিয়া-ইউক্রেনের পাল্টা বিমান হামলা চলছেই
Published: 16th, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতির কথোপকথন নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা থাকলেও, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ময়দানে তার কোনো চিহ্নের দেখা মিলছে না মোটেই। পরস্পরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এসব হামলায় বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংসের পাশাপাশি হচ্ছে প্রাণহানিও। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করেন তিনি। তবে নির্দিষ্ট কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ না হলে রুশ বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাবে। পুতিনের এ মন্তব্যের পর থেকেই ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে উভয় পক্ষ।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট ৩১টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার ড্রোন দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হেনেছে এবং কিয়েভের আশপাশে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে পরবর্তী করণীয় নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করেছে বলে রোববার জানিয়েছে ক্রেমলিন। তারা জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে ফোন করে গত বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা মস্কোর প্রতি ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র চলতি সপ্তাহে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দেয়, যা ইউক্রেন গ্রহণ করে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনও কোনো সুস্পষ্ট জবাব দেননি। এ বিষয়ে শনিবার জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি না দিয়ে পুতিন শুধু ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নয়, ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মস্কো যুদ্ধ শেষ না করার পথ খুঁজছে।
এ ছাড়া ট্রাম্পের আকস্মিক অবস্থান পরিবর্তনে উদ্বেগ বেড়েছে ইউরোপে। এমনকি সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিষয়েও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এমআরটি পুলিশ-মেট্রো কর্মচারীদের হাতাহাতি, ট্রেন বন্ধের হুঁশিয়ারি
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মীকে এমআরটি পুলিশ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে অভিযোগ করে বিচার দাবি করেছে মেট্রোরেলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী দায়ী পুলিশ সদস্যদের একদিনের মধ্যে স্থায়ী বরখাস্ত না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি তথা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে ১৭ মার্চ সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
রোববার রাত দুইটার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মেট্রোরেলের কর্মীরা। ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো, এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং পরিদর্শক রঞ্জিত, কন্সটেবল শাস্তি দিতে হবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এমআরটি পুলিশ বিলোপ করে মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় নিজস্ব বাহিনী গঠন করতে হবে। স্টেশনে দায়িত্ব পালন করা মেট্রো কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে পারবে না। আহত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একাধিক কর্মী জানান, ১৭ মার্চ সকাল থেকে ট্রেন চালানো হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে দুজন মহিলা পরিচয়পত্র না দেখিয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে, স্টেশনের সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। নির্ধারিত পোশাক পরিহিত না হওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে পুলিশের এপিবিএন দুইজন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে, তা না লাগিয়ে চলে যান। মেট্রোর কর্মীরা কারণ জানতে চাইলে, তারা এবং কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে তর্কে জড়ান। কর্মরত কর্মীর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন কর্মীকে এমআরটি পুলিশ বক্সে তুলে নিয়ে মারধর করে। এছাড়াও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে উপস্থিত অন্যান্য কর্মী ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে।