ট্রাম্পের অনুরোধের পর ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান পুতিনের
Published: 15th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনার’ জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেছেন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) ট্রাম্পের এই অনুরোধের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কুরস্ক অঞ্চলে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
পুতিন বলেছেন, “কিয়েভ যদি কুরস্ক অঞ্চলে থাকা সেনাদের আত্মসমপর্ণের নিদের্শ দেয়, তাহলে রাশিয়া তাদের জীবন রক্ষা করবে।”
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে: ইউক্রেন
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরিকল্পনা জমা দেবে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থান ‘শক্তিশালী’ দাবি করে আসলেও, শুক্রবার তিনি ওই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ বলে বর্ণনা করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে হাজার হাজার ইউক্রেনীয়দের জীবন রক্ষা করতে বলেছেন। যারা ‘সম্পূর্ণরূপে ঘেরা’ এবং ‘দুর্বল’ বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করেছি যে, তাদের জীবন রক্ষা করা হোক। এটি একটি ভয়াবহ গণহত্যা হবে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেখা যায়নি।”
শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন তার নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের আবেদন পড়েছেন এবং মানবিক বিবেচনা বিবেচনায় নেওয়ার জন্য ট্রাম্পের আহ্বান বুঝতে পেরেছেন।
পুতিন বলেন, “এই প্রসঙ্গে, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে যদি (ইউক্রেনীয় সেনারা) অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইন এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের আইন অনুসারে তাদের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে এবং তাদের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা হবে।”
রুশ প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্টের আবেদন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য, ইউক্রেনের সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে তার সামরিক ইউনিটগুলোকে অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণের জন্য একটি অনুরূপ আদেশ প্রয়োজন।”
ইউক্রেন গত বছরের আগস্টে সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার কুরস্কে অভিযান শুরু করে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ায় কোনো বিদেশি সেনাবাহিনীর এটিই সবচেয়ে বড় অভিযান। তাই মস্কোও পাল্টা কঠোর জবাব দিতে শুরু করে।
কুরস্কে রাশিয়ার পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনের দখল করা বেশির ভাগ অঞ্চল সাম্প্রতিক সময়ে পুনরুদ্ধার করে নিয়েছেন পুতিনের সেনারা। আর এ বিষয়টি সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মস্কোর ওপর কিয়েভের দর-কষাকষির সুযোগ কেড়ে নিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের পরই পুতিনকে ‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনার’ জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে আলোচনাকে ‘খুব ভালো এবং ফলপ্রসূ’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, “এই ভয়াবহ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ অবশেষে শেষ হওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।”
ইউক্রেন ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তবে পুতিন মার্কিন প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এর মধ্যে আরো কিছু বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পের বিশেষ দূতের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সম্পর্কে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে টেলিফোনে আলাপ হবে। তবে কবে এই আলাপ হবে তা জানানো হয়নি।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ দ র জ বন র ইউক র ন র ইউক র ন য র ইউক র ন ইউক র ন য় শ ক রব র ধ র পর বল ছ ন অন র ধ
এছাড়াও পড়ুন:
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামিন পেলেন এনসিসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত জামিন পেলেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি এনসিসি (ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন। আজ বুধবার তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে দুই দফা শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে তোফাজ্জলের আইনজীবী মো. জামিল হক জামিন আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আবেদনে প্রয়োজনীয় নথিপত্রের ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল বলেন, এই আসামি দীর্ঘ পলাতক। জেলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়াই আসামিকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তখন ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীকে দুই ঘণ্টার মধ্যে কাগজপত্র নিয়ে আসার সময় দেন।
দুই ঘণ্টা পর আজ বেলা তিনটার দিকে আবার ট্রাইব্যুনাল বসে। তখন শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন। এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৩ জুলাই। সেই সময় পর্যন্ত তোফাজ্জল হোসেনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় ২০১৭ সালে ট্রাইব্যুনালে তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে বিবিধ মামলা (মিস কেস) হয়। ওই বছরই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তখন থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিন পেলেন।