বিশ্বের ৪৩টি দেশে বিভিন্ন মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত ও অভ্যন্তরীণ মেমোর বরাত দিয়ে শনিবার (১৫ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।  

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এবারের এই নিষেধাজ্ঞা তার প্রথম মেয়াদে আরোপিত বিধিনিষেধের চেয়েও ব্যাপক হতে পারে।

নিউইয়র্ক টাইমস ৪৩টি দেশের কথা উল্লেখ করলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ৪১টি দেশ পড়তে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করলো যুক্তরাষ্ট্র

গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত ট্রাম্পের

খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাওয়া এসব দেশকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। রয়টার্স বলছে, প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই তালিকায় রয়েছে ১০টি দেশ। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া। 

তবে নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচ দেশ ছাড়াও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভুটান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে পাঁচটি দেশ। ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, দক্ষিণ সুদানের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এতে করে এসব দেশের পর্যটক, শিক্ষার্থীর ওপর প্রভাব পড়বে। 

তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই ভাগে আরও থাকছে বেলারুশ, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন ও তুর্কমিনিস্থান।

এ ছাড়া তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে। রয়টার্স বলছে, এই ধাপে রয়েছে ২৬টি দেশ এবং নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এই তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দেশের নাগরিকদের মার্কিন ভিসা আংশিকভাবে স্থগিত করা হতে পারে। তবে দেশগুলো যদি ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ঘাটতি দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হবে। 

এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। এটি এখনো মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সম্মতিও প্রয়োজন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন উইয়র ক ট ইমস ভ রমণ ন ষ ধ জ ঞ রয়ট র স এসব দ শ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলের মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কের আদালতের বাইরে শত শত মানুষের বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার এই মেয়াদ বাড়ান যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক। এদিন শুনানি চলাকালে নিউইয়র্কের আদালতের বাইরে শত শত মানুষ খলিলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন খলিল। গত রোববার তাঁকে গ্রেপ্তার করেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার বিরুদ্ধে গত সোমবার সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেন ডিস্ট্রিক্ট জজ জেসি ফারম্যান। তিনি গতকাল শুনানির পর একটি লিখিত আদেশে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ান।

খলিলকে গ্রেপ্তার করাটা অসাংবিধানিক কি না, তা বিবেচনা করার জন্য আরও সময় নেওয়ার লক্ষ্যে বিচারক এমন আদেশ দিয়েছেন।

গতকাল নিউইয়র্ক শহরের আদালতকক্ষে শুনানি চলার সময় বাইরে খলিলের মুক্তির দাবিতে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন। তাঁরা মুহুর্মুহু স্লোগান দেন, ‘মাহমুদ খলিলকে এখনই মুক্তি দিন।’

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের একটি নথি দেখেছে রয়টার্স। নথিটির বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী খলিলকে একটি আইনি বিধানের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অভিবাসীদের কারও উপস্থিতিকে যদি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হচ্ছে না বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, তাহলে তাঁকে বিতাড়িত করার কথা এই বিধানে বলা আছে।

গতকাল আদালতে খলিলের আইনজীবী রামজি কাসেম বলেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হওয়ায় তাঁর মক্কেলকে শনাক্ত করে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

খলিলকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমে নিউ জার্সিতে আটক রাখা হয়। পরে তাঁকে লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালতের সবশেষ আদেশের ফলে খলিল সম্ভবত আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত লুইজিয়ানার আটককেন্দ্রেই আটকাবস্থায় থাকবেন। তাঁর আইনজীবীরা চান, তাঁকে নিউইয়র্কে ফিরিয়ে আনা হোক। তাঁকে আটকাবস্থা থেকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হোক।

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত খলিলের স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক। খলিল ২০২২ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি গত বছর স্থায়ী বাসিন্দা হন।

গতকাল আদালতের সংক্ষিপ্ত শুনানিতে আইনজীবী কাসেম বলেন, লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে তাঁর মক্কেল আইনজীবী দলের সঙ্গে ফোনে মাত্র একবার কথা বলতে পেরেছেন। কিন্তু কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফোনের কথোপকথন সরকারি কর্তৃপক্ষ রেকর্ড করেছে, নজরদারি চালিয়েছে।

খলিলকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট। সংস্থাটি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশে তারা খলিলের গ্রিন কার্ড বাতিল করার পরিকল্পনা করেছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার১০ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পোশাক খাতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের
  • ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলের প্রতি সংহতি জানিয়ে ট্রাম্প টাওয়ারে মার্কিন ইহুদিরা, গ্রেপ্তার ৯৮
  • ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের সংগঠক গ্রিনকার্ডধারী খলিলকে কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন করতে পারবেন ট্রাম্প
  • ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী খলিলের মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কের আদালতের বাইরে শত শত মানুষের বিক্ষোভ