আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। ক্ষমা করার নানা অজুহাত খোঁজেন। তাঁর সুন্দরতম গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে ক্ষমা সম্পর্কিত অনেক নাম রয়েছে।

আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে, তার অনেকগুলোর মাধ্যমে তাঁর ক্ষমা করার গুণ প্রমাণিত হয়। আল্লাহ তওবা, ইসতিগফার, ইমান, নেক আমল, তাঁর ইবাদতে ইহসান, তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া, তাঁর দয়া কামনা করা ও আল্লাহর ব্যাপারে ভালো ধারণা করা ইত্যাদি মাগফিরাত লাভের মাধ্যম। রমজানে আল্লাহর ক্ষমা পেলে ইহকাল ও পরকালে সফলতা লাভ করা যাবে। তেমন কয়েকটি নাম তুলে ধরা হলো।

১.

আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম ‘আলগাফুর’। গাফুর অর্থ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। গাফুর তিনি, যিনি সব সময় গুনাহ মাফ করেন। যাঁরাই তওবা করেন, সবার তওবা কবুল করেন। আল্লাহ বলেন, ওরা (যারা সৎকাজ করে) গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকে। কেউ ছোটখাটো দোষ করলে তোমার প্রতিপালকের তো ক্ষমার শেষ নেই। আল্লাহ তোমাদের সম্বন্ধে ভালো করেই জানেন (তখন থেকে) যখন তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছিলেন মাটি থেকে ও যখন তোমরা মায়ের গর্ভে ছিলে ভ্রূণ হয়ে। সুতরাং তোমরা নিজেদের বড় পবিত্র ভেবো না; কে সংযমী, তা তিনিই ভালো জানেন।’ (সুরা নজম, আয়াত: ৩২)

আরও পড়ুনআজানের ফজিলত০৮ মার্চ ২০২৪

হাদিসে এসেছে, আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান, যদি তোমরা কেউ পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করে মিলিত হও, তাহলে আমি পৃথিবী সমপরিমাণ গুনাহও ক্ষমা করে দেব।’

২. আল্লাহর আরেকটি নাম ‘আলগাফফার’। গাফফার অর্থ অতি ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাশীল। গাফফার তিনি, যিনি সব সময় ক্ষমাকারী ও গুনাহ মার্জনাকারী হিসেবে সুপরিচিত। সবাই তাঁর ক্ষমা ও মার্জনার প্রতি মুখাপেক্ষী ও নিরুপায়; যেমনিভাবে সবাই তাঁর রহমত ও দানের প্রতি নিরুপায়। যাঁরা ক্ষমা ও মার্জনাকারী আমল করবেন, তাঁদের তিনি ক্ষমা ও মার্জনা করবেন বলে ওয়াদা করেছেন।

কোরআনে আছে আমি অবশ্যই তার জন্য ক্ষমাশীল যে অনুতাপ করে, বিশ্বাস করে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচলিত থাকে। (সুরা তাহা, আয়াত: ৮২)

আরও পড়ুনসাহাবি আবু উবাইদা (রা.)–র উপদেশ০৬ মার্চ ২০২৪

৩. আল্লাহর একটি নাম ‘আততাওয়াব’। তাওয়াব অর্থ তওবা কবুলকারী, ক্ষমাকারী। আল্লাহ বলেন, তারপর আদম তার প্রতিপালকের কাছ থেকে কিছু বাণী পেল। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষমাপরবশ হলেন। তিনি তো ক্ষমাপরবশ, পরম দয়ালু। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩৭)

ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘তাওয়াব যিনি সব সময় তওবাকারীর তওবা কবুল করেন, আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তনকারীকে ক্ষমা করেন।’

যাঁরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করেন, তিনি তাঁদের তওবা কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন। বান্দার ব্যাপারে আল্লাহর তওবা কবুল করা দুই ধরনের। প্রথমত, তিনি তাঁর বান্দার অন্তরে তাঁর কাছে ফিরে আসার তওবার মনোভাব ঢেলে দেন। ফলে বান্দা তওবা ও তওবার শর্তাবলি পালনের মাধ্যমে গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে, সে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে, ওই কাজে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় করে এবং আল্লাহ তাকে খারাপ কাজকে ভালো কাজে বদলে দেন।

দ্বিতীয়ত, বান্দার তওবা গ্রহণ করেন এবং বান্দা যদি খাঁটি তওবা করে, তাহলে তিনি তার আগের গুনাহ মাফ করে দেন। খাঁটি তওবার কারণে আগের গুনাহ মাফ হওয়া অত্যাবশ্যকীয়।

আরও পড়ুনআল্লাহর ভয়ে কাতর থাকা ০৭ মার্চ ২০২৪

৪. আল্লাহর একটি নাম ‘আল আফুউ’। আফুউ অর্থ শাস্তি মওকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী, পাপ মোচনকারী। আল্লাহ বলেন, কথা এ-ই। আর তাকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছিল সেভাবে কেউ প্রতিশোধ নিলে ও আবার তার ওপর অন্যায় করা হলে আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে সাহায্য করবেন। আল্লাহ তো পাপ মোচন করেন, ক্ষমা করেন। (সুরা হজ: ৬০)

আল্লাহ সহনশীল ও ক্ষমাশীল। তাঁর রয়েছে পূর্ণ ধৈর্য ও সহনশীলতা। অপরাধীকে সুযোগ দেওয়া ও তাৎক্ষণিক শাস্তি না দেওয়া, যাতে তারা তওবা করতে পারে। আল্লাহর ক্ষমার গুণ তাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার দাবি করে। তাঁর ক্ষমা না থাকলে তিনি একটি প্রাণীকেও ছেড়ে দিতেন না।

আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমার বহিঃপ্রকাশ হলো, যে ব্যক্তি নিজের প্রতি বারবার জুলুম করেছে, আল্লাহর অবাধ্য করেছে, তওবা করলে তিনি তার ছোট-বড় সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।

আরও পড়ুননবীদের জীবন থেকে শিক্ষা০৭ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ ত ম র জন র তওব

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধ স্থাপনার চাপে ধসে পড়েছে ডাকঘরের প্রাচীর

সিলেটের ওসমানীনগরে অবৈধ স্থাপনার চাপে গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়ার ঘটনা ঘটলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।    
জানা যায়, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে রয়েছে গোয়ালাবাজার ডাকঘর (সাব-পোস্ট অফিস)। ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে মহাসড়কের জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে দোকানপাট তৈরি করে ভোগদখল করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে উঁচু করে মাটি ভরাটের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীর হেলে পড়তে শুরু করে। সম্প্রতি ডাকঘরের ২৫ থেকে ৩০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ধসে মাটিতে পড়ে গেছে। এ ছাড়া ৭০ থেকে ৮০ ফুট সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়লেও কয়েকটি গাছের সঙ্গে আটকে আছে। 
সরেজমিন দেখা যায়, গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের সামনের ফটকের সীমানা ছাড়া বাকি অংশজুড়ে রয়েছে অনেক দোকানপাট। সেসব দোকানে বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করছেন অনেকে। এ ছাড়া রয়েছে একটি শ্রমিক সংগঠনের অফিস। এসব স্থাপনার চাপে পোস্ট অফিসের সামনের সীমানা প্রাচীরের একাংশ ধসে পড়েছে। সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে এক কোণে ভাগাড় তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া পোস্ট অফিসের সামনে মহাসড়ক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ট্রাক ও পিকআপ রাখার স্ট্যান্ড। 
গোয়ালাবাজার সাব-পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার জ্যোতিষ চন্দ্র সরকার বলেন, এক ঝড়বৃষ্টির 
রাতে ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীরের একাংশ ধসে পড়ে যায়। প্রাচীরের অপর অংশ ধসে পড়ে গাছের সঙ্গে আটকে আছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। 
সিলেটের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ডাকঘরের সীমানাপ্রাচীরসংলগ্ন সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে তারা বিষয়টি 
সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানিয়েছেন। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। 
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, 
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এ মহাসড়ক নির্মাণ কাজের সময় অবৈধ স্থাপনাগুলো এমনিতেই উচ্ছেদের আওতায় আসবে। দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ