যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা গতকাল বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের বিরোধীদলীয় নেতারা। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হোয়াইট হাউসের কথিত ষড়যন্ত্রে তাঁদের যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁরা।

ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিন্তু যুদ্ধচলাকালে ইউক্রেনে নির্বাচন আয়োজনের জন্য ট্রাম্প যে দাবি জানিয়েছেন, তার বিরোধিতা করেছেন তিনি।

২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেলেনস্কির কাছে পরাজিত হওয়া পোরোশেঙ্কো আরও বলেছেন, ইউক্রেনে জারি করা সামরিক আইনের মেয়াদ শেষ হলেই শুধু নির্বাচন আয়োজন করা উচিত।

এদিকে ইউক্রেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ুলিয়া টিমোশেঙ্কো বলেছেন, তিনিও যুদ্ধচলাকালে নির্বাচন দেওয়ার বিপক্ষে। তিনি আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব শান্তি স্থাপনে যেসব মিত্রদেশ সহযোগিতা করতে পারে, তাদের সবার সঙ্গে তাঁর প্রতিনিধিদলের কথা হয়েছে।

অনলাইন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলেনস্কিকে উৎখাত করতে হোয়াইট হাউসের চেষ্টার অংশ হিসেবে গোপনে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রতিনিধিদলের চার জ্যেষ্ঠ সদস্য আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। তাঁরা মনে করেন, ইউক্রেনে নির্বাচন হলে জেলেনস্কি এখন হারবেন।

আরও পড়ুনআলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে জেলেনস্কি চিঠি পাঠিয়েছেন: ভাষণে জানালেন ট্রাম্প০৫ মার্চ ২০২৫

ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী, দেশে সামরিক আইন জারি থাকা অবস্থায় নির্বাচন স্থগিত থাকবে। যা–ই হোক, রাশিয়ার ছড়ানো অপতথ্যই গত মাসে ট্রাম্পের কণ্ঠেও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তিনি জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরশাসক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ট্রাম্প আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেনে জেলেনস্কির মাত্র চার শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারাও দাবি করছেন যে ইউক্রেনের নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ওভাল অফিসে জেলেনস্কিকে নাজেহাল করেছেন ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। তাঁদের অভিযোগ, জেলেনস্কি শান্তি চান না।

আরও পড়ুন‘অনুতাপ’ জানিয়ে জেলেনস্কি বললেন, ট্রাম্পের ‘বলিষ্ঠ নেতৃত্বের’ অধীনে কাজ করতে প্রস্তুত আছেন০৪ মার্চ ২০২৫

গতকাল ট্রাম্পের মিত্র ও শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘ইউক্রেনে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। এতে জেলেনস্কির বড় ধরনের পরাজয় হবে।’

তবে ব্রিটিশ জরিপ প্রতিষ্ঠান সারভেশনের জরিপ অনুযায়ী, ইউক্রেনে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছেন জেলেনস্কি। সম্প্রতি ওভাল অফিসে ট্রাম্পের কাছে নাজেহাল হওয়ার পর দেশে তাঁর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এখন জেলেনস্কির প্রতি ৪৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে। এ ছাড়া পোরোশেঙ্কোর প্রতি ১০ শতাংশ ও টিমোশেঙ্কোর প্রতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ৯ জন আটক

মাগুরায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে জেলা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়কসহ ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের কাছে থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি মাদক পাওয়া গেছে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মাগুরা পৌরসভার পারলা এলাকায় একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক হওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন মাগুরা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি ফরিদ হাসান খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রেজা, শহরের হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা নূহু দারুল হুদা, ভায়না এলাকার কাজী আরিফুল হক, আবালপুর গ্রামের আবদুল জলিল, শ্রীপুর উপজেলার বাখেরা গ্রামের আইনুল হোসাইন, শাহীন শেখ, পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইলিয়াছ খান ও ঢাকার আদাবর এলাকার সৈয়দ খায়রুল আলম।

মাগুরা সেনা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, পৌরসভার পারলা এলাকায় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছেন। গতকাল রাতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১টি চায়নিজ পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ২টি একনলা বন্দুক, ৪টি গুলি, ১টি এয়ার গান, এয়ারগানের ২৬৪টি গুলি, ২টি চায়নিজ কুড়াল, ৬টি চাপাতি, ২ বোতল মদ, ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও ১১টি মুঠোফোন ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়।

তবে এ অভিযানকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেছেন আটক হওয়া ফরিদ হাসান খানের ভাই জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান খান। তিনি আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইসহ যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মাগুরার বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার রয়েছেন। তাঁরা আমাদের ব্যবসায়িক অংশীদার। অভিযানে যে টাকা উদ্ধার দেখানো হয়েছে, সেটা আমাদের ব্যবসায়িক টাকা। যেসব আগ্নেয়াস্ত্রের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো ওখানে ছিল না। ওখানে আমাদের ১৬ একর জমির ওপর ফার্ম, যে দেশি অস্ত্রের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো ওই ফার্মের পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হয়। এমন ষড়যন্ত্রমূলক কাজের জন্য সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।’

জানতে চাইলে মাগুরা সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর সাফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফরিদ হাসান খানের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বেশ কিছু অভিযোগ ছিল। ওই সব অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অস্ত্র, মাদকসহ তাঁর সহযোগীদের আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, সকালে আসামিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ৯ জন আটক
  • দেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে: পিন্টু