ঈদের ছুটি মানেই ছোটপর্দায় বর্ণিল আয়োজন। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ঈদ উৎসবের বাকি চার সপ্তাহেরও কম। অপেক্ষা ফুরিয়ে আসছে। ছোটপর্দার নির্মাতাদের ঈদের প্রস্তুতি শেষের দিকে। অভিনয়শিল্পীদের বেশির ভাগই তাদের হাতে থাকা নাটকের কাজ শেষ করেছেন। রোজার ছয় মাস আগেই সাধারণত শুরু হয়েছে ঈদ নাটক ও টেলিছবির কাজ। এখন শুটিং কমলেও বেড়েছে এডিটিংয়ের ব্যস্ততা।

পাশাপাশি চ্যানেলে চ্যানেলে ঈদের কাজগুলো জমা দিচ্ছেন নির্মাতারা। কয়েকজন নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে। বছর পাঁচেক আগেও ঈদ নাটকের শুটিং বেশির ভাগই হতো উত্তরায়। এখন সেই চিরচেনা দৃশ্যপট যেন বদলাতে শুরু করেছে। গাজীপুরের পুবাইলসহ উত্তরার বাইরে ঢাকার কিছু লোকেশনে দেখা গেছে টেলিভিশন নাটকের পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীদের ব্যস্ততা।

চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তরার ‘অপরাজিতা’, ‘আপনঘর’, ‘আনন্দবাড়ী’, ‘লাবণী’, ‘মন্দিরা’, ‘দোলনচাঁপা’, ‘হৈচৈ’, ‘মনি মহল’, ‘চড়ুই বাসা’, ‘নোঙর’, ‘ক্ষণিকালয়’-এর শুটিংবাড়িতে ব্যস্ততা ছিল বেশি। গত মাস থেকে শুটিং নেই বললেই চলে।

ঈদ মৌসুমেও অনেক শুটিং হাউসে চলছে ধারাবাহিকের শুটিং। ঈদে হাসির নাটকের আধিক্য থাকে। পাশাপাশি রোমান্টিক, পারিবারিক আবহের গল্প নিয়েও নির্মাতারা কাজ করছেন। এবারও হরেক রকম আমেজের নাটক থাকবে ঈদ আয়োজনে– এমনটিই জানিয়েছেন নির্মাতারা। খণ্ড নাটকের পাশাপাশি ঈদ ধারাবাহিকও এখন দর্শক পছন্দের। অনেক নির্মাতা-তারকা হাজির হবেন নাটকের সিকুয়াল নিয়ে। ওটিটিসহ নানা মাধ্যমের কাজে ব্যস্ততা বাড়ায় ঈদে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী,আফরান নিশো, জাহিদ হাসান,জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, রুনা খান, জাকিয়া বারী মম, মেহজাবীন চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিণ, নুসরাত ইমরোজ তিশার মতো তারকার উপস্থিতি টিভি পর্দায় কম থাকবে। 

তবে কেউ কেউ আবার নতুন নাটকে কাজ না করলেও অনেকেরই পুরোনো কিছু কাজ প্রচার হবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে মীর সাব্বির, সজল নূর, মুশফিক আর ফারহান, ইয়াশ রোহান, তৌসিফ মাহবুব, খায়রুল বাসার, ফারহান আহমেদ জোভান, ইরফান সাজ্জাদ, জিয়াউল হক পলাশ, পাভেল, মারজুক রাসেল, জাহের আলভী, শাশ্বত দত্ত, আরশ খান, পার্থ শেখ, তানজিন তিশা, সাবিলা নূর, তানজিম সাইয়ারা তটিনী, নাজনীন নিহা, আইশা খান, সাফা কবির, পারসা ইভানা, নাদিয়া আহমেদ, সালহা খানম নাদিয়া, অহনা, মৌসুমী হামিদ, নাজিয়া হক অর্ষা, তানিয়া বৃষ্টি, কেয়া পায়েল, রুকাইয়া জাহান চমক, সামিরা খান মাহি, সাদিয়া আয়মানের মতো অভিনয়শিল্পীদের থাকবে সরব উপস্থিতি। তাদের মধ্যে কোনো কোনো অভিনয়শিল্পীকে ডজনের বেশি নাটকে দেখা যাবে। এ সময়ের ব্যস্ত জুটি নিলয় আলমগীর ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।

এবারও ঈদে সর্বাধিক নাটকে জুটি হয়েছেন তারা। দু’জনের নাটকের সংখ্যা ১৫ ছাড়াতে পারে। তারা এরই মধ্যে বেশকিছু নাটকে কাজ করেছেন। চাঁদরাত পর্যন্ত থাকবে তাদের ব্যস্ততা। এবার হিমি ছাড়াও অন্য অভিনেত্রীর সঙ্গেও বেশ কিছু কাজ করেছেন নিলয়। এরইমধ্যে শামীম জামানের পরিচালনায় তাসনুভা তিশার বিপরীতে ‘ডাবল রোল’ নাটকে তাঁকে দেখা যাবে দ্বৈত চরিত্রে।

ঈদের নাটকের কাজ নিয়ে তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘বেশ আগে থেকেই নাটকে অভিনয় শুরু করেছি। নতুন-পুরোনো মিলিয়ে ১৫টির মতো নাটক প্রচার হবে ঈদে। এ আয়োজনে কত বেশি নাটকে কাজ করেছি, সেটি আমার কাছে মুখ্য নয়, কয়টি ভালো নাটক প্রচার হলো, সেটিই বড় বিষয়। চেষ্টা করেছি নতুন চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হতে। গৎবাঁধা চরিত্র নয়, নতুন কিছু চরিত্রে আমাকে দর্শক দেখতে পাবেন।’

তরুণ অভিনেত্রী কেয়া পায়েল বলেন, ‘দর্শক ঈদে নানা ধরনের গল্পের নাটক দেখতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই ভিন্নধর্মী কিছু গল্পে অভিনয় করেছি। চরিত্রে বেশ নতুনত্ব রয়েছে; যা দর্শকের ভালো লাগবে।’

সারা বছর ছোটপর্দায় উপস্থিতি না থাকলেও কোনো উৎসব আয়োজনে জ্যেষ্ঠ তারকাশিল্পীদের ঈদের কাজে দেখা যায়। প্রতি ঈদে অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন নিজের পরিচালনায় ‘ছোটকাকু’ সিরিজ নিয়ে হাজির হন। এই ঈদে তিনি এটি পরিচালনা করছেন না। নাট্যনির্মাতা অনিমেষ আইচের পরিচালনায় অভিনয় করেছেন এই নন্দিত অভিনেতা। এবারের সিরিজের নাম ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’।

পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন ‘কোনো একদিন’ নাটকে। ফারিয়া হোসেনের রচনায় নাটকটি নির্মাণ করেছেন চয়নিকা চৌধুরী। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। এই জুটি হাজির হবেন দম্পতির চরিত্রে। শাহেদ শরীফ ও তানজিকা আমিনকে নিয়ে অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াত বানিয়েছেন নাটক ‘সামনে সমুদ্র’।

সম্প্রতি এর দৃশ্যধারণ শেষ করেছেন। এতে অভিনয়েও তাঁকে পাওয়া যাবে। চ্যানেল আইয়ে এটি প্রচার হবে। অভিনেতা মোশাররফ করিম অভিনয় করেছেন জিয়াউদ্দিন আলমের পরিচালনায় ‘খুচরা পাপী’ নাটকে। এটি প্রচার হবে এনটিভিতে।

এছাড়াও শামীম জামানের পরিচালনায় ‘স্বামীর সুখ মনে মনে’, ‘বউ হইতে সাবধান’ নাটকে তাঁকে দেখা যাবে। শিগগিরই এ নাটক দুটির শুটিংয়ে অংশ নেবেন তিনি। চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করেছেন অনিমেষ আইচের পরিচালনায় ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’ নাটকে। এছাড়া আরও একটি নাটকে তাঁর অভিনয়ের কথা রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ন টক ন টক র ন ন টক ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে আমিও হাসি চেপে রাখতে পারিনি: সুনেরাহ

সুনেরাহ বিনতে কামাল। অভিনেত্রী ও মডেল। ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’। নতুন সিনেমা ও সমসাময়িক অন্যান্য প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন।

প্রথমবার ঈদে আপনার অভিনীত কোন সিনেমা মুক্তি পেল, কেমন লাগছে?
ঈদে সিনেমা মুক্তি পাওয়া অবশ্যই আনন্দের। কারণ ঈদ উৎসবে মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে সিনেমা দেখতে যায়। হলে হলে দর্শকের ঢল নামে। এ রকম একটি উৎসবে নিজের সিনেমা মুক্তি সৌভাগ্যের।

দর্শক প্রতিক্রিয়া জানার কী সুযোগ হয়েছে?
বেশ ভালো। যারা সিনেমাটি ইতোমধ্যে দেখেছেন, প্রত্যেকের কাছ থেকেই খুব প্রশংসা পাচ্ছি। অনেকেই আমার অভিনীত চরিত্রটি পছন্দ করেছেন। দর্শক দীর্ঘদিন এ রকম একটি সিনেমার অপেক্ষায় ছিলেন। এ সিনেমাটির মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। মহাখালীর একটি প্রেক্ষাগৃহে আমি একা মাস্ক পরে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। সরাসরি দর্শক প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্যই হলে যাওয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, আমার সিনগুলো যখন পর্দায় আসে দর্শক তখন হাসছিল। সেটি দেখে নিজেও হাসি চেপে রাখতে পারিনি। আমি যদি ওই হলে ঘোষণা দিয়ে যেতাম, তাহলে অথেনটিক প্রতিক্রিয়া পেতাম না। সিনেমার গল্প ভালো। আর ভালো গল্পের দর্শক সবসময়ই আছে। দর্শক হিসেবে আমারও মনে হয়েছে, এমন একটা গল্পই দর্শক এখন চাইছে। প্রত্যেকেই তাঁর নিজস্ব জায়গা থেকে সেরাটি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাই ফলাফলটা ভালো হয়েছে।

সিনেমার প্রচার প্রচারণায় আপনাকে খুব বেশি পাওয়া যায়নি। এর কারণ কী?
হ্যাঁ, এটি সত্যি সিনেমার প্রচারণায় কম অংশ নিয়েছি। পারিবারিক সমস্যার কারণে প্রচারণায় সময় দিতে পারিনি। মা অসুস্থ, তাঁকে সময় দিতে হয়েছে। একেবারেই যে প্রচারণায় যাইনি তা কিন্তু নয়। যেখানে যাওয়া সম্ভব হয়েছে, সেখানে গিয়েছি।

‘দাগি’তে আপনার চরিত্রের ব্যাপ্তি কম। অভিনয় নিয়ে আপনি কী সন্তুষ্ট?
একটি চরিত্র দেখানোর জন্য যতটা সময়ের প্রয়োজন, ততটুকুই  আমার চরিত্রটিতে আছে। গল্পের প্রয়োজনেই চরিত্রটি আনা হয়েছে। আসলে গল্পপ্রধান সিনেমায় চরিত্রকে বেশি অনুভব করতে পারি। এ কারণেই কাজটি শুরু করেছি। তবে অডিয়েন্স চেয়েছে আমাকে আরও একটু দেখতে। আমার অভিনয় দর্শকমনে দাগ কেটেছে বলেই তারা এমনটি মনে করেছেন। এটি  আমার জন্য ইতিবাচক।

ঈদের অন্যান্য সিনেমা নিয়ে আপনার অভিমত কী?
ঈদের সবক’টি সিনেমা এখনও দেখা হয়নি। সময় সুযোগ পেলে দেখব। শুনেছি ঈদের সব সিনেমাই ভালো চলেছে। একেকটা একেক জনরার সিনেমা। এ কারণে সবাই বেশ উপভোগ করেছেন। সিনেমা দেখতে দর্শকের এত ভিড় শেষ আমি কবে দেখেছি মনে নেই। হল উপচে পড়া মানুষ। আসলে সব ধরনের সিনেমাই দরকার। এতে দর্শক বাড়ে। ঈদের ছবিগুলো তাই প্রমাণ করে।

শুনেছি, নতুন একটি সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন?
ঠিকই শুনেছেন। বড় আয়োজনের অসাধারণ গল্পের একটি সিনেমায় অভিনয় করছি। যদিও এ বিষয়ে এখনি বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। একটু বলব, নির্মাতার সঙ্গে এটি আমার প্রথম কাজ। শুনেছি, আগামী ঈদুল আজহায় এটি মুক্তি পাবে।

বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও অভিনয় করছেন...
সবসময় কাজের মধ্যেই থাকতে চাই। এ কারণে এ সময়ে এসে পর্দা বিভাজন করছি না। ছোট পর্দায় অনেক কাজ হয়। এখানে ভিন্ন ভিন্ন গল্পে কাজের সুযোগ থাকে। সবসময় চর্চার মধ্যে থাকা যায়। শেখার তো শেষ নেই। অনেক কিছু শিখতে পারছি। আর অল্প সময়ের মধ্যে একটা চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণ করে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার আনন্দই অন্যরকম। সবকিছু বিবেচনায় রেখেই ছোট পর্দায় মাঝেমধ্যে অভিনয় করছি। এই ঈদে ছোট পর্দায় আমার অভিনীত কয়েকটি কাজ প্রচার হয়েছে। ভালো গল্প ও চরিত্র পেলে ছোট পর্দার কাজে আপত্তি করছি না।

অভিনয় নিয়ে সবসময়ই ব্যস্ত সময় কাটছে। একটু অবসর পেলে কী করেন?
বাসায় থাকলে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিই অনেকটা সময়। খাওয়া-দাওয়া করি, সিনেমা দেখি, বই পড়ি। সময় যে কখন চলে যায়, টেরই পাই না। মাঝেমধ্যে একা ঘুরতে যাই। একা ঘুরতে আমার আনন্দই লাগে। কখনও বন্ধুদের সঙ্গে ছুটে যাই পাহাড়-সমুদ্রে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বর্ষবরণ উৎসবে যেসব খেলায় মেতে ওঠেন পাহাড়ের মানুষ
  • ঢাকায় ৬ দিনের গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব
  • ডিসি-এসপিকে লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের কৃতজ্ঞতা
  • ‘আধুনিক’ পাহাড়ি গান-নৃত্য যাঁদের দিয়ে শুরু
  • দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে আমিও হাসি চেপে রাখতে পারিনি: সুনেরাহ
  • বেজেছে প্লুং বাঁশি আর ঢোল, পাহাড় মেতেছে উৎসবে
  • যেভাবে শাড়িতে সাজতে পারে ছোট্ট মেয়েটি
  • বেসরকারি সংস্থায় একাধিক পদে চাকরি, সর্বোচ্চ বেতন ১ লাখ ১০ হাজার
  • সুহৃদ উৎসবে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস
  • মেসি–নেইমারদের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা ফুটবলার এখন দোকানকর্মী