বাংলাদেশেও অন্যান্য দেশের মতো সন্তানপ্রত্যাশী ব্যক্তিদের ব্যর্থতার হার বেড়ে চলেছে। প্রজননক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়ের বা কোনো একজনের সমস্যা ভূমিকা রাখে। পুরুষদের বন্ধ্যত্বের পেছনে পরিবেশদূষণ উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে স্বীকৃত। এ দূষণ শুক্রাণুর গুণমান, হরমোনের ভারসাম্য ও সামগ্রিক প্রজননস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন, এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক:

বায়ুদূষণ

পার্টিকুলেট ম্যাটার: বাতাসের অতিসূক্ষ্ম কণা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করতে পারে, যা শুক্রাণুর ডিএনএর ক্ষতি করে ও শুক্রাণুর গতিশীলতা হ্রাস করে।

নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড ও সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাসগুলো শুক্রাণুর কম ঘনত্ব ও অস্বাভাবিক আকারের সঙ্গে যুক্ত।

পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন: এটি যানবাহনের নিষ্কাশন ও শিল্প নির্গমনে পাওয়া যায়, যা হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত করতে পারে এবং শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত করতে পারে।

পানিদূষণ

ভারী ধাতু: পানির উৎসে থাকা সিসা, ক্যাডমিয়াম ও পারদের মতো দূষিত পদার্থগুলো শরীরে জমতে পারে; যা টেস্টিসের ক্ষতি, শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে।

এন্ডোক্রাইন-ডিসরাপ্টিং কেমিক্যালস: বিসফেনল এ, থ্যালেট ও পানিতে থাকা কীটনাশকের মতো রাসায়নিক পদার্থ হরমোন উৎপাদন এবং এর কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে।

 

মাটিদূষণ

কীটনাশক ও হার্বিসাইড, শিল্পবর্জ্য মাটিকে দূষিত করে। এমন দূষণও পুরুষের প্রজননক্ষমতায় প্রভাব রাখতে পারে।

পুরুষদের বন্ধ্যত্বের পেছনে পরিবেশদূষণ উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে স্বীকৃত।

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক দূষণ

মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ওয়াই-ফাই থেকে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের এক্সপোজার শুক্রাণুর গতিশীলতা হ্রাস এবং ডিএনএ ফ্র্যাগমেন্টেশনের সঙ্গে যুক্ত।

 সমাধান

এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন।

অত্যন্ত দূষিত এলাকায় মাস্ক ও প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরুন।

নিরাপদ পানির উৎস ব্যবহার করুন।

স্বাস্থ্যকর ডায়েট বা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট: ভিটামিন সি, ভিটামিন ই-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যায়।

ডা.

শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি

শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী  আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।

যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ