ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার প্রভাব কী হতে পারে
Published: 7th, March 2025 GMT
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের সুনির্দিষ্ট তাৎপর্য কী, তা স্পষ্ট কারণেই কখনো বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়নি।
তবে অধিকাংশ বিশ্লেষক এ ব্যাপারে একমত, মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ করছে। এর একটি, এটি রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আক্রমণের পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করছে। অন্যটি রাশিয়ার সম্ভাব্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মোকাবিলায় কিয়েভকে আগাম সতর্কতা দিচ্ছে।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও সংকেত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর অবস্থান, তাঁদের গতিবিধি ও সম্ভাব্য কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও ধারণা দেয়।স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও সংকেত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর অবস্থান, তাঁদের গতিবিধি ও সম্ভাব্য কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও ধারণা দেয়।
আবার মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স লঞ্চার বা যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সরবরাহ করা স্টর্ম শ্যাডোর মতো দূরপাল্লার পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্র ঠিকঠাক ব্যবহার করতে সক্ষম হবে না ইউক্রেন।
ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কূটনৈতিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়, তবে আবার দেশটিতে সামরিক সহায়তা শুরু করা হতে পারে।মাইক ওয়াল্টজ, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাওয়াশিংটনের রিয়েল-টাইম তথ্য ইউক্রেনকে পশ্চিমা সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহারের এমন সক্ষমতা প্রদান করা ছাড়াও দেশটির সামরিক, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামো ও বেসামরিক জনগণকে আসন্ন হুমকি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আগাম তথ্য দিয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইটের দেওয়া প্রাথমিক সতর্কতামূলক তথ্যের ভিত্তিতেই ইউক্রেনের অধিবাসীরা কমবেশি বিমান হামলার সাইরেন ও মুঠোফোনের সতর্কবার্তা জানতে পারেন। রুশ ভূখণ্ডের একেবারে ভেতর থেকে উড্ডয়ন করা যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণও শনাক্ত করতে পারে এসব স্যাটেলাইট।
দীর্ঘ মেয়াদে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে তা ইউক্রেনের সুরক্ষা সক্ষমতার ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এরই মধ্যে ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কয়েক মাস আগেও ইউক্রেন আশা করছিল, তারা অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাবে এবং এটি দেশের বিভিন্ন শহর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ রুশ হামলার আরও বেশিসংখ্যক সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর সুরক্ষায় কিয়েভের সক্ষমতা বাড়াবে।
কয়েক মাস আগেও ইউক্রেন আশা করছিল, তারা অতিরিক্ত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাবে এবং এটি দেশের বিভিন্ন শহর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ রুশ হামলার আরও বেশিসংখ্যক সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর সুরক্ষায় কিয়েভের সক্ষমতা বাড়াবে।কিন্তু ইউক্রেনের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ ফুরিয়ে আসছে। সম্প্রতি ইউরোপের দেশগুলো ইউক্রেনকে স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউক্রেনকে কিছু হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে এটি। তবে রাশিয়ার সবচেয়ে বিপজ্জনক হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থেকে এটি সুরক্ষা দিতে পারবে না।
এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়কে আরেকটি কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কূটনৈতিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়, তবে আবার দেশটিতে সামরিক সহায়তা শুরু করা হতে পারে।
আরও পড়ুনইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র২২ ঘণ্টা আগেওয়াল্টজ ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি আমরা এ সমঝোতাকে ফলপ্রসূ করতে পারি ও একে এগিয়ে নিতে পারি.
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ ফক্স বিজনেসকে বলেন, এ স্থগিতাদেশ ‘কেটে যাবে’।
তবে এ কেটে যাওয়ার বিনিময়ে হোয়াইট হাউস ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছ থেকে কী চায়, তা পরিষ্কার।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতে বিপদে ইউক্রেন ০৪ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য ট ল ইট ইউক র ন র সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ে দক্ষিণাঞ্চলের ১৫ জেলা অন্ধকারে
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হওয়ার কারণে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) আওতাধীন দক্ষিণাঞ্চলের ১৫ জেলার মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
ওজোপাডিকো সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে ১৫ জেলার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে, সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বিপর্যয়ের কারণে খুলনা, বরিশাল বিভাগসহ পদ্মার এপারের ১৫ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা দক্ষিণাঞ্চল। অনেক স্থানে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। আবার কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুৎ এসেছে।
আরো পড়ুন:
লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের ১৭ ঘণ্টা পর এক ইউনিট চালু
খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, “নগরীর ময়লাপোতার মোড়ে বিকেল থেকে আছি। সাড়ে ৫টার পর এখানে বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত ৭টা ৫০ মিনিটে একবার বিদ্যুৎ আসে। পরে আবার ৮টা ১৬ মিনিটে বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না।”
খুলনার রূপসা উপজেলার বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, “বিকেলে বিদ্যুৎ চলে যায়। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল হতে হচ্ছে।”
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শাহাজাৎপুরের শুভ বিশ্বাস বলেন, “আজ বিকেল থেকে বিদ্যুৎ নেই। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। প্রচণ্ড গরমে দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।”
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওজোপাডিকোর সদর দপ্তরের নির্বাহী পরিচালক (পরিচালন) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, “আজ বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে ঢাকার আমিন বাজার থেকে গোপালগঞ্জের মধ্যবর্তী কোনো একটি স্থানে ৪০০ কেভি লাইনের ত্রুটি দেখা দেয়। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুরসহ ১৫ জেলায় বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে খুলনা, বরিশালের অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ