ইউক্রেন ও রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে কোনো পক্ষই এখন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারছে না। সেখানকার যুদ্ধে একরকম অচলাবস্থা চলছে। রাশিয়ার সেনারা যেন অগ্রসর হতে না পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে ইউক্রেনীয় সেনারা। কখনো কখনো দুই পক্ষের লড়াই সামান্য কয়েক গজ গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ধারণা করা হয়, তাঁর এ সিদ্ধান্তের কারণে যুদ্ধক্ষেত্রের চিত্র পাল্টে যেতে পারে। এতে হয় যুদ্ধ থেমে যাবে অথবা রাশিয়া চূড়ান্ত সুবিধা পাবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, অতিরিক্ত মার্কিন সহায়তা ছাড়াই ইউরোপের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহযোগিতাকে কাজে লাগিয়ে গ্রীষ্মকালজুড়ে লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তাকারী দেশের সহায়তা হারালে তাতে রাশিয়া লাভবান হবে। দেশটি তখন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোতে সহজেই হামলা চালাতে পারবে।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট সেথ জি জোন্স এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যুদ্ধাস্ত্র ও বাহিনীগুলোকে নিয়ে সমস্যার মধ্যে থাকার পরও ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ার যেকোনো ধরনের অগ্রগতি ঠেকিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয়ভাবে ভালো কাজ করেছে।’

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, জেলেনস্কি যদি হোয়াইট হাউসের দাবির কাছে নতিস্বীকার করেন, তবে তাঁর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে যে বিরতি টানা হয়েছে, কম সময়ে সে পরিস্থিতির অবসান হতে পারে।

গত মঙ্গলবার জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি ‘আলোচনার টেবিলে আসতে’ প্রস্তুত আছেন। মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেসে দেওয়া ভাষণ জেলেনস্কির সে বক্তব্যের উল্লেখ করে ট্রাম্পও তাঁর প্রশংসা করেছেন।

আপাতত ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করছে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বা রুশ সেনাবাহিনীর ওপর তুলনামূলকভাবে কম চাপ প্রয়োগ করছে তারা। ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।

শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যায্য মধ্যস্থতাকারী বলে বিবেচনা করলে ইউরোপের সমর্থন নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজতে পারে ইউক্রেন।

তিন বছর আগে ইউক্রেনে হামলা শুরু করলেও রাশিয়া এখন পর্যন্ত আকাশপথে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌথ অভিযানে রাশিয়া তাদের সামরিক দলগুলোকে কার্যকরভাবে একত্র করতে পারেনি এবং এত বেশি প্রাণহানি হয়েছে যে পুতিন চাপ কমাতে উত্তর কোরিয়ার ১১ হাজার সেনা মোতায়েন করেছেন।

তবে এর সবকিছুই ঘটেছে রাশিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার আগেই।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূত সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা আলেক্সান্দার ভিন্দমান বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে সেনাদের মনোবল ক্ষুণ্ন হবে—রুশ পক্ষ শক্তিশালী হবে এবং ইউক্রেনীয়রা হতাশ হবে।’

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে ইউক্রেনে সরবরাহের অপেক্ষায় থাকা কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালানের ওপর প্রভাব পড়ছে।

পেন্টাগনের মজুত থেকে ইউক্রেনের জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ইনিশিয়েটিভ নামের উদ্যোগের আওতায় সহায়তা কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। এ উদ্যোগের আওতায় কিয়েভকে সরাসরি মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো থেকে নতুন সামরিক হার্ডওয়্যার কিনতে তহবিল সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, দূরপাল্লার রকেটে ব্যবহৃত গোলাবারুদ, যন্ত্রাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রের সরবরাহও হারাতে পারে ইউক্রেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পরিচালনায় ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশিক্ষণ দেখছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জার্মানির একটি অজ্ঞাত স্থানে, ১১ জুন ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ইউক র ন য় সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি টাকা

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সরকারি সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১১ এর আওতায় ৫০ হাজার (+৫%) মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এ প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, দেশের সরকারি খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার (+৫%) মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে পাঁচটি দরপত্র জমা পড়ে। পাঁচটি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশ অনুযায়ী রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল, সিঙ্গাপুর এসব চাল সরবরাহ করবে। 

প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ৪১৬.৪৪ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। 

চলতি অর্থবছরে চালের মোট চাহিদা ৩৯.৭৮ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৯ লাখ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৭.৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল কেনার চুক্তি সম্পাদন হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা
  • ৫০ হাজার টন চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি টাকা
  • গাজায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর ৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে: জাতিস
  • প্রভাব কম দেশের শেয়ারবাজারে
  • হাইব্রিড সোলারে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ
  • ট্রাম্প শুল্ক, বিশ্ববাণিজ্য ও বাংলাদেশ
  • ৯ কোটির ল্যাবে বাড়ছে ই-বর্জ্য
  • মিয়ানমারে ভূমিকম্প: বৃষ্টি-গরমে বেড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা
  • টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক বাঁচানো যাবে?
  • খুলনায় গ্যাস সরবরাহ দয়ার বিষয় নয়