যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ গতকাল বুধবার নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোয় ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার বিষয়টি আরও অনিশ্চয়তার পথে এগিয়ে গেল।

মাইক ওয়াল্টজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা করেছি, আমরা এক ধাপ পিছিয়ে এসেছি।’ তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ‘এই সম্পর্কের সব দিক’ স্থগিত ও পর্যালোচনা করছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক হামলা শুরুর প্রাথমিক পর্যায় থেকেই কিয়েভের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে গত সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইউক্রেনকে আর কোনো সামরিক সহায়তা দেওয়া হবে না। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যকার বাগ্‌বিতণ্ডার পর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতে বিপদে ইউক্রেন ০৪ মার্চ ২০২৫

সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা এবং ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি করতে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি। শেষ পর্যন্ত বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার পর জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যেতে বলা হয়।

এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ রাখার বিষয়টি আংশিক নাকি পুরোপুরি কিংবা এটা কত সময়ের জন্য কার্যকর থাকতে পারে—এসবের কিছুই জানানো হয়নি।
এদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সংবাদ সম্মেলনে সামরিক সহায়তার বিষয়ে বলেন, এটি বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তহবিল ‘পুনর্বিবেচনা’ করছে।

তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভ অনেকাংশেই ওয়াশিংটনের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ পর্যায়ে এসে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়া চলমান যুদ্ধে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুনট্রাম্প সামরিক সহায়তা স্থগিতের আগে ইউক্রেনকে যেসব অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র০৪ মার্চ ২০২৫

সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করা হলে যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

আরও পড়ুন‘অনুতাপ’ জানিয়ে জেলেনস্কি বললেন, ট্রাম্পের ‘বলিষ্ঠ নেতৃত্বের’ অধীনে কাজ করতে প্রস্তুত আছেন০৪ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যা মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলা পুলিশ বাহিনীর জন্য ল্যান্ডমার্ক কেস এবং এর বিচার যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে পুলিশ বিভিন্ন বাধা ও আক্রমণের শিকার হচ্ছে, তাই সমাজকে বেশি আবেগতাড়িত না হয়ে পুলিশকে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ বিষয়ক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

নরসিংদীতে জুয়ার টাকা সংগ্রহে সহকর্মীকে হত্যা, ২ বন্ধু গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা

এ সময় আইজিপি বলেন, ‘‘মব সৃষ্টি করে যারা অপকর্ম করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি থানাগুলোকে আরো সক্রিয় করতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’

এর আগে কর্মশালায় অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘গত ১৬ বছরে বিচারকরা মোমবাতি জ্বালিয়ে নৈরাজ্যবাদী সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে রায় দিয়েছেন। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার নামে দলীয় এজেন্টদের বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা ফরমায়েশি রায়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে এই সংস্কৃতিতে আর ফেরা যাবে না।’’

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে অতীতে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, কারণ আয়না ঘরের সংস্কৃতিতে দেশ আর ফিরে যাবে না।’’

কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসন ও পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’’  সুষ্ঠু বাসযোগ্য পরিবেশ উপহার দিতে সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহবুবুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ কর্মশালায় রংপুর বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ঢাকা/আমিরুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ